২০০৬ সালের অক্টোবর থেকেই সংঘাতময় অস্থিরতায় ডুবে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তখনকার বিরোধী দল আওয়ামী লীগ সরকার-বিরোধিতায় কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল, সেটা এখনও দেশবাসী নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি। লগি-বৈঠা আন্দোলনের নামে রাজধানীর পল্টন মোড়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মানুষ হত্যা এবং লাশের ওপর নৃত্য করার ঘটনা মনে হলে এখনও শিউরে উঠতে হয়। নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিটি পদক্ষেপ ভণ্ডুল করে দেশব্যাপী এক আতঙ্কের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পরও অবস্থা শান্ত হয়নি। ক্ষমতার কোন্দলে পরিস্থিতি এতটাই চরমে উঠেছিল যে মানুষ যে কোনো মূল্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে চাইছিল। এমনই পটভূমিতে জানুয়ারির ১১ তারিখে দেশি-বিদেশি শক্তির মদতে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। ক্ষমতা নিয়েছিল সেনাসমর্থিত অসাংবিধানিক সরকার। পরে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই যে এ সরকারকে নিজেদের আন্দোলনের ফসল বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেটাও ভুলে যায়নি মানুষ। সেই সরকারের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের বৈধতা দেয়ার কথাও শোনা গেছে তার মুখে, যদিও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অগ্রাহ্য করে দীর্ঘ দু’বছর ক্ষমতার দাপট সহ্য করতে হয়েছে সবাইকে। ক্ষমতায় বসার পর আওয়ামী লীগের মহাজোট সরকার অক্ষরে অক্ষরে তাদের কথা রেখেছে। অসাংবিধানিক সরকারের কারও বিরুদ্ধেই কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উল্টো তখনকার অন্যতম নায়ক জেনারেল মাসুদকে নজিরবিহীনভাবে সুযোগ-সুবিধা দেয়া অব্যাহত রয়েছে এখনও। সে সময় দায়ের করা নিজেদের হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হলেও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের সব মামলাই চালু রাখা হয়েছে। নতুন নতুন মামলা আর হামলায় তাদের কোণঠাসা করে একদলীয় নয়, একেবারে ব্যক্তিস্বৈরাচার কায়েম করা হয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে এবং জাতীয় সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংবিধান সংশোধন করার ফলে নির্বাচন নিয়েও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনদের লাগামছাড়া দুর্নীতি দেশকে নিয়ে গেছে ধ্বংসের কিনারে। এভাবে সংকট যখন গভীর হয়ে উঠেছে, ঠিক তখন প্রধানমন্ত্রীর মুখে আবারও এক-এগারও সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের কথায় মানুষের দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক।
সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রীর মুখে বারবার ষড়যন্ত্রের কথাকে হালকা করে না দেখাই ভালো। কারণ তিনি অতীত অভিজ্ঞতা দিয়েই যে কারও চেয়ে ভালোভাবে এমন পরিস্থিতি বুঝতে পারেন। আগে থেকেই সবাইকে সতর্ক করে দেয়ার পেছনে আরও কারণ থাকতে পারে। সেই যে কথা আছে, ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না।’ এটা ঠিক, কোনো ষড়যন্ত্রই শেষ পর্যন্ত ভালো ফল দেয় না। ক্ষমতায় বসে এ কথাটা না ভুলে গিয়ে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির চর্চা করলে, বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে সংসদীয় ধারা বহাল রাখলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো, জোর দিয়েই বলা যায়। বিগত দিনের মতো এখন তো দেশে বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন নেই। তার পরও কেন ষড়যন্ত্রের ভূত তাড়া করছে প্রধানমন্ত্রীকে? ক্ষমতার মেয়াদের শেষদিকে কেন এমন অবস্থার মুখে পড়তে হলো, সেটা তার চেয়ে আর কে ভালো বুঝতে পারবে? শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ রুদ্ধ করা হলে অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগে কারা সক্রিয় হয়ে ওঠে, সেটা তো তার অজানা নয়? উচ্চ আদালতের রায়ের নামে তড়িঘড়ি সংবিধান সংশোধনের সময় তিনি কেন এর পরিণতি চিন্তা করেননি? নাকি সব কিছু জেনেবুঝেই পা ফেলেছেন তিনি?
এখন সব দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঠিক কী বলতে চাইছেন সেটা অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। এক-এগারোর সরকারকে একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীর সার্টিফিকেট দেয়ার কথায় যে তার ভূমিকাও সামনে চলে আসে, সেটা কেন তিনি ভুলে গেলেন? তিনিও কি সে সরকারকে নিজেদের আন্দোলনের ফসল বলেননি? তাদের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেয়ার আগাম প্রতিশ্রুতি দেননি? মানুষের স্মৃতিশক্তিকে এত দুর্বল ভাবলেন কীভাবে প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন ও ইচ্ছামত পরিচালনার পর কেন শেষ সময় এসে তিনি এক-এগারোর ষড়যন্ত্রের কথা তুলছেন, সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। তিনি কি এমন করেছেন যে, সে ভয়ানক পরিস্থিতির কথা আগাম বলতে হচ্ছে? বিষয়টি একটু পরিষ্কার হয় বাংলাদেশ নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাম্প্রতিক মন্তব্য থেকে। সেখানে আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারের ভরাডুবির আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে, এমন পরিণতি নিশ্চিত জেনেই কি প্রধানমন্ত্রী ভেবেচিন্তে মুখ খুলেছেন! ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার এটাই কি তার শেষ পন্থা?
সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী প্রধানমন্ত্রীর মুখে বারবার ষড়যন্ত্রের কথাকে হালকা করে না দেখাই ভালো। কারণ তিনি অতীত অভিজ্ঞতা দিয়েই যে কারও চেয়ে ভালোভাবে এমন পরিস্থিতি বুঝতে পারেন। আগে থেকেই সবাইকে সতর্ক করে দেয়ার পেছনে আরও কারণ থাকতে পারে। সেই যে কথা আছে, ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না।’ এটা ঠিক, কোনো ষড়যন্ত্রই শেষ পর্যন্ত ভালো ফল দেয় না। ক্ষমতায় বসে এ কথাটা না ভুলে গিয়ে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির চর্চা করলে, বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে সংসদীয় ধারা বহাল রাখলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো, জোর দিয়েই বলা যায়। বিগত দিনের মতো এখন তো দেশে বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন নেই। তার পরও কেন ষড়যন্ত্রের ভূত তাড়া করছে প্রধানমন্ত্রীকে? ক্ষমতার মেয়াদের শেষদিকে কেন এমন অবস্থার মুখে পড়তে হলো, সেটা তার চেয়ে আর কে ভালো বুঝতে পারবে? শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ রুদ্ধ করা হলে অশান্ত পরিস্থিতির সুযোগে কারা সক্রিয় হয়ে ওঠে, সেটা তো তার অজানা নয়? উচ্চ আদালতের রায়ের নামে তড়িঘড়ি সংবিধান সংশোধনের সময় তিনি কেন এর পরিণতি চিন্তা করেননি? নাকি সব কিছু জেনেবুঝেই পা ফেলেছেন তিনি?
এখন সব দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঠিক কী বলতে চাইছেন সেটা অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। এক-এগারোর সরকারকে একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীর সার্টিফিকেট দেয়ার কথায় যে তার ভূমিকাও সামনে চলে আসে, সেটা কেন তিনি ভুলে গেলেন? তিনিও কি সে সরকারকে নিজেদের আন্দোলনের ফসল বলেননি? তাদের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেয়ার আগাম প্রতিশ্রুতি দেননি? মানুষের স্মৃতিশক্তিকে এত দুর্বল ভাবলেন কীভাবে প্রধানমন্ত্রী। তাছাড়া বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন ও ইচ্ছামত পরিচালনার পর কেন শেষ সময় এসে তিনি এক-এগারোর ষড়যন্ত্রের কথা তুলছেন, সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। তিনি কি এমন করেছেন যে, সে ভয়ানক পরিস্থিতির কথা আগাম বলতে হচ্ছে? বিষয়টি একটু পরিষ্কার হয় বাংলাদেশ নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাম্প্রতিক মন্তব্য থেকে। সেখানে আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারের ভরাডুবির আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয়েছে, এমন পরিণতি নিশ্চিত জেনেই কি প্রধানমন্ত্রী ভেবেচিন্তে মুখ খুলেছেন! ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার এটাই কি তার শেষ পন্থা?
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন