গত বছর ৬ জুলাই পুলিশের নির্যাতনের শিকার বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ
ফাইল ছবি
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ ২০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে মেধাতালিকায় ৮৭তম অবস্থানে আছেন। ৪৩ জনকে ডিঙিয়ে তিনি পেয়েছেন মানিকগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারের চলতি দায়িত্ব। তাঁর পরের ব্যক্তি পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মনিরুজ্জামান। ৪৪ জনকে ডিঙিয়ে তাঁকে লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপারের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, এভাবে অনিয়ম ও দলীয়করণের মাধ্যমে ৩৬ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পুলিশ সুপারের চলতি দায়িত্বে পদায়ন করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তার অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও আছে। কেউ কেউ সাময়িক বরখাস্ত হন।
এখন চলতি দায়িত্বে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা পরে পুলিশ সুপারের পদে স্থায়ী নিয়োগ পাবেন। এ কারণে এ ধরনের পদায়নকে পদোন্নতি হিসেবে ধরা হয়।
অভিযোগ আছে, হারুন অর রশিদ তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার থাকার সময় গত বছরের ৬ জুলাই সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে মারধর করেছিলেন। এ ঘটনা ওই সময় গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। ফারুককে মারধর করার ‘পুরস্কার’ হিসেবে ৪৩ জনকে ডিঙিয়ে হারুনকে এসপির পদ দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের মধ্যেই আলোচনা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকে মারধরের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল জলিল এ কমিটির প্রধান। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো তদন্তই হয়নি। এ বিষয়ে কেউ মন্তব্যও করতে চাননি।
হারুন অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, কিছুদিন আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন। তাঁর ফোন বন্ধ রয়েছে।
২২ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ৫৩ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি ও নিয়োগের আদেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই তালিকায় ২০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কর্মকর্তা আছেন ৩৬ জন। তাঁদের পদায়নের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, দলীয় বিবেচনায় পছন্দের তালিকা ধরে পদায়ন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, এ নিয়ে এই ব্যাচের ১৭ জন কর্মকর্তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁরা হারুনসহ অনেকের পদোন্নতি নিয়ে আপত্তি তোলেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, অনিয়মের অভিযোগের কারণে পদোন্নতির তালিকাটি এক দফা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর দীর্ঘদিন এটি ঝুলে ছিল। পরে কয়েকজন কর্মকর্তা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিজেদের পছন্দের নাম যুক্ত করেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদোন্নতি ও বদলি নিয়ে সব সময় অভিযোগ ওঠে। এটা নতুন কিছু নয়। পদোন্নতির জন্য একটি কমিটি আছে, সেই কমিটিই সব ঠিক করে। এবার কিছু কর্মকর্তা বাদ পড়েছেন, আগামীতে তাঁরা পদোন্নতি পাবেন। এতে কোনো অনিয়ম হয়নি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবারের পদায়ন নিয়ে পুলিশ বিভাগে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর আগে এত অনিয়ম হয়নি। পদোন্নতি পাওয়া দুই কর্মকর্তা সম্প্রতি সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে যান। তাঁদের সঙ্গে পদোন্নতিবঞ্চিত এক কর্মকর্তাও ছিলেন। তাঁরা বলেন, ৩৬ জনকে পদায়ন করা হলেও মেধাতালিকায় চতুর্থ আনিছুর রহমান ও পঞ্চম বরকতুল্লাহ খানকে পদায়ন করা হয়নি। বরকতুল্লাহ বিগত সরকারের সময়ও বঞ্চিত ছিলেন। অভিযোগ শুনে ওই পদস্থ কর্মকর্তা নিজেও হতবাক হয়ে বলেন, বরকতুল্লাহর নাম তালিকায় ছিল। কিন্তু কেন শেষ মুহূর্তে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা তিনি জানেন না।
ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ নুরুল ইসলাম মেধা তালিকায় ৬৫তম অবস্থানে আছেন। ৩৫ জনকে ডিঙিয়ে তাঁকে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনারের চলতি দায়িত্বে পদায়ন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আরেক নেতা মনিরুজ্জামানকে একইভাবে পদায়ন করা হয়েছে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে। তবু তাঁকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসপির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় মামলা চলছে এ কে এম এহসান উল্লাহর বিরুদ্ধেও। তাঁকে হাইওয়ে পুলিশের (পশ্চিম) পুলিশ সুপার পদে (চলতি দায়িত্ব) পদায়ন করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক আইজিপি এ এস এম শাহজাহান বলেন, পুলিশের নিয়োগ ও পদোন্নতি মেধার ভিত্তিতে করতে হবে। তা না হলে ভালো পুলিশ গড়ে উঠবে না। দলীয় পরিচয় পদোন্নতির মাপকাঠি হলে পুলিশের সংস্কার আর কোনো দিনই হবে না।
অভিযোগ উঠেছে, এভাবে অনিয়ম ও দলীয়করণের মাধ্যমে ৩৬ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে পুলিশ সুপারের চলতি দায়িত্বে পদায়ন করা হয়েছে। এসব কর্মকর্তার অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও আছে। কেউ কেউ সাময়িক বরখাস্ত হন।
এখন চলতি দায়িত্বে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা পরে পুলিশ সুপারের পদে স্থায়ী নিয়োগ পাবেন। এ কারণে এ ধরনের পদায়নকে পদোন্নতি হিসেবে ধরা হয়।
অভিযোগ আছে, হারুন অর রশিদ তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার থাকার সময় গত বছরের ৬ জুলাই সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে মারধর করেছিলেন। এ ঘটনা ওই সময় গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। ফারুককে মারধর করার ‘পুরস্কার’ হিসেবে ৪৩ জনকে ডিঙিয়ে হারুনকে এসপির পদ দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের মধ্যেই আলোচনা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকে মারধরের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল জলিল এ কমিটির প্রধান। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো তদন্তই হয়নি। এ বিষয়ে কেউ মন্তব্যও করতে চাননি।
হারুন অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, কিছুদিন আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন। তাঁর ফোন বন্ধ রয়েছে।
২২ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ৫৩ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি ও নিয়োগের আদেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই তালিকায় ২০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কর্মকর্তা আছেন ৩৬ জন। তাঁদের পদায়নের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, দলীয় বিবেচনায় পছন্দের তালিকা ধরে পদায়ন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, এ নিয়ে এই ব্যাচের ১৭ জন কর্মকর্তা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁরা হারুনসহ অনেকের পদোন্নতি নিয়ে আপত্তি তোলেন। পুলিশ কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, অনিয়মের অভিযোগের কারণে পদোন্নতির তালিকাটি এক দফা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর দীর্ঘদিন এটি ঝুলে ছিল। পরে কয়েকজন কর্মকর্তা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিজেদের পছন্দের নাম যুক্ত করেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদোন্নতি ও বদলি নিয়ে সব সময় অভিযোগ ওঠে। এটা নতুন কিছু নয়। পদোন্নতির জন্য একটি কমিটি আছে, সেই কমিটিই সব ঠিক করে। এবার কিছু কর্মকর্তা বাদ পড়েছেন, আগামীতে তাঁরা পদোন্নতি পাবেন। এতে কোনো অনিয়ম হয়নি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবারের পদায়ন নিয়ে পুলিশ বিভাগে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর আগে এত অনিয়ম হয়নি। পদোন্নতি পাওয়া দুই কর্মকর্তা সম্প্রতি সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক পুলিশ কর্মকর্তার কাছে যান। তাঁদের সঙ্গে পদোন্নতিবঞ্চিত এক কর্মকর্তাও ছিলেন। তাঁরা বলেন, ৩৬ জনকে পদায়ন করা হলেও মেধাতালিকায় চতুর্থ আনিছুর রহমান ও পঞ্চম বরকতুল্লাহ খানকে পদায়ন করা হয়নি। বরকতুল্লাহ বিগত সরকারের সময়ও বঞ্চিত ছিলেন। অভিযোগ শুনে ওই পদস্থ কর্মকর্তা নিজেও হতবাক হয়ে বলেন, বরকতুল্লাহর নাম তালিকায় ছিল। কিন্তু কেন শেষ মুহূর্তে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তা তিনি জানেন না।
ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ নুরুল ইসলাম মেধা তালিকায় ৬৫তম অবস্থানে আছেন। ৩৫ জনকে ডিঙিয়ে তাঁকে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনারের চলতি দায়িত্বে পদায়ন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আরেক নেতা মনিরুজ্জামানকে একইভাবে পদায়ন করা হয়েছে।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে। তবু তাঁকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসপির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় মামলা চলছে এ কে এম এহসান উল্লাহর বিরুদ্ধেও। তাঁকে হাইওয়ে পুলিশের (পশ্চিম) পুলিশ সুপার পদে (চলতি দায়িত্ব) পদায়ন করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক আইজিপি এ এস এম শাহজাহান বলেন, পুলিশের নিয়োগ ও পদোন্নতি মেধার ভিত্তিতে করতে হবে। তা না হলে ভালো পুলিশ গড়ে উঠবে না। দলীয় পরিচয় পদোন্নতির মাপকাঠি হলে পুলিশের সংস্কার আর কোনো দিনই হবে না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন