আসলেও তুলনা নেই আওয়ামী লীগ সরকারের। মিছিল-সমাবেশ ভণ্ডুল করার কর্মকাণ্ডে পুলিশ এবার লাঠি ও টিয়ার গ্যাসের পাশাপাশি নতুন একটি অস্ত্র ব্যবহার করেছে। অস্ত্রটি মরিচের গুঁড়া। পুলিশ অবশ্য ‘বাঙালের’ ভাষায় বলার পরিবর্তে ইংরেজ সাহেবদের ভাষায় এর নাম বলেছে ‘পিপার স্প্রে’। মশার ওষুধ বা কীটনাশক যেভাবে স্প্রে করা বা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেয়া হয় ঠিক সেভাবেই তরল মরিচের গুঁড়া স্প্রে করেছে পুলিশ। কাণ্ডটি ঘটেছে ১০ জানুয়ারি। এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর স্প্রে করা হয়েছে তরল মরিচের গুঁড়া। দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষকরা আগেই আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। সে অনুযায়ী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু পুলিশ তাদের ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিহত তো করেছেই, লাঠিপেটা করে প্রেস ক্লাবের এলাকা থেকেও তাড়িয়ে ছেড়েছে। শিক্ষকরা গিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। স্লোগান দেয়া ছাড়া এমন কিছুই তারা করেননি যাকে আপত্তিকর বা উস্কানিমূলক বলা যেতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বলে কথা! কোনো রকম উস্কানি না থাকা সত্ত্বেও লাঠি দিয়ে পেটানোকেও যথেষ্ট মনে করেনি তারা, একেবারে সামনাসামনি দাঁড়িয়ে শিক্ষকদের ওপর মরিচের গুঁড়া স্প্রে করেছে। এর ফলে প্রচণ্ড জ্বালা ধরে গেছে মুখে ও শরীরে। শহীদ মিনার চত্বরে লুটিয়ে পড়েছেন জাতির ভবিষ্যত্ গড়ার কারিগররা। ওদিকে একই দিন রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর এসিড নিক্ষেপ করেছে ক্ষমতাসীনদের সোনার ছেলেরা। অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগবাণিজ্যের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অপসারণের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্র-শিক্ষকরা আন্দোলন করে আসছিলেন। সেদিনও শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশ হচ্ছিল। এরই মধ্যে হঠাত্ ছাত্রলীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। হামলাকারীদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল না, তাদের সঙ্গে বহিরাগতরাও অংশ নিয়েছে। ঢাকায় পুলিশ যেমন লাঠিপেটাকে যথেষ্ট মনে করেনি, রংপুরের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তেমনি মারপিটকে যথেষ্ট মনে করতে পারেনি। তারা বেছে বেছে জনাকয়েক শিক্ষকের ওপর এসিড নিক্ষেপ করেছে। আচমকা এ হামলায় মুখ ঝলসে গেছে দু’জন শিক্ষকের চোখ। অন্য আটজন শিক্ষকসহ কয়েকজন ছাত্রও গুরুতর রূপে আহত হয়েছেন। তাদেরও শরীরের নানা অংশ পুড়ে গেছে। হামলা চালানোর ও এসিড নিক্ষেপের আগে-পরে খান পঞ্চাশেক ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে সোনার ছেলেরা। ফলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভীতি-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিরও সুযোগ নিয়েছেন আওয়ামী ভিসি। সিন্ডিকেটের জরুরি সভা ডেকে তিনি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
আমরা ঢাকা ও রংপুরের দুটি হামলার বিরুদ্ধেই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কারণ, এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকরা সেদিনই হঠাত্ রাজপথে নেমে আসেননি। তারও আগে সরকারের কাছে দাবিনামা পেশ করেছেন তারা, দেনদরবার করেছেন শিক্ষামন্ত্রীসহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। সে আশ্বাস অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমে এসেছেন। অর্থাত্ পুরো আন্দোলন তারা আইনসম্মতভাবেই করছেন। কিন্তু শিক্ষকদের প্রতি ন্যূনতম সম্মান ও সহানুভূতি দেখানোর পরিবর্তে সরকার এমন নিষ্ঠুরতার সঙ্গে দমন-নির্যাতনের পথে পা বাড়িয়েছে, যা দেখে মনে হতে পারে যেন শিক্ষকরা সরকারের কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ! শুধু তা-ই নয়, আন্দোলনরত শিক্ষকদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের লোকজনও আবিষ্কার করা হয়েছে! এজন্যই কিনা সেটা একটি প্রশ্ন বটে, তবে শুরু থেকেই সরকার পুলিশকে দিয়ে শিক্ষকদের যেভাবে লাঠিপেটা করিয়েছে তাকে কোনো ব্যাখ্যাতেই ভদ্র বা গণতন্ত্রসম্মত বলার উপায় নেই। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার নতুন একটি অস্ত্রও দেখিয়ে ছেড়েছে। নাম দিয়েছে ‘পিপার স্প্রে’—বাংলায় তরল মরিচের গুঁড়া। উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে বিএসএফও সীমান্তে বাংলাদেশীদের ওপর ‘মরিচ বোমা’ ছুঁড়তে শুরু করেছে। আমরা জানি না, ‘পিপার স্প্রে’ ও বিএসএফ-এর ‘মরিচ বোমা’ একই কারখানায় তৈরি হয়েছে কিনা। তবে পুলিশের এই কাণ্ডটিকে শুধু নিন্দনীয় বলা যথেষ্ট হতে পারে না। এটা অগ্রহণযোগ্যও। কারণ, পুলিশ কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যায়নি। যাদের ওপর মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ করা হয়েছে তারা অতি সম্মানিত শিক্ষক, জাতির ভবিষ্যত্ গড়ার কারিগর। সে কারণে পুলিশ পাঠানোর পরিবর্তে সরকারের উচিত ছিল শিক্ষামন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো। আমরা মনে করি, নিষ্ঠুরতা ও অসভ্যতার রেকর্ড না করে সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা এবং তাদের দাবি পূরণের পদক্ষেপ নেয়া। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারেও সরকারকে গণতন্ত্রসম্মত পদক্ষেপই নিতে হবে। আমাদের স্পষ্ট অভিমত, যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সে ভিসিকে অপসারণ করার মধ্যেই সমস্যার সমাধান রয়েছে, দলীয় গুণ্ডা-সন্ত্রাসীদের দিয়ে এসিড নিক্ষেপের মধ্যে নয়।
আমরা ঢাকা ও রংপুরের দুটি হামলার বিরুদ্ধেই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কারণ, এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকরা সেদিনই হঠাত্ রাজপথে নেমে আসেননি। তারও আগে সরকারের কাছে দাবিনামা পেশ করেছেন তারা, দেনদরবার করেছেন শিক্ষামন্ত্রীসহ দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। সে আশ্বাস অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমে এসেছেন। অর্থাত্ পুরো আন্দোলন তারা আইনসম্মতভাবেই করছেন। কিন্তু শিক্ষকদের প্রতি ন্যূনতম সম্মান ও সহানুভূতি দেখানোর পরিবর্তে সরকার এমন নিষ্ঠুরতার সঙ্গে দমন-নির্যাতনের পথে পা বাড়িয়েছে, যা দেখে মনে হতে পারে যেন শিক্ষকরা সরকারের কোনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ! শুধু তা-ই নয়, আন্দোলনরত শিক্ষকদের মধ্যে জামায়াত-শিবিরের লোকজনও আবিষ্কার করা হয়েছে! এজন্যই কিনা সেটা একটি প্রশ্ন বটে, তবে শুরু থেকেই সরকার পুলিশকে দিয়ে শিক্ষকদের যেভাবে লাঠিপেটা করিয়েছে তাকে কোনো ব্যাখ্যাতেই ভদ্র বা গণতন্ত্রসম্মত বলার উপায় নেই। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার নতুন একটি অস্ত্রও দেখিয়ে ছেড়েছে। নাম দিয়েছে ‘পিপার স্প্রে’—বাংলায় তরল মরিচের গুঁড়া। উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে বিএসএফও সীমান্তে বাংলাদেশীদের ওপর ‘মরিচ বোমা’ ছুঁড়তে শুরু করেছে। আমরা জানি না, ‘পিপার স্প্রে’ ও বিএসএফ-এর ‘মরিচ বোমা’ একই কারখানায় তৈরি হয়েছে কিনা। তবে পুলিশের এই কাণ্ডটিকে শুধু নিন্দনীয় বলা যথেষ্ট হতে পারে না। এটা অগ্রহণযোগ্যও। কারণ, পুলিশ কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যায়নি। যাদের ওপর মরিচের গুঁড়া নিক্ষেপ করা হয়েছে তারা অতি সম্মানিত শিক্ষক, জাতির ভবিষ্যত্ গড়ার কারিগর। সে কারণে পুলিশ পাঠানোর পরিবর্তে সরকারের উচিত ছিল শিক্ষামন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো। আমরা মনে করি, নিষ্ঠুরতা ও অসভ্যতার রেকর্ড না করে সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসা এবং তাদের দাবি পূরণের পদক্ষেপ নেয়া। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারেও সরকারকে গণতন্ত্রসম্মত পদক্ষেপই নিতে হবে। আমাদের স্পষ্ট অভিমত, যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সে ভিসিকে অপসারণ করার মধ্যেই সমস্যার সমাধান রয়েছে, দলীয় গুণ্ডা-সন্ত্রাসীদের দিয়ে এসিড নিক্ষেপের মধ্যে নয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন