যা হবার তাই হলো। অবশেষে ঝুলে গেল সংলাপ। এই ব্যাপারে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং সরকার হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকারের অবস্থান অত্যন্ত পরিষ্কার। তাদের কোনো রাখ ঢাক নেই। তাদের সোজা কথা, সংলাপ সংলাপ নিয়ে কিসের এত চিল্লাপাল্লা? সংলাপ নিয়ে আমরা বিএনপিকে চিঠি দিতে যাবো কেন? সংলাপের অর্থ হয় যদি কথা বলা তাহলে বিএনপি সংসদে এসে যত ইচ্ছা কথা বলতে পারে। আমরা তাদেরকে বাধা দেবো না। তারা যতক্ষণ সময় চাইবেন স্পিকার তাদেরকে ততক্ষণ সময় দেবেন। তারা কি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান, না নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার চান, সেসব কথা তারা পার্লামেন্টের ফ্লোরে বলতে পারেন। যেহেতু পার্লামেন্টে তাদের কথা বলার সুযোগ আছে তাই পার্লামেন্টের বাইরে ঘটা করে আওয়ামী লীগের সাথে কথা বলার দরকার কি ? তারা যদি পার্লামেন্টে এসে কথা বলেন তাহলে আর কথা বলার জন্য চিঠি দিতে হবে কেন? তবে পশ্চিমবঙ্গের কৌতুক অভিনেতা পরলোকগত ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায় ‘একখান কথা আছে’। আর সেটি হলো, বিএনপি পার্লামেন্টে যত ইচ্ছা কথা বলুক, ইলেকশন হবে কিন্তু বর্তমান সংবিধান মোতাবেক। অর্থাৎ ১৫ নং সংশোধনীর অধীনেই। ১৫ নম্বর সংশোধনীতে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যবস্থা। সেই ব্যবস্থা মোতাবেক বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অন্তর্বর্তী সরকারেরও প্রধানমন্ত্রী হবেন। এ ব্যাপারে কোনো আপোষ নাই। যেহেতু ১৫ নম্বর সংশোধনী পাস হয়ে গেছে এবং এটি এখন সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ তাই তত্ত্বাবধায়ক বলুন বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার বলুন, আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।
এটি হলো সংলাপ প্রশ্নে আওয়ামীর সর্বশেষ অবস্থান। এর আগে অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন ছিল। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ ৩ দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে তিনি সরকারি দল এবং বিরোধীদল উভয়েরই শীর্ষ পর্যায়সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সথে আলাপ-আলোচনা করেন। সেই আলাপ-আলোচনার পর বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় যেসব রিপোর্ট ছাপা হয় সে সব রিপোর্ট পড়ে সাধারণ মানুষের একটি ধারণা হয় যে অতি সহসাই সরকার এবং বিরোধী পক্ষের মধ্যে সংলাপ শুরু হচ্ছে। সেই সংলাপে কোনো এজেন্ডা বা আলোচ্য সূচি থাকবে কিনা, সে ব্যাপারে সরকার পক্ষ সোজা সাপ্টা বলে দেয় যে কোন সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বা আলোচ্য সূচি থাকবে না। আলোচনা হতে হবে শর্তহীন। তবে আলোচনার টেবিলে বসলে বিরোধীদল যে কোন বিষয় আলোচনা করতে পারে। পত্র-পত্রিকায় এমন খবরও বের হয় যে ২/১ দিনের মধ্যেই আলোচনার জন্য বিএনপিকে লিখিত চিঠি দেয়া হবে। বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শনের জন্য আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সশরীরে সেই চিঠিটি খালেদা জিয়ার হাতে অর্পণ করবেন।
এ ব্যাপারে বিরোধী দলের তরফ থেকে অর্থপূর্ণ নীরবতা পালন করা হয়। সংলাপে কি কোনো এজেন্ডা থাকবে? নাকি এজেন্ডা বিহীন আলোচনা হবে? সে ব্যাপারে বিএনপির তরফ থেকে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদই একমাত্র ব্যক্তি যিনি এমন পরিস্থিতিতেও ভিন্ন কথা বলেন । তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে সংলাপের কথা বলছে সেটি সম্পূর্ণ লোক দেখানো। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত হিসাবে ফার্নান্দেজ ঢাকায় এসেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন যে, ফার্নান্দেজ তথা মহাসচিব বান কি মুনকে দেখানোর জন্য সরকার এসব সংলাপ সংলাপ খেলছে। তবে ফার্নান্দেজের সাথে বেগম জিয়ার যে কয়বার বৈঠক হয় তার একটিতেও ব্যারিস্টার মওদুদ উপস্থিত ছিলেন না। প্রতিটি বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এবং বিএনপি আমলে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী। আরও ছিলেন জনাব রিয়াজ রহমান, সাবিউদ্দীন আহমেদ প্রমুখ। কি আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হলে তারা সাংবাদিকদেরকে এড়িয়ে যান।
॥ দুই ॥
কিন্তু বাইরে এ খবরটি দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে যে বিএনপি আওয়ামী লীগের সাথে শর্তহীন আলোচনায় রাজি হয়েছে। অথচ এই ৩ দিনের আলোচনার কোনো পর্যায়েই বিএনপির কোনো নেতা একথা বলেননি যে তারা শর্তহীন বা এজেন্ডা বিহীন আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন। তার পরেও বিএনপি সম্পর্কে এমন একটি ধারণা সৃষ্টি হলো কেন? আমার বদ্ধমূল ধারণা এই যে দেশের দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে মানবিক বিবেচনায় বিএনপি যে ২/১টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেসব সিদ্ধান্ত এই ভুল বোঝাবুঝির জন্ম দিয়েছে। যেমন রানা প্লাজার উদ্ধার কাজ যখন চলছিল তখন ১৮ দল একটি হরতাল ডেকেছিল। উদ্ধার কাজের দোহাই দিয়ে সেই হরতাল প্রত্যাহার করার জন্য বেগম জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বেগম জিয়া সেই হরতাল প্রত্যাহার করেন। সেই সাথে তিনি এটাও আশা করেন যে, যেহেতু তিনি শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন তাই শেখ হাসিনাও তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে সম্মত হবেন। কিন্তু শেখ হাসিনা বেগম জিয়ার আবেদনে সামান্যতম কর্ণপাতও করেননি।
এরমধ্যে ১৮ দল বিএনপি অফিসের সামনে একটি সমাবেশ ডেকে ছিল। পুলিশ সেই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। ফলে বিএনপি সেই সমাবেশ করেনি। বিএনপি যদি পুলিশের অনুমতির অপেক্ষা না করে সমাবেশ করার চেষ্টা করতো তাহলে পুলিশের বাধার ফলে হয়তো সমাবেশ করা সম্ভব হতো না কিন্তু পুলিশের সাথে যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হতো তার ফলে বিএনপি তথা বিরোধীদলের সংগ্রামী চরিত্র অক্ষুণœ থাকতো।
এরপর বিএনপি আবার একটি সমাবেশ ডাকে। সরকার সেই সমাবেশেরও অনুমতি দেয়নি। তখন বিএনপি একটি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে। ঐ সংবাদ সম্মেলন থেকে পুলিশ বিএনপির এমপি বরকত উল্লাহ বুলুকে গ্রেফতার করে। সমাবেশের অনুমতি না দেয়া এবং জাতীয় সংসদ সদস্য বুলুকে গ্রেফতার করার প্রতিবাদে বিএনপি যদি বিক্ষোভ সমাবেশ করতো সেই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়তো পুলিশ ভ-ুল করে দিত। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় পুলিশের সাথে যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হতো তার ফলে বিএনপির সংগ্রামী চরিত্র অক্ষুণœ থেকে যেত। পর পর দু’বার সভা করার অনুমতি না দেয়া এবং বুলুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিএনপি একটি হরতাল আহ্বান করে। কিন্তু হরতাল আহ্বান করার ৭ ঘণ্টা পরেই ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের কারণ দেখিয়ে বিএনপি সেই হরতাল প্রত্যাহার করে।
এখন পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলনের আর কোনো কর্মসূচি দেয়নি। এসব কারণে একদিকে সুশীল সমাজ ও সাংবাদিক এবং অন্যদিকে বিএনপির মাঝে একটি ফাঁক সৃষ্টি হয়েছে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। গত শনিবার দৈনিক ‘ইত্তেফাকের’ প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একটি সংবাদে বলা হয়েছে যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি মন্তব্য শর্তহীন সংলাপের গুজবকে পল্লবিত করেছে। চিকিৎসার জন্য সপরিবারে সিঙ্গাপুর যাত্রার প্রাক্কালে ঢাকা বিমান বন্দরে তিনি বলেন,“সংলাপের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা আশা করি। বিএনপি কোন রকম পূর্বশর্ত ছাড়াই সংলাপে বসবে? এরকম একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শর্ত দেয়া বা না দেয়া মূল বিষয় নয়, মূল বিষয় হচ্ছে, সংলাপটি হতে হবে। পরদিন কোন কোন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শর্তহীন সংলাপের কথা বলেছেন।” (দৈনিক ইত্তেফাক ১৮ মে)। উল্লেখ করা যেতে পারে যে কারাগারে থাকা কালেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতার কারণেই কারাগার থেকে বেরিয়েও দলীয় কোন কার্যক্রমে তিনি জড়িত হতে পারেননি। মির্জা ফখরুলের অনুপস্থিতিতে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু এখন দলীয় মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
॥ তিন ॥
সচেতন মানুষের মনে প্রশ্ন, যে আওয়ামী লীগ সংলাপের জন্য এত কথা বললো তারা হঠাৎ করে সেখান থেকে এবাউট টার্ন করলো কেন? রাজনীতির শুধুমাত্র তাত্ত্বিক দিক নয়, বরং যারা বিগত ২ মাস ধরে রাজপথের রাজনীতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন তাদের মতে আওয়ামী লীগ শক্তের ভক্ত নরমের যম। বিগত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেশে বিরোধীদল বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। সেই সময় বেগম জিয়া চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর অবস্থান করছিলেন। ইতোমধ্যেই শতাধিক জামায়াত-শিবির কর্মী এবং সাধারণ মানুষ আওয়ামী পুলিশের গুলীতে শহীদ হয়েছেন।
বেগম জিয়ার অনুপস্থিতিতে ঐ দুর্বার আন্দোলনে শরিক হওয়া বা না হওয়া নিয়ে বিএনপি দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছিল। বেগম জিয়া ফিরে এসে সমস্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলেন এবং নিজেই ঐ আন্দোলনের হাল ধরেন। আন্দোলন পুনরায় দুর্বার হয়ে ওঠে। আরও প্রায় ১০০ নিরীহ মানুষ শহীদ হন। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার প্রবল ঝড় ওঠে। রফতানি বাণিজ্যে বিদেশীরা মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। সব কিছু মিলে এই নিবির্চার হত্যাকা- বন্ধ করার জন্য আওয়ামী সরকারের ওপর প্রবল চাপ প্রয়োগ করা হয়। তখনকার বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই চাপের কাছে আওয়ামী লীগ নতি স্বীকার করে এবং তারাই প্রথম সংলাপের কথা বলে। কথায় বলে, দুর্জনের ছলনার অভাব হয় না। আওয়ামী লীগ সরকারও প্রতিকূল পরিবেশ দেখে সংলাপের কথা বলে। এটি ছিল তাদের আসলে সময় ক্ষেপণের একটি কৌশল।
এর মধ্যে অপ্রত্যাশিত এবং বিস্ময়কর উত্থান ঘটে হেফাজতে ইসলামের। বিগত ৬ এপ্রিল সরকারের শত বাধা সত্ত্বেও ঢাকায় অন্তত ২০ লাখ লোকের লং মার্চ সরকারকে কোণঠাসা করে। ঐ লং মার্চে উত্থাপিত দাবি পূরণের জন্য ৪ মে পর্যন্ত সময় দেয়া হয়। ফলে সরকারের সংলাপের গরজ আরও বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে এবং অনেক দেশী ও বিদেশীদের মতে বাংলাদেশ গৃহযুদ্ধের পথে ধাবিত হয়। এই পটভূমিতে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ ঢাকায় আসেন। বান কি মুনের এই মিশনের পেছনে যে পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন ছিল সে কথা বলাইবাহুল্য। সুতরাং ফার্নান্দেজের সফরকালে আওয়ামী লীগ সুর কিছুটা নরম করে। বিএনপিও সরকারের প্রচ- দমননীতির মুখে তার অবস্থান আংশিক পরিবর্তন করে বলে সচেতন মানুষের কাছে প্রতীয়মান হয়।
॥ চার ॥
ফার্নান্দেজ চলে গেছেন। যাওয়ার আগে শুধু বলে গেছেন যেসব দলের অংশগ্রহণ সাপেক্ষে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, সেটি জাতিসংঘ প্রত্যাশা করে। তবে নির্বাচনকালীন সরকার কোন ধরনের হবে সেটি বাংলাদেশের জনগণের একান্ত নিজস্ব ব্যাপার বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আওয়ামী লীগ মনে করে যে এই পয়েন্টটি তাদের পক্ষেই এসেছে। ফার্নান্দেজ ফিরে যাওয়ার পর পরই আওয়ামী লীগ আবার স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করে।
এর মধ্যে শাপলা চত্বরে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে হেফাজতে ইসলামের লাখ লাখ মানুষকে সরকার উৎখাত করতে সক্ষম হয়। এই উৎখাত অভিযানে বিপুল সংখ্যাক হেফাজতে কর্মী ও নেতা এবং সাধারণ মানুষ হতাহত হন বলে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। কতজন আহত হয়েছেন এবং কতজন নিহত হয়েছেন সেই পরিসংখ্যান এখানে মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হলো এই যে লাখ লাখ লোককে বল প্রয়োগ করে, দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্ট মোতাবেক, দেড় লাখ গোলাবারুদ খরচ করে, অজ্ঞাত সংখ্যক ব্যক্তিকে হত্যা করে যে উৎখাত অভিযান সম্পন্ন হলো তার বিরুদ্ধে দেশে কোনো সক্রিয় প্রতিরোধ তো দূরের কথা, কোন সক্রিয় প্রতিবাদও চোখে পড়লো না। এ বিষয়টি সরকারকে আরও বেশি কঠোর এবং নির্দয় হওয়ার শক্তি যুগিয়েছে। তাই আজ সরকার সংলাপের উদ্যোগকে ছিন্ন পত্রের মত ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে এবং আগামীতেও পাশবিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সঙ্কট থেকে পরিত্রাণের পথ বেছে নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধী শিবিরের পক্ষে আপোষকামিতা এবং এজেন্ডা বিহীন আলোচনার কোন সুযোগ নেই। বিরোধী শিবিরের একমাত্র শক্তি হলো জনগণ। দেশের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ এখন বিরোধীদলকে সমর্থন করছে। এ অবস্থায় দেশের ভয়াবহ সঙ্কট মোচনে বিএনপির বিদেশ নির্ভরতা সকলের জন্য আত্মঘাতী হবে। এখন একমাত্র পথ হলো বিএনপি জামায়াত এবং হেফাজতসহ ছোট বড় নির্বিশেষে এবং জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী যতদল রয়েছে সকলকে এক কাতারে সারিবদ্ধ হয়ে রাজপথে সরকারের ফ্যাসিবাদী দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। অনেক দিন আগে আওয়ামী লীগ একটি স্লোগান দিতো। সেই স্লোগানটি এখন বিরোধী দল স্মরণ করতে পারে। স্লোগানটি হলো-আপোষ না সংগ্রাম/সংগ্রাম সংগ্রাম।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন