শওকত ওসমান রচি,নয়াদিগন্ত , ১৭,০৪,২০১২
ব্যাপক সমালোচনার মুখে অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ে কলঙ্ক নিয়ে অবশেষে পাঁচ মাসের মতো দায়িত্ব পালনের পর রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে নিতে হলো বিদায়। গতকাল রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। গতকালের তারিখ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া পদত্যাগপত্রে তিনি এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনোভাবে জড়িত নন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, যেহেতু এ ঘটনায় আমার এপিএস ও রেল মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তা জড়িত ছিল, তাই এ ঘটনার দায়দায়িত্ব আমার মন্ত্রণালয়ের ওপরই পড়ে। এ দায় নিয়েই আমি পদত্যাগ করছি। পদত্যাগের আবেদন করে তিনি লেখেনÑ দেশ, সরকার ও দলের স্বার্থে আপনার (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশে যেকোনো দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকব। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, পদত্যাগপত্রটি তিনি প্রধানমন্ত্রীর এপিএস ১-এর মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে প্রেরণ করেন। সচিব তা ফিরিয়ে দেন। নিয়মমাফিক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেয়া হলে তাতে প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করার পর মন্ত্রিসভা বিভাগে গেজেট তৈরি করার জন্য পাঠানো হয়। গত রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর সুরঞ্জিত হলেন বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন। এর আগে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ পদত্যাগ করেন। গত ৯ এপ্রিল রাতে সুরঞ্জিতের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনা প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। প্রবীণ এ রাজনীতিবিদকে নিয়ে চাপের মুখে পড়ে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার। সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও এ অর্থ কেলেঙ্কারিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি ওঠে। রোববার ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে রোববার রাতে বিদায়ী রেলমন্ত্রী ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে। সরকারের উচ্চপদস্থ একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রেলমন্ত্রীর এপিএসের কাছে বিপুল অর্থ পাওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নিজেও বেশ ুব্ধ ছিলেন। তুরস্ক যাওয়ার দিনই তিনি ঘটনা জেনে গেছেন। তারা জানান, রোববার রাতেই গণভবনে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়। বিএনপিসহ বিভিন্ন দল থেকে সুরঞ্জিতের পদত্যাগের দাবি উঠলেও এর জবাবে সুরঞ্জিত রোববার প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, বিরোধী দল তাকে মন্ত্রীর পদ দেয়নি, তাই তাদের কথায় তিনি পদত্যাগ করবেন না।
গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, ৯ এপ্রিল রাতে এপিএস ফারুকের সাথে গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়। পূর্বাঞ্চল রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ও তার কমান্ড্যান্ট এনামুল হকও এ সময় ওই গাড়িতে ছিলেন। তারা প্রথম দিন থেকেই বলে আসছিলেন, টাকা নিয়ে তারা রেলমন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। রোববার ইউসুফ আলী মৃধা তদন্ত কমিটির সামনে আবারো একই কথা বলেছেন। তবে প্রথম দিন থেকেই মন্ত্রী এটা অস্বীকার করে আসছিলেন। তিনি বারবার বলার চেষ্টা করেছেন টাকা নিয়ে ওই তিনজন এপিএসের বাসাতেই যাচ্ছিলেন। ৯ এপ্রিল রাত ১১টা নাগাদ বিজিবির জিগাতলা ৪ নম্বর গেট দিয়ে হঠাৎ গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করেন চালক আজম খান। হইচইয়ের পর বিজিবি সদস্যদের তল্লাশি চলে। গাড়ির ভেতরে মিলে টাকার বস্তা। টাকার পরিমাণ ৭০ লাখ বলা হলেও এ সংখ্যা আরো বেশি ছিল বলে চাউর হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউসুফ আলী মৃধাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চাকুরিচ্যুত করা হয় ওমর ফারুক তালুকদারকে। এ ছাড়া কমান্ড্যান্ট এনামুল হককেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী মারজিয়া ফারহানার ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গত বছরের ২৮ নভেম্বর রেলমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। শেখ হাসিনার বিগত সরকারের সময় তিনি মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
প্রায় ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের। দেড় দশক আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া সুরঞ্জিত ১৯৭২ সালে দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার আগে তিনি সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনায় মুখর ছিলেন। বিশেষ করে মহাজোট সরকারের আমলে শেয়ার কেলেঙ্কারি ও পরে সালমান এফ রহমানকে শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়ার পর তিনি মন্তব্য করেছিলেন ‘শুঁটকির বাজারে বেড়াল চৌকিদার’। পরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার ‘রেলের কালো বেড়াল’ মন্তব্য বেশ বিতর্কের জন্ম দেয়।
নানা নাটকীয়তার পর সুরঞ্জিত গতকাল সোমবার রেলভবনে প্রেস ব্রিফিং করে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। এ সময় তাকে বেশ ফ্যাকাশে দেখাচ্ছিল। তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা না থাকার পরও আমি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ সময় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, গত ৯ এপ্রিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সর্বস্তরে একটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। নানা কথা হচ্ছে। যেহেতু এ ঘটনায় আমার এপিএস ও রেল মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তা নিয়োজিত ছিল, তাই এ ঘটনার দায়দায়িত্ব আমার মন্ত্রণালয়ের ওপরই পড়ে। এ দায় নিয়েই আমি পদত্যাগ করছি। সুরঞ্জিত বলেন, আমি কারো বোঝা হতে চাই না। দল, সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য দায় হতে চাই না। গণতন্ত্র রায় আমি এ সাহসী সিদ্ধান্ত নিলাম। ৪০ বছরে যে দৃষ্টান্ত নেই সে দৃষ্টান্ত আমি স্থাপন করলাম। গণতন্ত্রের মাত্রাকে আমি প্রসারিত করলাম।
তিনি জানান, সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায়-দায়িত্ব একান্তই তার, দল বা সরকারের নয়। ঘটনায় কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করতে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত রোববার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর আমি প্রায় ঘণ্টাকাল তার সাথে বৈঠক করেছি। বৈঠকে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে মন্ত্রিত্ব থেকে আমার অব্যাহতির অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে তিনি তাতে সম্মতি দেন। নিজের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, ৪০ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে সবাই নানাভাবে উপকৃত হয়েছে। দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, ৪০ বছরে কেউ আত্মত্যাগ করতে আসেনি। আমি আমার জীবন সায়াহ্নে এসে এক কঠিন পরীার মুখোমুখি হয়েছি। তিনি বলেন, বিষ খেয়ে আমি নীলকণ্ঠ হতে চাই। তিনি বলেন, ওই ঘটনায় আমার পরো ও প্রত্যক্ষ কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে আমার মন্ত্রণালয়ের ঘটনা হওয়ায় এ ব্যর্থতার দায় নিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। সে দিনের ঘটনার তদন্ত যুক্তিসঙ্গত সময়ে শেষ হবে বলে আশা করে সুরঞ্জিত বলেন, আমার দলের দুয়েকজন দেশের বুদ্ধিজীবী ছাড়াও বেশির ভাগই প্রশ্ন করেছেন- আমি দায়িত্বে থাকলে তদন্ত প্রভাবমুক্ত থাকবে কি না। এবার তদন্তে নিশ্চয়ই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হবে। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনাকে ‘রেলের দুর্ঘটনা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন। ইতোমধ্যে দুটো তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্টদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। দু’জনের জবানবন্দী দেয়ার পরই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আজ আমি বেশি কথা বলতে পারব না। কোনো প্রশ্ন নেবো না। প্রশ্নের উত্তরও দেবো না। রেলমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেনÑ এমন খবরে গণমাধ্যমকর্মীরা সকাল থেকেই রেলভবনে জড়ো হতে থাকেন। সংবাদ সম্মেলন দুপুর ১২টায় শুরুর কথা থাকলেও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পৌঁছান ১২টা ৫০ মিনিটে। নিজের কে কিছুণ কাটানোর পর রেলসচিব ফজলে কবির ও রেলের ডিজি আবু তাহেরকে নিয়ে তিনি সম্মেলন কে পৌঁছান ১টা ১০ মিনিটে।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সিদ্ধান্ত : সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের রেলমন্ত্রী পদ থেকে বিদায়ের ঘণ্টা বেজেছে রোববার রাতেই। গতকাল মন্ত্রী নিজেই বলেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অব্যাহতির অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে তিনি তাতে সম্মতি দেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রধানমন্ত্রী তুরস্ক থেকে দেশে ফেরার পর রোববার রাতে রেলমন্ত্রী ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে। প্রায় ঘণ্টাকাল প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন তিনি। এ বৈঠকে তাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেয়া হয়। একাধিক কর্মকর্তা জানান, রেলমন্ত্রীর এপিএসের কাছে বিপুল অর্থ পাওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী বেশ ুব্ধ ছিলেন। তারা জানান, রোববার রাতেই গণভবনে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়। তাই গণভবন থেকে বের হয়ে বা বাসায় ফেরার পর সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাননি। পরে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানিয়ে দেন সোমবার রেলভবনে মন্ত্রী ব্রিফিংয়ে সব জানিয়ে দেবেন।
অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে সম্পৃক্ততা অস্বীকার : ৯ এপ্রিল রাতে বিজিবির গেটে এপিএসের গাড়ি থেকে ৭০ লাখ টাকা আটকের পর থেকেই এ অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে তিনি জড়িত নন বলে বারবার দাবি করে আসছিলেন বিদায়ী রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এমনকি গতকাল রেলভবনে পদত্যাগের ঘোষণার আগ মুহূর্তেও তিনি এ দাবি করেন। রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধা, রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট এনামুল হক ও চালক আজম খান বিজিবির হাতে ঘটনার রাত ১১টার দিকে টাকাসহ ধরা পড়ার পর জানিয়েছিলেন তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। সোমবার রাতেই প্রথম ঘটনা নয়, রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা এর আগেও একাধিকবার গিয়েছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাসায়। পরের দিনই রেলমন্ত্রী দাবি করেন তিনি রাত ১০টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে গঠিত তদন্ত কমিটির সামনেও জিএম একই তথ্য দিয়েছেন। জানিয়েছেন, টাকা নিয়ে তারা মন্ত্রীর বাসার উদ্দেশেই যাচ্ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা কৌশল চালানো হয়। ঘটনার তদন্তে এপিএসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত রিপোর্ট দিতে মন্ত্রীর পিএসকে দায়িত্ব দেন মন্ত্রী। যুগ্ম সচিব পর্যায়ের জিএমের তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয় আরেক যুগ্ম সচিব শশী কুমার সিংহকে। এর ফলে শেষপর্যন্ত মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা এড়াতে এ কেলেঙ্কারির দায় চাপানোর চেষ্টা চলে এপিএস, জিএম ও নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্টের ওপর। ঘটনার দ্বিতীয় দিন তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। রেলের সুবিধাবঞ্চিত গ্রুপ এ কাজ করতে পারে। ওই দিনের ঘটনার পর এপিএস বা অন্য কারো সাথে তার যোগাযোগ হয়নি, তিনি তাকে ছাড়িয়েও আনেননি বলে উল্লেখ করেন। বিষয়টি নিয়ে বুধবার আলোচনা হয় সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও। সেখানে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি তোলা হয়।
রাজনীতিতে যাত্রাবিরতি : গতকাল রেলভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জানালেন, পদত্যাগের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা তার ‘যাত্রাবিরতি’। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে রাজনীতিতে স্বচ্ছভাবে ফিরে আসবেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। ৫০ বছরেরও বেশি সময় রাজনীতিতে জড়িত আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা। যাত্রাবিরতির বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মাত্রাকে আরো শক্তিশালী করতে এ ঘটনায় আমার দায়িত্ব নিতে হবে। ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা না থাকার পরও আমি অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মন্ত্রিসভায় নিষিদ্ধ সুরঞ্জিত : রেলমন্ত্রীর এপিএসের কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা উদ্ধারের পর প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল কাল। চাউর হয়েছিল মন্ত্রিসভা থেকে সুরঞ্জিতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তার আগেই রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তাকে বিদায় নিতে হবে। এ কারণে সুরঞ্জিতের অফিসে রোববার পর্যন্ত মন্ত্রিসভার জন্য নির্ধারিত ব্রিফকেস পৌঁছেনি। মন্ত্রিসভায় তার জন্য নির্ধারিত চেয়ারও সরিয়ে রাখা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সুরঞ্জিত হলেন বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন। এর আগে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ পদত্যাগ করেন। গত ৯ এপ্রিল রাতে সুরঞ্জিতের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার ঘটনা প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। প্রবীণ এ রাজনীতিবিদকে নিয়ে চাপের মুখে পড়ে ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার। সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীও এ অর্থ কেলেঙ্কারিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি। বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি ওঠে। রোববার ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে রোববার রাতে বিদায়ী রেলমন্ত্রী ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে। সরকারের উচ্চপদস্থ একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রেলমন্ত্রীর এপিএসের কাছে বিপুল অর্থ পাওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নিজেও বেশ ুব্ধ ছিলেন। তুরস্ক যাওয়ার দিনই তিনি ঘটনা জেনে গেছেন। তারা জানান, রোববার রাতেই গণভবনে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়। বিএনপিসহ বিভিন্ন দল থেকে সুরঞ্জিতের পদত্যাগের দাবি উঠলেও এর জবাবে সুরঞ্জিত রোববার প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, বিরোধী দল তাকে মন্ত্রীর পদ দেয়নি, তাই তাদের কথায় তিনি পদত্যাগ করবেন না।
গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, ৯ এপ্রিল রাতে এপিএস ফারুকের সাথে গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়। পূর্বাঞ্চল রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা ও তার কমান্ড্যান্ট এনামুল হকও এ সময় ওই গাড়িতে ছিলেন। তারা প্রথম দিন থেকেই বলে আসছিলেন, টাকা নিয়ে তারা রেলমন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। রোববার ইউসুফ আলী মৃধা তদন্ত কমিটির সামনে আবারো একই কথা বলেছেন। তবে প্রথম দিন থেকেই মন্ত্রী এটা অস্বীকার করে আসছিলেন। তিনি বারবার বলার চেষ্টা করেছেন টাকা নিয়ে ওই তিনজন এপিএসের বাসাতেই যাচ্ছিলেন। ৯ এপ্রিল রাত ১১টা নাগাদ বিজিবির জিগাতলা ৪ নম্বর গেট দিয়ে হঠাৎ গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করেন চালক আজম খান। হইচইয়ের পর বিজিবি সদস্যদের তল্লাশি চলে। গাড়ির ভেতরে মিলে টাকার বস্তা। টাকার পরিমাণ ৭০ লাখ বলা হলেও এ সংখ্যা আরো বেশি ছিল বলে চাউর হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউসুফ আলী মৃধাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চাকুরিচ্যুত করা হয় ওমর ফারুক তালুকদারকে। এ ছাড়া কমান্ড্যান্ট এনামুল হককেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী মারজিয়া ফারহানার ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গত বছরের ২৮ নভেম্বর রেলমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। শেখ হাসিনার বিগত সরকারের সময় তিনি মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।
প্রায় ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের। দেড় দশক আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া সুরঞ্জিত ১৯৭২ সালে দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার আগে তিনি সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনায় মুখর ছিলেন। বিশেষ করে মহাজোট সরকারের আমলে শেয়ার কেলেঙ্কারি ও পরে সালমান এফ রহমানকে শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়ার পর তিনি মন্তব্য করেছিলেন ‘শুঁটকির বাজারে বেড়াল চৌকিদার’। পরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার ‘রেলের কালো বেড়াল’ মন্তব্য বেশ বিতর্কের জন্ম দেয়।
নানা নাটকীয়তার পর সুরঞ্জিত গতকাল সোমবার রেলভবনে প্রেস ব্রিফিং করে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। এ সময় তাকে বেশ ফ্যাকাশে দেখাচ্ছিল। তিনি বলেন, এই ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা না থাকার পরও আমি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ সময় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, গত ৯ এপ্রিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সর্বস্তরে একটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। নানা কথা হচ্ছে। যেহেতু এ ঘটনায় আমার এপিএস ও রেল মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তা নিয়োজিত ছিল, তাই এ ঘটনার দায়দায়িত্ব আমার মন্ত্রণালয়ের ওপরই পড়ে। এ দায় নিয়েই আমি পদত্যাগ করছি। সুরঞ্জিত বলেন, আমি কারো বোঝা হতে চাই না। দল, সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য দায় হতে চাই না। গণতন্ত্র রায় আমি এ সাহসী সিদ্ধান্ত নিলাম। ৪০ বছরে যে দৃষ্টান্ত নেই সে দৃষ্টান্ত আমি স্থাপন করলাম। গণতন্ত্রের মাত্রাকে আমি প্রসারিত করলাম।
তিনি জানান, সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায়-দায়িত্ব একান্তই তার, দল বা সরকারের নয়। ঘটনায় কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করতে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত রোববার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর আমি প্রায় ঘণ্টাকাল তার সাথে বৈঠক করেছি। বৈঠকে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে মন্ত্রিত্ব থেকে আমার অব্যাহতির অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে তিনি তাতে সম্মতি দেন। নিজের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সুরঞ্জিত বলেন, ৪০ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে সবাই নানাভাবে উপকৃত হয়েছে। দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, ৪০ বছরে কেউ আত্মত্যাগ করতে আসেনি। আমি আমার জীবন সায়াহ্নে এসে এক কঠিন পরীার মুখোমুখি হয়েছি। তিনি বলেন, বিষ খেয়ে আমি নীলকণ্ঠ হতে চাই। তিনি বলেন, ওই ঘটনায় আমার পরো ও প্রত্যক্ষ কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে আমার মন্ত্রণালয়ের ঘটনা হওয়ায় এ ব্যর্থতার দায় নিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিচ্ছি। সে দিনের ঘটনার তদন্ত যুক্তিসঙ্গত সময়ে শেষ হবে বলে আশা করে সুরঞ্জিত বলেন, আমার দলের দুয়েকজন দেশের বুদ্ধিজীবী ছাড়াও বেশির ভাগই প্রশ্ন করেছেন- আমি দায়িত্বে থাকলে তদন্ত প্রভাবমুক্ত থাকবে কি না। এবার তদন্তে নিশ্চয়ই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হবে। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনাকে ‘রেলের দুর্ঘটনা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা তদন্ত হওয়ার প্রয়োজন। ইতোমধ্যে দুটো তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্টদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। দু’জনের জবানবন্দী দেয়ার পরই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আজ আমি বেশি কথা বলতে পারব না। কোনো প্রশ্ন নেবো না। প্রশ্নের উত্তরও দেবো না। রেলমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেনÑ এমন খবরে গণমাধ্যমকর্মীরা সকাল থেকেই রেলভবনে জড়ো হতে থাকেন। সংবাদ সম্মেলন দুপুর ১২টায় শুরুর কথা থাকলেও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পৌঁছান ১২টা ৫০ মিনিটে। নিজের কে কিছুণ কাটানোর পর রেলসচিব ফজলে কবির ও রেলের ডিজি আবু তাহেরকে নিয়ে তিনি সম্মেলন কে পৌঁছান ১টা ১০ মিনিটে।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সিদ্ধান্ত : সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের রেলমন্ত্রী পদ থেকে বিদায়ের ঘণ্টা বেজেছে রোববার রাতেই। গতকাল মন্ত্রী নিজেই বলেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অব্যাহতির অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে তিনি তাতে সম্মতি দেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রধানমন্ত্রী তুরস্ক থেকে দেশে ফেরার পর রোববার রাতে রেলমন্ত্রী ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে। প্রায় ঘণ্টাকাল প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন তিনি। এ বৈঠকে তাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেয়া হয়। একাধিক কর্মকর্তা জানান, রেলমন্ত্রীর এপিএসের কাছে বিপুল অর্থ পাওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী বেশ ুব্ধ ছিলেন। তারা জানান, রোববার রাতেই গণভবনে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যায়। তাই গণভবন থেকে বের হয়ে বা বাসায় ফেরার পর সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাননি। পরে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানিয়ে দেন সোমবার রেলভবনে মন্ত্রী ব্রিফিংয়ে সব জানিয়ে দেবেন।
অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে সম্পৃক্ততা অস্বীকার : ৯ এপ্রিল রাতে বিজিবির গেটে এপিএসের গাড়ি থেকে ৭০ লাখ টাকা আটকের পর থেকেই এ অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে তিনি জড়িত নন বলে বারবার দাবি করে আসছিলেন বিদায়ী রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এমনকি গতকাল রেলভবনে পদত্যাগের ঘোষণার আগ মুহূর্তেও তিনি এ দাবি করেন। রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধা, রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট এনামুল হক ও চালক আজম খান বিজিবির হাতে ঘটনার রাত ১১টার দিকে টাকাসহ ধরা পড়ার পর জানিয়েছিলেন তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। সোমবার রাতেই প্রথম ঘটনা নয়, রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা এর আগেও একাধিকবার গিয়েছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাসায়। পরের দিনই রেলমন্ত্রী দাবি করেন তিনি রাত ১০টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে গঠিত তদন্ত কমিটির সামনেও জিএম একই তথ্য দিয়েছেন। জানিয়েছেন, টাকা নিয়ে তারা মন্ত্রীর বাসার উদ্দেশেই যাচ্ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা কৌশল চালানো হয়। ঘটনার তদন্তে এপিএসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত রিপোর্ট দিতে মন্ত্রীর পিএসকে দায়িত্ব দেন মন্ত্রী। যুগ্ম সচিব পর্যায়ের জিএমের তদন্ত করার দায়িত্ব দেয়া হয় আরেক যুগ্ম সচিব শশী কুমার সিংহকে। এর ফলে শেষপর্যন্ত মন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা এড়াতে এ কেলেঙ্কারির দায় চাপানোর চেষ্টা চলে এপিএস, জিএম ও নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্টের ওপর। ঘটনার দ্বিতীয় দিন তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। রেলের সুবিধাবঞ্চিত গ্রুপ এ কাজ করতে পারে। ওই দিনের ঘটনার পর এপিএস বা অন্য কারো সাথে তার যোগাযোগ হয়নি, তিনি তাকে ছাড়িয়েও আনেননি বলে উল্লেখ করেন। বিষয়টি নিয়ে বুধবার আলোচনা হয় সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও। সেখানে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি তোলা হয়।
রাজনীতিতে যাত্রাবিরতি : গতকাল রেলভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জানালেন, পদত্যাগের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা তার ‘যাত্রাবিরতি’। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে রাজনীতিতে স্বচ্ছভাবে ফিরে আসবেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। ৫০ বছরেরও বেশি সময় রাজনীতিতে জড়িত আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা। যাত্রাবিরতির বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মাত্রাকে আরো শক্তিশালী করতে এ ঘটনায় আমার দায়িত্ব নিতে হবে। ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা না থাকার পরও আমি অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মন্ত্রিসভায় নিষিদ্ধ সুরঞ্জিত : রেলমন্ত্রীর এপিএসের কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা উদ্ধারের পর প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল কাল। চাউর হয়েছিল মন্ত্রিসভা থেকে সুরঞ্জিতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তার আগেই রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তাকে বিদায় নিতে হবে। এ কারণে সুরঞ্জিতের অফিসে রোববার পর্যন্ত মন্ত্রিসভার জন্য নির্ধারিত ব্রিফকেস পৌঁছেনি। মন্ত্রিসভায় তার জন্য নির্ধারিত চেয়ারও সরিয়ে রাখা হয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন