দামের দাবানলে জ্বলছে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের বাজার। নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ ক্রেতাদের। বাজার ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ সরকারের অকেজো ব্যবস্থাপনায় সবকিছুই এখন দুর্মূল্য। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বাজার নিয়ন্ত্রণে বজ্র আঁটুনি দিলেও শেষ পর্যন্ত সব বাঁধনই ফস্কে গেছে। এখন যেভাবে পারছে দাম বাড়িয়ে লুটে নিচ্ছে মুনাফা। অথচ বাজারে চাহিদার তুলনায় পণ্য আছে। এ অবস্থায় সীমিত আয়ের মানুষ পড়েছেন বিপাকে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ সঞ্চয় ভেঙে, হাওলাত-বরাত করেও আর কূল পাচ্ছেন না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের দুর্নীতি, একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর অতি মুনাফাখোরি, পণ্য পরিবহনের পথে পথে চাঁদাবাজি ইত্যাদি কারণে দ্রব্যমূল্য শনৈঃ শনৈঃ বেড়ে যাচ্ছে। এর আগে সরকারের তরফ থেকে পণ্যদ্রব্যের দাম বেঁধে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নোটিশসহ দামের তালিকা সাঁটানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে তা মোটেই কার্যকর হয়নি। এরপর বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সদলবলে সরেজমিন তদারকিতে নেমেও ফলাফল হয়েছে লবডঙ্ক। ব্যবসায়ীদের তো অজুহাতের সীমা-চৌহদ্দি নেই। কেউ বলছে, চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ নেই, কেউ বলছে বন্যা-খরা-অতিবৃষ্টির কথা। এসবের পাশাপাশি একটি কমন অভিযোগ হচ্ছে, পথে পথে মাস্তানদের চাঁদাবাজির ফলে বেড়ে যাচ্ছে দাম। এই প্রেক্ষাপটে অতিমুনাফার চক্রে পড়ে অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে সব ধরনের পণ্যের বাজার। এদিক থেকে অবিশ্বাস্য রেকর্ড সৃষ্টি করেছে ডিম। প্রতি পিস সর্বোচ্চ ১০ টাকা, অর্থাত্ হালি ৪০। এরই মধ্যে টমেটো এবং ধনেপাতা বিকচ্ছে যথাক্রমে ১২০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। ৮০ টাকার ব্রয়লার মুরগি এখন দেড়শ’ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ হাজার থেকে বারোশ’ টাকা এবং এরই মধ্যে তিনশ’ টাকার ঘর ছুঁয়েছে গরুর মাংসের দাম। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ২০১১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরজুড়েই বাজার ছিল বেসামাল। ক্যাবের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুসারে, ২০১১ সালে দাম সবচেয়ে বেড়েছে ভোজ্যতেলের—শতকরা ২৬ দশমিক ৪৪ ভাগ, শাকসবজিতে ১৭ দশমিক ৩৩ ভাগ, লবণে ৩৪ দশমিক ৪২ ভাগ। অর্থাত্ ২০০৬ সালের তুলনায় দুই থেকে বেড়েছে চারগুণ। দু-একদিনের বাজার অনুসারে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল ৪৮ টাকা, পাইজম ৩৬ টাকা ও স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩২ টাকায়। অথচ চালের দাম বাড়লেও তুলনামূলকভাবে বাড়েনি ধানের দাম। ফলে উত্পাদক কৃষক পড়েছে বিপাকে। কম দামে বেচে বেশি দামে কিনে আক্ষরিক অর্থেই ফতুর হচ্ছেন তারা। আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, রাজধানীতেই স্থানভেদে পণ্যবাজারে হেরফের রয়েছে, বিশেষত সবজির দামে ১০ থেকে ১৫ টাকা পার্থক্য। এতেই প্রমাণ হয়, বাজার তদারকির সরকারি ব্যবস্থাপনা শূন্যের কোঠায়।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকারভুক্ত পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে প্রথমটি ছিল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ। অতঃপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রম করলেও সেই প্রত্যাশা রসাতলে গেছে। দাম কমানো দূরের কথা, জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে বাজারদর স্থিতিশীল রাখতেও চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সরকার, যাকে বলা যায়, বহ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়া। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ইচ্ছামতো জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েই চলছে। এজন্য মূলত সরকারই দায়ী। এর অন্তত একটি কারণ হচ্ছে, সরকারের লোকেরাই এখন ব্যবসা করে, অর্থাত্ বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। কাজেই দাম বাড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মতো কেউ নেই। সম্প্রতি ক্যাবের মহাপরিচালক বলেছেন, বিশ্বমন্দা, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং একশ্রেণীর ব্যবসায়ীর মাস্তানির কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। এসবের জন্যও সরকার দায় এড়াতে পারে না। আরেকটি দুঃখজনক তথা উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, পণ্যের দাম যতই আক্রা হোক, উত্পাদক কৃষক পায় খুবই কম। এর কারণ সরকারিভাবে পণ্য বাজারজাতকরণের অভাব। বিগত দু’বছরে দেখা গেছে, ভরা মৌসুমে আলু কোল্ডস্টোরেজের অভাবে পচে যাচ্ছে, টমেটো ফেলে দিচ্ছে কৃষকরা বিক্রি করতে না পেরে, গরু খাচ্ছে উদ্বৃত্ত বাঁধাকপি। অথচ ঢাকার বাজারে সেগুলোই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এই অব্যবস্থাপনা নতুন কিছু নয়। সরকার কেবল কথা দিচ্ছে, আর ক্রমাগত কথার বরখেলাপ করছে, যার বিষময় ফল ভোগ করতে হচ্ছে বিশেষত উত্পাদক শ্রেণী আর নিরুপায় সাধারণ ক্রেতাদের।
এসব কিছুর একটা বিহিত জরুরি। দুর্নীতি, অব্যবস্থা, অপকর্ম ইত্যাকার জটাজালে জড়িয়ে পড়ে, সাধারণ মানুষের বিপাককে আরও ঘনীভূত করে ফেলার পরিণতি সম্পর্কে সরকার অবহিত নয়—এ কথা ঠিক নয়। তার পরও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। বাজার কেবলই চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে। জনগণের প্রত্যাশা, কথা কম বলে সরকার তথা সংশ্লিষ্টরা এসবের কিছু একটা করুন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের দুর্নীতি, একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর অতি মুনাফাখোরি, পণ্য পরিবহনের পথে পথে চাঁদাবাজি ইত্যাদি কারণে দ্রব্যমূল্য শনৈঃ শনৈঃ বেড়ে যাচ্ছে। এর আগে সরকারের তরফ থেকে পণ্যদ্রব্যের দাম বেঁধে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নোটিশসহ দামের তালিকা সাঁটানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে তা মোটেই কার্যকর হয়নি। এরপর বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সদলবলে সরেজমিন তদারকিতে নেমেও ফলাফল হয়েছে লবডঙ্ক। ব্যবসায়ীদের তো অজুহাতের সীমা-চৌহদ্দি নেই। কেউ বলছে, চাহিদার অনুপাতে সরবরাহ নেই, কেউ বলছে বন্যা-খরা-অতিবৃষ্টির কথা। এসবের পাশাপাশি একটি কমন অভিযোগ হচ্ছে, পথে পথে মাস্তানদের চাঁদাবাজির ফলে বেড়ে যাচ্ছে দাম। এই প্রেক্ষাপটে অতিমুনাফার চক্রে পড়ে অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে সব ধরনের পণ্যের বাজার। এদিক থেকে অবিশ্বাস্য রেকর্ড সৃষ্টি করেছে ডিম। প্রতি পিস সর্বোচ্চ ১০ টাকা, অর্থাত্ হালি ৪০। এরই মধ্যে টমেটো এবং ধনেপাতা বিকচ্ছে যথাক্রমে ১২০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। ৮০ টাকার ব্রয়লার মুরগি এখন দেড়শ’ টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ হাজার থেকে বারোশ’ টাকা এবং এরই মধ্যে তিনশ’ টাকার ঘর ছুঁয়েছে গরুর মাংসের দাম। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ২০১১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরজুড়েই বাজার ছিল বেসামাল। ক্যাবের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুসারে, ২০১১ সালে দাম সবচেয়ে বেড়েছে ভোজ্যতেলের—শতকরা ২৬ দশমিক ৪৪ ভাগ, শাকসবজিতে ১৭ দশমিক ৩৩ ভাগ, লবণে ৩৪ দশমিক ৪২ ভাগ। অর্থাত্ ২০০৬ সালের তুলনায় দুই থেকে বেড়েছে চারগুণ। দু-একদিনের বাজার অনুসারে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল ৪৮ টাকা, পাইজম ৩৬ টাকা ও স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩২ টাকায়। অথচ চালের দাম বাড়লেও তুলনামূলকভাবে বাড়েনি ধানের দাম। ফলে উত্পাদক কৃষক পড়েছে বিপাকে। কম দামে বেচে বেশি দামে কিনে আক্ষরিক অর্থেই ফতুর হচ্ছেন তারা। আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, রাজধানীতেই স্থানভেদে পণ্যবাজারে হেরফের রয়েছে, বিশেষত সবজির দামে ১০ থেকে ১৫ টাকা পার্থক্য। এতেই প্রমাণ হয়, বাজার তদারকির সরকারি ব্যবস্থাপনা শূন্যের কোঠায়।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকারভুক্ত পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে প্রথমটি ছিল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ। অতঃপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রম করলেও সেই প্রত্যাশা রসাতলে গেছে। দাম কমানো দূরের কথা, জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে বাজারদর স্থিতিশীল রাখতেও চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সরকার, যাকে বলা যায়, বহ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়া। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ইচ্ছামতো জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েই চলছে। এজন্য মূলত সরকারই দায়ী। এর অন্তত একটি কারণ হচ্ছে, সরকারের লোকেরাই এখন ব্যবসা করে, অর্থাত্ বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। কাজেই দাম বাড়ালে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মতো কেউ নেই। সম্প্রতি ক্যাবের মহাপরিচালক বলেছেন, বিশ্বমন্দা, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং একশ্রেণীর ব্যবসায়ীর মাস্তানির কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। এসবের জন্যও সরকার দায় এড়াতে পারে না। আরেকটি দুঃখজনক তথা উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, পণ্যের দাম যতই আক্রা হোক, উত্পাদক কৃষক পায় খুবই কম। এর কারণ সরকারিভাবে পণ্য বাজারজাতকরণের অভাব। বিগত দু’বছরে দেখা গেছে, ভরা মৌসুমে আলু কোল্ডস্টোরেজের অভাবে পচে যাচ্ছে, টমেটো ফেলে দিচ্ছে কৃষকরা বিক্রি করতে না পেরে, গরু খাচ্ছে উদ্বৃত্ত বাঁধাকপি। অথচ ঢাকার বাজারে সেগুলোই বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এই অব্যবস্থাপনা নতুন কিছু নয়। সরকার কেবল কথা দিচ্ছে, আর ক্রমাগত কথার বরখেলাপ করছে, যার বিষময় ফল ভোগ করতে হচ্ছে বিশেষত উত্পাদক শ্রেণী আর নিরুপায় সাধারণ ক্রেতাদের।
এসব কিছুর একটা বিহিত জরুরি। দুর্নীতি, অব্যবস্থা, অপকর্ম ইত্যাকার জটাজালে জড়িয়ে পড়ে, সাধারণ মানুষের বিপাককে আরও ঘনীভূত করে ফেলার পরিণতি সম্পর্কে সরকার অবহিত নয়—এ কথা ঠিক নয়। তার পরও কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। বাজার কেবলই চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে। জনগণের প্রত্যাশা, কথা কম বলে সরকার তথা সংশ্লিষ্টরা এসবের কিছু একটা করুন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন