সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১২

মুক্তিযুদ্ধে জনগণের প্রত্যাশা ও আজকের বাংলাদেশ



মাহমুদ জামাল কাদেরী
১৯৭১ সালে যারা জীবনবাজি রেখে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলেন তাদের চোখে ছিল এমন এক স্বাধীন দেশের স্বপ্ন যেখানে কোনো মানুষকে মানবেতর জীবন কাটাতে হবে না। নিজ নিজ কাজের বিনিময়ে সবাই অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিত্সা ও ভবিষ্যত্ জীবনের নিশ্চয়তা লাভ করবে। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের সামনে মাথা তুলে দাঁড়াবে। এই স্বপ্ন ছিল মুক্তিযুদ্ধকালে মুষ্টিমেয় পাকিস্তানপন্থী ছাড়া আপামর দেশবাসীর মনেও। সে কারণেই সব বিপদ তুচ্ছ করে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দিতে পিছপা হয়নি কেউ। এজন্য অবশ্য অনেককেই চরম মূল্য দিতে হয়েছে। আমরা বিপুল সংখ্যক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মতো তাদের আত্মদানও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।
কিন্তু স্বাধীনতা লাভের ৪১ বছর পর দেশের আজকের অবস্থা আর যাই হোক, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন পূরণের কথা বলে না। এই দীর্ঘ সময়কালে দেশের উন্নতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার মিল নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো আজও অপূর্ণই রয়ে গেছে। জনসংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেলেও সে তুলনায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি। ফলে কয়েক কোটি যুবক বেকার। অনেকেই নানা ধরনের অমানবিক কাজ করে জীবন বাঁচাতে বাধ্য হচ্ছে। উন্নত জীবনের খোঁজে যারা বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে তাদের অনেকেই দেশে ফিরে আসার যুক্তি খুঁজে পায় না। আর্থ-সামাজিক বৈষম্য ও বিশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদকাসক্তি ক্রমেই বাড়ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে উঠেছে। দফায় দফায় জ্বালানি ও বিদ্যুতের দামও বাড়ানো হয়েছে। যাতায়াত ভাড়া, বাড়িভাড়াসহ জীবনযাত্রার ব্যয়ভার সাধারণ মানুষের সহ্যক্ষমতা ছাড়িয়ে গেছে। এসবের পেছনে সরকারের ব্যর্থতা আর ক্ষমতাশালীদের দুর্নীতি, লুটপাট, সিন্ডিকেটবাজি এখন আর কারও কাছে গোপন নেই। শেয়ারবাজার লুট, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি, ডেসটিনি-হলমার্ক কেলেঙ্কারির মতো প্রতিটি ঘটনাই যে শাসক শ্রেণীর ক্ষমতার অপব্যবহার আর লুটেরা মনোবৃত্তির ফল সেটাও সবার জানা কথা। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডসহ গুম-খুনের নিত্যঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলা অবনতি প্রকট করে তুলেছে।
এ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পর বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৬ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তার নৃশংস হত্যাকাণ্ড সবাইকে চমকে দিয়েছিল। একসঙ্গে এতজন সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনও উদঘাটিত হয়নি। তবে এর পেছনে দেশি-বিদেশি জাতীয় স্বার্থবিরোধী অপশক্তির হাত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না। বিডিআর জওয়ানদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করা এবং ঐতিহ্যবাহী বিডিআরকে ধ্বংসের ফলে কারা লাভবান হয়েছে সেটা না বললেও চলে। সীমান্তে নিত্যদিন বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যার ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও দেশের মান-মর্যাদা কীভাবে ক্ষুণ্ন করছে সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি। ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের মৃত্যু যেন সরকার মেনে নিয়েছে। কুড়িগ্রামের কিশোরী ফেলানীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের (৭ জানুয়ারি, ২০১১) পরও কারও টনক নড়েনি। এ বছর অতীতের রেকর্ড ভেঙে গত নয় মাসে ৪৪ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। ভারতবিরোধী রাজনৈতিক ইস্যু না করে সীমান্ত হত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। এ ধরনের উদ্যোগ না নিয়ে সরকার নিজেকেই অকার্যকর প্রমাণ করেছে। একইভাবে নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধির কথা বলে জনমত উপেক্ষা করে শুধু নিজেদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) বিভক্ত করা হলেও দেখা যাচ্ছে এখন সবকিছুই ভেঙে পড়েছে। এমন অবস্থাই মানুষের বসবাসের নিরিখে বিশ্বের জঘন্যতম নগরীতে পরিণত করেছে আমাদের রাজধানী ঢাকাকে। এ থেকে পরিত্রাণের বিন্দুমাত্র চেষ্টাও চোখে পড়ে না। নিজেদের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী জেনে বিভক্ত ডিসিসি নির্বাচন স্থগিত করে আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণই জোরদার করা হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতি বৃদ্ধির পাশাপাশি নগরবাসীর ওপর ট্যাক্সের বোঝাও বাড়ানো হয়েছে। জনগুরুত্বসম্পন্ন কোনো সমস্যা সমাধানেই সরকারের আগ্রহ দেখা যায় না। এমনকি যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়েও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমরা যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই, বিচারের নামে প্রহসন দেখতে চাই না।
দীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ে স্বাধীনতা অর্জিত হলেও এখন গণতন্ত্র অনেকাংশেই হারিয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার রক্ষায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। বাস্তবসম্মত রাজনীতি ও গণতন্ত্রচর্চার অভাবে রাজনৈতিক দলগুলো জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বড় দলগুলোর পারিবারিক ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক ধারা দেশের রাজনীতিতে এক ধরনের জমিদারতন্ত্র কায়েম করেছে। সুযোগ পেয়ে সামরিক-বেসামরিক আমলারাই দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রক হয়ে বসেছে। এর ফলে সময়ে সময়ে সরকার পরিবর্তন হলেও জাতীয় ক্ষেত্রে অবস্থার পরিবর্তন ঘটে না। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মানসিকতা এখন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও গভীর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি এক মহাদুর্যোগের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে যে প্রশ্নটি বড় হয়ে উঠেছে তা হলো, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া দেশটি কেন এমন অন্ধকারে ডুবে গেল?
এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলে ফিরে যেতে হবে স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুতে। একথা সত্য যে মুক্তিযুদ্ধ কোনো দলীয় বিষয় ছিল না। ছিল জনগণের যুদ্ধ। দলমত নির্বিশেষে আপামর জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধজয়ের পর দেখা গেল পাকিস্তান সরকারের স্থলে বাংলাদেশ সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলেও রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি, সব ব্যবস্থাই অপরিবর্তিত রয়ে গেল। এমনকি একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরের আগে যারা দখলদার প্রশাসনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে তারাই স্বাধীন দেশটির প্রশাসনে বহাল রইল। রাষ্ট্রব্যবস্থার সর্বত্রই এমনটি দেখা গেছে। পাকিস্তান ফেরতরাও অতি সহজে পুনর্বহাল হয়ে গেল। অথচ যারা জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ছিনিয়ে আনল তাদের পুনর্বাসনে বা দেশসেবার সুযোগ দিতে কার্যকর কিছুই করা হলো না। দলবাজি এবং সার্টিফিকেট বাণিজ্যের পাশাপাশি চাকরিজীবী ও শিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা কিছু সুযোগ-সুবিধা পেলেও রণাঙ্গনের সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ঠেলে দেয়া হলো পুরনো জীবনেই। দেশটাই চলে গেল পুরনো পথে। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নই শুধু নয়, মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষাও পদদলিত হয়ে গেল শুরুতেই। স্বাধীন দেশের রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি কোথায়ও কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন হলো না। সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও নেয়া হয়নি গণতান্ত্রিক পদক্ষেপ। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলমতের প্রতিনিধিত্ব অস্বীকার করে অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের স্থলে গঠন করা হলো পাকিস্তানি কাঠামোয় নির্বাচিত দলীয় সরকার। সংবিধান রচনার ক্ষেত্রেও ভিন্নমতের যৌক্তিকতা গ্রাহ্য করা হয়নি। এভাবে একদিকে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের অমর্যাদা, অন্যদিকে রাষ্ট্র ও সমাজের পুরনো ঔপনিবেশিক ধারা অক্ষুণ্ন থাকার বিষময় ফল আজকের বাংলাদেশ।
সংবিধানে যা-ই লেখা থাক না কেন, এর রচয়িতারাই সর্বপ্রথম এর মূলে কুঠারাঘাত করে নিজেদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছেন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংসদীয় গণতন্ত্র বাতিল করে একদলীয় বাকশালী শাসন এবং নির্বাচন ছাড়া রাষ্ট্রপতি ও সংসদের মেয়াদ বৃদ্ধির নজিরবিহীন ঘটনাই এর প্রমাণ। স্বেচ্ছাচারিতার এই ধারাবাহিকতা পরবর্তী শাসকরাও ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে নিজেদের সঙ্কীর্ণ স্বার্থে। ফলে এখন সংবিধানই কার্যকারিতা হারাতে বসেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণে সংবিধানের ব্যর্থতা এখন আর ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে বর্তমান সরকারও যে পুরোপুরিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী হয়ে গেছে তার একটা প্রমাণ উল্লেখ করা যায়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণের মুখে আমরা যখন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলাম তখন সেদেশের সরকার আমাদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু হয়ে উঠেছিল। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে স্থানীয় অধিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। সময়ে সময়ে তারা সেনাবাহিনীর ধাওয়া খেয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। তেমনিভাবে আশ্রয় নেয়া আসামের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বর্তমান সরকার গ্রেফতার করেছে, ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। এখন এরকমই একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে তুলে দেয়ার অপচেষ্টা চলছে বলে আমরা জেনেছি। সরকারের এমন ভূমিকা নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। এভাবে সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই কলঙ্কিত করছে না, দেশকেও ঠেলে দিচ্ছে নতুন বিপদের মুখে। রামুর সাম্প্রতিক ঘটনা থেকেও একই সিদ্ধান্তে আসতে হয়। অসাম্প্রদায়িকতার ধ্বজাধারী বর্তমান সরকারের দেশ শাসনের প্রায় চার বছরের মাথায় এমন সাম্প্রদায়িক নাশকতার ঘটনা মোটেই স্বাভাবিক নয়। প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা এই নাশকতায় ইন্ধন জুগিয়েছে এমন চাক্ষুষ প্রমাণ পাওয়া গেছে। এখন বিষয়টি নিয়ে যে কাদা ছোড়াছুড়ি ও মিথ্যাচার শুরু হয়েছে সেটি প্রকৃত ঘটনাকে আড়ালে ঠেলে দিচ্ছে। নষ্ট রাজনীতি ও নেতৃত্ব এভাবেই প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশকে পেছনে ঠেলে দিয়ে কায়েমী স্বার্থ রক্ষায় তত্পর।
দেশের বিদ্যমান এসব সঙ্কট কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হলে প্রচলিত ধ্যান-ধারণার ঊর্ধ্বে উঠে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের মতো নিঃশঙ্কচিত্তে দেশ ও জনগণের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিতে হবে। গ্রহণ করতে হবে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার রাষ্ট্র, সমাজ, অর্থনীতি পুনর্গঠিত করার পরিকল্পিত পদক্ষেপ। এক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনো বিকল্প নেই। তবে এটা যে প্রচলিত নেতৃত্বের কাজ নয় সেটাও পরিষ্কার। একমাত্র গণভিত্তিক নেতৃত্বের পক্ষেই গণতান্ত্রিক পন্থায় এই পরিবর্তনের পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
কারণ মুক্তিযোদ্ধারা জনগণের যে স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে একাত্তরে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে এখনও সে স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে গেছে। এ যাবত কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দল এমন পদক্ষেপ নেয়নি যা মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আশাবাদী করে তোলে। প্রভাবশালী নেতানেত্রী, সামরিক-বেসামরিক আমলা-কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়সহ সমাজের ওপরতলার লোকজনই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে। ফলে আর্থ-সামাজিক বৈষম্য কমে আসার পরিবর্তে বহুগুণে বেড়ে গেছে। সমাজ-অর্থনীতির ভিত্তি আশানুরূপ শক্ত ও টেকসই হয়নি। আশপাশের দেশগুলো যখন দ্রুত এগিয়ে গেছে, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়েও তখন আমরা পিছিয়ে পড়েছি। হতাশা-বিভক্তি-বিশৃঙ্খলায় ডুবে আছি। এ রকম একটা দেশ আমরা চাইনি। এমন অবস্থা কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাই মেনে নিতে পারে না। তাই আবারও হৃদয়ের বিশালতা দিয়ে সমগ্র জাতিকে ধারণ করে উঠে দাঁড়ানো জরুরি হয়ে উঠেছে। নতুন প্রজন্মের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিশা তুলে ধরতে হবে। সময়ের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেয়ার নতুন সংগ্রামে সর্বশক্তি নিয়ে শামিল হতে চাই আমরা। এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণের পক্ষের সবার সহযোগিতা কামনা করি।
লেখক : মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক
ভাইস চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা গণপরিষদ

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads