এবনে গোলাম সামাদ
১৯৭১ সালের সোভিয়েত ইউনিয়ন আর আজকের রাশিয়া মোটেও সমার্থক নয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল ১৫টি রিপাবলিক নিয়ে গঠিত একটি ইউনিয়ন। এরা হলো : রুশ সোভিয়েত ফেডারেল সোস্যালিস্ট রিপাবলিক, ইউক্রেন, বাইলোরেশিয়া, আর্মেনিয়া, উজবেকিস্তান, কাজাকিস্তান, তুর্কমিনিস্তান, কিরগিজিস্তান, তাজিকিস্তান, আজারবাইজান, জর্জিয়া, লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও মলদোভিয়া। এ ছাড়াও ছিল ছোটখাটো কিছু স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়েছে। শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন মস্কো, যা আর সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজধানী নয়, কেবলই রাশিয়ার রাজধানী। শেখ হাসিনা ১৯৭১-এর সূত্র ধরে বলেছেন, রাশিয়া হলো আমাদের দুর্দিনের বন্ধু। কিন্তু রাশিয়া তখন আজকের মতো একা ছিল না। তার সাথে ছিল আরো ১৪টি রিপাবলিক। এ ছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণে ছিল পূর্ব ইউরোপের একাধিক রাষ্ট্র। যেমনÑ রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, পোল্যান্ড। কিন্তু এখন আর তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই রাশিয়ার। বর্তমান রাশিয়াকে তাই ১৯৭১-এর ঐতিহ্য ধরে দুর্দিনের বন্ধু হিসেবে চিহ্নিত করতে যাওয়া হয় না যথাযথ। তাই শেখ হাসিনা যখন বলছেন, ১৯৭১-এর সম্পর্ককে ঝালিয়ে নেয়ার কথা, তখন এ দেশের অনেক বুদ্ধিজীবী সেটার সাথে হতে পারছেন না একমত।
বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতা ১৯৭১ সালের বিশ্বের বাস্তবতা থেকে হয়ে পড়েছে অনেক ভিন্ন। রাশিয়া অস্ত্র বলে বলিয়ান। কিন্তু যুদ্ধ করে মানুষ। সেনাবাহিনী অভুক্ত থেকে পারে না যুদ্ধ করতে। দুই দু’টি বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের একটি কারণ হলো খাদ্যাভাব। রাশিয়া অস্ত্রবলে বলিয়ান হলেও তার খাদ্যসম্পদ নেই। সোভিয়েত ইউনিয়নের খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ছিল ইউক্রেন। কিন্তু ইউক্রেন এখন রাশিয়া থেকে বিশেষভাবেই ভিন্ন হয়ে পড়েছে। কেবল যে ভিন্ন হয়েই পড়েছে তা-ই নয়, সৃষ্টি হতে পেরেছে রুশ ও ইউক্রেনীয়দের মধ্যে বিশেষ বৈরী মনোভাব। বড় রকমের কোনো যুদ্ধ শুরু হলে এতে যে রাশিয়া ভালো করতে পারবে, তা ভাবার কারণ নেই। খাদ্য হয়ে উঠবে তার ক্ষেত্রে যুদ্ধে পরাজয়ের একটি বিশেষ নেয়ামক। তাই শেখ হাসিনা যেমন মনে করছেন, রাশিয়া একটা বিরাট শক্তি এবং বাংলাদেশে তার সহায়তায় কোনো যুদ্ধে হতে পারবে বিশেষভাবে লাভবান তা ভাবার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। রাশিয়া তার স্থল বাহিনীতে যথেষ্ট শক্তিশালী। কিন্তু তার নেই শক্তিশালী নৌবহর। বাংলাদেশকে সাহায্য করতে হলে তাকে আসতে হবে নৌবহর নিয়ে বঙ্গোপসাগরে। কিন্তু রাশিয়ার পক্ষে সে রকম নৌবহর পাঠানো আদৌ সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। অন্য দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আছে বিরাট নৌবহর। সে কেবল খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন নয়, সে খাদ্যে উদ্বৃত্তও বটে। তার সাথে খাদ্য উৎপাদনে রাশিয়া কখনো পাল্লা দিতে পারবে না। কারণ রাশিয়াতে বছরে মাত্র কয়েক মাস চাষাবাদ করা সম্ভব। বাদবাকি সময়ে চাষাবাদ করা চলে না। কারণ দেশটার বিরাট অংশ ঢাকা পড়ে যায় বরফে। এ ছাড়া বরফ গলার পর বহু অঞ্চলেই মাটির মধ্যে পানি থাকে বরফ হয়ে (Permafrost)। তাই সেখানে গ্রীষ্মকালেও করা চলে না চাষাবাদ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সমস্যা নেই। তার ভূমি এভাবে বরফে ঢেকে যায় না। তার মাটির মধ্যে পানি জমে থাকে না বরফ হয়ে। একমাত্র আলাস্কাতেই রাশিয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্য কোনো অঙ্গরাষ্ট্রে এ রকম কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাষাবাদ করা অনেক সহজ। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, আলাস্কা একসময় ছিল রাশিয়ার অংশ। আলাস্কা পরিচিত ছিল রাশিয়ার আমেরিকা হিসেবে। কিন্তু রাশিয়া অর্থের অভাবে আলাস্কা বিক্রি করে দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে, ১৮৬৭ সালে। আলাস্কার প্রভূত উন্নতি ঘটতে পেরেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাষ্ট্র হতে পারার ফলে। রাশিয়ার চাষাবাদপদ্ধতি এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমতুল্য নয়। একজন মার্কিন কৃষক মাথাপিছু গড়পড়তায় বছরে যে পরিমাণ ফসল উৎপাদন করে, একজন রুশ কৃষক গড়পড়তা মাথাপিছু প্রতি বছর উৎপাদন করে তার চার ভাগের এক ভাগ মাত্র।
শেখ হাসিনা বলছেন, রাশিয়া আমাদের দুর্দিনে সাহায্য করেছে। কিন্তু দুর্দিনে সাহায্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সরবরাহ করেছে প্রভূত পরিমাণে গম। না হলে ওই দুর্ভিক্ষ নিতে পারত আরো ভায়াবহ রূপ। এ কথাও ভুলে যাওয়ার নয়। কথাগুলো বলতে হচ্ছে এই কারণে যে, শেখ হাসিনার রুশপ্রীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ককে অমসৃণ করে তোলার সম্ভাবনা থাকছে। আমরা নানা কারণে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ভালো করতে যেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারি না। সেটা হবে রাজনৈতিক দিক থেকে বড় রকমের ভুল।
রুশ ভাষা খুবই উন্নত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এ ভাষায় রয়েছে অনেক মূল্যবান গ্রন্থ। কিন্তু আমরা রুশ ভাষা জানি না। বিদেশী ভাষার মধ্যে আমরা কেবল বিশেষভাবে ইংরেজি ভাষাকেই জানি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাষা ইংরেজি। ভাষাগত কারণে তার কাছ থেকে আমরা অনেক সহজে পারি শিক্ষাদীক্ষা গ্রহণ করতে। যেটা রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়া সহজসাধ্য নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিকাশে যথেষ্ট সহায়ক হতে পারে। সর্বোপরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনীতিতে এখনো যথেষ্ট সবল। যদিও সে ভুগছে অর্থনৈতিক মন্দায়। কিন্তু রুশ নাগরিকদের তুলনায় মার্কিন নাগরিকদের ক্রয়ক্ষমতা এখনো যথেষ্ট বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হলো এখনো আমাদের তৈরী পোশাকের মূল ক্রেতা। শেখ হাসিনা ভাবছেন রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধির কথা। কিন্তু তিনি ভেবে দেখছেন না রুশ নাগরিকদের আসলে ক্রয়ক্ষমতা আছে কতটা। ইচ্ছা করলেই বাংলাদেশ তার পণ্য রাশিয়ায় বিক্রি করতে পারবে না। কিন্তু বর্তমান সরকার যথেষ্ট বাস্তববাদী হয়ে যে চিন্তাভাবনা করছে, তা মনে হচ্ছে না। রাশিয়া আমাদের রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে দেয়ার জন্য চুক্তি করেছে। কিন্তু রাশিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে মোটেও কৃতী দেশ নয়। রুশ প্রকৌশলীরা ইউক্রেনের চেরনোবিল নামক স্থানে গড়েছিল বিরাট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। কিন্তু ১৯৮৬ সালে সেখানে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রেও এ রকম ভয়াবহ বিস্ফোরণ যে ঘটবে না, তা কে বলতে পারে? রাশিয়া পরমাণু বোমা ও হাইড্রোজেন বোমা তৈরিতে যে সাফল্য অর্জন করেছে, ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সে তেমন দক্ষতার অধিকারী হতে পেরেছে বলে মনে হয় না।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা সাবেক পাকিস্তান আমলেই নেয়া হয়েছিল। একটি বেলজিয়াম কোম্পানির সাথে সাবেক পাকিস্তান সরকারের হয়েছিল বিশেষ চুক্তি। ১৯৭১ সাল থেকে এই চুক্তি অনুসারে রূপপুর পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্র নির্মাণ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধের কারণে তা হতে পারেনি। একসময় বিজ্ঞানীরা ভেবেছেন পারমাণবিক শক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, মানুষের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সঙ্কুলান করা যাবে বলে। কিন্তু এখন তারা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে আগের মতো আর উৎসাহী নন। কারণ তারা মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এ বিষয়ে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন। ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের ফুকুসিমার পারমাণবিক চুল্লি ভেঙে তেজস্ক্রিয় বস্তু ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে যেহেতু ফুকুসিমা সমুদ্রের ধারে, তাই সুনামির ঢেউ তেজস্ক্রিয় বস্তু ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সমুদ্রে। কিন্তু আমাদের রূপপুর সমুদ্রের ধারে নয়। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। রূপপুর একটি জনবহুল স্থান। সেখানে কোনো বিস্ফোরণ ঘটলে তা হবে বিরাট বিপর্যয়কর। সম্প্রতি জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বলেছেন, তিনি জার্মানিতে সব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার পক্ষে। কারণ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটলে তাতে মারা যাবে জার্মানির বহু লোক। জার্মানি একটি এগিয়ে থাকা দেশ। সে দেশ ভাবছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার কথা। কিন্তু আমরা চাচ্ছি, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে। জানি না এটা কত দূর যুক্তিযুক্ত হচ্ছে। শেখ হাসিনা বোঝাতে চাচ্ছেন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে আমারা প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে যেতে পারব। কিন্তু আমরা ভাবছি না পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঝুঁকি সম্পর্কে।
শেখ মুজিব ১৯৭৪ সালে ৯ এপ্রিল মস্কো গিয়েছিলেন। রুশ কমিউনিস্ট পার্টির ফার্স্ট সেক্রেটারি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন এক দলের রাজত্ব গড়তে। শেখ মুজিব দেশে ফিরে গড়েছিলেন এক দলের রাজত্ব, যা হয়েছিল তার রাজনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ। শেখ মুজিব-তনয়া ভøাদিমির পুতিনের কাছ থেকে কী পরামর্শ নিয়ে দেশে ফিরলেন আমারা তা জানি না। তবে রাশিয়ায় আর কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় নেই। মার্কসবাদ, লেনিনবাদ সেখানে এখন একটি মৃত মতবাদ। রাশিয়ার মানুষ চাচ্ছে সে দেশে বহুদলীয় উদার গণতন্ত্রেরই প্রতিষ্ঠা। ১৯৭৪-এর রুশ রাজনীতি আর এখনকার রুশ রাজনীতি এক না হতে পারারই কথা। কিন্তু স্নœায়ুযুদ্ধ একেবারেই থেমে গেছে বলে মনে হচ্ছে না। রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শেষ হয়েও শেষ হতে পারছে না। বাংলাদেশ জড়িয়ে পড়তে পারে এই দুই দেশের মধ্যে ক্ষমতার লাড়াইয়ে। অন্য দিকে চীন বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে মাখামাখিকে কী দৃষ্টি নিয়ে দেখবে সেটাও থাকা উচিত আমাদের বিবেচনায়। এত দিন বাংলাদেশকে সাজসরঞ্জাম সরবরাহ করেছে চীন। বাংলাদেশের সাথে চীনের ব্যবসায় বাণিজ্য থেকেছে যথেষ্ট বেশি। চীন রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতাকে ভালোভাবে গ্রহণ করতে না-ও পারে। এত দিন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে ছিল চীনা অস্ত্রের প্রাধান্য। এখন যদি রুশ অস্ত্রের প্রাধান্য বাড়ে, তবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৃষ্টি হতে পারে বিশেষ সমস্যা। বাংলাদেশের সৈন্যরা এত দিন শিখেছেন চীনা অস্ত্র ব্যবহার করতে। কিন্তু এখন শিখতে হবে রুশ অস্ত্রের ব্যবহার। এর ফলে ঘটতে পারে সেনাবাহিনীতে সমন্বয়ের অভাব। দুই রকম অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করা একটি সেনাবাহিনীর পক্ষে হয়ে উঠতে পারে যথেষ্ট কঠিন। একটি সেনাবাহিনীতে একই রকম সমরাস্ত্র থাকাই বিশেষভাবে কাম্য। সামরিক কৌশলগত কারণেই আছে এর বিশেষ প্রয়োজন। বিভিন্ন দেশের অস্ত্র একটি দেশের সেনাবাহিনীকে করে তুলতে পারে অস্ত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে দুর্বল। কারণ সব সৈনিক একই রকম অস্ত্র পরিচালনায় প্রশিক্ষিত হতে পারবেন না। নিতে হবে ভিন্ন ভিন্ন প্রশিক্ষণ।
দীপু মনি বলছেন, রুশ অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশের সৈন্যরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেতে পারবেন জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে। কিন্তু আমরা কি সেনাবাহিনী গড়তে চাই কেবলই জাতিসঙ্ঘের পাইক হিসেবে! আমরা কি ভাবব না নিজ দেশের প্রতিরক্ষার প্রয়োজন নিয়ে? বাংলাদেশ যেন অনুসরণ করতে চাচ্ছে খুকুমণি পররাষ্ট্রনীতি।
শেখ হাসিনা মস্কোর স্টেট ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘আমি এখানে এসেছি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে অভিন্ন সম্পর্ক ও সহযোগিতার বীজ বপন করতে। যার ফল ভোগ করবে আগামী প্রজন্ম।’ তার বক্তৃতা থেকে মনে হচ্ছে, তিনি পুতিন ও রাশিয়ার ক্ষমতার ওপর আরোপ করতে চাচ্ছেন অতি গুরুত্ব। আর চাচ্ছেন বাংলাদেশের অবিষ্যৎকে রাশিয়ার সাথে যুক্ত করে দিতে। কিন্তু এর ফলাফল আমাদের জন্য হতে পারে যথেষ্ট অকল্যাণকর। রাশিয়া সিরিয়ায় সমর্থন করছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে। ২০১১ সালের মার্চ মাস থেকে সিরিয়ায় শুরু হয়েছে গৃহযুদ্ধ। জাতিসঙ্ঘের মতে এ পর্যন্ত সেখানে মারা গিয়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। আমরা চাই না, বাংলাদেশে সিরিয়ার মতো কিছু ঘটুক। কিন্তু রাশিয়ার মন্ত্রণা শুনলে এ রকম কিছু ঘটার সম্ভাবনা যথেষ্টই থাকছে। বাংলাদেশেও শুরু হতে পারে অবাঞ্ছিত গৃহযুদ্ধ।
লেখক : প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন