প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান
পনের কোটি লোকের বসবাসের বিচিত্র দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। ক্ষুদ্র এ ভূখণ্ডে প্রতিনিয়ত ঘটে নানা অঘটন। এখানে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বড় দুর্ঘটনার সুরাহা হওয়ার আগে ঘটে যায় তার চেয়েও বড় কোনো দুর্ঘটনা। যারা দেশ কিংবা দেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক বিষয় সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সচেতন কিংবা যারা এইসব অঘটনের খবর রাখেন তারা একটু পেছনে তাকালেই আমার এই লেখার সত্যতা খুঁজে পাবেন। গেল দু্’সপ্তাহের মধ্যে ঘটে যাওয়া এরকম দুটো ঘটনা আমাদের বেশ ভাবিয়ে তুলছে। তার একটি গত ৯ এপ্রিল রাতে সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অর্থ কেলেঙ্কারি আর অন্যটি বিরোধী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা সভাপতি, সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতা ও সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলীকে গুম করে ফেলা। দুটো বিষয়ই নানা কারণে জনমনে ব্যাপক নাড়া দিয়েছে। এসব কারণের অন্যতম হলো সুরঞ্জিত বাবুকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নাটক আর ইলিয়াস আলীকে নিয়ে তার নির্দয় বক্তব্য। ১৭ এপ্রিল রাতে গুম হন ইলিয়াস আলী। তার নিখোঁজের পর সারাদেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ছে এই অন্যায়ের প্রতিবাদে। খবরের কাগজসহ সব গণমাধ্যম ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এখন এই গুম নিয়েই নানা খবর বের হচ্ছে আর অন্যদিকে সুরঞ্জিত বাবু মোটামুটি বহাল তবিয়তে দফতরবিহীন মন্ত্রী হয়ে পরম সুখে ও পরম নিরাপদেই দিনাতিপাত করছেন। যেন কিছুই ঘটেনি আর কি! তদন্ত কমিটিগুলো প্রথম দুই দিন যে তত্পরতা চালিয়েছিল তা এখন ইলিয়াস আলী ইস্যুতে পুরোটাই চাপা পড়ে গেছে। মন্ত্রীর এপিএস জনসম্মুখে এসে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে বড় গলায় বলছেন, আটককৃত বস্তাভর্তি টাকার মালিক তিনি নিজেই, বাবু সুরঞ্জিতের কোনো দোষ নেই! সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রেলওয়ের জিএম আর নিরাপত্তা কর্মকর্তার চোখে-মুখেও দুশ্চিন্তার লেশমাত্র দেখা যায়নি। সুতরাং সুরঞ্জিত বাবুর কালো বিড়াল নাটক যে সরকার আগের ঘটে যাওয়া সব বড় বড় ঘটনার মতো ধামাচাপা দিতে সক্ষম হয়েছে সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। শুধু অজপাড়াগাঁয়ের হতদরিদ্র ও হতভাগ্য ড্রাইভার আজমই আমাদের মাঝ থেকে হয়তো চিরতরে হারিয়ে গেল। তার ছোট বাচ্চা চিরতরে এতিম হলো, বৌ হলো বিধবা। তাদের আকুতি এবং তাদের কান্না যে কত হৃদয়বিদারক তা উপলব্ধি করার যেন কেউ নেই। তাদের চোখের পানির জবাব নিশ্চয়ই বর্তমান দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত বাবু বা প্রধানমন্ত্রী কখনোই দেবেন না।
যা হোক, ইলিয়াস আলীর কথায় ফিরে আসি। অনেক পত্রিকায় এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কেন ইলিয়াস আলী ক্ষমতাসীন দলের টার্গেট ছিলেন। গুমের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্বামীর সন্ধান চেয়ে ১৯ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আদালতের প্রতি আমরা অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। কারণ আদালত পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে ইলিয়াসকে আদালতে হাজির করতে, যা আমাদের মনে ক্ষীণ আশার সঞ্চার করে। যখন একটি রাষ্ট্রে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয় তখন একমাত্র আদালতই আমাদের শেষ ভরসা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়েছিলেন ইলিয়াস আলীর বাসায় তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে। তিনি ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার সর্বাত্মক চেষ্টার আশ্বাস দেন। অন্যদিকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল গিয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে, যাতে ইলিয়াস আলীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করা হয়। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তখন বলেছিলেন ‘সরকার বিব্রত’। এসব বক্তব্য শুনে এদেশের মানুষ অভ্যস্ত। তবুও বোধকরি এসব বক্তব্যে ইলিয়াস আলীর পরিবার কিছুটা আশার আলো দেখছিল। কিন্তু সে আলো নিভে যায় যখন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বললেন, ‘বিএনপির এক নেতা নাকি হারিয়ে গেছেন। সেও হারিছ চৌধুরীর মতো লুকিয়ে আছে কিনা কে জানে। আন্দোলনের ইস্যু তৈরি করতে বিরোধীদলীয় নেত্রীর নির্দেশে ইলিয়াস আলী লুকিয়ে থাকতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক ও অনভিপ্রেত। তার এই বক্তব্যের অনেক ভয়াবহ দিক আছে। প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান, জাতির প্রতিনিধি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে দুঃখ প্রকাশ করলেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যে বিব্রত হলেন সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এরকম একটি সংবেদনশীল বিষয়ে জাতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন বক্তব্য আশা করে না। তার এই বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার প্রত্যয় হারাবে এবং অপরাধীরা আরও প্রশ্রয় পাবে। একটি রাষ্ট্রের নির্বাহী পদে বসে এ ধরনের কৌতুকপূর্ণ নিষ্ঠুর বক্তব্য স্বজন হারানো একটি পরিবারের সঙ্গে নিশ্চয়ই অমানবিক আচরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। স্বজন হারানোর শোকে শোকাতুর একটি পরিবারের সঙ্গে এরচেয়ে নিষ্ঠুর তাচ্ছিল্য আর কী হতে পারে? শেষ পর্যন্ত ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তার স্বামীর লাশটি ফেরত চেয়েছেন। একটি স্বাধীন দেশে গুম হয়ে যাওয়া একজন মানুষের লাশটি পর্যন্ত খুঁজে না পাওয়া, তার সঠিক সত্কার করতে না পারা যে কত মর্মস্পর্শী, কত বেদনাদায়ক তা বোধকরি এই মুহূর্তে তার পরিবার ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না। ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর এই চাওয়া থেকে আমরা বুঝতে পারি, এদেশে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ পেলেও তার স্বজনরা বেজায় খুশি। এটা থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঠিক চিত্র জনগণের সামনে ফুটে ওঠে। মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, ‘কোথায় আমাদের স্বাধীনতা আর কোথায় তার গণতান্ত্রিক সরকার?’
যাই হোক, প্রধানমন্ত্রী অসত্য বলছেন তা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। তার কাছে নিশ্চয়ই তথ্য-প্রমাণ আছে যে ইলিয়াস আলীকে বিরোধী দলই গুম করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর তার দায়িত্ব হয়ে পড়ছে ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করা। এদেশের আর্মি, র্যাব, পুলিশসহ সব গোয়েন্দা সংস্থাই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। কেউ যদি লুকিয়েও থাকে আর সরকার যদি তাকে খুঁজে না পায় তাহলে সরকার এবং সব আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী ব্যর্থ বলেই পরিগণিত হওয়া উচিত। অথবা আমাদের বোঝা উচিত, দেশ পরিচালনা করছে বিরোধী দল এবং তারা যা খুশি তাই করছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব রাষ্ট্রযন্ত্র তাদের কাছে ব্যর্থ। একটি দেশের নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার মতো দুর্ভাগ্য আর কিছু হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য কি এই ছিল যে স্বাধীন দেশে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগব? অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে আমরা ঘরে-বাইরে কোথাও নিরাপদ নই। বেডরুম পাহারা দেয়া যে সরকারের দায়িত্ব নয়, সে সরকার নির্জন রাস্তাঘাট পাহারা দেবে কীভাবে? যে দেশের সরকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারে না, স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে পারে না সে দেশের জনগণ নিশ্চয়ই একদিন এর প্রতিবাদ করবে। আমরা জানি না সেটা কবে বা সে প্রতিবাদের ভাষা কী হবে।
অন্যদিকে ‘র্যাব এই অপহরণে জড়িত ছিল’ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য যদি সঠিক হয় তা রাষ্ট্রের জন্য আরও ভয়াবহ, আমাদের দেশের রাজনীতির জন্য অশনি সঙ্কেত। রাজনীতি করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। রাজনীতি মানে মৃত্যু উপত্যকা নয়। সরকার যদি গুম খুনের তদন্তে ব্যর্থ হয়, কোনো দায়িত্ব না নেয় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি ঘাতকের ভূমিকা পালনের অভিযোগ ওঠে, তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে যদি খুন, গুম, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ বা অপহরণের মতো জঘন্য অভিযোগ উত্থাপিত হয় বা তাতে রাষ্ট্রের যদি প্ররোচনা থাকে তাহলে মানুষ যতই দল বেঁধে চলুক এসব ঠেকানো যাবে না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব মানুষের জানমালের নিশ্চয়তা প্রদান করা আর তা না পারলে সে রাষ্ট্র বা সরকার নিঃসন্দেহে ব্যর্থ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইলিয়াস আলী বা এর আগে গুম হয়ে যাওয়া শতাধিক মানুষের ব্যাপারে কোনো কুলকিনারা করতে পারে না, তারা দরিদ্র গাড়িচালক আজমের সন্ধান দিতে পারে না, তারা সাংবাদিক দম্পতি হত্যার তদন্তে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। অথচ হরতালে বা বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক প্রতিবাদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকে তাড়া করায়, মির্জা আব্বাসের বাসায় ঢুকে তাণ্ডব চালাতে, লিমনকে খোঁড়া করে দিয়ে নাটক সাজাতে, কাদেরকে মারধর করে ডাকাত সাজানোর পাঁয়তারা করাতে এবং ‘ক্রসফায়ার কেচ্ছা’ রচনা করাসহ সব অপকর্মেই চরম দক্ষতার পরিচয় দেয়। রাষ্ট্রের সরাসরি ইন্ধন না থাকলে কীভাবে এত অপকর্মের পরও তাদের কোনো বিচার হয় না? তাদের ক্ষমতা কি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহীর ক্ষমতার চেয়েও বেশি?
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে গত কয়েক মাসে ১০০টি গুমের একটি ঘটনারও সুরাহা হয়নি। নিখোঁজের এই চিত্র জাতির জন্য লজ্জাজনক। ইলিয়াস আলীর মতো এত ওপরের একজন মানুষের নিরাপত্তা যদি এরকম হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? ২০১০ সালে ২৬ জুন ফার্মগেট থেকে অপহৃত হন ওয়ার্ড কমিশনার ও বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, ২০০৮ সালে অপহৃত হন যুবদল নেতা লিয়াকত। অদ্যাবধি তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় অপহৃত হন ঝিকরগাছা বিএনপি সভাপতি নাজমুল ইসলাম। পরদিন সকালে তার লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরে। গুম ও অপহরণের এরকম শত শত চিত্র আমাদের জানা আছে। এসব গুম বা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকা নিয়ে সরকার তথা সরকারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি যে অভিযোগ উঠছে সরকারের উচিত কথায় নয় কাজের মাধ্যমে এই অভিযোগ খণ্ডন করা। অন্যথায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আইন ভঙ্গ করার কারণে আইনের প্রতি আস্থা হারাবে সাধারণ জনগণ। এটা ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের জন্য, জাতির জন্য ভয়াবহ ক্ষতির রূপ ধারণ করতে বাধ্য। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি তত্পর হয় তাহলে প্রতিটি গুম, হত্যা কিংবা অপহরণের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব। প্রতিটি অপরাধের যেমন কিছু চিহ্ন থাকে যেগুলোর সূত্র ধরে অপরাধীকে শনাক্ত করা যায়, ইলিয়াস আলী গুমের ঘটনায়ও তা আছে। ঢাকাতে প্রায় প্রতিটি ট্রাফিক সিগন্যালে ও প্রতিটি মোড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরায় ইলিয়াস আলী অপহরণের দৃশ্য থাকার কথা। মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকায় সিসিটিভির মাধ্যমে ঘটনাস্থল কভার দেয়ার কথা। সেসব ভিডিও ফুটেজ মনিটর করলেই ওই সময় রাস্তায় কোন গাড়ি চলছে, তাতে কারা যাত্রী ছিল সেটা ধরা পড়ার কথা। অন্যদিকে গুমের ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলে জানা যায় তারা এবং ইলিয়াস আলী ও তার ড্রাইভারের ফোনের কল লিস্টও হতে পারে তদন্তের আরও উত্স।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের মতে, নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার যদি তাকে খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয় তাহলে গুম, অপহরণ অথবা খুনের এই ঘটনা আরও বাড়বে। আজকে একজনকে পাওয়া যাবে না, কাল আরেকজনকে পাওয়া যাবে না। এভাবে চলতে থাকলে জাতি হিসেবে আমাদের গন্তব্য কোথায়? যারা হারিয়েছে তাদের কি কোনোদিন খুঁজে পাওয়া যাবে না? সাগর-রুনির খুনিরা কি কোনোদিন শাস্তি পাবে না? আদালতে পুলিশের ব্যর্থতা স্বীকারের পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি বলেন তারা ব্যর্থ হয়নি বরং তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে, তাহলে সাধারণ মানুষ কার কথা বিশ্বাস করবে? দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, বিশেষ করে মন্ত্রী পর্যায়ের লোকদের যে কোনো কথা বলার আগে ভেবে-চিন্তে কথা বলা উচিত, নয়তো এই ব্যর্থতার ভার তাদের ওপরই বর্তাবে। অন্যদিকে ‘বিএনপিই গুপ্তহত্যা চালু করছে’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে প্রথম আলোর অনলাইন জরিপে ২২ এপ্রিল ৮১ শতাংশ জনগণ দ্বিমত পোষণ করেছেন। বিএনপি যদি চালু করেও থাকে এখন তো তারা সরকারে নেই। সুতরাং এখন এটা চলছে কেন? ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্ব এটাকে বন্ধ করা। ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর কান্না, স্বামীকে খুঁজে পাওয়ার তার ব্যাকুলতা, তার ছোট্ট মেয়ের কান্না এবং বাবাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি—এগুলোর প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা আশা করি সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিরোধী দলকে অযথা দোষারোপ না করে ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে। অন্যথায় দেশ বিশৃঙ্খলার দিকে এগুবে যা কারও কাম্য নয়। ইলিয়াস আলী গুম হওয়া গণতন্ত্র বিপন্ন হওয়ার হাতছানি। আমরা সাধারণ জনগণ তবুও স্বপ্ন দেখি একটি সুষ্ঠু বিকাশমান গণতন্ত্রের। আমাদের সীমাবদ্ধ ক্ষমতায় আমরা শুধু পরম করুণাময়ের কাছে দোয়া করতে পারি, যাতে অচিরেই ইলিয়াস আলী তার পরিবারের সদস্যদের মাঝে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসে।
লেখক : ডিন, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা
যা হোক, ইলিয়াস আলীর কথায় ফিরে আসি। অনেক পত্রিকায় এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে কেন ইলিয়াস আলী ক্ষমতাসীন দলের টার্গেট ছিলেন। গুমের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্বামীর সন্ধান চেয়ে ১৯ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আদালতের প্রতি আমরা অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। কারণ আদালত পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে ইলিয়াসকে আদালতে হাজির করতে, যা আমাদের মনে ক্ষীণ আশার সঞ্চার করে। যখন একটি রাষ্ট্রে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয় তখন একমাত্র আদালতই আমাদের শেষ ভরসা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়েছিলেন ইলিয়াস আলীর বাসায় তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে। তিনি ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার সর্বাত্মক চেষ্টার আশ্বাস দেন। অন্যদিকে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল গিয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে, যাতে ইলিয়াস আলীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করা হয়। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তখন বলেছিলেন ‘সরকার বিব্রত’। এসব বক্তব্য শুনে এদেশের মানুষ অভ্যস্ত। তবুও বোধকরি এসব বক্তব্যে ইলিয়াস আলীর পরিবার কিছুটা আশার আলো দেখছিল। কিন্তু সে আলো নিভে যায় যখন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বললেন, ‘বিএনপির এক নেতা নাকি হারিয়ে গেছেন। সেও হারিছ চৌধুরীর মতো লুকিয়ে আছে কিনা কে জানে। আন্দোলনের ইস্যু তৈরি করতে বিরোধীদলীয় নেত্রীর নির্দেশে ইলিয়াস আলী লুকিয়ে থাকতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক ও অনভিপ্রেত। তার এই বক্তব্যের অনেক ভয়াবহ দিক আছে। প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান, জাতির প্রতিনিধি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে দুঃখ প্রকাশ করলেন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যে বিব্রত হলেন সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এরকম একটি সংবেদনশীল বিষয়ে জাতি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন বক্তব্য আশা করে না। তার এই বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার প্রত্যয় হারাবে এবং অপরাধীরা আরও প্রশ্রয় পাবে। একটি রাষ্ট্রের নির্বাহী পদে বসে এ ধরনের কৌতুকপূর্ণ নিষ্ঠুর বক্তব্য স্বজন হারানো একটি পরিবারের সঙ্গে নিশ্চয়ই অমানবিক আচরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। স্বজন হারানোর শোকে শোকাতুর একটি পরিবারের সঙ্গে এরচেয়ে নিষ্ঠুর তাচ্ছিল্য আর কী হতে পারে? শেষ পর্যন্ত ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তার স্বামীর লাশটি ফেরত চেয়েছেন। একটি স্বাধীন দেশে গুম হয়ে যাওয়া একজন মানুষের লাশটি পর্যন্ত খুঁজে না পাওয়া, তার সঠিক সত্কার করতে না পারা যে কত মর্মস্পর্শী, কত বেদনাদায়ক তা বোধকরি এই মুহূর্তে তার পরিবার ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না। ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর এই চাওয়া থেকে আমরা বুঝতে পারি, এদেশে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ পেলেও তার স্বজনরা বেজায় খুশি। এটা থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঠিক চিত্র জনগণের সামনে ফুটে ওঠে। মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, ‘কোথায় আমাদের স্বাধীনতা আর কোথায় তার গণতান্ত্রিক সরকার?’
যাই হোক, প্রধানমন্ত্রী অসত্য বলছেন তা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। তার কাছে নিশ্চয়ই তথ্য-প্রমাণ আছে যে ইলিয়াস আলীকে বিরোধী দলই গুম করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর তার দায়িত্ব হয়ে পড়ছে ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করা। এদেশের আর্মি, র্যাব, পুলিশসহ সব গোয়েন্দা সংস্থাই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। কেউ যদি লুকিয়েও থাকে আর সরকার যদি তাকে খুঁজে না পায় তাহলে সরকার এবং সব আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনী ব্যর্থ বলেই পরিগণিত হওয়া উচিত। অথবা আমাদের বোঝা উচিত, দেশ পরিচালনা করছে বিরোধী দল এবং তারা যা খুশি তাই করছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব রাষ্ট্রযন্ত্র তাদের কাছে ব্যর্থ। একটি দেশের নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তাহীনতার মতো দুর্ভাগ্য আর কিছু হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য কি এই ছিল যে স্বাধীন দেশে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগব? অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে আমরা ঘরে-বাইরে কোথাও নিরাপদ নই। বেডরুম পাহারা দেয়া যে সরকারের দায়িত্ব নয়, সে সরকার নির্জন রাস্তাঘাট পাহারা দেবে কীভাবে? যে দেশের সরকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারে না, স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে পারে না সে দেশের জনগণ নিশ্চয়ই একদিন এর প্রতিবাদ করবে। আমরা জানি না সেটা কবে বা সে প্রতিবাদের ভাষা কী হবে।
অন্যদিকে ‘র্যাব এই অপহরণে জড়িত ছিল’ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য যদি সঠিক হয় তা রাষ্ট্রের জন্য আরও ভয়াবহ, আমাদের দেশের রাজনীতির জন্য অশনি সঙ্কেত। রাজনীতি করা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। রাজনীতি মানে মৃত্যু উপত্যকা নয়। সরকার যদি গুম খুনের তদন্তে ব্যর্থ হয়, কোনো দায়িত্ব না নেয় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি ঘাতকের ভূমিকা পালনের অভিযোগ ওঠে, তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে যদি খুন, গুম, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ বা অপহরণের মতো জঘন্য অভিযোগ উত্থাপিত হয় বা তাতে রাষ্ট্রের যদি প্ররোচনা থাকে তাহলে মানুষ যতই দল বেঁধে চলুক এসব ঠেকানো যাবে না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব মানুষের জানমালের নিশ্চয়তা প্রদান করা আর তা না পারলে সে রাষ্ট্র বা সরকার নিঃসন্দেহে ব্যর্থ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইলিয়াস আলী বা এর আগে গুম হয়ে যাওয়া শতাধিক মানুষের ব্যাপারে কোনো কুলকিনারা করতে পারে না, তারা দরিদ্র গাড়িচালক আজমের সন্ধান দিতে পারে না, তারা সাংবাদিক দম্পতি হত্যার তদন্তে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। অথচ হরতালে বা বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক প্রতিবাদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকে তাড়া করায়, মির্জা আব্বাসের বাসায় ঢুকে তাণ্ডব চালাতে, লিমনকে খোঁড়া করে দিয়ে নাটক সাজাতে, কাদেরকে মারধর করে ডাকাত সাজানোর পাঁয়তারা করাতে এবং ‘ক্রসফায়ার কেচ্ছা’ রচনা করাসহ সব অপকর্মেই চরম দক্ষতার পরিচয় দেয়। রাষ্ট্রের সরাসরি ইন্ধন না থাকলে কীভাবে এত অপকর্মের পরও তাদের কোনো বিচার হয় না? তাদের ক্ষমতা কি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহীর ক্ষমতার চেয়েও বেশি?
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে গত কয়েক মাসে ১০০টি গুমের একটি ঘটনারও সুরাহা হয়নি। নিখোঁজের এই চিত্র জাতির জন্য লজ্জাজনক। ইলিয়াস আলীর মতো এত ওপরের একজন মানুষের নিরাপত্তা যদি এরকম হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? ২০১০ সালে ২৬ জুন ফার্মগেট থেকে অপহৃত হন ওয়ার্ড কমিশনার ও বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, ২০০৮ সালে অপহৃত হন যুবদল নেতা লিয়াকত। অদ্যাবধি তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় অপহৃত হন ঝিকরগাছা বিএনপি সভাপতি নাজমুল ইসলাম। পরদিন সকালে তার লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরে। গুম ও অপহরণের এরকম শত শত চিত্র আমাদের জানা আছে। এসব গুম বা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকা নিয়ে সরকার তথা সরকারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি যে অভিযোগ উঠছে সরকারের উচিত কথায় নয় কাজের মাধ্যমে এই অভিযোগ খণ্ডন করা। অন্যথায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আইন ভঙ্গ করার কারণে আইনের প্রতি আস্থা হারাবে সাধারণ জনগণ। এটা ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের জন্য, জাতির জন্য ভয়াবহ ক্ষতির রূপ ধারণ করতে বাধ্য। সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি তত্পর হয় তাহলে প্রতিটি গুম, হত্যা কিংবা অপহরণের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব। প্রতিটি অপরাধের যেমন কিছু চিহ্ন থাকে যেগুলোর সূত্র ধরে অপরাধীকে শনাক্ত করা যায়, ইলিয়াস আলী গুমের ঘটনায়ও তা আছে। ঢাকাতে প্রায় প্রতিটি ট্রাফিক সিগন্যালে ও প্রতিটি মোড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরায় ইলিয়াস আলী অপহরণের দৃশ্য থাকার কথা। মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকায় সিসিটিভির মাধ্যমে ঘটনাস্থল কভার দেয়ার কথা। সেসব ভিডিও ফুটেজ মনিটর করলেই ওই সময় রাস্তায় কোন গাড়ি চলছে, তাতে কারা যাত্রী ছিল সেটা ধরা পড়ার কথা। অন্যদিকে গুমের ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলে জানা যায় তারা এবং ইলিয়াস আলী ও তার ড্রাইভারের ফোনের কল লিস্টও হতে পারে তদন্তের আরও উত্স।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের মতে, নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার যদি তাকে খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয় তাহলে গুম, অপহরণ অথবা খুনের এই ঘটনা আরও বাড়বে। আজকে একজনকে পাওয়া যাবে না, কাল আরেকজনকে পাওয়া যাবে না। এভাবে চলতে থাকলে জাতি হিসেবে আমাদের গন্তব্য কোথায়? যারা হারিয়েছে তাদের কি কোনোদিন খুঁজে পাওয়া যাবে না? সাগর-রুনির খুনিরা কি কোনোদিন শাস্তি পাবে না? আদালতে পুলিশের ব্যর্থতা স্বীকারের পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি বলেন তারা ব্যর্থ হয়নি বরং তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে, তাহলে সাধারণ মানুষ কার কথা বিশ্বাস করবে? দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন, বিশেষ করে মন্ত্রী পর্যায়ের লোকদের যে কোনো কথা বলার আগে ভেবে-চিন্তে কথা বলা উচিত, নয়তো এই ব্যর্থতার ভার তাদের ওপরই বর্তাবে। অন্যদিকে ‘বিএনপিই গুপ্তহত্যা চালু করছে’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে প্রথম আলোর অনলাইন জরিপে ২২ এপ্রিল ৮১ শতাংশ জনগণ দ্বিমত পোষণ করেছেন। বিএনপি যদি চালু করেও থাকে এখন তো তারা সরকারে নেই। সুতরাং এখন এটা চলছে কেন? ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্ব এটাকে বন্ধ করা। ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর কান্না, স্বামীকে খুঁজে পাওয়ার তার ব্যাকুলতা, তার ছোট্ট মেয়ের কান্না এবং বাবাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি—এগুলোর প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা আশা করি সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিরোধী দলকে অযথা দোষারোপ না করে ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে। অন্যথায় দেশ বিশৃঙ্খলার দিকে এগুবে যা কারও কাম্য নয়। ইলিয়াস আলী গুম হওয়া গণতন্ত্র বিপন্ন হওয়ার হাতছানি। আমরা সাধারণ জনগণ তবুও স্বপ্ন দেখি একটি সুষ্ঠু বিকাশমান গণতন্ত্রের। আমাদের সীমাবদ্ধ ক্ষমতায় আমরা শুধু পরম করুণাময়ের কাছে দোয়া করতে পারি, যাতে অচিরেই ইলিয়াস আলী তার পরিবারের সদস্যদের মাঝে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসে।
লেখক : ডিন, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন