বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট ক্রমেই বিপজ্জনক রূপ নিতে শুরু করেছে।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুনের দূত সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো
চার দিনের ঢাকা সফর শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সঙ্কট নিরসনে দুই রাজনৈতিক দলের
সমঝোতায় পৌঁছার সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন। সমঝোতায় পৌঁছতে
ব্যর্থ হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার ওপর যে বড় আকারের বিপদ আসতে পারে তারও
ইঙ্গিত পাওয়া যায় তারানকোর বক্তব্যে।
জাতিসঙ্ঘের সহকারী মহাসচিব এমন এক সময় বাংলাদেশ সফরে এসেছেন, যখন দেশব্যাপী
যেন ঝড়ের পরে কবরের নিস্তব্ধতা নেমে এসেছে। হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচিকে
কেন্দ্র করে হাজারো মানুষ হত্যার যে অভিযোগ সেটি ক্রমেই যেন জনগণের মধ্যে সত্য বলে
প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আল জাজিরার সচিত্র প্রতিবেদনে সেদিনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের যে
ভিডিও ছবি দেখানো হয়েছে, তাতে দেশের মানুষের মানসে ১৯৭১ সালের গণহত্যার দৃশ্যই ভেসে উঠেছে।
এবাদত বন্দেগিরত ও ঘুম-তন্দ্রায় আচ্ছন্ন রাজপথের হাজার হাজার মানুষকে
যুদ্ধক্ষেত্রের মতো হত্যাভিযানের ঘটনা নিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর আর সামাজিক
গণমাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও দেখে মানুষের মধ্যে সংশয় ক্রমেই দূর হয়ে যাচ্ছে। জুরাইন-মাতুয়াইলে
গণকবরে হেফাজতের আলেমদের কবর দেয়ার বর্ণনা একজন বাক প্রতিবন্ধী ইশারা ইঙ্গিতে
যেভাবে দিয়েছেন, তা একটি লোমহর্ষক দৃশ্যই যেকোনো দর্শককে স্মরণ করিয়ে দেবে। আল
জাজিরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্্রমন্ত্রী ডা: দীপু মনির বক্তব্যও প্রচার করেছে। তিনি
উল্লেখিত নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ খণ্ডন করতে যা বলেছেন, তার চেহারার
অভিব্যক্তিতে আরো কিছু ফুটে ওঠে। তিনি বলেছেন, ঢাকার ২৩টি টিভির সাংবাদিকদের
সামনে এই অভিযান চালানো হয়েছে। সেসব টিভিতে তো হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দেখানো হয়নি।
তবে তিনি অভিযানের সময় দু’টি টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেননি।
টেলিভিশনগুলো সেদিনের অভিযানের ফুটেজ সম্প্রচারের ব্যাপারে মুক্ত ও স্বাধীন ছিল কি
না, সেটিও তিনি উল্লেখ করেননি।
হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হলেও সে দাবি অনেকে
মানতে চান না। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকার অনুমতি
নিয়ে তারা রাতেও শাপলা চত্বরে অবস্থান করেছে। এ অবস্থান বেআইনি ছিল। এরকম একটি
অবস্থান আমরা শাহবাগ চত্বরেও প্রত্যক্ষ করেছি কয়েক মাস ধরে। সেখানে দিনের পর দিন
অবস্থানের কোনো অনুমতি ছিল না গণজাগরণ মঞ্চের। কিন্তু সে অনুমতিহীন অবস্থানে কোনো
বাধা দেয়া দূরে থাক বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা
করেছে। হেফাজতের আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লির শান্তিপূর্র্ণভাবে অবস্থানে
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন কি ক্ষতি হতে পারত সে প্রশ্ন অনেকের। নিরস্ত্র কিছু
অরাজনৈতিক ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাবেশে সর্বাত্মক যুদ্ধাভিযান কেন চালানো হলো তার
যুক্তি অনেকে খুঁজে পাচ্ছেন না। অভিযানের সময় সব বাতি বন্ধ করে নিকষ অন্ধকারে যা
ঘটানো হয়েছে, তার প্রত্যক্ষদর্শী সব লোক বিদায় হয়ে যায়নি। এ ঘটনার প্রকাশ হয়তো
একদিন ঘটবে। যদিও আমেরিকান টিভি সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, এ ঘটনায়
সত্যিকার অর্থে কত লোক মারা গেছে তা আর কোনো দিন জানা যাবে না।
শাপলায় সেদিন নিহতদের গণকবর দেখিয়েছে আল জাজিরা। তাদের তালিকাও
গণমাধ্যমে আসতে শুরু করেছে। ৬৭ জনের একটি তালিকায় শুধু ঢাকার মাদানিনগর মাদরাসারই
ছাত্র-শিক্ষক রয়েছেন ১৭ জন। এ তালিকায় ১০ জনের মতো রয়েছেন হাফেজে কুরআন। যারা
আর কোনো দিন আল্লাহর কালাম তেলওয়াত করে শোনাবেন না তারাবিহ নামাজের মুসল্লিদের।
মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক আলেম থেকে শুরু করে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ অনেকেই রয়েছেন
হেফাজতের শহীদদের এ তালিকায়।
হেফাজতে ইসলামের ধর্মপ্রাণ মানুষদের সমাবেশে এ অভিযানে আসলে কী
লক্ষ্য অর্জন করতে চেয়েছিলেন পরিকল্পনাকারীরা। তারা কি বাংলাদেশ থেকে ইসলামের
প্রতিরোধ শক্তিকে নিঃশেষ করতে চেয়েছিলেন? অথবা কোনো অন্যায় বা
অনাকাক্সিত আগ্রাসনের সামনে সম্ভাব্য বাধার শিকড় উপড়ে ফেলতে চেয়েছিলেন? হেফাজত গঠন
হয়েছিল সরকারের নারীনীতি ও শিক্ষানীতিতে ইসলামের পরিপন্থী বিষয়ের প্রতিবাদ
জানানোর জন্য। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ বাংলাদেশের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি থেকে শুরু
করে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষা ক্ষেত্রে ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত সব প্রতিষ্ঠান
বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানায়। এর প্রতিবাদ ওঠে হেফাজতে ইসলাম থেকে। এ আন্দোলনে এমন
একজন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব নেতৃত্ব দেন, যিনি বাংলাদেশের আলেমদের
ওস্তাদ ও সর্বজন শ্রদ্ধেয়। হেফাজতের আন্দোলন সবচেয়ে জোরালো হয় শাহবাগের গণজাগরণ
মঞ্চের কিছু উদ্যোক্তা ব্লগারের আল্লাহ ও তার প্রিয় নবী সা:-এর প্রতি কুৎসামূলক
লেখালেখি ও প্রচারণার বিরুদ্ধে। এ ধরনের লেখালেখি যেখানে অমুসলিম পশ্চিমা দেশেও
মেনে নেয়া হয় না, সে ক্ষেত্রে ১৫ কোটি মুসলিমের বাংলাদেশে এ উদ্যোগের পৃষ্ঠপোষক
গণজাগরণ মঞ্চের ব্যাপারে সঙ্গতভাবে ুব্ধ হয়ে ওঠে ধর্মপ্রাণ মানুষ। হেফাজতে ইসলাম
ধর্মীয় ইস্যুতে আন্দোলনকারী হিসেবে এতে উদ্যোগী ভূমিকা রাখে। সে উদ্যোগে সাড়া
দিয়ে দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠী তাদের লংমার্চ, শানে রেসালত ও অবরোধ
কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
শক্তি প্রয়োগ করে আন্দোলন দমন করার প্রচেষ্টা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
নেয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। কোনো কোনো দেশে অহিংস ও নিরস্ত্র আন্দোলনকে মাত্রা
ছাড়ানো অস্ত্রের শক্তি দিয়ে দমন করতে গিয়ে বিপত্তিও ঘটছে। মধ্যপ্রাচ্যের
দেশগুলোর জাগরণ দমনে তিউনেসিয়া ও মিসরে সরকার শক্তি প্রয়োগ করেছে। তাতে
প্রাণহানিও ঘটেছে। কিন্তু লিবিয়া ও সিরিয়ায় সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে নির্বিচার
হত্যাযজ্ঞ চালানোর যে দৃষ্টান্ত সেটি সেখানে ছিল না। ফলে প্রথম দু’দেশ আর শেষোক্ত দুই দেশের
চিত্র অভিন্ন হয়নি। লিবিয়া ও সিরিয়া কোনো গণতান্ত্রিক দেশ নয়।
একনায়কতান্ত্রিক শাসনে জনগণ ঘুরে গেলে শাসকরা সেটি বুঝতে পারেন না। মিসরে
গাদ্দাফি অথবা সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সেটি উপলব্ধি করেননি। সেখানে গণবিস্ফোরণ
পরিণত হয়েছে প্রতিরোধ যুদ্ধে। এ যুদ্ধে গাদ্দাফি এখন নেই, বাশার আল আসাদ
যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ লড়াইকে অনেকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখেন এবং মূল্যায়নও
করেন ভিন্নভাবে। কেউ এটাকে মার্কিন ষড়যন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী
রাষ্ট্রনায়কদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখেন। আবার কেউ মনে
করেন এটি দীর্ঘ দিন নিষ্পেষণে থাকা জনগণের বিদ্রোহ। মূল্যায়ন যে যেভাবেই করুক না
কেন, দুই শাসকের একজনও জনগণের কাছে খুব প্রিয় নন। ফলে তারা কোনো সময়
সঙ্কট নিরসনে জনগণের মতামত গ্রহণ করার ব্যাপারে সম্মত হননি। শক্তিমত্তার লড়াইয়ে
ক্ষমতার নিষ্পত্তির পথ বেছে নিয়েছেন তারা। এতে মৃত্যুর সংখ্যা শত থেকে হাজার, হাজার থেকে লাখে
উন্নীত হয়েছে। মানবিক বিপর্যয়ে একটি দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার
মুখে পড়েছে।
লিবিয়া সিরিয়ার সাথে বাংলাদেশের মিল খুব কম ক্ষেত্রেই রয়েছে।
ছোটখাটো ব্যত্যয় ছাড়া গত আড়াই দশক ধরে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের মাধ্যমে
ক্ষমতার পরিবর্তন হয়ে আসছে। সে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলনও ঘটছে। সে ধারার
ব্যতিক্রম ঘটানোর চিন্তা যে দলই করেছে শেষ পর্যন্ত তা সে দলের জন্য ইতিবাচক ফল
নিয়ে আসতে পারেনি। ষাট ও সত্তর দশকের বড় অংশজুড়েই ছিল সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের
জয় জয়কার। তখন ফ্যাশনে পরিণত হয় বিপ্লবী কবিতা রচনা করার। এ ধরনের একটি কবিতার
কয়েকটি লাইন ছিল এরকমÑ ‘হয় এস্পার, নয় ওস্পার, মাঝামাঝি কোন পথ নেই আর। হয় হাতকড়া নয় হাতিয়ার, মাঝামাঝি পথ নেই
আর।’ সে সময় ও ধারা একবিংশ শতাব্দীতে এসে আর অব্যাহত থাকেনি। এখন
মধ্যমপন্থার প্রতি বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ ও ব্যবস্থা ঝুঁকে পড়েছে। সোভিয়েত
ইউনিয়নে সাম্যবাদী ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে অনেক গণতান্ত্রিক ধারার রাষ্ট্র তৈরি
হয়েছে। চীনা সরকার মুক্তবাজারের সাথে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার এমনভাবে সমন্বয়
করেছে যে, জনগণের কল্যাণব্যবস্থার সাথে ব্যক্তি উদ্যোগ এক হয়ে দেশটির
অর্থনীতিতে বিপ্লব নিয়ে এসেছে। আবার অন্য দিকে মুক্ত গণতন্ত্রের দেশ হিসেবে
পরিচিত ইউরোপ আমেরিকার বেশির ভাগ দেশ মত প্রকাশের
স্বাধীনতার সাথে সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচির সমন্বয় ঘটিয়ে ধনী ও গরিবের ব্যবধান
ঘোচানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এমনকি আমেরিকার সরকার অর্থনৈতিক ধস মোকাবেলা করতে গিয়ে
বড় বড় ব্যাংক বীমা ও করপোরেট হাউজকে ভর্তুকি দিয়ে বেকারত্ব প্রতিরোধ ও নতুন
কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। এ ধরনের উদ্যোগের সাথে ঐতিহ্যগত পুঁজিবাদী
দর্শনের বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। বিশ্বের দেশে দেশে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য
বিগত শতকের প্রথমার্ধ থেকে যেসব আন্দোলন সক্রিয় ছিল তাদের কর্মপন্থায়ও পরিবর্তন
এসেছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তনকে গ্রহণ করে তারা রাতারাতি ইসলামি
বিপ্লবের পরিবর্তে ইসলামের আলোকে ধারাবাহিক সমাজ পরিবর্তনের কৌশল গ্রহণ করেছে।
বিশ্বব্যাপী যেখানে রাষ্ট্র ও মতাদর্শগতভাবে সমন্বয় ও সহনশীল
মধ্যপন্থার দিকে সবাই ঝুঁকে পড়ছে, সেখানে বাংলাদেশ কি এখন উল্টো
দিকে যাত্রা শুরু করছে! এ প্রশ্ন আজ অনেক বড় হয়ে দেখা দিয়েছে সরকারের শক্তি
প্রয়োগের কৌশলের কারণে। আওয়ামী লীগ দলীয় ইতিহাসে যে ক’বার বাংলাদেশের
রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে, প্রতিবারই জনগণের সমর্থন নিয়েই এসেছে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব
পাকিস্তানের মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। সে রায়ের ওপর ভিত্তি করে
স্বাধীনতার পর সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ১৯৭৩ সালের নির্বাচন নিয়ে যত বিতর্কই
থাক না কেন, কেউ এ দাবি করে না যে, জনগণ অবাধভাবে মত প্রকাশের
সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগ তখন নির্বাচিত হতে পারত না। ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটেই
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনে যে সূক্ষ্ম কারচুপির কথা বলা
হয়, তা না হলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যেত বলেই সবাই মনে করেন। অন্য দিকে ১৯৭৫
সালে একদলীয় বাকশালব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পর যে কারণেই হোক, আওয়ামী লীগ
ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। ২০১৩ সালের নির্বাচনকে একতরফা করা যেতেই পারে। ১৮ দলকে
নির্বাচনে আসতে না দিলেই সেটি হয়ে যায়। কিন্তু সেই একতরফা নির্বাচনের কৌশল বা
আয়োজন যেটিই করা হোক না কেন, তা যে শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করা যাবে তার নিশ্চয়তা কোথায়? বাংলাদেশের
অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ভেতর থেকে দেখা হলে অনেক কিছু দৃষ্টিতে আসবে। এর সাথে
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যা হচ্ছে তারও হিসাব করার প্রয়োজন রয়েছে। কেন জাতিসঙ্ঘের
প্রতিনিধি বাংলাদেশের নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার উদ্যোগে জড়িয়ে পড়লেন, কেন সবার
অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে পশ্চিমা দেশের স্থানীয়
কূটনীতিকেরা বার বার বলছেন, কেন ১০ মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূত দু’পক্ষের রাজনৈতিক বিরোধ মীমাংসায় এতটা উদগ্রীব তা নিয়ে সরকারের
নীতিনির্ধারকদের ভেবে দেখা প্রয়োজন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, একতরফা নির্বাচন
অথবা আইন না করে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে একদলীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার
কাজ বাংলাদেশে সহজ তো হবেই না, হয়তো আদৌ সম্ভব হবে না।
হেফাজতে ইসলামের দাবি অনুসারে সেদিনের ঘটনায় দুই সহস্রাধিক নিহত
হওয়া আর সরকারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১১ জন মারা যাওয়ার মাঝামাঝি একটি সত্য
নিশ্চয়ই রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে সেদিকে ইঙ্গিত
করা হচ্ছে। শাপলার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মাত্রা ও গভীরতা যে পর্যায়েরই হোক না কেন, কোনো গরিষ্ঠ
শক্তিকে উপড়ে ফেলার চেষ্টা চূড়ান্তভাবে সফল হয় না। সমঝোতা, সহিষ্ণুতা আর মধ্যম
পন্থাই বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে পারে শান্তি ও স্বস্তি। সেই উপলব্ধি আজকের দিনে সব
পক্ষের বড় বেশি প্রয়োজন বলে মনে হচ্ছে। ।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন