পদ্মা সেতু দুর্নীতির দায়ে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুর্নীতির কারণে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ ও কানাডার যে কোম্পানি পদ্মা সেতুতে কাজ করছিল তাদের ব্ল্যাক লিস্ট করায় প্রমাণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।
গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির নির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে মির্জা আলমগীর এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ডিসিসি একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। দলের অবস্থান স্পষ্ট না করে এ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি চমক থাকবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহাসচিবসহ শূন্য পদ পূরণের ব্যাপারে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারপার্সনকে দায়িত্ব দেয়া আছে। তিনি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করবেন। তিনি বলেন, ডিসিসি নির্বাচন দলীয় নয়, তবে আমাদের ভূমিকা কী হবে তা সময় এলে জানানো হবে। এখন কোনো কথা বলব না, চমক অপেক্ষা করছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্রসীমার মামলায় বিজয় নিয়ে সরকার যেভাবে বাড়াবাড়ি ও মিথ্যাচার করছে, সে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। মিথ্যাচার থেকে সরে এসে সত্য ঘটনা জনগণের সামনে তুলে ধরার দাবি করেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর দলের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলের পর গতকালের তৃতীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় ৩৮৭ জন সদস্যের মধ্যে ৩৩৭ জন উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্য থেকে ৬০ জন বক্তব্য রেখেছেন। চেয়ারপার্সন সব সময় উপস্থিত থেকে সবার বক্তব্য শুনেছেন ও সবশেষে সমাপনী বক্তব্য দিয়েছেন। চলমান আন্দোলনে চেয়ারপার্সনের বক্তব্য থেকে আমরা দিকনির্দেশনা পেয়েছি।
মির্জা আলমগীর বলেন, গতকালের সভায় কতগুলো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো একদলীয় জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই একতরফাভাবে সরকার পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস মুছে ফেলায় এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ঈমান আকিদা ও মূল্যবোধের প্রতি আঘাত করা হয়েছে। সরকারের এহেন পদক্ষেপকে পরম ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ বলে সভা মনে করে। অবিলম্বে সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন, গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী অপরিবর্তনীয় ধারাগুলো বাতিল করাসহ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোর দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সভায় চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলাগুলো প্রত্যাহার, তারেক রহমানের একুশে আগস্ট মামলার সম্পূরক চার্জশিটের তীব্র নিন্দা ও অন্যান্য মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়। সভায় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনার জোর দাবি জানানো হয়েছে। বিদ্যুত্ পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টির তীব্র নিন্দা ও বিদ্যুতের মূল্য কমানোর দাবি করা হয়েছে। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে নিন্দা ও কমানোর দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের ৩৫ লাখ বিনিয়োগকারীকে নিঃস্ব করায় উদ্বেগ ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছি। রাজনৈতিক কারণে নিজের দলের লোকদের খুশি করার জন্য ও দুর্নীতি করার জন্য ৯টি ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার নিন্দা জানিয়েছি।
মির্জা ফখরুল প্রশ্ন তুলে বলেন, যারা ব্যাংকের পরিচালক তারা সবাই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সরকারি জোটের সঙ্গে জড়িত। জানি না তারা কীভাবে ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছেন, তা দেশবাসী জানতে চায়।
তিনি বলেন, সরকার জাতীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে খুশি করার জন্য বেশি ব্যস্ত। তিস্তা নদীর পানি, টিপাইমুখ বাঁধ, ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বন্ধে কোনো কথা বলছে না।
তিনি আরও বলেন, ২০ দিন ধরে ছিটমহলবাসী অনশন করছে। এ বিষয়ে সরকার একটি প্রেসনোট পর্যন্ত দেয়নি। তারা ভারতের সমস্যাগুলো মিটিয়ে ফেলছে। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
ফখরুল ইসলাম বলেন, ভারতের সঙ্গে করা গোপন চুক্তি প্রকাশ করছে না। জনসমক্ষে সব চুক্তি প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে সভায়। তিনি সভায় জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কটূক্তির নিন্দা ও স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুত্সার নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করাসহ সাগর-রুনি, সৌদি কূটনীতিক হত্যার কোনো কূলকিনারা হয়নি। চৌধুরী আলম গুমের ব্যাপারে সরকার কোনো প্রেসনোট দেয়নি। এসব ব্যর্থতার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে নির্বাহী কমিটির সভা। কৃষির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে—সারের দাম বেড়েছে, সেচ দিতে পারছে না এবং কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২৯ জানুয়ারি দেশব্যাপী মিছিলে পাঁচজন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। সভায় এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। সুন্দরবনের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত্ প্রকল্প সুন্দরবনের মারাত্মক ক্ষতি করবে। এ প্রকল্পটি সুন্দরবনের পাশ থেকে সরিয়ে অন্যত্র নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
শিক্ষাঙ্গনে প্রতিদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা মারামারি করছে। অবিলম্বে ছাত্রলীগের এ সন্ত্রাস বন্ধের দাবি করা হয়েছে।
১২ মার্চের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ছয় হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। সভায় সরকারের এই হামলা ও গ্রেফতারের নিন্দা করে অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেছে। ফখরুল ইসলাম বলেন, সভায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেসব জেলায় কমিটি হয়নি দুই মাসের মধ্যে সেসব জেলায় কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অঙ্গসংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় আগামী দুই মাসের মধ্যে বর্ধিত সভা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সভায় সিটি করপোরেশন ভাগ ও অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা সিটি করপোরেশন চালানোর নিন্দা জানানো হয়েছে।
বিচার বিভাগের দলীয়করণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বিচার বিভাগকে স্বাধীন রাখার দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে আইএসআইয়ের কাছ থেকে বিএনপি টাকা নেয়ার যে নির্জলা মিথ্যাচার প্রধানমন্ত্রী ও তার সহচররা করেছেন, এটা গত নির্বাচনে পার্শ্ববর্তী দেশের কাছ থেকে বস্তায় বস্তায় টাকা আনার যে অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার ওপর আরোপিত হয়েছে, সেটিকে আড়াল করার বলেছেন। এই ঘৃণ্য কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে শুধু ইকোনমিস্ট পত্রিকায় গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বস্তায় বস্তায় টাকা আনার অপবাদ ঘোচানোর জন্য।
সভায় বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানানো হয়েছে। গত অধিবেশনে বিরোধীদলীয় নেতা সম্পর্কে স্পিকার যে অশোভন ও অসংশোধীয় মন্তব্য করেছেন, সভায় স্পিকারের এহেন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং সংসদীয় কার্যবিবরণী থেকে স্পিকারের এ বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানানো হয়। তিনি বলেন, সভায় আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি, অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন, কেন্দ্রীয় নেতা সরাফত আলী সপু, তকদির হোসেন জসীম, রফিক শিকদার, আরিফুল হক প্রমুখ।
গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির নির্বাহী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে মির্জা আলমগীর এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ডিসিসি একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। দলের অবস্থান স্পষ্ট না করে এ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি চমক থাকবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মহাসচিবসহ শূন্য পদ পূরণের ব্যাপারে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারপার্সনকে দায়িত্ব দেয়া আছে। তিনি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করবেন। তিনি বলেন, ডিসিসি নির্বাচন দলীয় নয়, তবে আমাদের ভূমিকা কী হবে তা সময় এলে জানানো হবে। এখন কোনো কথা বলব না, চমক অপেক্ষা করছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্রসীমার মামলায় বিজয় নিয়ে সরকার যেভাবে বাড়াবাড়ি ও মিথ্যাচার করছে, সে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। মিথ্যাচার থেকে সরে এসে সত্য ঘটনা জনগণের সামনে তুলে ধরার দাবি করেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর দলের পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলের পর গতকালের তৃতীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় ৩৮৭ জন সদস্যের মধ্যে ৩৩৭ জন উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্য থেকে ৬০ জন বক্তব্য রেখেছেন। চেয়ারপার্সন সব সময় উপস্থিত থেকে সবার বক্তব্য শুনেছেন ও সবশেষে সমাপনী বক্তব্য দিয়েছেন। চলমান আন্দোলনে চেয়ারপার্সনের বক্তব্য থেকে আমরা দিকনির্দেশনা পেয়েছি।
মির্জা আলমগীর বলেন, গতকালের সভায় কতগুলো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো একদলীয় জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই একতরফাভাবে সরকার পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস মুছে ফেলায় এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ঈমান আকিদা ও মূল্যবোধের প্রতি আঘাত করা হয়েছে। সরকারের এহেন পদক্ষেপকে পরম ধৃষ্টতাপূর্ণ কাজ বলে সভা মনে করে। অবিলম্বে সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন, গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী অপরিবর্তনীয় ধারাগুলো বাতিল করাসহ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোর দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, সভায় চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলাগুলো প্রত্যাহার, তারেক রহমানের একুশে আগস্ট মামলার সম্পূরক চার্জশিটের তীব্র নিন্দা ও অন্যান্য মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়। সভায় দেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনার জোর দাবি জানানো হয়েছে। বিদ্যুত্ পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টির তীব্র নিন্দা ও বিদ্যুতের মূল্য কমানোর দাবি করা হয়েছে। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে নিন্দা ও কমানোর দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের ৩৫ লাখ বিনিয়োগকারীকে নিঃস্ব করায় উদ্বেগ ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছি। রাজনৈতিক কারণে নিজের দলের লোকদের খুশি করার জন্য ও দুর্নীতি করার জন্য ৯টি ব্যাংক অনুমোদন দেয়ার নিন্দা জানিয়েছি।
মির্জা ফখরুল প্রশ্ন তুলে বলেন, যারা ব্যাংকের পরিচালক তারা সবাই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সরকারি জোটের সঙ্গে জড়িত। জানি না তারা কীভাবে ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছেন, তা দেশবাসী জানতে চায়।
তিনি বলেন, সরকার জাতীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে খুশি করার জন্য বেশি ব্যস্ত। তিস্তা নদীর পানি, টিপাইমুখ বাঁধ, ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বন্ধে কোনো কথা বলছে না।
তিনি আরও বলেন, ২০ দিন ধরে ছিটমহলবাসী অনশন করছে। এ বিষয়ে সরকার একটি প্রেসনোট পর্যন্ত দেয়নি। তারা ভারতের সমস্যাগুলো মিটিয়ে ফেলছে। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
ফখরুল ইসলাম বলেন, ভারতের সঙ্গে করা গোপন চুক্তি প্রকাশ করছে না। জনসমক্ষে সব চুক্তি প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে সভায়। তিনি সভায় জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কটূক্তির নিন্দা ও স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুত্সার নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করাসহ সাগর-রুনি, সৌদি কূটনীতিক হত্যার কোনো কূলকিনারা হয়নি। চৌধুরী আলম গুমের ব্যাপারে সরকার কোনো প্রেসনোট দেয়নি। এসব ব্যর্থতার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে নির্বাহী কমিটির সভা। কৃষির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে—সারের দাম বেড়েছে, সেচ দিতে পারছে না এবং কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২৯ জানুয়ারি দেশব্যাপী মিছিলে পাঁচজন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। সভায় এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। সুন্দরবনের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত্ প্রকল্প সুন্দরবনের মারাত্মক ক্ষতি করবে। এ প্রকল্পটি সুন্দরবনের পাশ থেকে সরিয়ে অন্যত্র নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
শিক্ষাঙ্গনে প্রতিদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা মারামারি করছে। অবিলম্বে ছাত্রলীগের এ সন্ত্রাস বন্ধের দাবি করা হয়েছে।
১২ মার্চের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ছয় হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। সভায় সরকারের এই হামলা ও গ্রেফতারের নিন্দা করে অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেছে। ফখরুল ইসলাম বলেন, সভায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যেসব জেলায় কমিটি হয়নি দুই মাসের মধ্যে সেসব জেলায় কমিটি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অঙ্গসংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় আগামী দুই মাসের মধ্যে বর্ধিত সভা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সভায় সিটি করপোরেশন ভাগ ও অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দ্বারা সিটি করপোরেশন চালানোর নিন্দা জানানো হয়েছে।
বিচার বিভাগের দলীয়করণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে অভিযোগ করে বিচার বিভাগকে স্বাধীন রাখার দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে আইএসআইয়ের কাছ থেকে বিএনপি টাকা নেয়ার যে নির্জলা মিথ্যাচার প্রধানমন্ত্রী ও তার সহচররা করেছেন, এটা গত নির্বাচনে পার্শ্ববর্তী দেশের কাছ থেকে বস্তায় বস্তায় টাকা আনার যে অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার ওপর আরোপিত হয়েছে, সেটিকে আড়াল করার বলেছেন। এই ঘৃণ্য কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে শুধু ইকোনমিস্ট পত্রিকায় গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বস্তায় বস্তায় টাকা আনার অপবাদ ঘোচানোর জন্য।
সভায় বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানানো হয়েছে। গত অধিবেশনে বিরোধীদলীয় নেতা সম্পর্কে স্পিকার যে অশোভন ও অসংশোধীয় মন্তব্য করেছেন, সভায় স্পিকারের এহেন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং সংসদীয় কার্যবিবরণী থেকে স্পিকারের এ বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানানো হয়। তিনি বলেন, সভায় আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি, অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন, কেন্দ্রীয় নেতা সরাফত আলী সপু, তকদির হোসেন জসীম, রফিক শিকদার, আরিফুল হক প্রমুখ।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন