শনিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০১৩

অর্থমন্ত্রী ও এটর্নি জেনারেলের কিছু অর্বাচীনসুলভ কথা



এটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন অফিসার। এই পদে এমন ব্যক্তিকে বসানো উচিত যিনি আইন শাস্ত্র বা জুরিসপ্রুডেন্স সম্পর্কে অগাধ পান্ডিত্যের অধিকারী হবেন। একই সাথে তার কিছুটা প্রশাসনিক যোগ্যতাও থাকতে হবে। অনুরূপভাবে অর্থমন্ত্রী সেই ধরনের ব্যক্তিকেই করা উচিত যার প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে অর্থনীতি সম্পর্কে গভীর অধ্যয়ন এবং যিনি সাউন্ড ব্রেনের অধিকারী হবেন। শেখ হাসিনার দলীয়করণের রাজত্বে রাষ্ট্রের বড়ো বড়ো পদে কোন ধরনের ব্যক্তিকে বসানো হবে সে সম্পর্কে মনে হয়, খুব একটা হোম ওয়ার্ক হয় না। তাই যদি না হবে তাহলে এডভোকেট মাহবুবে আলম এটর্নি জেনারেলের চেয়ারে বসে এবং আদালতে এজলাসে দাঁড়িয়ে পল্টনী কায়দায় বক্তৃতা করেন কিভাবে? যেখানে তার বক্তৃতায় থাকবে আইন কানুনের অসংখ্য উদাহরণ এবং দেশী-বিদেশী রেফারেন্স, সেখানে তিনি এজলাসে দাঁড়িয়ে মেঠো বক্তৃতা করেন কিভাবে? অনুরূপভাবে এমন এক ব্যক্তিকে অর্থমন্ত্রী বানানো হয়েছে যিনি ইদানীং প্রায়শই ফাউল কথাবার্তা বলেন। অবশ্য এই ধরনের ফাউল কথাবার্তা বলার জন্য তিনি পার্লামেন্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। ইতোপূর্বে একাধিকবার, বিশেষ করে পদ্মা সেতু সম্পর্কে ফাউল কথা বলার কারণে জাতীয় সংসদের ফ্লোরে দাঁড়িয়ে তিনি স্বীকার করেছেন যে, তাঁর বয়স হয়েছে, সে জন্য তিনি হঠাৎ করে কিছু বেফাঁস কথা বলে ফেলেন। এজন্য সত্যিই তিনি দুঃখিত।
সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এই মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধী শিবিরের ১৮ দলীয় জোট আগামী ৬ জানুয়ারি রবিবার সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহবান করেছেন। যখন হরতালের সিদ্ধান্ত গত শুক্রবার ঢাকায় ঘোষণা করা হয় তখন জনাব মুহিত সিলেটে ছিলেন। হরতালের কথা শুনেই তিনি ক্ষেপে ওঠেন। বলেন, হরতাল ডেকে খালেদা জিয়া ‘উন্মাদের' কাজ করেছেন। তিনি একজন উন্মাদ।
জনাব মুহিতের সমস্যা আমরা বুঝি। উল্টা-পাল্টা কথা বলে যারা পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা জলাঞ্জলি দিয়েছেন তাদের পুরোভাগে আছেন জনাব মুহিত। তবে শব্দ চয়নের ব্যাপারে তিনি যে অসতর্ক এবং বল্গাহীন সেটি আমার এতোটা জানা ছিল না। ছাত্র জীবনে তিনি মেধাবী ছিলেন। ঐ সময় তিনি সিএসএস পরীক্ষা দিয়ে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান বা সিএসপি অফিসার হন। ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। অবশ্য ছাত্র ইউনিয়নের নেতা হিসাবে অর্থাৎ সেই সময়কার ছাত্র রাজনীতিতে তিনি ততোটা সমুজ্জ্বল ছিলেন না। রাজনৈতিক জীবনে তিনি জেনারেল এরশাদের খোঁয়াড়ে ঢুকে পড়েন। তিনি এরশাদের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। এখন আবার আওয়ামী লীগে জয়েন করে অর্থমন্ত্রী হয়েছেন। ছাত্র ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পার্টি। সেখানে থেকে আওয়ামী লীগ তার নীতি ভ্রষ্টতারই প্রমাণ দেয়। সিএসপি হিসাবে সারা জীবন আরাম-আয়েশ করে কাটিয়েছেন এবং জনগণের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন। বাইরে এ মর্মে একটি কথা আছে যে, যারা একবার আওয়ামী লীগের ছাঁচে ঢোকে, তারা আর মানুষ থাকে না, তারা ‘আওয়ামী লীগ' হয়ে যায়। অর্থমন্ত্রীর ক্ষেত্রে কি হয়েছে সেটি আমরা জানি না। তবে হরতালের সিদ্ধান্তকে বেগম জিয়ার উন্মাদ সিদ্ধান্ত বলায় তার মানসিক বৈকল্যের লক্ষণ স্পষ্ট প্রতিভাত হয়।
\ দুই\
যারা এক বছরে ৬ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ায় এবং এক বছরে ৫ বার জ্বালানির দাম বাড়ায় তারাই কি উন্মাদ নয়? নাকি এই তোঘলকি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনগণের পাশে এসে যারা হরতাল ডাকেন তারাই উন্মাদ? মুহিত সাহেবকে বলবো, আপনাদের অনেক অফিসিয়াল মেকানিজম আছে। ঐ সব মেকানিজমের মাধ্যমে খবর নিন। দেখুনতো, বার বার জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণ কতোখানি তেতে আছেন? তাকে বলবো, জনগণের কাছে যান, তাদের নাড়ির খবর নিন এবং দেখুন তারা কি বলে। বিরোধী দল কর্তৃক হরতাল আহবান বিরোধী দলের এবং সেই সুবাদে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর আশা-আকাঙ্ক্ষার বাঙময় প্রকাশ। দীর্ঘ ৪ বছরে বিরোধী দল ২০/২২টি হরতাল করলে মুহিত সাহেবদের মাথা খারাপ হয়ে যায় কেন? তারা যে তাদের পূর্বসূরী অর্থাৎ ৪ দলীয় জোটের আমলে ১৭৩ দিন হরতাল করেছিলেন তখন সেগুলো উন্মাদ কাজ হয়নি কেন?
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কথা আর কি বলবো। যুদ্ধাপরাধের বিচারের রিট্রায়ালের আবেদনের ওপর যখন শুনানি চলছিল তখন সরকার পক্ষের যুক্তি দিতে গিয়ে তিনি বলেন যে, অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার করতে এতো কসরত করার কোনো প্রয়োজন নাই। বিচারপতি নিজামুল হক স্কাইপিতে কথা বলুন আর না বলুন, সেসব কারণে কি গোলাম আযমের বিচার বন্ধ থাকবে? পাকিস্তান আমলে অর্থাৎ ১৯৭১ সালে ঢাকায় যে ক'টি দৈনিক ছিল সেগুলোতে বিশেষ করে তার দুটিতে নজর বুলালে গোলাম আযমের অপরাধ প্রমাণিত হবে। এজন্য সাক্ষী সাবুদের প্রয়োজন নাই। তখনকার পত্রিকার কার্টুন এবং ছবি দেখেই তার বিচার করা যায়। এটর্নি জেনারেল এতো বড়ো একটি পোস্টে বসে আছেন, অথচ তিনি কি জানেন না যে পেপার কাটিং বা পত্রিকার ছবি সাক্ষ্য আইনে গ্রহণযোগ্য নয়? তিনি অধ্যাপক গোলাম আযমের যেসব ছবির কথা বলেছেন সেগুলো যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কিত নয়। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানকে রাজনৈতিক সমর্থন দান করা এক কথা, আর সেই যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হওয়া ভিন্ন কথা। এটর্নি জেনারেল কি জানেন না যে, দালাল আইনে শেখ মুজিব সকলকে মাফ করে দিয়েছিলেন? তবে যারা হত্যা, ধর্ষণ, লুট এবং অগ্নিসংযোগের মতো গর্হিত কাজ করেছে তারা এই সাধারণ ক্ষমার আওতায় পড়বে না। এটর্নি জেনারেল কি জানেন যে হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে ছিল তাদের মধ্যে গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী বা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম ছিল না? সেই জন্যই তারা সাধারণ ক্ষমার পর ছাড়া পেয়ে যান। আওয়ামী ঘরানা থেকে বলা হয় যে, শেখ মুজিব কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও ১১ হাজার লোকের একটি তালিকা সরকারের নিকট ছিল, যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ছিল। এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলুন, ঐ ১১ হাজার মানুষের তালিকায় গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম কি ছিল? তাহলে শেখ মুজিবের মৃত্যুর ৩৪ বৎসর পর জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে ঐ সব অভিযোগ উত্থাপন করার কোনো সুযোগ কি আর থাকে?
যেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব জামায়াত নেতাদেরকে দালাল আইনেও সাজা দেননি, সেখানে তারই কন্যা শেখ হাসিনা পিতার আদর্শ থেকে সম্পূর্ণ দূরে সরে গেলেন কেন? এখনতো অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, হাসিনার আওয়ামী লীগ কি মুজিবের আওয়ামী লীগ? হাসিনার আদর্শ কি মুজিবের আদর্শ? প্রাচীন আওয়ামী লিগারদের বক্তব্য হলো শেখ হাসিনা তার পিতা শেখ মুজিবের রক্ত তার ধমনীতে বহন করছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি তার পিতার রাজনৈতিক আদর্শ তার মস্তিষ্কে বহন করছেন না। এই বিষয়টি আরো প্রকট হয়ে ফুটে ওঠে শেখ হাসিনার প্রবল কমিউনিস্ট প্রীতি এবং বাম নির্ভরতা দেখে।
\ তিন\
গত শুক্রবার ঢাকার একাধিক পত্রপত্রিকা লিড নিউজ হিসাবে একটি সংবাদ ছেপেছে। এসব পত্রিকার মধ্যে একটি পত্রিকা শেখ মুজিব এবং আওয়ামী লীগের ভক্ত হিসাবে ইতোমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছে। সে পত্রিকাটিও লিড নিউজ হিসাবে যে স্টোরি ছেপেছে সেটির হেডিং হলো, কমিউনিস্ট নির্ভর আওয়ামী লীগ’’। খবরে বলা হয়েছে যে, আওয়ামী লীগে এখন সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন ও কমিউনিস্ট নেতাদের চলছে মহা সুদিন। আর পুরাতন ছাত্রলীগ নেতাদের চলছে ঘোর দুর্দিন। ঐ খবরে বলা হয়েছে, ‘‘৬৩ বছরের ঐতিহ্যবাহী, উপমহাদেশের প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটিতে সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের অবস্থান সুসংহতই নয়, জোরদার হয়েছে বলে বলাবলি হচ্ছে। দিন দিন কমিউনিস্ট নির্ভর হয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগ।’’ বিশাল ঐ সংবাদের সংক্ষিপ্ত সার নিম্নরূপ :
বিগত কাউন্সিলে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূহ  উল আলম লেনিন এক লাফে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়ামের সদস্য হয়েছেন। আর এক প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়ন সভানেত্রী মতিয়া চৌধুরী গতবারেও প্রেসিডিয়ামে ছিলেন, এবারেও আছেন। আর এক প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি নূরুল ইসলাম নাহিদ একাধারে শিক্ষামন্ত্রী এবং অন্যদিকে আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছেন। ছাত্র ইউনিয়নের আর এক প্রাক্তন সভাপতি আব্দুল মান্নান খান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক পদে বহাল আছেন। ইয়াফেস ওসমান নতুন কমিটিতে আগের পদে বহাল আছেন। একই সাথে তিনি আইসিটি মন্ত্রী। আসাদুজ্জামান নূর সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে বহাল আছেন। তিনি সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা। ঐ রিপোর্টে আরো বলা হয় যে, তোফায়েল আহমেদ, আমীর হোসেন আমু, আব্দুল জলিল এবং সুরঞ্জিত সেন গুপ্তরা প্রেসিডিয়ামে স্থান পাননি। প্রেসিডিয়াম তো দূরের কথা, ওয়ার্কিং কমিটিতে স্থান হয়নি মাহমুদুর রহমান মান্না এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের। ওয়ার্কিং কমিটিতে নাই আব্দুল মান্নান। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহে আলম ওয়ার্কিং কমিটিতে স্থান পাননি। মোহাম্মদ নাসিম প্রেসিডিয়ামে স্থান পেয়েছেন। তিনি ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর পুত্র ঠিকই, কিন্তু ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করতেন।
পিতা শেখ মুজিবের মন্ত্রিসভা এবং কন্যা শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার মধ্যে কি আসমান জমিন ফারাক। শেখ মুজিব তার মন্ত্রী সভায় একজন মাত্র বাম পলিটিশিয়ানকে স্থান দিয়েছিলেন। তাও আবার প্রতিমন্ত্রী হিসাবে। তিনি হলেন আলতাফ হোসেন। যারা বয়সে কিছুটা প্রবীণ অথবা যারা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের রাজনীতির ওপর গবেষণা করেন তারা দেখতে পাবেন যে, এসব মস্কোপন্থী কমিউনিস্টদেরকে মোটেই পাত্তা দেননি শেখ মুজিবুর রহমান। তার আমলেই ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে ভিয়েতনামে মার্কিনী বর্বরতার বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি প্রতিবাদ মিছিল  বের হয়। শেখ মুজিবের আমলে ঐ মিছিলে গুলীবর্ষণ করা হয়। পুলিশের গুলীতে দুইজনের মৃত্যু ঘটে। তখন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি আজ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিবির সভাপতি। স্বাধীনতার পর পুলিশের গুলীবর্ষণে ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে যে দুই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে সেই সময় মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ডাকসুরও ভিপি ছিলেন। তখন শেখ মুজিব ডাকসুর আজীবন সদস্য ছিলেন। গুলীবর্ষণের প্রতিবাদে জনাব সেলিম শেখ মুজিবের আজীবন সদস্য পদ প্রত্যাহার করে নেন। এর প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশ জুড়ে যেখানেই সিপিবি এবং ছাত্র ইউনিয়নকে পাওয়া যায় সেখানেই তাদের ওপর প্রচন্ড হামলা করে আওয়ামী লীগ। অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়ায় যে, আওয়ামী লীগের মারের চোটে প্রায় দুই বৎসর কমিউনিস্টরা ঘর থেকে বের হয়নি। ইতোপূর্বে কমিউনিস্টরা একটি ঐক্য জোট গঠনের তাগিদ দেয়। আওয়ামী লীগ, সিপিবি এবং মস্কোপন্থী ন্যাপ মিলে তারা ঐক্য গড়ার প্রস্তাব করে। তখন শেখ মুজিব দুই কমিউনিস্ট নেতা অর্থাৎ মনি সিং এবং মুজাফ্ফর আহমেদের নাম না ধরে বলেন, ওনারা তাদের নিজ নিজ দলের সাইন বোর্ড খুলে আওয়ামী লীগে যোগদান করলেই তো ঐক্য হয়ে যায়।
এই ছিল তথাকথিত বামপন্থী ও কমিউনিস্টদের প্রতি শেখ মুজিবের মনোভাব। আর এখন, একশ্রেণীর আওয়ামী পন্থী সংবাদপত্র ও বুদ্ধিজীবীদের মূল্যায়নে, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ কমিউনিস্ট নির্ভর হয়ে পড়েছে। আজ জামায়াতে ইসলামী নেতাদের ওপর যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ যে দমন পীড়ন চলছে  সে ব্যাপারেও নাকি প্রধানমন্ত্রীর কান ভারি করছেন আরেক জন প্রাক্তন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা। তিনি হলেন আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।
শুরু করেছিলাম এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের কথা দিয়ে। এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা লাভের পূর্বের এবং পরের ইতিহাস সম্ভবত পড়েননি। অথবা পড়লেও জ্ঞান পাপীর মতো সেগুলো উল্লেখ করেননি। ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম লাভ, আমেরিকার রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রাম, আমেরিকার গৃহযুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধের ২৫ বৎসর পর একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভিয়েতনাম সফর ও ভিয়েতনাম মার্কিন মৈত্রী প্রতিষ্ঠা- প্রভৃতি ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, স্বাধীনতা বা কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার পূর্বের বৈরিতা পরবর্তীকালে ভুলে যাওয়া হয়। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কারণে এই বিস্মৃতির প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজন হলে আমি পরবর্তী কোনো এক কিস্তিতে এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করবো।
শেষ করার আগে বলতে চাই যে, ৪১ বছর আগে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে মানবতা বিরোধী অপরাধের চূড়ান্ত বিচার হতে পারে না। একজন এটর্নি জেনারেল হয়েও আদালত প্রাঙ্গণে তিনি আবেগকেই পুঁজি করতে চেয়েছেন, আইন-কানুন ও যুক্তি-তর্ককে নয়।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads