আওয়ামী লীগের সময়ই বিপদ বাড়ে সংখ্যালঘুদের
কক্সবাজারে নিরীহ বৌদ্ধদের ওপর হামলা ও সহিংসতাকে যারা বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করতে চেয়েছিলেন তাদের সম্পূর্ণরূপেই নিরাশ হতে হয়েছে। কারণ, কথিত ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর হামলা ও নির্যাতন আসলে সারা দেশেই চলছে। পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে তাদের ঘরবাড়ি, ভাংচুর চালানো হচ্ছে তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে। প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, বিগত মাত্র কিছুদিনের মধ্যে দিনাজপুরে ৩৫টি ‘সংখ্যালঘু’ পরিবারের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রীর এলাকা গোপালগঞ্জে চারটি মন্দিরে ভাংচুর চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। চট্টগ্রামে ১২টি মন্দির ভাংচুর করার পাশাপাশি বেশকিছু ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। বাগেরহাট ও সাতক্ষীরাসহ আরও অনেক এলাকাতেই ‘সংখ্যালঘুরা’ হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অসহায় শিকার হচ্ছেন। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে বলেই জাতীয় হিন্দু মহাজোট গভীর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু মহাজোটের নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকারের ‘প্রত্যক্ষ মদতেই’ দেশব্যাপী ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার উদ্দেশ্যে ক্ষমতাসীনরা নিজেরাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের এই অভিযোগ শুধু কঠিন সত্য ও গুরুতর নয়, যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণও। কথিত ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর আসলেও আওয়ামী লীগের লোকজন সর্বাত্মক নির্যাতন চালাচ্ছে। এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার পতাকাবাহী এ দলটি সব সময়ই সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড চালিয়ে এসেছে, বিশেষ করে যখন ক্ষমতায় থেকেছে তখন তো বটেই। ইতিহাসের পর্যালোচনায় দেখা যাবে, পাকিস্তান যুগে নয়, ‘সংখ্যালঘুদের’ বিপদ বেড়েছিল স্বাধীনতার পর। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারই সর্বতোভাবে সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিয়েছিল। ওই সরকারের সময় রাতের অন্ধকারে রমনার কালী মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া দূরে থাকুক, তাদের এমনকি চিহ্নিত করার চেষ্টাও চালায়নি সরকার। এটা একটি ঘটনা মাত্র। ওদিকে দেশজুড়ে সে সময় অর্পিত সম্পত্তি দখলের মহা ধুম পড়ে গিয়েছিল। এসব সম্পত্তি ছিল হিন্দুদের। পাকিস্তান আমলে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিতগুলো তো বটেই, যুদ্ধের পর ভারত থেকে ফিরে আসা হিন্দুদের সম্পত্তিও দখল করেছিল আওয়ামী লীগের লোকজন।
আপত্তি উঠেছে আসলে আওয়ামী লীগের চরম শঠতাপূর্ণ কৌশল এবং আক্রমণাত্মক প্রচারণার পরিপ্রেক্ষিতে। দেখা যাচ্ছে, বর্তমান পর্যায়েও দলটির নেতারা দোষ চাপাচ্ছেন বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ওপর। এ ব্যাপারেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই। যেমন কক্সবাজারের সহিংসতার জন্য তিনি বিএনপির এমপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছেন। এর ফলে অপরাধী সন্ত্রাসীরা তো পার পেয়ে গেছেই, একযোগে দুর্নামের শিকার হয়েছে বাংলাদেশও। ক্ষমতাসীনদের কৌশল অবশ্য ধরা পড়ে গেছে। জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা যথার্থই বলেছেন, ক্ষমতাসীনরাই সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে ‘প্রত্যক্ষভাবে মদত’ দিয়েছেন। বস্তুত বিশ্লেষণে পরিষ্কার হয়ে যাবে, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নির্যাতন চালানোর মাধ্যমে নিজেরা ‘সংখ্যালঘুদের’ বিতাড়িত করলেও আওয়ামী লীগের লোকজন সাধু-সন্ন্যাসী সাজার অভিনয় করেন। সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও হানাহানিকে আওয়ামী লীগ সব সময় রাজনীতির ‘কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। এই ‘কার্ড’ দলটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে হাজির করে। বোঝাতে চায়, ইসলামী দলগুলো তো বটেই, বিএনপির মতো দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী দলও সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে! এদের বিপরীতে আওয়ামী লীগ নিজেকেই দেশের একমাত্র ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে হাজির করে থাকে। অন্যদিকে ইতিহাস কিন্তু এই দাবিকে অসত্য প্রমাণ করেছে। দেখা গেছে, বিএনপির কোনো আমলেই ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর নির্যাতন চালানো হয়নি। বিচ্ছিন্ন কিছু প্রচেষ্টাকে বিএনপি সরকারই কঠোরভাবে দমন করেছে।
বলা দরকার, শুধু সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা জুড়ে দিলেই সাম্প্রদায়িক কোনো সরকার রাতারাতি ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে যায় না। ওদিকে যে দেশটিকে খুশি করার জন্য সাম্প্রদায়িকতার ‘কার্ড’টিকে ব্যবহার করা হচ্ছে সে ভারতেও মুসলমানসহ ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর চলছে নিষ্ঠুর নির্যাতন। তাদের শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার রেকর্ডও ভারতেই তৈরি হয়েছে! অমন কোনো রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে বাংলাদেশীদের জীবন উল্টো বিপন্নই হয়ে পড়বে। সমগ্র এ প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি, সারা দেশে ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর চলমান নির্যাতনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য অনুধাবন করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেছেন বলে শুধু নয়, ঘটনাপ্রবাহেও বোঝা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীনরা নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার এবং দিল্লির আশীর্বাদ নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসার জন্য নতুন করে সাম্প্রদায়িকতার পুরনো ‘কার্ড’টিকে ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। ক্ষমতাসীনদের ভয়ঙ্কর এ খেলাকে প্রতিহত করাটাই এখন দেশপ্রেমিকদের প্রধান কর্তব্য।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের এই অভিযোগ শুধু কঠিন সত্য ও গুরুতর নয়, যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণও। কথিত ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর আসলেও আওয়ামী লীগের লোকজন সর্বাত্মক নির্যাতন চালাচ্ছে। এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ, তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার পতাকাবাহী এ দলটি সব সময়ই সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড চালিয়ে এসেছে, বিশেষ করে যখন ক্ষমতায় থেকেছে তখন তো বটেই। ইতিহাসের পর্যালোচনায় দেখা যাবে, পাকিস্তান যুগে নয়, ‘সংখ্যালঘুদের’ বিপদ বেড়েছিল স্বাধীনতার পর। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারই সর্বতোভাবে সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিয়েছিল। ওই সরকারের সময় রাতের অন্ধকারে রমনার কালী মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া দূরে থাকুক, তাদের এমনকি চিহ্নিত করার চেষ্টাও চালায়নি সরকার। এটা একটি ঘটনা মাত্র। ওদিকে দেশজুড়ে সে সময় অর্পিত সম্পত্তি দখলের মহা ধুম পড়ে গিয়েছিল। এসব সম্পত্তি ছিল হিন্দুদের। পাকিস্তান আমলে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিতগুলো তো বটেই, যুদ্ধের পর ভারত থেকে ফিরে আসা হিন্দুদের সম্পত্তিও দখল করেছিল আওয়ামী লীগের লোকজন।
আপত্তি উঠেছে আসলে আওয়ামী লীগের চরম শঠতাপূর্ণ কৌশল এবং আক্রমণাত্মক প্রচারণার পরিপ্রেক্ষিতে। দেখা যাচ্ছে, বর্তমান পর্যায়েও দলটির নেতারা দোষ চাপাচ্ছেন বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ওপর। এ ব্যাপারেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীই। যেমন কক্সবাজারের সহিংসতার জন্য তিনি বিএনপির এমপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দায়ী করেছেন। এর ফলে অপরাধী সন্ত্রাসীরা তো পার পেয়ে গেছেই, একযোগে দুর্নামের শিকার হয়েছে বাংলাদেশও। ক্ষমতাসীনদের কৌশল অবশ্য ধরা পড়ে গেছে। জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা যথার্থই বলেছেন, ক্ষমতাসীনরাই সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে ‘প্রত্যক্ষভাবে মদত’ দিয়েছেন। বস্তুত বিশ্লেষণে পরিষ্কার হয়ে যাবে, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নির্যাতন চালানোর মাধ্যমে নিজেরা ‘সংখ্যালঘুদের’ বিতাড়িত করলেও আওয়ামী লীগের লোকজন সাধু-সন্ন্যাসী সাজার অভিনয় করেন। সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও হানাহানিকে আওয়ামী লীগ সব সময় রাজনীতির ‘কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। এই ‘কার্ড’ দলটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে হাজির করে। বোঝাতে চায়, ইসলামী দলগুলো তো বটেই, বিএনপির মতো দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী দলও সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে! এদের বিপরীতে আওয়ামী লীগ নিজেকেই দেশের একমাত্র ধর্মনিরপেক্ষ দল হিসেবে হাজির করে থাকে। অন্যদিকে ইতিহাস কিন্তু এই দাবিকে অসত্য প্রমাণ করেছে। দেখা গেছে, বিএনপির কোনো আমলেই ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর নির্যাতন চালানো হয়নি। বিচ্ছিন্ন কিছু প্রচেষ্টাকে বিএনপি সরকারই কঠোরভাবে দমন করেছে।
বলা দরকার, শুধু সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা জুড়ে দিলেই সাম্প্রদায়িক কোনো সরকার রাতারাতি ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে যায় না। ওদিকে যে দেশটিকে খুশি করার জন্য সাম্প্রদায়িকতার ‘কার্ড’টিকে ব্যবহার করা হচ্ছে সে ভারতেও মুসলমানসহ ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর চলছে নিষ্ঠুর নির্যাতন। তাদের শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার রেকর্ডও ভারতেই তৈরি হয়েছে! অমন কোনো রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে বাংলাদেশীদের জীবন উল্টো বিপন্নই হয়ে পড়বে। সমগ্র এ প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি, সারা দেশে ‘সংখ্যালঘুদের’ ওপর চলমান নির্যাতনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য অনুধাবন করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেছেন বলে শুধু নয়, ঘটনাপ্রবাহেও বোঝা যাচ্ছে, ক্ষমতাসীনরা নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার এবং দিল্লির আশীর্বাদ নিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসার জন্য নতুন করে সাম্প্রদায়িকতার পুরনো ‘কার্ড’টিকে ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। ক্ষমতাসীনদের ভয়ঙ্কর এ খেলাকে প্রতিহত করাটাই এখন দেশপ্রেমিকদের প্রধান কর্তব্য।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন