দুর্নীতির ‘মরা কাটালে’ যখন দেশ ভেসে যাচ্ছে, ক্ষমতাসীনরা আকণ্ঠ নিমজ্জিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটে, আর জনগণ অসহায় দর্শকের মতো স্তম্ভিত বিস্ময়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে দেশ ধ্বংসের ভয়াল তাণ্ডব, সেই সময় গত ৬ অক্টোবর হবিগঞ্জের এক বিশাল জনসমুদ্রে বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিশ্বচোর ও বিশ্ববেহায়ার কবলে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, এরা দেশকে তিল তিল করে শেষ করে দিচ্ছে। এরা বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশ আর টিকে থাকবে না। এ সরকারের আমলে দেশ নিরাপদ নয়। আলেম-উলামা, রাজনীতিবিদ, ডাক্তার, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, মা, বোন, সাধারণ মানুষ—কেউই নিরাপদ নয়। এ সরকার মিথ্যাবাদী, ধোঁকাবাজ সরকার, তাই দরকার জনগণের সরকার। বেগম খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য শুনে মহাজোট সরকার, মহাজোটের শরিকরা এবং তাদের গৃহপালিত বুদ্ধিজীবী ও গণমাধ্যমের অনুগ্রহভিখারি অংশ হয়তো অসন্তুষ্ট হতে পারেন, হতে পারেন ক্ষুব্ধ; কিন্তু তিক্ত হলেও বাস্তবতা হলো এই যে, গত কয়েক বছরে এই সরকার দুর্নীতি আর লুণ্ঠনের যে ভয়াল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, সে সব দেখে জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জমাট বাঁধছিল, বেগম খালেদা জিয়ার কণ্ঠে তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল মাত্র।
সত্যিকার অর্থেই দেশের চিত্র আজ ভয়াবহ। তৃণমূল থেকে শুরু করে সরকারের শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত কর্মী, নেতা, পাতিমন্ত্রী, বড় মন্ত্রী—সবাই যেন অন্য সব কাজকর্ম বন্ধ করে দুর্নীতিকেই ধ্যান-জ্ঞান করে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছেন সেই কর্মে। একটার পর একটা দুর্নীতি, একটার পর একটা কেলেঙ্কারি দেখতে দেখতে হতভম্ব, শ্রান্ত, ক্লান্ত দেশবাসী। বিশ্ববাসীও তাদের চর্মচক্ষু বিস্ফোরিত করে দেখছেন এই মহামচ্ছব। শেয়ারবাজারের ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী সরকারের দুর্নীতির কারণে আজ পথের ভিখারি। হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংকের টাকা লোপাটের কী জবাব দেবে সরকার? রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের দাহে পুড়ে গেছে জ্বালানি খাত। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি তো সারা পৃথিবীর সবচেয়ে নোংরা বিষয় হিসেবে আলোচিত। ড্রাইভারের অভিযোগ সত্য হলে রেলে নিয়োগবাণিজ্য করে এক সুরঞ্জিত সেনগুপ্তই ঘুষ নিয়েছেন ১০ কোটি টাকা। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা তো শিকায় তুলে দিয়েছে টেলি যোগাযোগ খাতকে। সরকারের মন্ত্রীদের কেউ ডুবিয়েছেন রেল, কেউ পদ্মা সেতু, কেউ চিবিয়ে খেয়েছেন শেয়ারবাজার, কোনো মন্ত্রীর দখলে ভিওআইপি সেক্টর। শুধু মন্ত্রীরা কেন, শীর্ষ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের ছেলেমেয়ে, পরিজন সবাই মিলে হামলে খেয়ে যাচ্ছেন রাষ্ট্রের সম্পদ, জনগণের টাকা। যেন রাষ্ট্র একটা ভাগাড়, আর শাসক ও তাদের দলবল যেন ক্ষুধার্ত শকুন। এদের কাণ্ডকারখানা দেখে মনে হয়, এটাই যেন শেষ খাদ্যোত্সব। সেজন্য যে যেভাবে পারে গোগ্রাসে গিলছে।
সবচেয়ে যেটা উদ্বেগের বিষয়, তা হলো—এই লুণ্ঠন প্রক্রিয়া যেন সব ধরনের নিয়ন্ত্রণ ও আইনকানুনমুক্ত। এই ধ্বংসলীলার গতিরোধ করার জন্য যেন কোথাও কেউ নেই। সরকারের কাজ যেন এই দুর্নীতির পথকে কণ্টকমুক্ত রাখা। সেজন্য কোথাও কোনো দুর্নীতিবাজের বিচার হচ্ছে না। অভিযুক্তরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দুই কান কাটা বেহায়ার মতো অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছে চোয়ালবাজি। রাষ্ট্রযন্ত্রের পুরোটাই যেন গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত। ফলে অভিযুক্তরা পেয়ে যাচ্ছে সততার সার্টিফিকেট। উপাধি পাচ্ছে দেশপ্রেমিকের। কালো বিড়াল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। উল্টোদিকে বিরোধী কণ্ঠকে দমনের জন্য চলছে হামলা ও মামলার বিভীষিকা। চোরের মায়ের বড়গলার নিচে চাপা পড়েছে নীতি, নৈতিকতা, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং আইন।
দেশের বিবেকবান প্রতিটি মানুষ আজ ভীতসন্ত্রস্ত। যারা একটু-আধটু দেশ-দুনিয়ার খোঁজখবর রাখেন, তারা বুঝে গেছেন দুর্নীতির এই ভয়াল মচ্ছব যদি আরও কিছুদিন চলে তাহলে লাখ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশ অচিরেই পরিণত হবে ধ্বংসস্তূপে। আমাদের সব গৌরব, অহঙ্কার ও অর্জন হবে ভূলুণ্ঠিত। এ অবস্থায় বিরোধীদলীয় নেতার কণ্ঠ যদি একটু উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, সেজন্য তাকে দোষ না দিয়ে বরং কম্বুকণ্ঠে তিক্ত সত্য প্রকাশের জন্য সাধুবাদ দেয়া উচিত। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ রাখব, অনেক হয়েছে এবার থামুন। এই দুর্নীতি ও জুলুমের রাশ টেনে ধরুন। দেশকে স্থিতিশীল হতে দিন। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য অভিযুক্তদের আইনের হাতে সোপর্দ করুন। বদনামের পাল্লা আর ভারী না করে এবার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন। নইলে ইতিহাসের অনিবার্য আঘাত থেকে রক্ষা পাবেন না। সেই আঘাত আপনাদের জায়গা করে দেবে আঁস্তাকুড়ে।
সত্যিকার অর্থেই দেশের চিত্র আজ ভয়াবহ। তৃণমূল থেকে শুরু করে সরকারের শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত কর্মী, নেতা, পাতিমন্ত্রী, বড় মন্ত্রী—সবাই যেন অন্য সব কাজকর্ম বন্ধ করে দুর্নীতিকেই ধ্যান-জ্ঞান করে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছেন সেই কর্মে। একটার পর একটা দুর্নীতি, একটার পর একটা কেলেঙ্কারি দেখতে দেখতে হতভম্ব, শ্রান্ত, ক্লান্ত দেশবাসী। বিশ্ববাসীও তাদের চর্মচক্ষু বিস্ফোরিত করে দেখছেন এই মহামচ্ছব। শেয়ারবাজারের ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী সরকারের দুর্নীতির কারণে আজ পথের ভিখারি। হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংকের টাকা লোপাটের কী জবাব দেবে সরকার? রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের দাহে পুড়ে গেছে জ্বালানি খাত। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি তো সারা পৃথিবীর সবচেয়ে নোংরা বিষয় হিসেবে আলোচিত। ড্রাইভারের অভিযোগ সত্য হলে রেলে নিয়োগবাণিজ্য করে এক সুরঞ্জিত সেনগুপ্তই ঘুষ নিয়েছেন ১০ কোটি টাকা। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা তো শিকায় তুলে দিয়েছে টেলি যোগাযোগ খাতকে। সরকারের মন্ত্রীদের কেউ ডুবিয়েছেন রেল, কেউ পদ্মা সেতু, কেউ চিবিয়ে খেয়েছেন শেয়ারবাজার, কোনো মন্ত্রীর দখলে ভিওআইপি সেক্টর। শুধু মন্ত্রীরা কেন, শীর্ষ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের ছেলেমেয়ে, পরিজন সবাই মিলে হামলে খেয়ে যাচ্ছেন রাষ্ট্রের সম্পদ, জনগণের টাকা। যেন রাষ্ট্র একটা ভাগাড়, আর শাসক ও তাদের দলবল যেন ক্ষুধার্ত শকুন। এদের কাণ্ডকারখানা দেখে মনে হয়, এটাই যেন শেষ খাদ্যোত্সব। সেজন্য যে যেভাবে পারে গোগ্রাসে গিলছে।
সবচেয়ে যেটা উদ্বেগের বিষয়, তা হলো—এই লুণ্ঠন প্রক্রিয়া যেন সব ধরনের নিয়ন্ত্রণ ও আইনকানুনমুক্ত। এই ধ্বংসলীলার গতিরোধ করার জন্য যেন কোথাও কেউ নেই। সরকারের কাজ যেন এই দুর্নীতির পথকে কণ্টকমুক্ত রাখা। সেজন্য কোথাও কোনো দুর্নীতিবাজের বিচার হচ্ছে না। অভিযুক্তরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দুই কান কাটা বেহায়ার মতো অবিরাম চালিয়ে যাচ্ছে চোয়ালবাজি। রাষ্ট্রযন্ত্রের পুরোটাই যেন গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত। ফলে অভিযুক্তরা পেয়ে যাচ্ছে সততার সার্টিফিকেট। উপাধি পাচ্ছে দেশপ্রেমিকের। কালো বিড়াল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। উল্টোদিকে বিরোধী কণ্ঠকে দমনের জন্য চলছে হামলা ও মামলার বিভীষিকা। চোরের মায়ের বড়গলার নিচে চাপা পড়েছে নীতি, নৈতিকতা, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং আইন।
দেশের বিবেকবান প্রতিটি মানুষ আজ ভীতসন্ত্রস্ত। যারা একটু-আধটু দেশ-দুনিয়ার খোঁজখবর রাখেন, তারা বুঝে গেছেন দুর্নীতির এই ভয়াল মচ্ছব যদি আরও কিছুদিন চলে তাহলে লাখ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশ অচিরেই পরিণত হবে ধ্বংসস্তূপে। আমাদের সব গৌরব, অহঙ্কার ও অর্জন হবে ভূলুণ্ঠিত। এ অবস্থায় বিরোধীদলীয় নেতার কণ্ঠ যদি একটু উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, সেজন্য তাকে দোষ না দিয়ে বরং কম্বুকণ্ঠে তিক্ত সত্য প্রকাশের জন্য সাধুবাদ দেয়া উচিত। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ রাখব, অনেক হয়েছে এবার থামুন। এই দুর্নীতি ও জুলুমের রাশ টেনে ধরুন। দেশকে স্থিতিশীল হতে দিন। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য অভিযুক্তদের আইনের হাতে সোপর্দ করুন। বদনামের পাল্লা আর ভারী না করে এবার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিন। নইলে ইতিহাসের অনিবার্য আঘাত থেকে রক্ষা পাবেন না। সেই আঘাত আপনাদের জায়গা করে দেবে আঁস্তাকুড়ে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন