সৈয়দ আবদাল আহমদ
সোমবার ১০ এপ্রিল দিবাগত মধ্যরাত। জাতীয় সংসদের স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি ঢুকে পড়ল বিজিবি সদর দফতর পিলখানার চার নম্বর গেট দিয়ে ভেতরে। বস্তাভরা ৭০ লাখ টাকা ও পাঁচ বোতল মদসহ গাড়িটিতে ছিলেন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধা, রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (আরএনবি) এনামুল হক ও চালক মো. আজম খান। ঘুষের টাকা ও মদ নিয়ে গাড়িটি যাচ্ছিল রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জিগাতলার বাসায়। কিন্তু হঠাত্ চালক গাড়িটি ঢুকিয়ে দেন পিলখানার ভেতর। গণমাধ্যমে যতটুকু খবর বের হয়েছে, তা হচ্ছে ঘুষের টাকার প্রাপ্য বখরা না পাওয়ায় চালক উত্তেজিত হয়ে গাড়িটি মন্ত্রীর বাসায় না নিয়ে বিজিবির সদর দফতরে ঢুকিয়ে দেন। ফলে নাটকীয়ভাবে প্রকাশ পেয়ে যায় রেল মন্ত্রণালয়ের ঘুষ কেলেঙ্কারি। প্রাথমিকভাবে ঘুষের টাকাসহ ধরা পড়েন রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক ও রেলের পূর্বাঞ্চলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার খবর পেয়ে কয়েকটি টিভি চ্যানেলও বিজিবি গেটে পৌঁছে যায়। রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা আরটিভির সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। এপিএস ওমর ফারুক বলেন, চালক আজম খান তাদের ব্ল্যাকমেইল করার জন্যই গাড়ি পিলখানায় ঢুকিয়েছে। বস্তাভরা ৭০ লাখ টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে এপিএস ওমর ফারুকের উত্তর— ৭০ লাখ নয়, টাকা ছিল ২৫ লাখ। এই টাকা তার শ্যালকের। যা-ই হোক, বিজিবির সদস্যরা রাতে তাদের আটক করে রাখে। কিন্তু সকালে মন্ত্রীর ফোনে এপিএস ও জিএম ছাড়া পেয়ে যান। ড্রাইভারের ভাগ্যে কী ঘটেছে, এখনও কিছু জানা যায়নি। এই ঘুষ কেলেঙ্কারি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঘটনার দায় কেউ স্বীকার করছে না। রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পুরো দায় এখন তার এপিএস ওমর ফারুকের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন। তিনি বলছেন, গাড়িতে যে টাকাটা পাওয়া গেছে ওটা তার এপিএসের ব্যক্তিগত টাকা, যা তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হলে এনবিআর খতিয়ে দেখবে। সেটা রেলমন্ত্রীর বিষয় নয় বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, গাড়িচালক তার এপিএসকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী আরও বলেন, এপিএস কোথায় কী করছে, জানার দায়িত্ব আমার নয়। অন্যদিকে টাকার কথা এড়িয়ে গিয়ে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা বলেন, ট্রেনের সময়সূচি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য এপিএসের সঙ্গে তার গাড়িতে করে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (আরএনবি) এনামুল হক বলেন, জিএমের নির্দেশেই তিনিও তার সঙ্গে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।
এ ঘটনা থেকে এটি পরিষ্কার, গাড়িটি রেলমন্ত্রীর এপিএসের। গাড়িতে বস্তাভর্তি টাকা ছিল। কর্মকর্তারা টাকাসহ গাড়িটি নিয়ে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের বাসায় যাচ্ছিলেন। শুধু চালকের সঙ্গে গোলমালের কারণে তাদের বিজিবি সদর দফতর পিলখানার ভেতর অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে। এটা যে ঘুষের টাকা, সেটাও পরিষ্কার। নইলে এত রাতে এত টাকা নিয়ে কর্মকর্তারা কেন মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন? তাছাড়া এই কর্মকর্তারা মন্ত্রীর কাছের লোক। একজন মন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক। তার নিয়োগ রাজনৈতিক। সাধারণত ঘনিষ্ঠ লোককেই মন্ত্রীর এপিএস বানানো হয়। মন্ত্রীর যাবতীয় লেনদেন এ ধরনের ঘনিষ্ঠ লোকের মাধ্যমেই করা হয়। কর্মকর্তার মধ্যে অন্যজন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা। রেলওয়েতে বর্তমানে ছোট-বড় প্রায় ৭ হাজার পদে লোক নিয়োগ চলছে। এ প্রক্রিয়ায় টাকা-পয়সার লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। গাড়িতে রেলের যে জিএম ছিলেন, তিনি পূর্বাঞ্চলের নিয়োগ কমিটির প্রধান। টাকার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে, এত রাতে বস্তাভর্তি টাকার গাড়িতে চড়ে তিনি কেন মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন? রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিতে গিয়ে তার এপিএসের কাজের দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু পিএস, এপিএস ও অন্যান্য কর্মকর্তার কাজের তদারক করা মন্ত্রীর দায়িত্বের অংশ। গাড়িতে যে পরিমাণ টাকাই থাক, সেটা তো হাওয়া থেকে আসেনি? জিএমকে নিয়ে গভীর রাতে এপিএস যাচ্ছিলেন মন্ত্রীর বাসায়। পথে সেই গাড়িচালক পিলখানায় ঢুকিয়ে চিত্কার করে বলেন, গাড়িতে ঘুষের টাকা। তাই এত ঘটনার দায় মন্ত্রী কীভাবে অস্বীকার করবেন?
তদন্ত হবে একটি কৌতুকমাত্র : পিলখানায় মধ্যরাতের ঘুষ কেলেঙ্কারির চাঞ্চল্যকর ঘটনা ধরা পড়ার পরদিন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তড়িঘড়ি একটি সংবাদ সম্মেলন করে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এপিএসের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মন্ত্রীর একান্ত সচিবকে (পিএস), আর জিএমের বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে। যেখানে স্বয়ং মন্ত্রী বাড়িতে ঘুষের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে মন্ত্রীর পিএস দিয়ে তদন্ত করলে সেই তদন্তে সত্য ঘটনা কতটা উঠে আসবে? আবার রেলের মহাব্যবস্থাপকের বিষয়েও তদন্ত একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দিয়ে হলে সেটাও কতটা উদঘাটিত হবে? অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এই তদন্ত একটি কৌতুক হবে মাত্র। এটা আসলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্যই করা। এতে আদৌ কোনো তদন্ত হবে না। এটাও শুঁটকির আড়তে বিড়াল চৌকিদারের মতোই হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান ঘটনাটি তদন্ত করবেন বলে উল্লেখ করেছেন। দুদক চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যেও মানুষের মধ্যে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোপূর্বে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে তিনি একটি লোক দেখানো তদন্ত করেছিলেন। আসলে তদন্তের উদ্দেশ্য ছিল তত্কালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে নির্দোষ দেখানো। মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন দুদকের এ ধরনের একটি সনদ পেয়েছেন এবং এই সনদটি দেখিয়ে এখন তিনি নিজেকে সত্ মানুষের প্রচার চালাচ্ছেন। তাই দুদকের এবারের তদন্তও রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের জন্য আরেকটি সনদপ্রাপ্তি কি-না, সেটাই দেখার বিষয়।
এ অবস্থায় সত্ বিচারপতির নেতৃত্বে অবিলম্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনই সবাই চাইছেন। এতে অন্তত হস্তক্ষেপমুক্ত তদন্ত আশা করা যায়। এত টাকার উত্স কী, কেন গভীর রাতে কর্মকর্তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন, কেন গাড়িচালক পিলখানায় বিজিবির সদর দফতরে গাড়ি ঢুকিয়ে দিলেন, এসব রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত একান্ত প্রয়োজন। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির স্বার্থেই রেলের এই ‘কালো বিড়ালের’ রহস্য উদ্ঘাটন হওয়া জরুরি।
গাড়িতে সংসদের স্টিকার লাগিয়ে ঘুষের টাকা বহন করে সংসদেরও অবমাননা করা হয়েছে। এ বিষয়টিও তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে সংসদের নাম এভাবে অন্যায় কাজে ব্যবহার করা কেন হলো?
রেলমন্ত্রীর পদত্যাগই কেলেঙ্কারি থেকে মুক্তির উপায় : পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৮ নভেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে রদবদল ঘটানো হয়। মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় দু’ভাগ করে রেলওয়ে মন্ত্রণালয় আলাদা করা হয়। নতুন রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ওবায়দুল কাদেরকে। মন্ত্রী হওয়ার ছয় দিন পর তারা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। দায়িত্ব লাভের পর সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেন নতুন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, পৃথিবীর মধ্যে কেবল বাংলাদেশেই রেল খাত লোকসানে রয়েছে। এর কারণ অনিয়ম-দুর্নীতি। আমি দেখতে চাই রেলের সমস্যাটা কোথায়? কোন অন্ধকারে কালো বিড়ালটি লুকিয়ে রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে চাই। দুর্নীতি-অনিয়মের কালো বিড়াল আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে। কয়েকদিন পর যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কণ্ঠের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সুরঞ্জিত বলেন, শেষবেলার মন্ত্রী হিসেবে কতটুকু কী করতে পারব বলতে পারি না। তবে কালো বিড়ালটি খুঁজে বের করবই। সময় আছে দু’বছর। সব পারব এমন নয়। প্রধানমন্ত্রী যে বিশ্বাসে দায়িত্ব দিয়েছেন, ‘আই উইল ট্রাই মাই বেস্ট।’ যতটুকু সম্ভব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করব।
গত ৩ মার্চ রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সুনামগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বলেন, প্রধানমন্ত্রী হঠাত্ করে আমাকে তার ভাঙা রেলে তুলে দিয়েছেন। সরকারের শেষ সময়ে এসে আমার কাঁধে মন্ত্রিত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে কাণ্ডকারখানা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমানকে ইঙ্গিত করে সুরঞ্জিতের মন্তব্য ছিল—‘শুঁটকির হাটে বিড়াল চৌকিদার।’ সর্বশেষ গতকাল (১৩ মার্চ) রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের উক্তি—‘আমি বিপদে পড়ে গেছি। ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এত বড় বিপদে পড়িনি। প্রয়োজন যদি হয় পদত্যাগ করব।’
এটা ঠিক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একজন প্রবীণ রাজনীতিক। তবে তিনি যে একজন স্বচ্ছ রাজনীতিক, এটা অনেকেই মনে করেন না। এর আগে তার বিভিন্ন আচরণেও তা লক্ষ করা গেছে। গত জরুরি সরকারের আমলে তার ভূমিকা দেশবাসী দেখেছেন। সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে তিনি হাত মিলিয়েছিলেন এক-এগারোর হোতাদের সঙ্গে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেও তিনি পিছপা হননি। কিন্তু এক-এগারোর পর তার ভিন্ন অবস্থানও দেশবাসী দেখেছে। রাতারাতি তিনি সুর পাল্টে শেখ হাসিনার শুভাকাঙ্ক্ষী সেজে যান এবং শেষ পর্যন্ত সফলও হন। সরকারের দু’বছর বাকি থাকলেও শেষবেলায় তিনি মন্ত্রী হয়ে ছেড়েছেন। শেখ হাসিনাকে তোষামোদী করার জন্য সব প্রচেষ্টাই তিনি করেছেন। এ সম্পর্কে তার একটি মন্তব্য বহুল আলোচিত। তিনি বলেছিলেন—‘বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না। ছাড়ছে, ইউনূস মিয়ারে ছাড়ছে?’
মন্ত্রিত্ব গ্রহণের পর তিনি যখন কালো বিড়াল খুঁজছেন এবং নিজেকে বেলাশেষের মন্ত্রী বলছেন, তখনই অনেকের সন্দেহ হয়েছে তিনি কিছু একটা করবেন। শেষ সময় যা পাই লুটেপুটে খাই—এমন একটা কিছু হবে মনে হচ্ছিল। অবশেষে পরিস্থিতি সেদিকেই গড়াচ্ছে। রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ে সাড়ে সাত হাজার লোক নিয়োগের একটা মওকা এসে যায়। রেলওয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা সেই মওকা পাইয়ে দেন। সারাদেশের মানুষই এখন এক বাক্যে বিশ্বাস করছেন রেলমন্ত্রী রেলের ওই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। পাঠকদের অসংখ্য প্রতিক্রিয়ায় তারা তাকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। অনেক পাঠকই পত্র-পত্রিকার ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে তাদের মন্তব্যে বলেছেন, রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত রেলের কালো বিড়াল খুঁজে বের করবেন বলেছিলেন। বস্তাভরা ৭০ লাখ টাকাসহ তার এপিএসের গাড়ি আটকের পর এটাই প্রমাণিত রেলমন্ত্রীই সেই কালো বিড়াল। বিড়ালের এখন লেজ কাটা গেছে। লজ্জাশরম থাকলে বিড়াল আর শুঁটকি খাবে না। একজন পাঠকের মন্তব্য ছিল সরষের মধ্যে ভূত আর এ ঘটনার মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছি না। যতই চেষ্টা করুন না কেন, থলের বিড়াল সুরঞ্জিতবাবু আর ঢাকতে পারবেন না। শুঁটকির বাজারে বিড়াল চৌকিদার বিষয়টি যে তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, এটা তিনি জানতেন।
রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার একটিই রাস্তা—পদত্যাগ করা। দেশের বিশিষ্টজনসহ সাধারণ মানুষ অনেকের দাবি, ন্যূনতম নীতি-নৈতিকতা থাকলে তিনি পদত্যাগ করবেন। তিনি নিজেই বলেছেন, তার ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তিনি এত বড় বিপদে পড়েননি। তীর এখন তার দিকেই। অন্যায়ের পিছু নিলে বিপদে তো পড়তেই হবে। এখন পদত্যাগই তার বিপদ থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
abdal62@gmail.com
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার খবর পেয়ে কয়েকটি টিভি চ্যানেলও বিজিবি গেটে পৌঁছে যায়। রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা আরটিভির সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। এপিএস ওমর ফারুক বলেন, চালক আজম খান তাদের ব্ল্যাকমেইল করার জন্যই গাড়ি পিলখানায় ঢুকিয়েছে। বস্তাভরা ৭০ লাখ টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে এপিএস ওমর ফারুকের উত্তর— ৭০ লাখ নয়, টাকা ছিল ২৫ লাখ। এই টাকা তার শ্যালকের। যা-ই হোক, বিজিবির সদস্যরা রাতে তাদের আটক করে রাখে। কিন্তু সকালে মন্ত্রীর ফোনে এপিএস ও জিএম ছাড়া পেয়ে যান। ড্রাইভারের ভাগ্যে কী ঘটেছে, এখনও কিছু জানা যায়নি। এই ঘুষ কেলেঙ্কারি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে ঘটনার দায় কেউ স্বীকার করছে না। রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পুরো দায় এখন তার এপিএস ওমর ফারুকের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন। তিনি বলছেন, গাড়িতে যে টাকাটা পাওয়া গেছে ওটা তার এপিএসের ব্যক্তিগত টাকা, যা তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হলে এনবিআর খতিয়ে দেখবে। সেটা রেলমন্ত্রীর বিষয় নয় বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, গাড়িচালক তার এপিএসকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী আরও বলেন, এপিএস কোথায় কী করছে, জানার দায়িত্ব আমার নয়। অন্যদিকে টাকার কথা এড়িয়ে গিয়ে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা বলেন, ট্রেনের সময়সূচি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য এপিএসের সঙ্গে তার গাড়িতে করে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (আরএনবি) এনামুল হক বলেন, জিএমের নির্দেশেই তিনিও তার সঙ্গে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।
এ ঘটনা থেকে এটি পরিষ্কার, গাড়িটি রেলমন্ত্রীর এপিএসের। গাড়িতে বস্তাভর্তি টাকা ছিল। কর্মকর্তারা টাকাসহ গাড়িটি নিয়ে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের বাসায় যাচ্ছিলেন। শুধু চালকের সঙ্গে গোলমালের কারণে তাদের বিজিবি সদর দফতর পিলখানার ভেতর অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে। এটা যে ঘুষের টাকা, সেটাও পরিষ্কার। নইলে এত রাতে এত টাকা নিয়ে কর্মকর্তারা কেন মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন? তাছাড়া এই কর্মকর্তারা মন্ত্রীর কাছের লোক। একজন মন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক। তার নিয়োগ রাজনৈতিক। সাধারণত ঘনিষ্ঠ লোককেই মন্ত্রীর এপিএস বানানো হয়। মন্ত্রীর যাবতীয় লেনদেন এ ধরনের ঘনিষ্ঠ লোকের মাধ্যমেই করা হয়। কর্মকর্তার মধ্যে অন্যজন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা। রেলওয়েতে বর্তমানে ছোট-বড় প্রায় ৭ হাজার পদে লোক নিয়োগ চলছে। এ প্রক্রিয়ায় টাকা-পয়সার লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। গাড়িতে রেলের যে জিএম ছিলেন, তিনি পূর্বাঞ্চলের নিয়োগ কমিটির প্রধান। টাকার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে, এত রাতে বস্তাভর্তি টাকার গাড়িতে চড়ে তিনি কেন মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন? রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিতে গিয়ে তার এপিএসের কাজের দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। কিন্তু পিএস, এপিএস ও অন্যান্য কর্মকর্তার কাজের তদারক করা মন্ত্রীর দায়িত্বের অংশ। গাড়িতে যে পরিমাণ টাকাই থাক, সেটা তো হাওয়া থেকে আসেনি? জিএমকে নিয়ে গভীর রাতে এপিএস যাচ্ছিলেন মন্ত্রীর বাসায়। পথে সেই গাড়িচালক পিলখানায় ঢুকিয়ে চিত্কার করে বলেন, গাড়িতে ঘুষের টাকা। তাই এত ঘটনার দায় মন্ত্রী কীভাবে অস্বীকার করবেন?
তদন্ত হবে একটি কৌতুকমাত্র : পিলখানায় মধ্যরাতের ঘুষ কেলেঙ্কারির চাঞ্চল্যকর ঘটনা ধরা পড়ার পরদিন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তড়িঘড়ি একটি সংবাদ সম্মেলন করে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এপিএসের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মন্ত্রীর একান্ত সচিবকে (পিএস), আর জিএমের বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবকে। যেখানে স্বয়ং মন্ত্রী বাড়িতে ঘুষের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে মন্ত্রীর পিএস দিয়ে তদন্ত করলে সেই তদন্তে সত্য ঘটনা কতটা উঠে আসবে? আবার রেলের মহাব্যবস্থাপকের বিষয়েও তদন্ত একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব দিয়ে হলে সেটাও কতটা উদঘাটিত হবে? অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এই তদন্ত একটি কৌতুক হবে মাত্র। এটা আসলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্যই করা। এতে আদৌ কোনো তদন্ত হবে না। এটাও শুঁটকির আড়তে বিড়াল চৌকিদারের মতোই হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান ঘটনাটি তদন্ত করবেন বলে উল্লেখ করেছেন। দুদক চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যেও মানুষের মধ্যে নানা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোপূর্বে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে তিনি একটি লোক দেখানো তদন্ত করেছিলেন। আসলে তদন্তের উদ্দেশ্য ছিল তত্কালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে নির্দোষ দেখানো। মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন দুদকের এ ধরনের একটি সনদ পেয়েছেন এবং এই সনদটি দেখিয়ে এখন তিনি নিজেকে সত্ মানুষের প্রচার চালাচ্ছেন। তাই দুদকের এবারের তদন্তও রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের জন্য আরেকটি সনদপ্রাপ্তি কি-না, সেটাই দেখার বিষয়।
এ অবস্থায় সত্ বিচারপতির নেতৃত্বে অবিলম্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনই সবাই চাইছেন। এতে অন্তত হস্তক্ষেপমুক্ত তদন্ত আশা করা যায়। এত টাকার উত্স কী, কেন গভীর রাতে কর্মকর্তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন, কেন গাড়িচালক পিলখানায় বিজিবির সদর দফতরে গাড়ি ঢুকিয়ে দিলেন, এসব রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত একান্ত প্রয়োজন। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির স্বার্থেই রেলের এই ‘কালো বিড়ালের’ রহস্য উদ্ঘাটন হওয়া জরুরি।
গাড়িতে সংসদের স্টিকার লাগিয়ে ঘুষের টাকা বহন করে সংসদেরও অবমাননা করা হয়েছে। এ বিষয়টিও তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে সংসদের নাম এভাবে অন্যায় কাজে ব্যবহার করা কেন হলো?
রেলমন্ত্রীর পদত্যাগই কেলেঙ্কারি থেকে মুক্তির উপায় : পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৮ নভেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে রদবদল ঘটানো হয়। মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় দু’ভাগ করে রেলওয়ে মন্ত্রণালয় আলাদা করা হয়। নতুন রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ওবায়দুল কাদেরকে। মন্ত্রী হওয়ার ছয় দিন পর তারা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। দায়িত্ব লাভের পর সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেন নতুন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, পৃথিবীর মধ্যে কেবল বাংলাদেশেই রেল খাত লোকসানে রয়েছে। এর কারণ অনিয়ম-দুর্নীতি। আমি দেখতে চাই রেলের সমস্যাটা কোথায়? কোন অন্ধকারে কালো বিড়ালটি লুকিয়ে রয়েছে, তা খুঁজে বের করতে চাই। দুর্নীতি-অনিয়মের কালো বিড়াল আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে। কয়েকদিন পর যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কণ্ঠের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সুরঞ্জিত বলেন, শেষবেলার মন্ত্রী হিসেবে কতটুকু কী করতে পারব বলতে পারি না। তবে কালো বিড়ালটি খুঁজে বের করবই। সময় আছে দু’বছর। সব পারব এমন নয়। প্রধানমন্ত্রী যে বিশ্বাসে দায়িত্ব দিয়েছেন, ‘আই উইল ট্রাই মাই বেস্ট।’ যতটুকু সম্ভব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করব।
গত ৩ মার্চ রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সুনামগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বলেন, প্রধানমন্ত্রী হঠাত্ করে আমাকে তার ভাঙা রেলে তুলে দিয়েছেন। সরকারের শেষ সময়ে এসে আমার কাঁধে মন্ত্রিত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। শেয়ারবাজারে কাণ্ডকারখানা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমানকে ইঙ্গিত করে সুরঞ্জিতের মন্তব্য ছিল—‘শুঁটকির হাটে বিড়াল চৌকিদার।’ সর্বশেষ গতকাল (১৩ মার্চ) রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিতের উক্তি—‘আমি বিপদে পড়ে গেছি। ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এত বড় বিপদে পড়িনি। প্রয়োজন যদি হয় পদত্যাগ করব।’
এটা ঠিক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একজন প্রবীণ রাজনীতিক। তবে তিনি যে একজন স্বচ্ছ রাজনীতিক, এটা অনেকেই মনে করেন না। এর আগে তার বিভিন্ন আচরণেও তা লক্ষ করা গেছে। গত জরুরি সরকারের আমলে তার ভূমিকা দেশবাসী দেখেছেন। সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে তিনি হাত মিলিয়েছিলেন এক-এগারোর হোতাদের সঙ্গে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেও তিনি পিছপা হননি। কিন্তু এক-এগারোর পর তার ভিন্ন অবস্থানও দেশবাসী দেখেছে। রাতারাতি তিনি সুর পাল্টে শেখ হাসিনার শুভাকাঙ্ক্ষী সেজে যান এবং শেষ পর্যন্ত সফলও হন। সরকারের দু’বছর বাকি থাকলেও শেষবেলায় তিনি মন্ত্রী হয়ে ছেড়েছেন। শেখ হাসিনাকে তোষামোদী করার জন্য সব প্রচেষ্টাই তিনি করেছেন। এ সম্পর্কে তার একটি মন্তব্য বহুল আলোচিত। তিনি বলেছিলেন—‘বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে, শেখ হাসিনা ধরলে ছাড়ে না। ছাড়ছে, ইউনূস মিয়ারে ছাড়ছে?’
মন্ত্রিত্ব গ্রহণের পর তিনি যখন কালো বিড়াল খুঁজছেন এবং নিজেকে বেলাশেষের মন্ত্রী বলছেন, তখনই অনেকের সন্দেহ হয়েছে তিনি কিছু একটা করবেন। শেষ সময় যা পাই লুটেপুটে খাই—এমন একটা কিছু হবে মনে হচ্ছিল। অবশেষে পরিস্থিতি সেদিকেই গড়াচ্ছে। রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ে সাড়ে সাত হাজার লোক নিয়োগের একটা মওকা এসে যায়। রেলওয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা সেই মওকা পাইয়ে দেন। সারাদেশের মানুষই এখন এক বাক্যে বিশ্বাস করছেন রেলমন্ত্রী রেলের ওই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। পাঠকদের অসংখ্য প্রতিক্রিয়ায় তারা তাকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। অনেক পাঠকই পত্র-পত্রিকার ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে তাদের মন্তব্যে বলেছেন, রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত রেলের কালো বিড়াল খুঁজে বের করবেন বলেছিলেন। বস্তাভরা ৭০ লাখ টাকাসহ তার এপিএসের গাড়ি আটকের পর এটাই প্রমাণিত রেলমন্ত্রীই সেই কালো বিড়াল। বিড়ালের এখন লেজ কাটা গেছে। লজ্জাশরম থাকলে বিড়াল আর শুঁটকি খাবে না। একজন পাঠকের মন্তব্য ছিল সরষের মধ্যে ভূত আর এ ঘটনার মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছি না। যতই চেষ্টা করুন না কেন, থলের বিড়াল সুরঞ্জিতবাবু আর ঢাকতে পারবেন না। শুঁটকির বাজারে বিড়াল চৌকিদার বিষয়টি যে তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, এটা তিনি জানতেন।
রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার একটিই রাস্তা—পদত্যাগ করা। দেশের বিশিষ্টজনসহ সাধারণ মানুষ অনেকের দাবি, ন্যূনতম নীতি-নৈতিকতা থাকলে তিনি পদত্যাগ করবেন। তিনি নিজেই বলেছেন, তার ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তিনি এত বড় বিপদে পড়েননি। তীর এখন তার দিকেই। অন্যায়ের পিছু নিলে বিপদে তো পড়তেই হবে। এখন পদত্যাগই তার বিপদ থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
abdal62@gmail.com
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন