ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে শেষ পর্যন্ত হলমার্ক গ্রুপের শীর্ষ ব্যক্তিরা ধরা পড়েছে। শেষ পর্যন্ত তাদের গ্রেফতার করা হলেও এই লুটপাটের নাটের গুরুদের এখনও আড়ালে থেকে যাওয়া কেউই মেনে নিতে পারছে না। যাদের সহায়তায় সোনালী ব্যাংকের মতো একটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে হাজার কোটি টাকা জালিয়াতি করা হয়েছে, তাদের মুখোশ খুলে দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে ব্যাংক লুটের সংস্কৃতি আরও ছড়িয়ে পড়বে, এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার লুটেরাদের শাস্তি হলে এবারে হয়তো শেয়ারবাজার রক্ষা করা যেত। এ কারণেই ব্যাংক লুটের নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করা ও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো লুটের টাকা উদ্ধারের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ব্যাংক লুটের ঘটনা কতটা পরিকল্পিত। সোনালী ব্যাংকের স্বীকৃত বিল যাচাই-বাছাই না করে জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক তো আর এমনি এমনি সেসব কেনেনি! তার ওপর রয়েছে ঋণ প্রদানে ঊর্ধ্বতন মহলের চাপসহ সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেয়ার ঘটনা। এমন সব অবিশ্বাস্য ঘটনা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অগোচরে হয়েছে, সেটা বিশ্বাস করার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরিচালনা পর্ষদে রাজনৈতিক নিয়োগ দেয়ার সুযোগ বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের অবাধ সুযোগ দেয়া হয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কয়েক ডজন সাবেক নেতাকে পরিচালক বানিয়ে। আর্থিক খাতের মতো স্পর্শকাতর খাতেও এভাবে এমন সব অনভিজ্ঞ-অযোগ্য ব্যক্তিদের শুধু দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যারা তানভীর মাহমুদের মতো রাস্তার লোককে বেছে নিয়েছে নিজেদের অপকর্মে ব্যবহারের জন্য। এখন পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের কয়েকজনকে বলির পাঁঠা বানিয়ে সেসব নাটের গুরুরা সটকে পড়তে চাইছে। গতকালের আমার দেশ-এ তাদের নাম-পরিচয়সহ যাবতীয় তথ্যাদি প্রকাশিত হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের মতো অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকে জালিয়াতির সঙ্গেও সেখানকার অসাধু কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া পরিচালকদের জড়িত থাকার তথ্য জানা গেছে। ওপর থেকে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যাংকে গচ্ছিত জনগণের টাকা নয়-ছয় করার পর এখন যখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তখন অনেকেই গা-ঢাকা দিয়েছে। যারা তদন্তে নেমেছেন, তারাও বেছে বেছে এসব ব্যক্তিকে আড়ালেই রেখে দিয়ে ক্ষমতাশালীদের সুনজরে থাকতে চাইছেন। দুদকও অদৃশ্য ইশারায় পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে গরজ দেখাচ্ছে না।
২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া হলমার্ক গ্রুপের জালিয়াতি শুধু সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, আগারগাঁও ও বনানী শাখাসহ অন্যান্য শাখা থেকেও প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লুটে নিলেও পরিচালনা পর্ষদ নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাহলে তাদের দায়িত্ব কী ছিল? কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিকবার বিষয়টি নজরে আনলেও তাদের ঘুম ভাঙেনি। দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও অযোগ্যতার কারণে সে পর্ষদ ভেঙে দেয়ার সুপারিশও অর্থ মন্ত্রণালয় কেন আমলে নেয়নি, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করতে না চাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। এমন কথাও গোপন থাকেনি। ব্যাংক খাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের এমন ঘটনা আগে কখনও দেখা যায়নি। নিজেদের পছন্দের লোকদের লুটপাটের সুযোগ করে দিতে সরকারের এমন বেপরোয়া ভূমিকার পেছনে নিশ্চয়ই আরও বড় কারণ রয়েছে।
হলমার্ক জালিয়াতির তদন্ত শুরু হয়েছে। তা সীমাবদ্ধ গণ্ডিতে আটকে না রেখে, সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের দুর্নীতি, জালিয়াতি, লুটপাটের শেকড় খুঁজে বের করার কাজে জরুরিভাবে হাত দিতে হবে এবং তা এখনই। দলীয় বিবেচনায় অনভিজ্ঞ-অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদ ও পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগ দেয়ার বিধান বাতিল করে সব প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচিত সরকার ও গণতন্ত্রের নামে এমন ভয়াবহ দুর্নীতি, দলবাজি জনগণ কিছুতেই মেনে নেবে না, এটা এখনও উপলব্ধি করতে না পারলে এজন্য কঠিন মাশুল গুনতে হবে ক্ষমতাসীনদের—তা জোর দিয়েই বলা যায়।
পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ব্যাংক লুটের ঘটনা কতটা পরিকল্পিত। সোনালী ব্যাংকের স্বীকৃত বিল যাচাই-বাছাই না করে জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক তো আর এমনি এমনি সেসব কেনেনি! তার ওপর রয়েছে ঋণ প্রদানে ঊর্ধ্বতন মহলের চাপসহ সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেয়ার ঘটনা। এমন সব অবিশ্বাস্য ঘটনা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অগোচরে হয়েছে, সেটা বিশ্বাস করার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরিচালনা পর্ষদে রাজনৈতিক নিয়োগ দেয়ার সুযোগ বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের অবাধ সুযোগ দেয়া হয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কয়েক ডজন সাবেক নেতাকে পরিচালক বানিয়ে। আর্থিক খাতের মতো স্পর্শকাতর খাতেও এভাবে এমন সব অনভিজ্ঞ-অযোগ্য ব্যক্তিদের শুধু দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যারা তানভীর মাহমুদের মতো রাস্তার লোককে বেছে নিয়েছে নিজেদের অপকর্মে ব্যবহারের জন্য। এখন পরিস্থিতি সামাল দিতে তাদের কয়েকজনকে বলির পাঁঠা বানিয়ে সেসব নাটের গুরুরা সটকে পড়তে চাইছে। গতকালের আমার দেশ-এ তাদের নাম-পরিচয়সহ যাবতীয় তথ্যাদি প্রকাশিত হয়েছে।
সোনালী ব্যাংকের মতো অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকে জালিয়াতির সঙ্গেও সেখানকার অসাধু কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া পরিচালকদের জড়িত থাকার তথ্য জানা গেছে। ওপর থেকে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যাংকে গচ্ছিত জনগণের টাকা নয়-ছয় করার পর এখন যখন আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তখন অনেকেই গা-ঢাকা দিয়েছে। যারা তদন্তে নেমেছেন, তারাও বেছে বেছে এসব ব্যক্তিকে আড়ালেই রেখে দিয়ে ক্ষমতাশালীদের সুনজরে থাকতে চাইছেন। দুদকও অদৃশ্য ইশারায় পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে গরজ দেখাচ্ছে না।
২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া হলমার্ক গ্রুপের জালিয়াতি শুধু সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, আগারগাঁও ও বনানী শাখাসহ অন্যান্য শাখা থেকেও প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লুটে নিলেও পরিচালনা পর্ষদ নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাহলে তাদের দায়িত্ব কী ছিল? কেন্দ্রীয় ব্যাংক একাধিকবার বিষয়টি নজরে আনলেও তাদের ঘুম ভাঙেনি। দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও অযোগ্যতার কারণে সে পর্ষদ ভেঙে দেয়ার সুপারিশও অর্থ মন্ত্রণালয় কেন আমলে নেয়নি, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করতে না চাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। এমন কথাও গোপন থাকেনি। ব্যাংক খাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের এমন ঘটনা আগে কখনও দেখা যায়নি। নিজেদের পছন্দের লোকদের লুটপাটের সুযোগ করে দিতে সরকারের এমন বেপরোয়া ভূমিকার পেছনে নিশ্চয়ই আরও বড় কারণ রয়েছে।
হলমার্ক জালিয়াতির তদন্ত শুরু হয়েছে। তা সীমাবদ্ধ গণ্ডিতে আটকে না রেখে, সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের দুর্নীতি, জালিয়াতি, লুটপাটের শেকড় খুঁজে বের করার কাজে জরুরিভাবে হাত দিতে হবে এবং তা এখনই। দলীয় বিবেচনায় অনভিজ্ঞ-অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদ ও পরিচালনা পর্ষদে নিয়োগ দেয়ার বিধান বাতিল করে সব প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচিত সরকার ও গণতন্ত্রের নামে এমন ভয়াবহ দুর্নীতি, দলবাজি জনগণ কিছুতেই মেনে নেবে না, এটা এখনও উপলব্ধি করতে না পারলে এজন্য কঠিন মাশুল গুনতে হবে ক্ষমতাসীনদের—তা জোর দিয়েই বলা যায়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন