শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৪

ক্ষমতার অপব্যবহারকারীরা দীর্ঘস্থায়ী হয় না


আল্লাহ কে সব বলে দেব’ মারা যাওয়ার কয়েক মুর্হূত আগে বলেছিল মাত্র তিন বছরের শিশুটি। বুঝে ছিল সিরিয়ার স্বৈরশাসকের বিচার  একমাত্র আল্লাহ করতে পারেন। তাই সরকারি হামলায় মৃত্যুপথযাত্রী ওই শিশুটির নালিশ বিশ্বের কোটি হৃদয়ে রক্ত ঝরেছে। আজ আমরা একই অবস্থার শিকার। যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ নিরাপদ নয়।মায়ের বুক থেকে কিশোর ছেলেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে এ দেশের দলবাজ র‌্যাব পুলিশ। মায়ের কোলে শিশুটি গুলীবিদ্ধ হচ্ছে,খুন হচ্ছে অপহরণ হচ্ছে,মসজিদে নামাযরত মুসুল্লিরা আজ নিরাপদ নয়, নিরাপদ নন কবর স্থানে দাফন সম্পন্ন করতে যাওয়া  সাধারণ মানুষও। কেন আমরা পুলিশকে বলতে পারছিনা আপনারা যাদের উপর গুলি চালাচ্ছেন তারাও এদেশের নাগরিক। একটি স্ব^াধীন দেশের নাগরিক হয়ে বিরোধী দলকে সমর্থন করায় তাদের বেঁচে থাকার অধিকারটুকু কি হারিয়ে গেছে ? সরকার ভারতের উপর ভর ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে বসে আছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এটা মেনে নেয়নি। ৫ই জানুয়ারী ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে নীরব বিপ্লব দেখিয়েছে। দেশে ৩৯ থেকে ৪৭ টি কেন্দ্রে কোন ভোট পড়েনি। উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল যেভাবে নিজেদের পক্ষে নিয়েছেন তাতে দেশবাসী হতবাক হয়েছেন।  প্রথম দফা আর দ্বিতীয় দফা উনিশ দলীয় জোট ব্যাপক সংখ্যক প্রার্থী বিজয়ী হলেও পরে আর সুযোগ দেয়া হয়নি । তৃতীয় দফা আর চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচনে ফলাফল কিভাবে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তা মিডিয়ার বদৌলতে দেশবাসী দেখেছে অবাক বিস্ময়ে। মুসলমানদের জঙ্গিবাদ নামকরণ করে সারা বিশ্বে চলছে মুসলমানদের উপর অত্যাচার নির্যাতন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের উপর চলছে নানা ষড়যন্ত্র । তারপরও মুসলমানরা বসে নেই এগিয়ে চলেছে র্দুবার গতিতে। বিশ্বের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, মর্তকে নরকখ্যাত কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগার এখন থেকে বার বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল। আমেরিকা কোন বন্দীকে এর ভেতর না ঢোকাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কারাগারে আটক করার পর শত নির্যাতনের পর তাদের মনোবল ভাঙ্গতে পারেনি ও পছন্দমত স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারেনি। ১৪ জানুয়ারি বন্দী খালেদ শেখ মুহাম্মদ এক পত্রে তার মামলার বিষয়ে বেশ কিছু কথা লিখেছেন, তিনি আমেরিকানদের ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিয়েছেন। এ কারাগারে বন্দী হওয়ায় তিনি পেরেশানি নন বরং আনন্দিত। সংবাদ মাধ্যম এটাকে আমেরিকার লজ্জা হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। আমেরিকা ২০০২সালের ১১ই জানুয়ারী এই কারাগারটি প্রতিষ্ঠিত করেন। এটাকে গুয়ান্তানামো বে কারাগার হিসেবে সারাবিশ্বে পরিচিত। নাইন-ইলেভেনের পর   আমেরিকা আফগানিস্তানের ওপর হামলা করে এবং সেখানে অসংখ্য  মুসলিম যুবককে বন্দি করে। আমেরিকার বর্ণনা মতে, তারা আমেরিকান বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল, আমেরিকার অস্তিত্বের হুমকি স্বরূপ অথবা নাইন- ইলেভেনের কোন ঘটনার জন্য হয়তবা তারা জড়িত। এখানে আমেরিকা মুসলিম যুবকদের নির্যাতনের কোন ধরন বাকী রাখে নি। বন্দিদের  নিঃসঙ্গ খাঁচায় রাখা হয়। শোয়ার জন্য একটি শক্ত সিট, দুভাঁজ করা একটি কন্বল, পরার জন্য বিশেষ লাল ইউনিফরম ও খুব পাতলা চপ্পল স্যান্ডেল দেয়া হয়। গুয়ান্তানামো বে কারাগারে সব চেয়ে বড় শাস্তি হল, মলমুত্র ত্যাগের জন্য বাথরুমে যাওয়ার অনুমতি নেই। বরং খাঁচার মধ্যে প্লাষ্টিকের দুটি বালতি দেয়া হয়।তারা তাতে প্রকাশ্যে পৃথক পৃথকভাবে মলমুত্র ত্যাগ করে।এগুলোকে আবার তাদের কাছে রেখে দেয়া হয়। কি শীত কি গরম বন্দিদের ওই খাঁচায় থাকতে হয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়। নিঃশ্বাস বন্ধ করে দেয়া ও বরফের ওপর শুইয়ে দেয়া নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বন্দিদের উলঙ্গ করে শিকারী কুকুর লেলিয়ে দেয়া হয়। এতে যখন তারা সফল  হয়নি তখন পবিত্র কোরআন শরীফের সাথে অবমাননাকর আচরণ করা হয়। হযরত মুহাম্মদ(সাঃ) সম্পর্কে অতান্ত বেয়াদবীপুর্ণ আচরণ করে। এর পর বন্দিদের কাবু না করতে  না পারলে মেরে ফেলা হয় (শহীদ করে দেয়া হয়)। উইকিপিডিয়ারের সূত্র মোতাবেক, সেখানে পবিত্র কোরআনকে টয়লেটে রেখে ফø্যাশের ঘটনা ঘটছে। বার বছর পর দেখা গেছে কেউ ইসলাম ত্যাগ করেনি বরং অনেকে আল-কোরআনের হাফেজ হয়ে বের হয়েছেন।এর সাথে সাথে কালাপানির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।কালাপানি ভারত উপমহাদেশের মুসলমানদের মহান সংগ্রামী ইতিহাসের অবিস্মরণীয় নাম। কালাপানি মুলতঃ ভারত মহাসাগরের মধ্যে ছড়ানো  ছিটানো ইন্দোনেশিয়ার আচে প্রদেশ থেকে ১৫৯ কিলোমিটার দূরে এক দ্বীপপুঞ্জের নাম। ইংরেজরা এদেশ থেকে চলে যাওয়ার সময় এই দ্বীপপুঞ্জ ভারতকে দিয়ে দেয়। এই দ্বীপপুঞ্জকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটির নাম আন্দামান, অপরটির নাম নিকোবার। পুরো দ্বীপপুঞ্জের নাম পোর্ট ব্লেয়ার। এই উপমহাদেশে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন বেগবান হত, তখন ইংরেজরা তা দখলের জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলন্বন করতে লাগল। ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন কারীদের ধরে এই দ্বীপপুঞ্জে পাঠিয়ে দেয়া হত। এখানে বন্দিদের উপর নির্মম নির্যাতন চালানো হত। এনককে ফাঁসি দেয়া হত ্। অনেকে নির্যাতনে শহীদ হয়ে গেছেন। সেই মহান মুক্তি আন্দোলনে সম্পৃক্ত এবং ১৮৬৪ সালে আন্বালা মামলায় মাওলানা জাফর থানেশ্বরীকে পায়ে শিকল বেঁধে সিন্ধু ও করাচির পথ দিয়ে কালাপানি নিয়ে বন্দি করা হয়। তিনি ২৫ বছর পর সেখান থেকে মুক্তি পেলে কালাপানির বন্দি ইতিহাস একটি গ্রন্থ লেখেন।কালাপানির অন্যতম বন্দি ছিলেন মাওলানা ফজলে হক  খায়রাবাদী। তার ঐতিহাসিক কাফনে লেখা  ইতিহাস থেকে কালাপানির বন্দিদের চরম দুর্দশার করুণ চিত্র আমরা দেখতে পাই। সেখানে বন্দিদের কোন কাগজ কলম দেয়া হতনা। ফলে মাওলানা  খায়রাবাদী কাফনে লিখেছেন দাতঁ মাজার কয়লা দিয়ে। মাওলানা খায়রাবাদী তার লেখায় বলেছেন, এখানকার আবহাওয়া ছিল অনুপযোগী। সর্বদা সূর্য যেন মাথার উপর অগ্নিবর্ষণ করে। এখানকার প্রাতঃকালীন  বায়ু লু হাওয়ার মত তপ্ত।খাদ্য অত্যধিক অনুপযুক্ত ও হলাহলের বিষের চেয়ে মারাত্মক। পানি সাপের বিষের চেয়ে মারাত্মক ভয়াবহ।মাঝে মাঝে লোনা পানির ঢেউ এসে প্লাবিত করে দেয় এ দ্বীপকে। রেখে যায় লবণাক্ত,কর্দমাক্ত ও বিষাক্ত পলিমাটি। চার দিকে শুধু অসুখের ছড়াছড়ি। ঔষধের কোন নাম গন্ধ নেই। কেউ মারা গেলে গোসল কাফন-দাফন জানাজা ইত্যাদি কিছুই হয় না। এমন নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার মুসলমানেরা। বিশ্বে অনেক স্বৈরাচারী শাসক ছিলেন। তারমধ্যে  এডলপ হিটলার সর্বকালের সেরা স্বৈরশাসক  ।ফ্যাসিবাদের জনক হিটলারের রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী  আগ্রাসনের কারণে লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। ৬০ লাখ ইহুদিকে পরিকল্পনা মাফিক  প্রাণ হারাতে হয়। ইহুদি নিধনের ঘটনা ইতিহাসে হলকষ্ট নামে পরিচিত। ১০৪৫ সালে যুদ্ধের শেষ দিনগুলি হিটলার বার্লিনে ছিলেন।রেড আর্মি যখন বার্লিন দখল করে নিচ্ছিলেন সেরকম একটা সময়ে তিনি ইভা বাউনকে বিয়ে করেন।বিয়ের পর ২৪ ঘন্টার আগে তিনি সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন। তার ক্ষমতা দাম্ভিকতা তাকে শেষ রক্ষা করতে পারেনি। ইতালির মুসোলিনী ও হিটলারের মত বক্র পথে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিণতি তাকে বরণ করতে হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সবদিক থেকে বিধ্বস্ত ভিক্টর ইমানুয়েলের গণতান্ত্রিক সরকার ও জার্মান হিন্ডেনবার্গ সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইতালিতে বেনিতো মুসোলিনি ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর হিটলারের মত চেহারা পাল্টে যায়। পরবর্তীতে স্বৈরাচার একনায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন।মুসোলিনি সুইজারল্যান্ডে পালাবার সময় কম্যুনিষ্ট প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে নিহত হন । ফ্রান্সের নেপোলিয়ান তিনি বিশাল সাম্রাজ্যের মালিক ছিলেন। মাদ্রিদ  থেকে মস্কো পর্যন্ত। সম্রাট হন ফ্রান্স ও অর্ধ পৃথিবীর।তার অন্যায়ের কারণে মানুষ তাকে বেশি দিন রাজত্ব করতে দেয়নি এবং তাকে হত্যা করা হয়। ফরাসী জাতি সারা বিশ্বে সম্মানিত জাতি। আর ফ্রান্সের সফলতার একমাত্র নায়ক নেপোলিয়ান। বাইরের দেশে তার রূপ ছিল ভিন্ন। দেশের জনমতকে উপেক্ষা করে ব্রিটেন,ক্রোয়েশিয়া,রাশিয়াকে ধ্বংস  করে দেশ দখলের নিমিত্তে হামলা করে। শত্রু বাহিনীর  ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আক্রমণে নেপোলিয়ান পরাজিত হয়ে নিহত হয়। মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলীর পর হোসনে মোবারক সব চাইতে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাসক। ১৯৮১ সালের ৬ই অক্টোবর সেনাবাহিনীর এক সদস্য কর্তৃক তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত নিহত হওয়ার পর হোসনে মোবারক  ক্ষমতায় আসেন। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার দায়ে সারাবিশ্বে তিনি নিন্দিত । মিসরের গণজাগরণের মাধ্যমে তাকে লাঞ্ছিত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। মিসরের বর্তমান অবস্থার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। এবার রোমের দিকে তাকাই। রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট ছিলেন নিরো কডিয়াস সিজার। রোম যখন পুড়ছিল নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল। ঐতিহাসিক উপকথাটির নায়ক তিনি। রোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট পদে অভিষিক্ত হয়েছিলেন।১৩ অক্টোবর ৫৪ খ্রীষ্টাব্দ। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর।  রাজত্ব করেছিলেন মাত্র ১৪ বছর। নিরো তার মায়ের স্বভাব চরিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তার মায়ের নাম ছিল এগ্রোপিনা। চারটি বিয়ে তার। চার জন স্বামীকে তিনি বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করেন।সব শেষে তিনি লোভে পড়ে নিজের বয়োবৃদ্ধ চাচাকে বিয়ে করলেন কেবল রাজ ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য। হাজার হাজার .মানুষকে তিনি নিজে হাতে খুন করেছেন। তরুণ যুবকদের প্রতি ছিল তার ভারী ঝোঁক। ধরে ধরে নিয়ে আসত সুন্দর যুবকদের আপন প্রাসাদে। তার পর ইচ্ছামত কামনা চরিতার্থ করত। যে সব হতভাগ্য যাতে রাণী মাতার অভিসারের কথা বলে না দিতে পারে সেজন্য তাদেরকে গুম করে ফেলা হত। কিভাবে গুম করা হত তা আজ রহস্যাবৃত।১৫ খ্রীষ্টাব্দের ৭ই নভেন্বর তিনি জন্মগ্রহণ করে ছিলেন।  আর মাত্র ৪৩ বছর বয়সে অর্থাৎ ৫৯ খ্রীষ্টাব্দের ২৩ মার্চ মারা গিয়েছিলেন। মারা গিয়েছিলেন মানে তাকে মারা হয়েছিল। আর নিরো ক্ষমতার মোহে আপন মাতা এগ্রোপিনা কে হত্যা করেন।নিরো পাগলা রাজা হিসেবে আখ্যায়িত হলেন।পাগলা রাজার অত্যাচারে দেশে অর্থ সংকট দেখা দিল। তিনি ৩০০ একর জমির উপর ডোমাস আউরিয়া নামের প্রাসাদ নির্মাণ করেন। এর ব্যয় ধরা হয় ৩০০ কোটি স্বর্ণমুদ্রা। টাকা কোথায়।পাগলা রাজা হুকুম দিলেন ট্যাক্স বাড়াও এবং রাজ্যের ধনীদের ধন লুট করে নিয়ে এসো।হুকুম তালিম হলো এক দিনের মধ্যে অর্থ সংগ্রহ হয়ে গেল।কিন্তু রাজ্যে দেখা গেল ভয়াবহ অরাজকতা ও বিদ্রোহ। সম্রাট কঠোর হস্তে দমনের চেষ্টা করলেন। ইতিমধ্যে সম্রাটের শহর,প্রাসাদ ও ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ শেষ করলেন।সম্রাট ৬৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে মহাধুম ধামে প্রাসাদে উঠলেন। মার্চ মাসে গাল্লিয়া প্রদেশের গভর্নর গাইয়াস জুনিয়াস সম্রাটের সাথে বিদ্রোহ করেন অতিরিক্ত কর আরোপের অভিযোগ তুলে। সম্রাট স্বয়ং যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হলেন। অবস্থা প্রতিকুলে যাওয়ায় তিনি পালিয়ে রোমে চলে গেলেন।ফিরে তিনি দুপুরের দিকে প্রাসাদে ঘুমিয়ে পড়লেন।মাঝরাতে জেগে দেখলেন তার প্রাসাদের সকল রক্ষী পালিয়ে চলে গেছেন।  এর পর তিনি চিৎকার দিয়ে বললেন কেউকি আছো আমাকে তলোয়ার দিয়ে হত্যা করতে পার। প্রাসাদে তার আত্ম চিৎকারে প্রতিধ্বনি হলো ; কিন্তু কেউ এলো না। সম্রাট গভীর রাতে প্রাসাদ থেকে বের হয়ে এলেন। তার প্রতিষ্ঠিত শহরের অলিগলিতে চীৎকার করলেন কেউ তার দরজা খুলল না। ইতিমধ্যে চার জন বিশ্বস্ত চাকর বালক স্ত্রী স্পারস এগিয়ে এলেন।সম্রাট তাদের কবর খোঁড়ার নির্দেশ দিলেন। এসময় সম্রাটের কাছে খবর এল রোমান সিনেট তাকে গণশত্রু আখ্যা দিয়ে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে। এ খবর শুনে তিনি স্থির রাখতে পারলেন না। ৩০ বছর বয়সে অর্থাৎ ৬৮ সালের ৯জুন জুন রাতে নিজ হাতে গলায় ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন। অন্য দিকে মহান পুরুষ জুলিয়ার্স প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ এবং কডিয়াস সিজার আগস্টাস সাম্রাজ্যেও একশ’ বছরের পুরানো শাসনামলের পরিসমাপ্তি ঘটে। তার কুকর্মের অভিশাপে দুনিয়ার কোথাও  মহান জুলিয়ার্স সিজারের রক্তের কোন ধারক খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ যেন প্রকৃতির দুরন্ত প্রতিশোধ। যা শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে যুগযুগান্তরে। এভাবে পৃথিবীর অত্যাচারী শাসকরা এক নির্মম পরিস্থিতির শিকার হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। আর মুসলমানরা যুগে যুগে জীবনবাজী রেখে ইসলামের পথে অকাতরে জীবন উৎসর্গ করে গিয়েছেন। এক সময় আফগানরা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রাণপনে লড়াই করে যাচ্ছিলেন সীমাহীন বীরত্ব আর  সাহসিকতা নিয়ে। বিশ্বের প্রবল পরাক্রান্ত একটি রাষ্ট্রশক্তির  ততোধিক পরাক্রান্ত ও সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর আধুনিক মারণাস্ত্রের সম্মুখে ভুখানাঙ্গা, অশিক্ষিত এবং বলতে গেলে নিরস্ত্র আফগানরা অসীম সাহস নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এই খবর মিডিয়াতে প্রচার হওয়ার সাথে সাথে সাহসি মুসলিম  যুবকদের রক্তে নাচন ধরল।  তারা দলে দলে স্বেচ্ছায় তালেবান বাহিনীতে যোগ দিয়ে আফগানিস্তানের দিকে রওয়ানা করল। তারা এ দেশের  রাস্তায় প্রকাশ্যে আফগান হওয়ার আহবান জানায়। আফগান জায়গাটি কেমন ? এ প্রশ্ন করা হলে বলা যাবে এ জায়গাটি ইসলামের বীর মুজাহিদদের উর্বর এলাকা। কেনই বা ওই ভুমি সুলতান মাহমুদ, বাবর, শেরশাহ, এবং তৈমুর লংদের মত মহাবীর পয়দা করে। আবার কেনইবা ওই ভুমিতে কোন উদ্ধত পা রাখতে সাহস পাননি। চেঙ্গিস খান, হালাকু খান, আলেক জান্ডার জলিয়ার্সের সিজারের মত দুনিয়া কাঁপানো মহাবীরেরা। কেনই বা দেশটি অনাদিকাল থেকে স্বাধীনতা ভোগ করে আসছে।বিশ্বের কোন পরাশক্তি ইতিহাসের যে কোন সন্ধিক্ষণে কেন জাতিটিকে পরাভুত করতে পারেনি। তাবৎ দুনিয়ার হাজার হাজার গুণী ব্যক্তি আফগান নিয়ে গবেষণা করে আসছে প্রায় ৫০ হাজার বছর ধরে আফগানি স্তানে মানুষ বসবাস করে আসছে। দেশটির রাজনৈতিকও সাংস্কৃতিক সভ্যতা পিছানো নয়। ভুমধ্যসাগরীয় তীরবর্তী দেশগুলোর সাথে চীনের চলাচলের  ঐতিহাসিক  সিল্ক রোডটির গেটওয়ে আফগানিস্তানের  দিকে চলে গেছে। হিন্দু কুশ পর্বতমালা, সিন্ধুউপত্যকা,ভারতে ঢোকার একমাত্র প্রবেশ পথ  এবং মধ্য প্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হলো আফগানিস্তান। ফলে সভ্যতার সেই আদিমকাল থেকেই  আফগানজাতি নিজেদের কিছু না থাকার সত্ত্বে ও নিজেদের ধনী প্রভাবশালী মনে করত। মর্যাদার লড়াইয়ে তাদের মাথা টন টন করে।মরুভুমির গরম বাতাস, বরফ আচ্ছাদিত পাহাড়ের হাড় কাঁপানো বাতাস আর রুক্ষ শিলাময় পাহাড়ের ধুলিময় বাতাসের ত্রিমুখী শক্তি আফগান জাতিকে আরও করে তুলেছে দুর্বার, দুরন্ত,আর দুঃসাহসি। আজ তারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।কিন্তু বুকে অদম্য সাহস নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। তাদের কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।সেক্ষেত্রে আমরা যদি কুন্ঠিত হই তার মাশুল কঠিনভাবে দিতে হবে।আজ আমাদের দেশ কঠিন অবস্থার মুখোমুখি। অবাধ সুষ্ঠু  মধ্যবর্তী নির্বাচন ছাড়া দেশের পরিবেশ শান্ত হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা যেন কাটছে না। বিশ্বের ৫০টি দেশের কুটনীতিকরা মধ্যবর্তী নির্বাচনের মাধ্যমে সংকট নিরসনের জন্য সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছে।অথচ সরকার এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত করছে না। ভারত সফর করে এসে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেছেন, এ সরকারের মেয়াদ হবে ৫ বছর। সরকার বিগত ৫ বছরে তাদের ওয়াদা রক্ষা করতে পারেনি। সরকারের দুর্নীতি, কেলেঙ্কারী, লুটপাট সামগ্রিক দঃশাসনে সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।এতদিন  সরকার বুঝতে না পারলেও ৫ই জানুয়ারীর পর ভাল বুঝতে পেরেছে।মহাজোট সরকারে যারা আছেন তারাও বুঝতে পেরেছেন অবস্থা নড়বড়ে হয়ে গেছে। ২০০৮ সালে ও ২০০১ সালে তারা ভোট পেয়েছিলেন ৩০-৩২ শতাংশের কম বা বেশী।তারা যুদ্ধাপরাধের বিচার ও মুক্তিযোদ্ধাদের নানাবিধ চেতনার সমর্থকদের সঙ্গে উদারধারার ভোটারদের  সংখ্যা বেড়ে যাবে বলে ধারণা করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। কিন্ত ৫ই জানুয়ারির ৫ শতাংশ ভোট দেখে তারা অবাক হয়েছে।যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে তরুণদের মধ্যে বড় ধরনের নাড়া দিয়েছে। তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ব্যস্ত। তরুণরা এটা বুঝে গেছে।আওয়ামী লীগের দুর্নীতির কারণে তরুণরা বীতশ্রদ্ধ। প্রথমবারের মত বুঝতে পেরেছে তরুণরা আওয়ামী লীগের শাসন কি? এবং কেমন হয়।আওয়ামী লীগ যে ঘরে ঘরে চাকুরী দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা এখন কথার কথা। তরুণদের সাথে আওয়ামী লীগের বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।ব্যবসায়ীদের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক অনেক দিনের। কিন্তু বর্তমানে দেশে ব্যবসায়িক আর্থিক পরিস্থিতি এবং এক শ্রেণীর আওয়ামী সমর্থকদের ব্যবসা বাণিজ্যের দখলে তারা হয়ে পড়েছে ভীত সন্ত্রস্ত।অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ ব্যবসায়ীরা। দেশে কোন বিনিয়োগ হচ্ছে না।সবার মধ্যে যেন এক অজানা শঙ্কা বিরাজ করছে। জানি না কখন কি ঘটে যায়। আওয়ামী লীগ এক দলীয় ভোটারবিহীন নির্বাচন করতে যেয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।গ্যাস, বিদ্যুৎ সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গ্রামীন জনপদে আওয়ামী লীগ একটি আতঙ্কের নাম। শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগের বেশী ক্ষতি হয়েছে।সামগ্রিকভাবে দলের হ্রাস আছে, স্ফীতি নেই। দলে যারা নতুন এসেছেন তাদের সংখ্যা একেবারে কম নয়। তারা আদর্শিক কারণে নয়।বরং ক্ষমতার মোহ এবং প্রাপ্তির আশায় এসে জুটেছে।তারা এসে উঠেছে অনেক উপরে। দলের পোড় খাওয়া নেতাদের কনুই দিয়ে ধাক্কা মেরে। আওয়ামী লীগ এখন আর পোড় খাওয়া নেতাদের নির্ভরশীল না হয়ে হয়ে উঠেছে সুযোগ সন্ধানি সাইবেরিয়ান পাখির মত। আওয়ামী লীগের মধ্যে   দুটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। এক নতুন আর পুরাতন। আর একটি বিভাজন তৈরি হয়েছে তা হল, যারা পেয়েছেন আর যারা পাননি। যারা পেয়েছেন তারা কেন মাঠে নামবেন না।কারণ তাদের গদি রক্ষার চেয়ে সম্পদ রক্ষা করা বড় প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ৫ই জানুয়ারীর আগে পদ্মাসেতু নিয়ে কেলেঙ্কারী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দুনিয়ায় কোন সংকট দেখা দিলে ড. ইউনুস সহ বিরোধীদলকে দায়ী করা হতো।বর্তমান তামাম দুনিয়ার সাথে সরকারের সম্পর্ক ভাল নেই।বাংলাদেশকে কৌশলে এক ঘরে করে ফেলা হয়েছে। সরকার এখন আন্তর্জাতিক বৈধতার সন্ধানে ছুটছে।দেশ থেকে দেশে অভিনন্দন বার্তা যোগাড় করার জন্য। সরকার আপাততঃ তৃপ্ত চীন ও রাশিয়ার অভিনন্দন বার্তায়।তবে আসল বিষয় হল দুটি দেশের অভিনন্দন বার্তায় তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের স্বার্থে তা অনেকে বুঝতে পেরেছে। ১৯৯৬ সালে ১৫ ই ফেব্রুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে  আওয়ামী লীগ প্রায় সমালোচনা করত। কিন্তু ৫ই জানুয়ারীর পর থেকে আওয়ামী লীগের সে সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে গেছে। এ দিকে সাবেক সেনা বাহিনী প্রধান এ কে এম শফিউল্যাহ মার্কিন রাষ্ট্রদুত ড্যান মজিনাকে বাংলাদেশ থেকে বের করে দেয়ার কথা বলেছেন। ১৬ই জানুয়ারী এক অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবী জানিয়েছেন। শফিউল্যাহ বলেন, ড্যান মজিনাকে বের করে দেয়া হোক। কারণ তিনি প্রত্যেক বিষয়ে নাক গলায়। একই সভায় ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সহ সভাপতি মুনতাসির মামুন বলেন, ড্যান মজিনাকে বলা হয় বি এন পির বহিরাগত সদস্য।তার মতে রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য দায়ী বিদেশী কুটনৈতিক। ড্যান মজিনার একটি অপরাধ হল তিনি বলেছেন বাংলাদেশের সংকট নিরসনে নতুন একটি নির্বাচন হতে হবে। ওই নির্বাচন অবশ্যই  আগামী বর্ষা মওসুমের আগে হওয়া জরুরী।তারা বলেছেন, আগামী মে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আমরা দ্রুত সংলাপ শুরু করার তাগিদ দিচ্ছি।ভারত ও শেখ হাসিনার ক্রুদ্ধ হওয়ার কারণ ৫ই জানুয়ারীর পাতানো নির্বাচন আমেরিকা মেনে নেয়নি। ড্যান মজিনার অভিমত আমেরিকার একক সিদ্ধান্তের বহিঃপ্রকাশ নয়, এটা ছিল কমপক্ষে ৫০ দেশের রাষ্ট্রদুতদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের প্রতিফলন।্ কেবলমাত্র ভারতীয় চরছাড়া  এ সিদ্ধান্তের সাথে বাংলাদেশের সিংহভাগ মানুষ একমত। এটা তার একান্ত নিজস্ব মতামত হত তাহলে তাকে বের করে দেয়ার মত অশোভন কথা বলা গ্রহণযোগ্য হত।একদলীয় অগ্রহণযোগ্য নীল নক্সার নির্বাচন বলেই তিনি ও অন্য কুটনৈতিকরা দ্রুত নির্বাচনের পরামর্শ দিয়েছেন। কথা বলার অধিকার সবার আছে। এ অধিকার থেকে কেউ কাউকে বঞ্চিত করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ দেশের মুখ বন্ধ করতে এমন সাহস জন্মেছে যে, বিদেশী কুটনৈতিকদের মুখ বন্ধ করতে চায়। অনেকে মনে করেন এ কে এম শফিউল্যাহর বক্তব্য এমন ্ঔদ্ধত্যপুর্ণ মন্তব্য ছিল ভারতের পক্ষ থেকে আমেরিকার এক প্রকার  প্রতিশোধ। ভারতীয় অনুগতরা মনে করেন। শেখ হাসিনার মুরুব্বী ভারত তার পিছনে হিমালয়ের মত অনড় অবস্থানের কারণেই আমেরিকা ভারতীয় কুটনৈতিক দেবযানীকে হেনস্তা করেছে।অনেকের মতে, ভারত তার অনুগতদের  দিয়ে আমেরিকার  রাষ্ট্রদুতকে বাংলাদেশ থেকে বের করে দেয়া হোক। এমন দাবি করে সেই প্রতিশোধের সুচনা করেছে।কিন্তু দেবযানির বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ আইনের বিষয়টি জড়িত। দেবযানী র’-এর অপারেটিভ হিসেবে গোয়েন্দা তৎপরতায় লিপ্ত ছিল। এমন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ড্যান মজিনার বক্তব্যে সারা বিশ্বের স্বাধীনতা , গণতন্ত্রের মানবাধিকারে বিশ্বাসী মানুষের প্রত্যাশাকে অনুরণিত হয়েছে।বাংলাদেশে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলে সারা দুনিয়া গ্রহণ করেনি ভারত ছাড়া। সমাজের ডাকাত খুনিদের  সাথে সবাই কথা বলে কিন্তু কথা বললেও কিন্তু মনে মনে তাদের ঘৃণা করে। শেখ হাসিনা অভিনন্দন গ্রহণ করার জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন। শেখ হাসিনা দেশের জনগণের টাকা দিয়ে প্রথমবার ডজন খানেক ডক্টরেট  ডিগ্রি ক্রয় করেছিলেন। এবার অভিনন্দন বার্তা কিংবা সার্টিফিকেট কিনতে চেষ্টা করলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। ভুয়াবার্তা দিয়ে পাতানো নির্বাচনের লজ্জা ঢাকা যাবে না।এ অভিনন্দন বার্তা যদি শেষ কথা হত তাহলে ঢাকায় অবস্থানকারী ৫০ টি কুটনীতিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলতেন না। তারা শতভাগ নিশ্চিত এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। দেশের সাধারণ মানুষ এ নির্বাচন বর্জন করেছে।৪১ টি ভোট কেন্দ্রে কেউ ভোট দিতে আসেনি। শেখ হাসিনা বলেছেন, বি এনপি নির্বাচনে এলে আসন দেয়া হত।তাহলে তো নির্বাচনের কোন প্রয়োজন হয় না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র গৃহবন্দি হয়ে গেছে। এক ব্যক্তি গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করলে আর গনতন্ত্র থাকে না। যতদ্রুত নির্বাচন হবে ততই মঙ্গল। এ দিকে হরতাল অবরোধকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়েছে অন্ততঃ ৮লাখ মানুষ। তাদের অনেকে জামিন পেয়েছেন। তবে অনেকে গ্রেফতার এড়াতে কাটাচ্ছেন ফেরারী জীবন।সম্প্রতি রাজনৈতিক সহিংসতায় দায়ের করা মামলায় অনেক গ্রামের মানুষ-- নারী পুরুষ শিশুরা থাকতে পারছে না নিজ বাড়ীতে। নিরাপদ থাকতে ঘরবাড়ি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র বসবাস করছে। পালিয়ে থাকা মানুষের বাড়ীঘর হামলা ভাংচুর,লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ আসছে নারী নির্যাতনের।রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে সংখ্যা লঘু পরিবার। অজ্ঞাতনামা আসামী করে পুলিশের বাণিজ্য জমে উঠেছে।নিরীহ মানুষ হয়রানি হচ্ছে বেশী। ৮লাখ মামলায় অর্ধ লাখ নেতা কর্মী জেলখানায় আটক রয়েছে। এ দেশের জেলখানায় আটক লোকের সংখ্যা ৭০ হাজার। অথচ জেলখানার ধারণ ক্ষমতা মাত্র ২৯ হাজার। তবে বি এনপি জামায়াতের বেশি লোক জেলখানায় আটক রয়েছে। গত ৩মাসে বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪৫৫১টি। নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে আসামী করা হয়েছে ২ লাখ ২৩হাজার জন কে। তবে যশোর সাতক্ষীরা এলাকার লোকজনের উপর অত্যাচার করা হয়েছে বেশী। এ দুই জেলায় চার হাজার নেতা কর্মী জেলখানায় আটক রয়েছে। যেসব মামলায় আটক করা হয়েছে তা হল,গাড়ী পোড়ানো, সড়ক অবরোধ, যানবাহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, পুলিশের কাজে বাধা, বিজিবি গাড়ীতে হামলা,বি আর টি সি বাসে অগ্নি সংযোগ, জন নিরাপত্তা বিঘিœত করা, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা।ভোট কেন্দ্রে হামলা ভাংচুর, লুটপাট অগ্নি সংযোগ, ভোট কেন্দ্রে বোমা হামলা , অস্ত্র প্রদর্শন, ভোটের কাজে নিয়োজিতদের হামলা,মারপিট, স্কুলে অগ্নি সংযোগ, সংখ্যালঘুদের হামলা নির্যাতন, বাড়ি ঘরে অগ্নি-সংযোগ, লুটপাট ধর্ষণসহ কল্পিত অভিযোগ এনে সারা দেশে হাজার মামলা রেকর্ড করা হচ্ছে। এভাবে যৌথ বাহিনী নামক এক আতঙ্কে বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীদেরও ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এই অবস্থায় সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে সরকারকে ইতিহাসের কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads