মহান আল্লাহতা’লার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তাঁরই উদ্দেশে আত্মত্যাগ করার এবং পশু কোরবানি দেয়ার মহিমান্বিত দিন আবারও হাজির হয়েছে। বাংলাদেশে আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। আরবি শব্দ ঈদ-এর অর্থ আনন্দ উত্সব এবং আজহা’র অর্থ পশু জবাই করা। সে দিক থেকে মুসলমানদের জন্য ঈদুল আজহা একইসঙ্গে পশু কোরবানি দেয়ার এবং উত্সব করার দিন। কোরবানির উদ্দেশ্য আল্লাহতা’লার সন্তুষ্টি অর্জন করা। কোরবানি দেয়ার প্রথম নির্দেশ এসেছিল নবী হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর কাছে। তাঁর কাছে সন্তানের গুরুত্ব বেশি নাকি তিনি আল্লাহকে বেশি ভালোবাসেন সেটা পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে আল্লাহতা’লার উদ্দেশে আদরের পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। নির্দেশ অনুযায়ী ইবরাহিম (আ.) কোরবানি দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, ইসমাইল (আ.)-ও সানন্দে রাজি হয়েছিলেন। এতেই খুশি হয়েছিলেন আল্লাহ। পুত্রের গলদেশে ছুরি চালানো শুরু করার ঠিক পূর্বমুহূর্তে ইবরাহিম (আ.)-কে আল্লাহর এই সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলা হয়েছিল, তিনি যেন ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি পশু কোরবানি দেন। পরে পশুই কোরবানি দিয়েছিলেন হজরত ইবরাহিম (আ.)। সেই থেকে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মুসলমানরা পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করে আসছেন। বিধানটি চূড়ান্ত হয়েছে শেষ রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে।
ঈদুল আজহায় পশু কোরবানিই অবশ্য একমাত্র করণীয় নয়। তার আগে পবিত্র হজকে মুসলমানদের জন্য ফরজ বা অবশ্যপালনীয় করা হয়েছে। হজ পালিত হয় হিজরি সালের শেষ মাস জিলহজ মাসে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানরা গিয়ে পবিত্র নগরী মক্কা মুকাররমায় সমবেত হন। ৮ জিলহজ থেকে তিন দিন ধরে তারা মিনা, মুযদালিফা ও আরাফাতের ময়দানসহ নির্ধারিত স্থানগুলোতে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। বলতে থাকেন, ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’। অর্থাত্ হে আল্লাহ, আমি হাজির হয়েছি। তারপর আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবায় গিয়ে চারদিকে সাতবার ঘুরে ‘তাওয়াফ’ করতে হয়। ‘সাঈ’ করার জন্য সাফা ও মারওয়া নামের দুটি পাহাড়ের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সাতবার যেতে ও আসতে হয়। এখানেই শিশু ইসমাইল (আ.)-কে পানি খাওয়ানোর জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর পত্নী মা হাজেরা ছুটোছুটি করেছিলেন। সেখানে আল্লাহর কুদরতে তৈরি হয়েছিল জমজম কূপ। সবশেষে আসে পশু কোরবানির পালা, উদযাপিত হয় ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা কেবলই পশু কোরবানি দেয়ার এবং উত্সব করার দিন নয়। দিনটির প্রধান উদ্দেশ্য মুসলমানদের মধ্যে আল্লাহতা’লার প্রতি পরিপূর্ণ ভালোবাসা ও আনুগত্য তৈরি করা এবং আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়া। আল্লাহতা’লার কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করাই ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা। সুতরাং কেবলই পশু কোরবানি দেয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার পরিবর্তে মুসলমানদের উচিত আল্লাহতা’লার কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করা এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা। কোরবানির পশুর গোশ্ত যত বেশি সম্ভব আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যেও কল্যাণ রয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রাক্কালে জনগণের কষ্ট ও দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করতেই হবে। ঈদুল ফিতরের মতো এবারও মানুষকে বাড়ি যাওয়ার সময় অবর্ণনীয় ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ৭০-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটে নাকাল হয়েছে মানুষ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কও যানজটমুক্ত ছিল না। ওদিকে মাওয়ায় একের পর এক ফেরিঘাট ভেঙে পড়েছে। ফলে মানুষের ভোগান্তি সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সঙ্গে বেহাল সড়কপথের ঝুঁকি ও বিড়ম্বনা তো ছিলই। শত শত অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ায় লঞ্চে যারা গেছেন তাদেরও যেতে হয়েছে জীবন হাতে নিয়ে। এতকিছুর পরও আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীকে অবশ্য যথারীতি দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা গেছে, যেন তিনি গিয়ে চেহারা দেখালেই মানুষের ভোগান্তির অবসান ঘটবে! মন্ত্রীর মুখে লম্বা কথাও কম শুনতে হয়নি। আমরা মনে করি, নিজে যেহেতু প্রকৌশলী, ঠিকাদার কিংবা রাজমিস্ত্রি নন, সেহেতু ওবায়দুল কাদেরের মতো মন্ত্রীদের উচিত এখানে-সেখানে গিয়ে উল্টো মানুষের কষ্ট বাড়ানোর পরিবর্তে দফতরে বসেই এমনভাবে পদক্ষেপ নেয়া যাতে সত্যিকার অর্থেই রাস্তাঘাটের উন্নতি হয় এবং ঘরমুখো মানুষকে আর কখনও ভোগান্তির শিকার না হতে হয়। বলা বাহুল্য, এটুকু করলেই দেশে ধন্য ধন্য রব উঠবে। মন্ত্রীকে আর দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না।
আমরা আশা করি, পথের ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা সত্ত্বেও ঈদুল আজহা সবার জন্য আনন্দময় হয়ে উঠবে। পবিত্র এ দিনটি উপলক্ষে দৈনিক আমার দেশ-এর সব পাঠক, লেখক, সংবাদদাতা, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, হকার ও শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীর প্রতি আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
ঈদুল আজহায় পশু কোরবানিই অবশ্য একমাত্র করণীয় নয়। তার আগে পবিত্র হজকে মুসলমানদের জন্য ফরজ বা অবশ্যপালনীয় করা হয়েছে। হজ পালিত হয় হিজরি সালের শেষ মাস জিলহজ মাসে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানরা গিয়ে পবিত্র নগরী মক্কা মুকাররমায় সমবেত হন। ৮ জিলহজ থেকে তিন দিন ধরে তারা মিনা, মুযদালিফা ও আরাফাতের ময়দানসহ নির্ধারিত স্থানগুলোতে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। বলতে থাকেন, ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’। অর্থাত্ হে আল্লাহ, আমি হাজির হয়েছি। তারপর আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবায় গিয়ে চারদিকে সাতবার ঘুরে ‘তাওয়াফ’ করতে হয়। ‘সাঈ’ করার জন্য সাফা ও মারওয়া নামের দুটি পাহাড়ের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সাতবার যেতে ও আসতে হয়। এখানেই শিশু ইসমাইল (আ.)-কে পানি খাওয়ানোর জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর পত্নী মা হাজেরা ছুটোছুটি করেছিলেন। সেখানে আল্লাহর কুদরতে তৈরি হয়েছিল জমজম কূপ। সবশেষে আসে পশু কোরবানির পালা, উদযাপিত হয় ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা কেবলই পশু কোরবানি দেয়ার এবং উত্সব করার দিন নয়। দিনটির প্রধান উদ্দেশ্য মুসলমানদের মধ্যে আল্লাহতা’লার প্রতি পরিপূর্ণ ভালোবাসা ও আনুগত্য তৈরি করা এবং আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়া। আল্লাহতা’লার কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করাই ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা। সুতরাং কেবলই পশু কোরবানি দেয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকার পরিবর্তে মুসলমানদের উচিত আল্লাহতা’লার কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করা এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা। কোরবানির পশুর গোশ্ত যত বেশি সম্ভব আত্মীয়-স্বজন ও গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যেও কল্যাণ রয়েছে।
প্রসঙ্গক্রমে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রাক্কালে জনগণের কষ্ট ও দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করতেই হবে। ঈদুল ফিতরের মতো এবারও মানুষকে বাড়ি যাওয়ার সময় অবর্ণনীয় ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ৭০-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটে নাকাল হয়েছে মানুষ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কও যানজটমুক্ত ছিল না। ওদিকে মাওয়ায় একের পর এক ফেরিঘাট ভেঙে পড়েছে। ফলে মানুষের ভোগান্তি সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সঙ্গে বেহাল সড়কপথের ঝুঁকি ও বিড়ম্বনা তো ছিলই। শত শত অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ায় লঞ্চে যারা গেছেন তাদেরও যেতে হয়েছে জীবন হাতে নিয়ে। এতকিছুর পরও আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীকে অবশ্য যথারীতি দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা গেছে, যেন তিনি গিয়ে চেহারা দেখালেই মানুষের ভোগান্তির অবসান ঘটবে! মন্ত্রীর মুখে লম্বা কথাও কম শুনতে হয়নি। আমরা মনে করি, নিজে যেহেতু প্রকৌশলী, ঠিকাদার কিংবা রাজমিস্ত্রি নন, সেহেতু ওবায়দুল কাদেরের মতো মন্ত্রীদের উচিত এখানে-সেখানে গিয়ে উল্টো মানুষের কষ্ট বাড়ানোর পরিবর্তে দফতরে বসেই এমনভাবে পদক্ষেপ নেয়া যাতে সত্যিকার অর্থেই রাস্তাঘাটের উন্নতি হয় এবং ঘরমুখো মানুষকে আর কখনও ভোগান্তির শিকার না হতে হয়। বলা বাহুল্য, এটুকু করলেই দেশে ধন্য ধন্য রব উঠবে। মন্ত্রীকে আর দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না।
আমরা আশা করি, পথের ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা সত্ত্বেও ঈদুল আজহা সবার জন্য আনন্দময় হয়ে উঠবে। পবিত্র এ দিনটি উপলক্ষে দৈনিক আমার দেশ-এর সব পাঠক, লেখক, সংবাদদাতা, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, হকার ও শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীর প্রতি আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন