‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ
করিয়াছিল যে সে আগে মরে নাই। তেমনিভাবে সুখরঞ্জন বালী বাঁচিয়া থাকিয়া প্রমাণ
করিল যে, আমরা অনেকেই বাঁচিয়া নাই। মরিয়া গিয়াছি।’
মুশকিলটি হলো, নিজেদের এই মরণ নিজেরা বুঝতে পারছি না। সত্যিকার অর্থেই আমাদের আত্মা
বা বিবেকের মৃত্যু হয়েছে। স্বল্পশিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত সুখরঞ্জন বালী আরো কিছু
বাস্তব লেসন বা শিক্ষা আমাদেরকে দিয়েছেন। আজকে বিরাট বিরাট ডিগ্রিধারী কিংবা বড়
বড় পাস দেয়া সম্পাদক, প্রফেসর, সমাজচিন্তক বা কলামিস্ট এ শিক্ষাটি দিতে পারেননি। সুখরঞ্জন বালীর মতো
অশিক্ষিত বা স্বল্পশিক্ষিত মানুষগুলো যদি কোনো চান্সে সম্পাদক, বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট হতে
পারতেন, তখন নিঃসন্দেহে দেশ ও সমাজ আজকের চেয়ে অনেক নিরাপদ ও বাসযোগ্য হতে
পারত।
প্রকৃতি নামের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই সুখরঞ্জন বালীরা গ্র্যাজুয়েট
হয়েছেন। ১৯৭১ সালে তার ভাইকে কে বা কারা হত্যা করেছে, তা ভালো করেই
জানেন। ভাইয়ের আসল হত্যাকারীকে তুলে আনতে পারলে এই বালী হয়তো বা বাঘের মতো গর্জে
উঠতেন। কাজেই সরকারের বিশেষ বাহিনী কিংবা বিশেষ চেতনার লোকজন যখন তাকে তাদের
কথামতো সাক্ষী দিতে বলেন, তখন বেঁকে বসেন এই সুখরঞ্জন। তিনি নিজের ও পরিবারের সব সুখ বিসর্জন
দিয়ে যে কথাটি বলার সাহস করেছেন, সেই কথাটি শুনতে আমাদের কান প্রস্তুত নয়। গত চল্লিশ বছর আমাদের
কানটিকে সেভাবে প্রস্তুত করা হয়নি।
নিজের মনের শান্তির জন্য একটি ব্যাখ্যা তৈরি করে নিয়েছি যে, টাকা দিয়ে এই
সুখরঞ্জনকে কিনে ফেলা হয়েছে। প্রশ্নটি হলো, আসামিপক্ষ টাকা দিয়ে যে
সাক্ষীকে মিথ্যা কথা বলাতে পেরেছে, রাষ্ট্রশক্তি বা তার চেয়েও
আরো বড় শক্তি সেই সাক্ষীকে আরো বেশি টাকা দিয়ে কিংবা আরো বড় ভয় দেখিয়ে সত্য
কথাটি বলাতে পারছে না কেন ? যে লোক একবার
টাকা ও ভয়ের সামনে নতজানু হয়, সে দ্বিতীয়বারও হতে পারে। তার পরেও হচ্ছে না কেন ? ? ?
সুখরঞ্জন বালী আমাদেরকে যা দেখিয়েছেন, তা দেখার মতো চোখ বা মন আমাদের
অনেকের কাছ থেকেই দূরে সরে গেছে। সুখরঞ্জন বালী বেঁচে থেকে প্রমাণ করেছেন, আমরা আসলেই বেঁচে
নেই। আমাদের মধ্যকার মানবিক বোধ বা প্রজ্ঞার মরণ হয়েছে। অনেকেই এখন শুধু একটি
দেহের বোঝা বহন করে চলছি।
মজার ব্যাপার হলো, এই সুখরঞ্জন বালীর বিষয়টি যখন প্রথম আলোচনায় আসে, তখন এ দেশের
মূলধারা বলে কথিত মিডিয়া তার ব্যাপারে ঋষিবৎ নীরবতা পালন করে। অনুসন্ধানী
রিপোর্টে যারা বিশেষ সুনাম কুড়িয়েছেন তাদের কাছেও এই ঘটনাটির কোনো সংবাদমূল্য
সৃষ্টি হলো না ! হাজার হাজার সংবাদকর্মী ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায়
সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিলেও এখনো এই দেশে সেই পেশাদারিত্ব সৃষ্টি হলো না।
আমার মনে হচ্ছে, এই সুখরঞ্জন বালীকে যদি প্রকৃতি থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত একজন সাংবাদিক
হিসেবে গণ্য করি, তবে তিনি এ দেশের শত শত সংবাদকর্মীর কাছে একটি মডেল হিসেবে গণ্য হতে
পারেন। জাতীয় জীবনে যারা কোনো মডেল বা আদর্শ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা এই সুখরঞ্জন
বালীকে আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। তার এই ভূমিকা জামায়াতে ইসলামীর মতো
সংগঠনের কত বড় উপকার করে ফেলছে, হিন্দু ধর্মের অনুসারী সুখরঞ্জন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হননি। অন্য অনেক
সাক্ষীর মতো পালিয়ে থেকে তিনিও সবার কাছ থেকে নিরপেক্ষ ও নিরাপদ থাকতে পারতেন।
নিজের বিবেকের দংশন কমানোর জন্য একধরনের গোঁজামিল দিয়ে নিজের বিবেকটিকেও
সান্ত্বনা দিতে পারতেন; কিন্তু তিনি তা করেননি। তথাকথিত ‘নিরপেক্ষ’ হয়ে বসে থাকেননি। বিবেকের
একটা দংশনে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদটি দেশের মানুষকে জানাতে চেয়েছেন। একটি সত্য বলার
জন্য নিজের ও পরিবারের জন্য সমূহ বিপদ টেনে এনেছেন।
টোডরমল সম্রাট আকবরকে একবার প্রশ্ন করেছিলেনÑ জাঁহাপনা, আপনার খাবার যদি বন্ধ করে দেয়া হয় তখন কী করবেন ? সম্র্রাট উত্তর
দিয়েছিলেনÑ খাবারের জন্য দরকার পড়লে
অর্ধেক রাজত্ব দিয়ে দেবো। তখন আবার প্রশ্ন করেন, এই খাবারের নির্গমন ( টয়লেট
করা) যদি জোর করে বন্ধ করে ফেলা হয়, তখন কী করবেন ? একটু ভেবে সম্রাট
জবাব দিয়েছিলেন, তখন পুরো রাজত্বটি লিখে দিয়ে দেবো।
সুখরঞ্জন বালী সরকারকে কিংবা সরকারের প্রসিকিউসন বডিকে অনেকটা এই
অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিলেন। পুরো রাজত্ব না হলেও নিজের জন্য অনেক কিছুই আদায় করতে
পারতেন এই সুখরঞ্জন বালী। মঞ্চে উঠে খাসজমি চাওয়া সেই বিখ্যাত পাগল সম্পর্কে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, ‘পাগলও তার নিজের স্বার্থ বোঝে।’
কিন্তু সুখরঞ্জন বালীর মতো কিছু পাগল বা বিবেক রয়েছেন যারা নিজের
স্বার্থটুকুও বোঝেন না। এই সুখরঞ্জন বালীর মতো আরো কিছু
মানুষ যদি সমাজের বিভিন্ন স্তরে সৃষ্টি হয়ে যেত, তবে নানা রঙের বাজিকরেরা এই
দেশের সব কিছু দখল করতে পারতেন না। এই দেশ ও সমাজ আজকের মতো নষ্টদের অধিকারে চলে
যেত না।
কারণ আমরা সত্য বলার আগে দেখে নিইÑ এই কথাটি বললে কে
উপকৃত হবেন, আর কে বিপদে পড়বেন। বিবেচনায় থাকে কে খুশি হবেন, আর কে নারাজ
হবেন। মোটের ওপর নিজে কী হিসেবে অভিহিত হবেন, বিবেচনায় তা থাকে সবার আগে।
বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এ ধরনের একটা প্যারালাইজড অবস্থায় অবস্থান করাতেই জাতীয় জীবনে
বিভিন্ন জটিলতায় আমরা আটকে গিয়েছি। কিংবা কেউ আমাদের আটকে ফেলেছে।
সাভারের রবীন্দ্রনাথ সাহার জমিটি দখল করেছে সোহেল রানা নামে এক হিরো।
তাকে স্নেহের চুম্বনটি দিয়েছেন জনৈক মুরাদ জং। এই মুরাদ জং আবার সেই রাজনীতির
একজন দিকপাল যারা ‘মদিনার সনদ’ অনুযায়ী রাষ্ট্রটি চালাচ্ছেন।
তথাকথিত এই মদিনা সনদের সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি হিসেবে যাদের গণ্য করা হয়, এই রবীন্দ্রনাথ
সাহারা তাদের অন্যতম। রাজনীতির এই ‘জং’দের হাতে নিজের জমিটি হারিয়ে সেই রবীন্দ্রনাথ সাহা পাগল হয়ে গেছেন।
আমরা যারা সাদা চোখে এসব দেখতে পারি না, তাদের ভোঁতা অনুভূতিগুলোকে
জাগ্রত করার জন্য রানা প্লাজার মতো ঘটনাগুলো কিছুটা কাজে লাগতে পারে। এতগুলো
মানুষের জীবনের বিনিময়েও যদি আমাদের এই বোধটি ফিরে আসত, তারপরেও একটি
সান্ত্বনা খুঁজে পাওয়া যেত।
সমাজের এই ‘জং’দের বিভিন্নপর্যায়ে আমরাই তৈরি করেছি। অপরের চোরগুলোকে ধরিয়ে
দিচ্ছি; কিন্তু নিজের চোরগুলোকে আগলে রাখছি। তাদের ফুলের মতো পবিত্র চরিত্র
নিয়ে আমরা নিজেদের গলা ভেঙে ফেলছি। এই পাপে সবাই অংশীদার। এটা আমাদের সমষ্টিগত
পাপ। তবে এই পাপে সবার ওপরের ভাগিদার মিডিয়া জগৎ। প্রকৃত অর্থেই, একটি বস্তুনিষ্ঠ
মিডিয়া জগৎ সৃষ্টি হলে এই অভাগা জাতির ভাগ্যটিই পরিবর্তন হয়ে যেত।
যে মিডিয়া রানা প্লাজা থেকে উদ্ধার পাওয়া বিধ্বস্ত মানুষগুলোকে
হাঁফ ছাড়ার সুযোগ না দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্যে মাইক্রোফোন এগিয়ে দেয়, সেই মিডিয়া
সুখরঞ্জন বালীর অপহরণ এবং পরবর্তীপর্যায়ে নিরুদ্দেশ হওয়ার ব্যাপারে টুঁ শব্দটি
উচ্চারণ করেনি। পারলে কবরে নেমে পড়ে লাশের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া জানতে চায়, সেই অনুসন্ধানী
প্রতিবেদকেরাও কোনো প্রতিবেদন তৈরি করেননি।
আমাদের পরিকল্পনা যাই থাকুক না কেন, স্রষ্টার নিজেরও একটা
পরিকল্পনা রয়েছে। সেই পরিকল্পনা মতোই সুখরঞ্জন বালী এখনো বেঁচে রয়েছেন। হংকংয়ের
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং লন্ডনের দ্য বার হিউম্যান রাইটস কমিটি সুখরঞ্জন বালীর
অপহরণ, বর্তমান অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ
করেছে।
এই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সুখরঞ্জন বালীকে কলকাতার
জেলখানাতে খুঁজে পেয়েছেন। তাদের কাছে সুখরঞ্জন তার অপহরণ এবং ইন্ডিয়ান বাহিনীর
কাছে সমর্পণের বিস্তারিত কাহিনী তুলে ধরেছেন। অর্থাৎ আমাদের মিডিয়া এটিকে যতটুকু
চাপাতে চেয়েছিল আজ তা আরো বেশি করে প্রচারিত হয়ে পড়েছে।
৬ মের গণহত্যার ব্যাপারে এ দেশের মিডিয়ার নীরবতা বিশ্বখ্যাত
ইকোনমিস্টের চোখে ধরা পড়েছে। অপারেশন ফ্যাশ আউট শুরু করার আগে সরকার সব
মিডিয়াকর্মীকে শাপলা চত্বর থেকে বের করে দিয়েছিল। চড়া নিউজ ভ্যালু থাকা
সত্ত্বেও সবেধন দু’টি টিভি চ্যানেল হেফাজতের অবরোধ কর্মসূচিটি সম্প্রচার করছিল। সরকার
গায়ের জোরে এই দু’টি টিভি চ্যানেলই বন্ধ করে দেয়। পুরো এলাকার সব বাতি নিভিয়ে দেয়।
তার পরেও আমাদের আদুরে দীপু মনি বিদেশী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দেশের ২৩টি টিভি
চ্যানেল অপারেশনের সব ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। এমন ডাহা মিথ্যা একটি দেশের মন্ত্রী
উচ্চারণ করলেও ২৩টি চ্যানেলের একটিও প্রতিবাদ করেনি। এ ধরনের অচেতন তেইশটি নয়, তেইশ শ’ চ্যানেল থাকলেও কাজ হবে না। কারণ এরা জীবিত নয়, মৃত। সুখরঞ্জন
বালী বেঁচে থেকে প্রমাণ করেছেন এরা বেঁচে নেই, এরা মৃত।
একটা দেশে মিডিয়া সজাগ বা সরব থাকলে কোনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে
উঠতে পারে না। মিডিয়া উন্মুক্ত থাকলে কোনো দেশে কখনোই গণহত্যা সংঘটিত হতে পারে
না। কোনো দেশের মিডিয়া উন্মুক্ত হলে সে দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হতে পারে না। অনেক
হতাশার মধ্যেও এ ব্যাপারে আমাদের কিছু অর্জন ছিল। নিজেদের কোনো ক্ষোভ বা বোকামির
জন্য সেই অর্জনটিকে যেন নষ্ট করে না ফেলি।
একজন মানুষ হিসেবে কোনো দলের প্রতি ভালোবাসা বা ঘৃণা থাকতেই পারে।
সাংবাদিক, কলামিস্ট বা লেখকেরা সমাজের অত্যন্ত অনুভূতিসম্পন্ন অংশ হওয়ায় এই
ঘৃণা বা ভালোবাসা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন না। সেই ভালোবাসা বা ঘৃণা যেন আমাদের
স্বাভাবিক মানবিক বোধ বা সেন্সরটিকে ত্রুটিপূর্ণ না করে ফেলে সে দিকে খেয়াল রাখা
দরকার। নিজের প্রিয় দলটি স্বৈরাচারী বা অগণতান্ত্রিক হয়ে পড়লে, তাকে আঙুল দিয়ে
দেখিয়ে দেয়ার দায়িত্বটিও আমাদের।
চল্লিশ দিন নীরব থাকার পর দেশের সম্পাদকেরা অন্য একজন সম্পাদকের ওপর
কৃত অবিচারের ব্যাপারে মুখটি খুলেছেন। অনেক দেরিতে হলেও এই অনুভূতিটি জাগ্রত
হওয়ায় দেশের ১৫ জন সম্পাদক প্রশংসা পেতে পারেন।
সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ায় আনাগোনা বেড়ে
গেছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া খবর এটি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব
চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। সরকারের এত হর্তা-কর্তার এক সাথে আগমনকে
লুকিয়ে রাখার জন্য কেউ কেউ বাসে মালয়েশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর এসেছেন। তা নিয়েও
কানাঘুষা শুরু হয়েছে।
সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে একটা সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টির জন্যে এই
আগমনটি হয়ে থাকলে দেশের জন্য নিঃসন্দেহে একটি খুশির খবর হবে;
কিন্তু অনেকেই বিষয়টি একটু ভিন্নভাবে দেখেছেন। দেশের গণতন্ত্রের
হেফাজতের জন্য নয়, নিজেদের সম্পদের হেফাজতের জন্য এসব শুভ আগমনগুলো সংঘটিত হয়ে থাকতে
পারে। কারণ সরকারের শেষ বছর। নিজেদের অর্জিত সম্পদের হেফাজতই এখন বড় বিবেচ্য
বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লেখাটি যখন শেষ করে এনেছি তখন অনলাইন পত্রিকাগুলোতে সৈয়দ আশরাফের
বক্তব্যটি ছাপা হয়েছে, সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়েছেন।
অনেক খেলা খেলে সরকার শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কান্ত বলেই মনে হচ্ছে।
সরকারের ভেতরটি খালি হয়ে গেলেও বাইরে থেকে একটি শক্ত ভাব বজায়
রাখার চেষ্টা করছেন। এই সরকারের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা জনরোষের শিকার হতে পারেন তা
জাতিসঙ্ঘও অনুধাবন করতে পেরেছে। বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎকারে জাতিসঙ্ঘের
সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এমন একটা নিশ্চয়তাও নাকি বেগম জিয়ার কাছ থেকে আদায়
করতে চেয়েছেন, যাতে সরকার পরিবর্তন হলে বর্তমান সরকারের লোকেরা জনরোষের শিকার না হন।
অনেক আগেই এবিএম মূসা সরকারের লোক দেখামাত্রই ‘তুই চোর’ বলতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমিও মনে করি, ঘৃণা প্রকাশের
জন্য এ ধরনের অহিংস পদ্ধতিই উত্তম। তবে এই সরকারের লোক দেখামাত্র ‘তুই চোর’-এর সাথে আরো কিছু শব্দ যোগ হতে পারে। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর
রহমানের কথাটি দিয়ে হতে পারে (সুজনও স্মরণ করেছে ) ‘তুই বাজিকর’। সিএনএনের আমানপুরের বাস্তব
উপলব্ধি দিয়ে হতে পারে ‘ওয়াও তুই মিথ্যাবাদী’।
তবে বর্তমান ১৪ দল যা করেছে এবং যার জন্য তারা আজকে এই অবস্থায়
উপনীত হয়েছে, পরবর্তী সরকার কিংবা সরকারি দলটি হুবহু তা অনুসরণ করা ঠিক হবে না।
কোনো অবস্থাতেই বা কোনো নামেই কোনোরূপ সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঘটানো ঠিক হবে না।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বর্তমান সব
অপশাসনের জবাবটি দিতে হবে।
তার জন্য যে ধৈর্য ও প্রজ্ঞার প্রয়োজন, তা এখন থেকেই
আহরণের কাজটি শুরু করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলে আর কোনো জঙ্গলের শাসন
দেখতে চাই না। আর কোনো লিঞ্চিং মবের শাসন চাই না। আর কোনো রানা-জংদের শাসন চাই না।
আর কোনো বাজিকরের সৃষ্টি দেখতে চাই না। আর কোনো লুটেরা দেখতে চাই না। আর কোনো ‘দরবেশ বাবাজী’ দেখতে চাই না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন