আজ ক’দিন আমার মনে শুধু একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে, তা হলোÑ এ সরকার আর কত ভুল করবে? সরকার ভুলের পর ভুল করছে, আর পুরো জাতিকে তার খেসারত দিতে হচ্ছে। সেই খেসারতের মাত্রা সাধারণ পর্যায়ে থাকছে না; চলে গেছে জীবন দেয়ার পর্যায়ে। এখন প্রতিদিন জাতিকে ‘রক্তমূল্য’ দিতে হচ্ছে। কিন্তু সরকার ভুল করবে, আর এর খেসারত জনগণ দেবে কেন? এর জবাব নেই। মুশকিল হলো জনগণ সুনির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাস করেÑ বাইরে চলে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাদের হাতে অনেক কিছুই নেই। নেই রাষ্ট্রীয় মতা, নেই প্রশাসন, নেই পুলিশ। অনেকের হাতে জীবন বাঁচানোর মতো অর্থবিত্ত নেই। চাইলেই সরকারের হাত থেকে তারা মুক্তি পেতে পারে না। সে কারণে নিরুপায় হয়ে নীরবে খেসারত দিয়েই চলতে হচ্ছে অসহায় জনগণকে। অথচ কথা ছিল, জনগণের পাশেই দাঁড়াবে সরকার। কিন্তু এখন খোদ সরকারই জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, বেড়ায় তে খেতে শুরু করেছে। কোথায় যাবে জনগণ? সরকার যেমন এখন আর জনগণের বন্ধু নয়, তেমনি বিরোধী দলও সেভাবে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। সে েেত্র সাধারণ মানুষ প্রতিদিন নিজেদের শুধু অসহায় রূপেই দেখছে। তবে এ কথা ঠিক, শুধু জনগণই খেসারত দেবে না; এসব ভুলের জন্য এ সরকারকেও খেসারত দিতে হবেÑ হয়তো এখন নয়, আরো পরে। নিশ্চয়ই সেদিন আজকের তিগ্রস্ত আমজনতা মুক্তি পাবে; হয়তো তারাই মুক্তির পথ বের করে নেবে।
ভুলের পর ভুল : এ সরকার একের পর এক ভুল করেই চলেছে। ভুলে ভুলে রাষ্ট্রযন্ত্র কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও সে সময় সরকারের নেয়া নানা ব্যবস্থায় ভুল হয়েছে বলে মনে করে বোদ্ধা মহল। বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে কুইক রেন্টাল পদ্ধতিতে ভুল করেছে সরকার। পদ্মা সেতুতে ভুল করেছে সরকার। সেতু প্রকল্প ও দুর্নীতির অভিযোগ হ্যান্ডেল করতে গিয়ে বিশ্বব্যাংকের সাথে ভুল করেছে তারা। শেয়ারবাজারে সরকারের মোটা দাগের ভুল হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং রিপোর্ট পেয়েও তা কার্যকর না করে আরেক ভুল করেছে সরকার। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার না করে অন্য ভুল এ সরকারই করেছে। ব্যাংক লুটপাট হয়েছে অথচ অজ্ঞাত কারণে তার সুষ্ঠু সমাধান না করে উল্টো দোষীদেরই আবার ঋণের নামে পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ডেসটিনি কেলেঙ্কারি কম তি করেনি দেশের। অথচ তার চেয়ারম্যান জেনারেল হারুন সরকারপন্থী হওয়ায় পার পেয়েছেন। বিচারব্যবস্থা নিয়ে সরকার কোনোভাবেই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বিস্তর বিতর্ক সৃষ্টি করেছে সরকার। গণমাধ্যমের ওপর সরকার কতটা খড়গহস্ত তা বলার অপো রাখে না। নির্বাচনী ওয়াদা পালন করতে পারেনি সরকার, তা নির্বোধও বোঝে। ঘরে ঘরে চাকরি সৃষ্টি হয়নি, বিনামূল্যে সার পায়নি কৃষক, ১০ টাকা কেজিতে চাল বিক্রি হয়নি কোনো দিন। উল্টো সারের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। আরো স্পষ্ট করে বলা যায়Ñ ইউরিয়া সার এ সরকারের আমলে যে দামে বিক্রি হচ্ছে আগে কখনো তা হয়নি।
এত ভুলের মধ্যে সরকার নতুন করে আবার মোটা দাগে বড় দুটো ভুল করেছে। সরকারের এ ভুল সংঘটিত হয়েছে ৬ মে রাতে। কেন তারা রাতের অন্ধকারে এ ভুল করতে গেল তা বুঝতে পারলাম না। প্রথম ভুল হচ্ছে নিরস্ত্র-নিরীহ জনগণের ওপর সরকারি বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম গণহত্যা সংঘটন। দ্বিতীয় ভুলটি হচ্ছেÑ জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করা। হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর হত্যাকাণ্ডের কথায় পরে আসছি। আগে চ্যানেল বন্ধ নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।
দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়ে সরকার যে ভুল করেছে তার মূল্য হবে অনেক বেশি। কারণ দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়ার ফলে গুজব-গুঞ্জন বেড়েই চলেছে। জনগণ ভাবতে শুরু করেছে, সরকার ওই রাতে মতিঝিলে বড় ধরনের হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। আর ১০টা চ্যানেলের সাথে দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টেলিভিশনও সংবাদ কভারেজে ছিল। সব চ্যানেল চালু রেখে সরকার যখন এ দুটো চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে তখন এ কথা জনগণকে ভাবতে বাধ্য করছে, সরকার নিশ্চয় ওই রাতে এমন কিছু করেছে যার ফুটেজ হয়তো দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন প্রচার করেই দেবে এ ভয়ে সরকার চ্যানেল দুটো বন্ধ করে দিয়েছে। সরকার কোনোভাবেই নিশ্চিত হতে পারেনি, এ দুটো চ্যানেলকে ম্যানেজ করা যাবে। এ ছাড়া দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন চ্যানেল সরকারি ঘরানার নয় এমন সত্যও তো অস্বীকার করা যাবে না। বাকি চ্যানেলগুলোকে হয়তো নির্দেশনা দেয়ার প্রয়োজন হবে না, কিন্তু বিশেষ করে দিগন্তকে নির্দেশনা দিলেই যে কথা শুনবে সে নিশ্চয়তাও সরকারের হাতে ছিল না। সে কারণে সরকার চ্যানেল দুটো বন্ধ করে দিয়েছে। জনমনের এ ভাবনার কিন্তু হাত-পা গজাচ্ছে। তারা এটা ভাবতেই পারে, সরকার এমন কিছু নিশ্চয়ই করেছে, যা প্রচারে অন্য চ্যানেলগুলোকে আটকে রাখা সম্ভব হলেও দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশনকে হয়তো বশে আনা যেত না। এসব নানা ভাবনা থেকে ৬ মে রাতের তি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা বেড়েই চলেছে। ‘রাজার ছেলে শেষ পর্যন্ত ঝাঁকে ঝাঁকে কাকের ছানা’ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গেছে; রা করা যাবে না। সে কারণে যতণ পর্যন্ত টেলিভিশন চ্যানেল দুটো আবার সম্প্রচারে আনা না হবে ততণ পর্যন্ত এসব গুজব ও ভাবনা-চিন্তার ডালপালা বেড়েই চলবে। সরকারের সব কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হবে। চ্যানেল দুটো নানা কারণে জনসমাদৃতি পেয়েছিল; হালে দিগন্ত টেলিভিশন ছিল সংবাদ রেটিংয়ে শীর্ষ অবস্থানে। সঙ্গতকারণেই বলা যায় এটা ছিল শীর্ষস্থানীয় জনপ্রিয় চ্যানেল। এ কারণে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার রাতে এ চ্যানেল দুটো বন্ধ করে দেয়াতে জনমনে ধারণা সৃষ্টি হয়েছেÑ নিশ্চয়ই সরকার সে রাতে এমন কিছু করেছে যার কারণে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে, তা না হলে প্রচার হয়ে যেত।
হেফাজতের ওপর হামলা : সরকার হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর ৬ মে রাতে হামলা করেছে। এটা সোজাসাপ্টা নিরেট সত্য কথা হলেও পরের দিন সরকার ও মতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ডাহামিথ্যে কথা বলেছেন যে, ৬ মে রাতে নাকি কোনো হত্যার ঘটনা ঘটেনি, একটি গুলিও চলেনি। অথচ ওই দিন সকাল থেকেই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের কল্যাণে গোলাগুলি ও উচ্ছেদ অভিযানের দৃশ্য দেখা গেছে। সে অভিযানে কত শত গুলি ও টিয়ারগ্যাসের শেল ফুটেছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। ৫ মে দিনের বেলায়ই যেখানে মারা গেছে ১০-এর বেশি মানুষ সেখানে রাতের আঁধারে বাতি নিভিয়ে দিয়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়ে ১০ হাজার র্যাব-পুলিশ ও বিজিবির চালানো অভিযানে মানুষ মরেনি এ কথা কি পাগলেও বিশ্বাস করবে? সরকারই বলেছে ১০ মিনিটের অভিযানে ‘সব সাফ’। এখান থেকেই তো প্রশ্ন ওঠেÑ এত মানুষ দশ মিনিটের মধ্যে কিভাবে সরানো যায় এ কি জাদুমন্ত্র নাকি যে ফুঁ দিলাম আর উড়ে গেল? তার মানে সুপরিকল্পিত অভিযান চালানো হয়েছে এবং তার জন্য প্রয়োজনীয় উপায় উপকরণ সবই ছিল সরকারের হাতে এবং সেভাবেই অভিযান চলেছে। লাশ কত পড়েছে সে কথা নিশ্চিত করে কেউ জানে না, কোনো দিন জানবেও না। কোনো দিন জানা যাবে না। শুধু এটাই জানতে হবে যে, হেফাজতে ইসলাম নামে একটি সংগঠন ছিল যার নেতাকর্মী সবাই ছিলেন আলেম ও মাদরাসা ছাত্র। নিরস্ত্র-নিরীহ এসব আলেম-ওলামা ইসলাম ও মহানবী সা:-এর ইজ্জত রার জন্য রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ করতে গিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আর তাদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকারের হাত। কথিত গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও ছিল না সরকারের আচরণে।
সরকারকে রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে : দুটো েেত্রই মনে হয়েছে জেনেশুনে ভুল করল সরকার। এ ভুলের মাশুল দিতে হবে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে। কী ধরনের তির মুখে পড়তে হবে সরকারকে, রাজনীতিক হিসেবে সরকারের নেতানেত্রীরা বিশেষ করে সরকারের প্রধানমন্ত্রী বোঝেন না এমনটা ভাবার অবকাশ নেই। জনমতকে আস্থায় নিন; গোয়ার্তুমি করে চূড়ান্তভাবে লাভবান হওয়া যাবে না। আমার ধারণা সরকারকে কঠিন মূল্য দিতে হবে। কথায় বলে- চোরের দশ দিন, গৃহস্থের এক দিন। শেষ সময়ে এসে সরকার যে বড় ভুল করেছে তার মূল্য দিতেই হবে রাজনীতির খাতায়, ভোটের মাঠে, সংসদে এমনকি গণভবনেও। অনুমান করি- সব ভুলের মাশুল এক জায়গায় জড়ো হবে এবং তা মহীরুহ আকার ধারণ করবে; চুকাতে গিয়ে ভাণ্ডার খালি হয়ে যাবে।
সরকার নাকি মিডিয়াবান্ধব? : এ সরকার চলতি মেয়াদে মতায় এসে বারবার দাবি করেছে তারা মিডিয়াবান্ধব। কিন্তু আসলে কি তাই? সরকারের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড কি সে কথা বলে? এ সরকার মতায় আসার কিছু দিন পর বন্ধ করে দিলো চ্যানেল ওয়ান। দুই দফায় বন্ধ করেছে জনপ্রিয় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা। বন্ধ করে দিয়েছে সম্প্রচারে আসার অপোয় থাকা যমুনা টেলিভিশন। নতুন করে বন্ধ করেছে দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন। ২০১১ সালে বন্ধ করে দিয়েছে ২৪ ঘণ্টার অনলাইন দৈনিক শীর্ষ নিউজ। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয় টকশো নিয়ে সরকারের আপত্তি-অসন্তুষ্টির শেষ নেই। টকশোকে নানাভাবে তিতা-টক কত কিছুই না বলেছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তার মন্ত্রীরা। আর যে চ্যানেলগুলোকে নিজের মনঃপূত হয়নি সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন। এ জন্য শুধু সুযোগের অপো করেছেন তারা; এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। দুঃখজনক হচ্ছে, যতবার আওয়ামী সরকার পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে ততবারই বহু সাংবাদিক-কর্মচারী বেকার হয়েছেন, অনেকের মুখের ভাত কেড়ে নিয়েছে সরকার। যেখানে সরকার দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে সেখানে উল্টো তারা বেকার বানাচ্ছে। কেমন দেশপ্রেমিক এ সরকার! অথচ কথায় কথায় তারা বলে তারা নাকি জনগণের সেবক! সেবক হয়ে সরকারের আচরণ যদি এই হয়, তাহলে শাসক হলে এরা কী করতেন?
কেন শেষ মুহূর্তে চ্যানেল বন্ধ : এ সরকার এই প্রথম টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করেছে, তা কিন্তু নয়। নিশ্চয়ই পাঠকদের মনে আছে এ সরকার ২০১০ সালে প্রথম বন্ধ করেছে তখনকার শীর্ষ জনপ্রিয় চানেল- চ্যানেল ওয়ান। আমি নিজেও চ্যানেলটিতে কর্মরত থাকার কারণে ভেতর থেকেই জানি- চ্যানেল ওয়ান সে সময় এমন কোনো কাজ করেনি, যে কারণে তা বন্ধ করে দিতে হবে। কিন্তু সরকার তা করেছে। এরপর আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করেছে; পত্রিকাটির সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে রিমান্ডে নিয়ে শেষ পর্যন্ত আইনি-বেআইনি নানাভাবে জেলের ভাত খাইয়ে ছেড়েছে। আবারো সম্প্রতি সেই পত্রিকাটিকে সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। যথারীতি মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়েছে, নির্যাতন চালিয়েছে। সরকারের যদি ভাবমর্যাদা বলে কিছু থেকে থাকে, এসব পদেেপই তা নষ্ট হয়েছে। কিন্তু সরকার বুঝতে পেরেছে বলে মনে হয় না। অনেকটা একই কায়দায় সরকার এবার দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে। আগে যেসব চ্যানেল ও পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে তাতে সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট করেছে, কিন্তু এবার দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন বন্ধ করায় শুধু মর্যাদা নষ্ট হবে না রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে অনেক বেশি। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, সরকার কেন বন্ধ করল দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশন। নানা সমীকরণ থাকতেই পারে, কিন্তু সোজা কথায় বলা যায় ভিন্নমত একেবারেই পছন্দ নয় সরকারের। এ কারণে সিম্পলি পথের কাঁটা সরাতে চেয়েছে সরকার। আর হেফাজতের ওপর সেই রাতে যে অন্যায় আচরণ করেছে, তা কোনোভাবেই ছোটখাটো কিছু ছিল না। সে কারণে টেলিভিশন চ্যানেল দুটো বন্ধ করেছে তা বলার অপো রাখে না। স্রেফ অন্যায় দিয়ে অন্যায় ঢাকার চেষ্টা; অন্য কিছু নয়।
এখন সরকার কী করবে : অনেক ভুল হয়েছে। এবার ভুল শোধরানোর পালা। ভুল মানুষই করে এবং ভুল মানুষকেই শোধরাতে হয়। সরকার এতসব গুজব-গুঞ্জন ছড়াতে না দিয়ে অন্য চ্যানেলগুলোর মতো দিগন্ত ও ইসলামিক টেলিভিশনকে নিয়ন্ত্রণে নিত ও নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় সে টেলিভিশনের সম্প্রচার চালু রাখত সেটাই ছিল সরকারের জন্য মন্দের ভালো। তাহলে সত্যমিথ্যার মিশেলে এত কথা ময়দানে জমা হতো না। বরং সরকার তার অনেক কৃতকর্ম ঢাকতে পারত। সে কারণে বিনয়ের সাথে সরকারকে পরামর্শ দেবো- এখনো সময় আছে চ্যানেল দুটো খুলে দিন। এ জন্য আড়ালে-আবডালে যা করার দরকার, তাই করুন। প্রয়োজনে দিগন্ত কর্তৃপকে ডাকুন ও তাদের না হয় নাকে খত দিতে বলুন। আপনারাই জিতে যান। তবু দিগন্ত খুলে দিন, প্রায় পাঁচ শ’ সাংবাদিক-কর্মচারীর জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা চালু করুন। এতে আপনাদের পরাজয় হবে না। বিশেষ করে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে রাষ্ট্রশক্তিই যে বড়, এ কথা কে না স্বীকার করবে? এতে যেমন এক দিকে বহু সাংবাদিক-কর্মচারীর জীবন থেকে হতাশা নেমে যাবে তেমনি আপনাদের বিরুদ্ধেও অনেক গুজব-গুঞ্জনের অবসান হবে। তা না হলে গুজব-গুঞ্জন বেড়েই চলবে। তাতে আপনারাই বেশি তিগ্রস্ত হবেন। সে তি এক সময় হয়তো সব হিসাব-নিকাশ ছাপিয়ে যাবে। কতকগুলো দালাল নিয়োগ করে টেলিভিশনে টকশো করিয়ে এমন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে জনমত সরকারের পে আনা যাবে না। সরকারকে মনে রাখতে হবে সত্যবাদী শত্রু উত্তম, মিথ্যাবাদী বন্ধু নয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন