কাজী জেবেল,আমারদেশ,১০ এপ্রিল ২০১২
রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ‘ঘুষের’ ৭০ লাখ টাকাসহ সোমবার গভীর রাতে ঢাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র হাতে ধরা পড়েছেন। এ সময় ওই গাড়িতে তার সঙ্গে ছিলেন রেলওয়ের জিএম (পূর্বাঞ্চল) ইউসুফ আলী মৃধা। এই টাকা নিয়ে তারা রেলমন্ত্রীর জিগাতলার বাসায় যাচ্ছিলেন। প্রায় ১২ ঘণ্টা বিজিবির হাতে আটক থাকার পর রেলমন্ত্রীর চাপে গতকাল দুপুরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনা তদন্তে রেলওয়ে মন্ত্রণালয় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। একটি কমিটির প্রধান করা হয়েছে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবকে (পিএস)। পৃথক কমিটি করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) শশী কুমার সিংহকে দিয়ে।
মন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ও রেলের জিএম বিজিবির কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবাদ সম্মেলন করে জানান, এ টাকার মালিক তার এপিএস। তিনি এপিএসের গাড়িচালককে এ ঘটনার জন্য দায়ী করে বলেন, ওমর ফারুক ব্যক্তিগত টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় চালক তাকে অপহরণ করে। যে গাড়িতে চড়ে তারা মন্ত্রীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন, সেটিতে সংসদের স্টিকার সাঁটা ছিল।
রেলওয়ের বিভিন্ন সূত্র জানায়, এ টাকা নিয়ে মন্ত্রী ও তার এপিএস দু’ধরনের তথ্য দিয়েছেন। এপিএস বলেছেন, তিনি এ টাকা নিয়ে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। জিএম মৃধা ও তার দাবি—মন্ত্রী এই টাকার ব্যাপারে জানেন। তবে মন্ত্রী বলেছেন, এ টাকা নিয়ে এপিএস তার (মন্ত্রীর) বাসায় যাচ্ছিলেন না। তিনি টাকার ব্যাপারে কিছু জানেন না। দু’ধরনের বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে রহস্যের ধূম্রজাল। টিভি ও অন্যান্য মিডিয়ার খবরে জানা যায়, ড্রাইভারও জানতো সে ঘুষের টাকা বহন করছে। সে এই অবৈধ টাকা বহনে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে মন্ত্রীর এপিএসের সঙ্গে তার বাদানুবাদ হয়। বিভিন্ন সূত্র জানায়, রেলওয়ের নিয়োগ-বাণিজ্যে মন্ত্রীর ভাগের একটি অংশ প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা তার জিগাতলার বাসায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তারা। রেলওয়ের বিভিন্ন পদে প্রায় সাড়ে সাত হাজার লোক নিয়োগ চলছে।
এদিকে ওয়াকিবহাল সূত্রে জানা যায়, উেকাচের টাকার এই মহাকেলেঙ্কারির ঘটনায় বলির পাঁঠা হতে চলেছেন গাড়ির ড্রাইভার। কেন ঘুষের কথা বিজিবি সদস্যদের কাছে ফাঁস করলেন—এজন্য সবার এখন চক্ষুশূল। নির্দোষ এ ব্যক্তিকে ফাঁসিয়ে দিতে এখন নানা গল্প ফাঁদা হচ্ছে।
জানা যায়, রেলওয়েতে ওয়েম্যান, নাম্বার টিকার, খালাসি, জুনিয়র অডিটরসহ বিভিন্ন পদে সাড়ে ৭ হাজার লোক নিয়োগ চলছে। এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে শুরু হয় ব্যাপক নিয়োগ-বাণিজ্য। চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে এক থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়া হয়। এ ঘুষের টাকা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বণ্টন চলছিল। ওই ঘুষের টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী মৃধা ও পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার তোফাজ্জেল হোসেন। পূর্বাঞ্চলের ঘুষের টাকারই একটি অংশ নিয়ে তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন।
সূত্র জানায়, এপিএসের গাড়িতে চড়ে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন ইউসুফ আলী মৃধা। গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বহনকারী গাড়িটি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় দিয়ে জিগাতলা যাচ্ছিল। বিজিবির ৪ নম্বর গেটের সামনে গিয়ে চালক আলী আজম অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। এ সময় বিজিবি গেটে পাহারারত বিজিবি (সেনা) সদস্যরা এগিয়ে এলে ওমর ফারুক নিজেকে রেলমন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দেন। চালক ও এপিএস অসংলগ্ন কথা বলায় তাদের গাড়ি তল্লাশি চালানোর কথা জানায় বিজিবি সদস্যরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বিজিবি সদস্যদের দেখে নেবেন বলে হুশিয়ার করেন। এ সময় বিজিবি সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে গাড়িতে থাকা বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করেন। তাদের মোবাইল জব্দ করে গাড়ির ভেতরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়। রাত ১২টার দিকে গাড়িসহ তাদের বিজিবির সদর গেটে (৩ নম্বর) নেয়া হয়। ওই গেটে দায়িত্ব পালনকারী বিজিবি (সেনা) সদস্যরা অস্ত্র তাক করে গাড়িটি ঘিরে ফেলে বিজিবির ভেতরে নিয়ে যায়। ওমর ফারুক ও ইউসুফ আলীকে সদর দফতরের মূল গেটেই আটক রাখা হয়। গভীর রাতে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার জন্য জব্দ করা মোবাইল ফেরত দেয়া হলে ওমর ফারুক ও ইউসুফ আলী মৃধা বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। একই সঙ্গে তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে আপসের চেষ্টা চালান। কিন্তু ঘটনাস্থলে বিজিবির নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা ‘ফিল্ড সিকিউরিটি’সহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত থাকায় রফাদফা হয়নি। সারারাত তাদের বিজিবিতে আটক রাখা হয়।
সূত্র আরও জানায়, ওই ঘটনার সময় কর্মরত বিজিবির সদস্যরা বিষয়টি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তারা আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্তও নেন। কিন্তু রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের চাপে তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হন বিজিবি সদস্যরা। তবে চালক আলী আজমকে ছাড়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
ওমর ফারুক যা বললেন : রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক গতকাল বিকালে আমার দেশ-কে বলেন, আমার শ্যালক কনককে নিয়ে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে জিগাতলায় মন্ত্রীর বাসার উদ্দেশে রওনা হই। পথে জিএম ইউসুফ আলী মৃধা আমাকে ফোন করে জানান, নতুন চালু হতে যাওয়া ট্রেনের বিষয়ে পরামর্শ করতে তিনিও মন্ত্রীর বাসায় যাবেন। আমি তাকে নিয়ে যাওয়ার পথে বিজিবি গেটে পৌঁছলে আমার চালক হঠাত্ করেই গাড়িটি বিজিবি গেটে ঢুকিয়ে দেয়। সে আমাদের হুমকি দিয়ে বলে, ভালো চাইলে আপনারা গাড়ি থেকে নামেন। অন্যথায় ঘুষের টাকাসহ ধরিয়ে দেব। তখন ব্যক্তিগত টাকা নিয়ে আমি কোথায় যাব তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। এ সময় বিজিবির গেট থেকে বিজিবি সদস্যরা এসে আমাদের মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পরে আমাদের বিজিবির ৩নং গেটে নেয়া হয়। সেখানে আমি বিজিবি কর্মকর্তাদের বিষয়টি বোঝানোর পর তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একজন মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা গভীর রাতে আমাদের মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দিলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাই। তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় তার কাছে ২৫ লাখ টাকা ছিল। আমার শ্যালক গত ৬ এপ্রিল লন্ডন থেকে এসেছেন। ওই টাকার মালিক শ্যালক কনক। টাকার উত্স ও শ্যালককে কোন স্থান থেকে গাড়িতে তোলা হয়েছে, জানতে চাওয়া হলে তিনি একেক সময় একেক তথ্য দেন। এ ঘটনার জন্য গাড়িচালককে দায়ী করে ফারুক বলেন, আমার গাড়িচালক আজম বিভিন্ন সময় আমার কাছে বিভিন্ন ধরনের তদবির করত। এসব অন্যায় তদবির রক্ষা করতে না পারায় সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। আজম নেশাগ্রস্ত ছিল। আমাকে ফাঁসিয়ে দেয়ার জন্য সে এমন আচরণ করেছে। তবে রেলওয়ের সূত্র জানায়, ওমর ফারুক নিজেকে বাঁচানোর জন্য এ গল্প ফেঁদেছেন।
রেলমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন : গতকাল দুপুরে রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি বিজিবির হাতে দুই কর্মকর্তা আটক হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই টাকার মালিক এপিএস ওমর ফারুক। যদিও গতকাল সন্ধ্যায় তিনি আমার দেশ-কে বলেছেন, কিসের টাকা তা আমি জানি না। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, সোমবার গভীর রাতে টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় ওমর ফারুকের চালক তাকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় ভয়ে জীবন বাঁচাতে তিনি বিজিবি সদর দফতরের ভেতরে প্রবেশ করেন। মন্ত্রী আরও জানান, গাড়ির ভেতরে রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (পূর্বাঞ্চল) ইউসুফ আলী মৃধা ও এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ছিলেন। তবে এ মুহূর্তে তারা নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছেন। এত টাকা ওমর ফারুকের কাছে কীভাবে এলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজের টাকা নিজের সঙ্গে রাখার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়। কারণ তার টাকা তিনি কোথায় রাখবেন, নিজের সঙ্গে রাখবেন নাকি বাসায় রাখবেন, তা তার ব্যাপার। তবে কোনো অন্যায় আছে কি-না, তা তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে। যদি তার অর্থের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কিছু থাকে, তা খতিয়ে দেখবে এনবিআর। এটা আমাদের বিষয় নয়। এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি দুজনের কথা। গভীর রাতে মন্ত্রীর বাসায় তারই মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তার যাওয়া প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমার কাজ শেষ করে বাকি সময় তাদের। তারা কোথায় যায়, কী করে—এটা তাদের নিজেদের ব্যাপার। তাদের শাস্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, তাদের অপরাধ নিরূপণের আগে শাস্তি দেয়া ঠিক হবে না। রিপোর্ট পেলে স্পষ্ট হবে তারা অপরাধী কি-না। এরপরই ব্যবস্থা।
তদন্ত কমিটি গঠন : এ ঘটনায় পৃথম দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জিএম ইউসুফ আলী মৃধার বিষয়ে তদন্ত করবেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) শশী কুমার সিংহ। আর ওমর ফারুক তালুকদারের বিষয়ে তদন্ত করবেন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) আখতারুজ্জামান। দুটি কমিটিকেই ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তবে উদ্ধার হওয়া টাকা ওমর ফারুকের—মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর কমিটি গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ রেলওয়ের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, রেলমন্ত্রী এমন বক্তব্য দেয়ার পর তদন্ত কমিটি এর বাইরে কোনো কাজ করতে পারবে না।
যে কারণে বিগড়ে গেলেন চালক : জানা গেছে, গাড়ির চালক আলী আজমকে ৫০ হাজার টাকা ভাগ দেয়ার কথা ছিল; কিন্তু তারা চালককে ১০ হাজার টাকা দেন। এ নিয়ে পিএস ও চালকের মধ্যে বাগিবতণ্ডা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চালক গাড়িটি বিজিবির সামনে নিয়ে যায়।
৭০ নাকি ৪ কোটি ৭০ : আটক হওয়া গাড়ি থেকে ৭০ লাখ নাকি ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ওমর ফারুক ২৫-৩০ লাখ টাকার কথা জানিয়েছেন। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই গাড়ি থেকে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মুচলেকা দেয়ার সময় ৭০ লাখ টাকার কথা প্রকাশ করা হয়। বাকি ৪ কোটি টাকা কোথায় গেছে, তার হদিস পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন পরিস্থিতি : ইউসুফ আলী মৃধা ও ওমর ফারুক আটক হওয়ার খবর গতকাল রেলওয়ে মন্ত্রণালয় ও রেল ভবনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। কর্মকর্তাদের এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা করতে দেখা গেছে। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয় আলোচনায় স্থান পেয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ওমর ফারুকের রুম তালাবদ্ধ। আশপাশের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল তিনি অফিসে আসেননি।
ইউসুফের বিরুদ্ধে আগেও ঘুষের অভিযোগ আছে : আমাদের চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ জাহিদুল করিম কচি জানান, গত বছরের ১৭ মে জিএম বাংলোতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ইউসুফ আলী মৃধা ২ লাখ টাকা লুট হয়েছে বলে থানায় মামলা করেন; কিন্তু গত ৮ জুন ওই মামলায় আটক ডাকাত দলের সদস্য আবুল হোসেন, জনি, লিয়াকত, বেলাল, সুমন, মানিক, হাতকাটা জাফর ও মোশাররফ আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, তারা ওই বাংলো থেকে ১৩ লাখ টাকা লুট করেছেন। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাকি ১১ লাখ ঘুষের টাকা ছিল। এ কারণে রেলওয়ে মামলায় ১৩ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেননি।
বিমর্ষ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত : এপিএস ও রেল কর্মকর্তা আটকের পর থেকে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে বেশ বিমর্ষ ও মলিন দেখা যায়। সংবাদ সম্মেলনেও তার স্বভাবসুলভ অঙ্গ ও মুখভঙ্গি দেখা যায়নি। কথার ফাঁকে ফাঁকে হাসি দেয়ার চেষ্টা করলেও তা স্বল্প সময়ের মধ্যে মিলিয়ে যেতে দেখা গেছে।
বিজিবি ও রেলওয়ে চুপ : এ ঘটনায় বক্তব্য জানতে বিজিবির তথ্য কর্মকর্তা মহসিন, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী মৃধা, পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার তোফাজ্জেল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ও রেলের জিএম বিজিবির কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবাদ সম্মেলন করে জানান, এ টাকার মালিক তার এপিএস। তিনি এপিএসের গাড়িচালককে এ ঘটনার জন্য দায়ী করে বলেন, ওমর ফারুক ব্যক্তিগত টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় চালক তাকে অপহরণ করে। যে গাড়িতে চড়ে তারা মন্ত্রীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন, সেটিতে সংসদের স্টিকার সাঁটা ছিল।
রেলওয়ের বিভিন্ন সূত্র জানায়, এ টাকা নিয়ে মন্ত্রী ও তার এপিএস দু’ধরনের তথ্য দিয়েছেন। এপিএস বলেছেন, তিনি এ টাকা নিয়ে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন। জিএম মৃধা ও তার দাবি—মন্ত্রী এই টাকার ব্যাপারে জানেন। তবে মন্ত্রী বলেছেন, এ টাকা নিয়ে এপিএস তার (মন্ত্রীর) বাসায় যাচ্ছিলেন না। তিনি টাকার ব্যাপারে কিছু জানেন না। দু’ধরনের বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে রহস্যের ধূম্রজাল। টিভি ও অন্যান্য মিডিয়ার খবরে জানা যায়, ড্রাইভারও জানতো সে ঘুষের টাকা বহন করছে। সে এই অবৈধ টাকা বহনে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে মন্ত্রীর এপিএসের সঙ্গে তার বাদানুবাদ হয়। বিভিন্ন সূত্র জানায়, রেলওয়ের নিয়োগ-বাণিজ্যে মন্ত্রীর ভাগের একটি অংশ প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা তার জিগাতলার বাসায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তারা। রেলওয়ের বিভিন্ন পদে প্রায় সাড়ে সাত হাজার লোক নিয়োগ চলছে।
এদিকে ওয়াকিবহাল সূত্রে জানা যায়, উেকাচের টাকার এই মহাকেলেঙ্কারির ঘটনায় বলির পাঁঠা হতে চলেছেন গাড়ির ড্রাইভার। কেন ঘুষের কথা বিজিবি সদস্যদের কাছে ফাঁস করলেন—এজন্য সবার এখন চক্ষুশূল। নির্দোষ এ ব্যক্তিকে ফাঁসিয়ে দিতে এখন নানা গল্প ফাঁদা হচ্ছে।
জানা যায়, রেলওয়েতে ওয়েম্যান, নাম্বার টিকার, খালাসি, জুনিয়র অডিটরসহ বিভিন্ন পদে সাড়ে ৭ হাজার লোক নিয়োগ চলছে। এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে শুরু হয় ব্যাপক নিয়োগ-বাণিজ্য। চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে এক থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয়া হয়। এ ঘুষের টাকা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বণ্টন চলছিল। ওই ঘুষের টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী মৃধা ও পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার তোফাজ্জেল হোসেন। পূর্বাঞ্চলের ঘুষের টাকারই একটি অংশ নিয়ে তারা মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন।
সূত্র জানায়, এপিএসের গাড়িতে চড়ে মন্ত্রীর বাসায় যাচ্ছিলেন ইউসুফ আলী মৃধা। গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বহনকারী গাড়িটি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় দিয়ে জিগাতলা যাচ্ছিল। বিজিবির ৪ নম্বর গেটের সামনে গিয়ে চালক আলী আজম অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন। এ সময় বিজিবি গেটে পাহারারত বিজিবি (সেনা) সদস্যরা এগিয়ে এলে ওমর ফারুক নিজেকে রেলমন্ত্রীর এপিএস পরিচয় দেন। চালক ও এপিএস অসংলগ্ন কথা বলায় তাদের গাড়ি তল্লাশি চালানোর কথা জানায় বিজিবি সদস্যরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বিজিবি সদস্যদের দেখে নেবেন বলে হুশিয়ার করেন। এ সময় বিজিবি সদস্যরা তল্লাশি চালিয়ে গাড়িতে থাকা বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করেন। তাদের মোবাইল জব্দ করে গাড়ির ভেতরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়। রাত ১২টার দিকে গাড়িসহ তাদের বিজিবির সদর গেটে (৩ নম্বর) নেয়া হয়। ওই গেটে দায়িত্ব পালনকারী বিজিবি (সেনা) সদস্যরা অস্ত্র তাক করে গাড়িটি ঘিরে ফেলে বিজিবির ভেতরে নিয়ে যায়। ওমর ফারুক ও ইউসুফ আলীকে সদর দফতরের মূল গেটেই আটক রাখা হয়। গভীর রাতে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার জন্য জব্দ করা মোবাইল ফেরত দেয়া হলে ওমর ফারুক ও ইউসুফ আলী মৃধা বিষয়টি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। একই সঙ্গে তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে আপসের চেষ্টা চালান। কিন্তু ঘটনাস্থলে বিজিবির নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা ‘ফিল্ড সিকিউরিটি’সহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত থাকায় রফাদফা হয়নি। সারারাত তাদের বিজিবিতে আটক রাখা হয়।
সূত্র আরও জানায়, ওই ঘটনার সময় কর্মরত বিজিবির সদস্যরা বিষয়টি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তারা আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্তও নেন। কিন্তু রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের চাপে তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হন বিজিবি সদস্যরা। তবে চালক আলী আজমকে ছাড়া হয়নি। তার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
ওমর ফারুক যা বললেন : রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক গতকাল বিকালে আমার দেশ-কে বলেন, আমার শ্যালক কনককে নিয়ে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে জিগাতলায় মন্ত্রীর বাসার উদ্দেশে রওনা হই। পথে জিএম ইউসুফ আলী মৃধা আমাকে ফোন করে জানান, নতুন চালু হতে যাওয়া ট্রেনের বিষয়ে পরামর্শ করতে তিনিও মন্ত্রীর বাসায় যাবেন। আমি তাকে নিয়ে যাওয়ার পথে বিজিবি গেটে পৌঁছলে আমার চালক হঠাত্ করেই গাড়িটি বিজিবি গেটে ঢুকিয়ে দেয়। সে আমাদের হুমকি দিয়ে বলে, ভালো চাইলে আপনারা গাড়ি থেকে নামেন। অন্যথায় ঘুষের টাকাসহ ধরিয়ে দেব। তখন ব্যক্তিগত টাকা নিয়ে আমি কোথায় যাব তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। এ সময় বিজিবির গেট থেকে বিজিবি সদস্যরা এসে আমাদের মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পরে আমাদের বিজিবির ৩নং গেটে নেয়া হয়। সেখানে আমি বিজিবি কর্মকর্তাদের বিষয়টি বোঝানোর পর তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একজন মেজর পদমর্যাদার কর্মকর্তা গভীর রাতে আমাদের মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দিলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাই। তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় তার কাছে ২৫ লাখ টাকা ছিল। আমার শ্যালক গত ৬ এপ্রিল লন্ডন থেকে এসেছেন। ওই টাকার মালিক শ্যালক কনক। টাকার উত্স ও শ্যালককে কোন স্থান থেকে গাড়িতে তোলা হয়েছে, জানতে চাওয়া হলে তিনি একেক সময় একেক তথ্য দেন। এ ঘটনার জন্য গাড়িচালককে দায়ী করে ফারুক বলেন, আমার গাড়িচালক আজম বিভিন্ন সময় আমার কাছে বিভিন্ন ধরনের তদবির করত। এসব অন্যায় তদবির রক্ষা করতে না পারায় সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। আজম নেশাগ্রস্ত ছিল। আমাকে ফাঁসিয়ে দেয়ার জন্য সে এমন আচরণ করেছে। তবে রেলওয়ের সূত্র জানায়, ওমর ফারুক নিজেকে বাঁচানোর জন্য এ গল্প ফেঁদেছেন।
রেলমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন : গতকাল দুপুরে রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি বিজিবির হাতে দুই কর্মকর্তা আটক হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওই টাকার মালিক এপিএস ওমর ফারুক। যদিও গতকাল সন্ধ্যায় তিনি আমার দেশ-কে বলেছেন, কিসের টাকা তা আমি জানি না। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, সোমবার গভীর রাতে টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় ওমর ফারুকের চালক তাকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় ভয়ে জীবন বাঁচাতে তিনি বিজিবি সদর দফতরের ভেতরে প্রবেশ করেন। মন্ত্রী আরও জানান, গাড়ির ভেতরে রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (পূর্বাঞ্চল) ইউসুফ আলী মৃধা ও এপিএস ওমর ফারুক তালুকদার ছিলেন। তবে এ মুহূর্তে তারা নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেছেন। এত টাকা ওমর ফারুকের কাছে কীভাবে এলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজের টাকা নিজের সঙ্গে রাখার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়। কারণ তার টাকা তিনি কোথায় রাখবেন, নিজের সঙ্গে রাখবেন নাকি বাসায় রাখবেন, তা তার ব্যাপার। তবে কোনো অন্যায় আছে কি-না, তা তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে। যদি তার অর্থের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কিছু থাকে, তা খতিয়ে দেখবে এনবিআর। এটা আমাদের বিষয় নয়। এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি দুজনের কথা। গভীর রাতে মন্ত্রীর বাসায় তারই মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তার যাওয়া প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমার কাজ শেষ করে বাকি সময় তাদের। তারা কোথায় যায়, কী করে—এটা তাদের নিজেদের ব্যাপার। তাদের শাস্তি সম্পর্কে তিনি বলেন, তাদের অপরাধ নিরূপণের আগে শাস্তি দেয়া ঠিক হবে না। রিপোর্ট পেলে স্পষ্ট হবে তারা অপরাধী কি-না। এরপরই ব্যবস্থা।
তদন্ত কমিটি গঠন : এ ঘটনায় পৃথম দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জিএম ইউসুফ আলী মৃধার বিষয়ে তদন্ত করবেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) শশী কুমার সিংহ। আর ওমর ফারুক তালুকদারের বিষয়ে তদন্ত করবেন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) আখতারুজ্জামান। দুটি কমিটিকেই ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তবে উদ্ধার হওয়া টাকা ওমর ফারুকের—মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর কমিটি গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ রেলওয়ের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, রেলমন্ত্রী এমন বক্তব্য দেয়ার পর তদন্ত কমিটি এর বাইরে কোনো কাজ করতে পারবে না।
যে কারণে বিগড়ে গেলেন চালক : জানা গেছে, গাড়ির চালক আলী আজমকে ৫০ হাজার টাকা ভাগ দেয়ার কথা ছিল; কিন্তু তারা চালককে ১০ হাজার টাকা দেন। এ নিয়ে পিএস ও চালকের মধ্যে বাগিবতণ্ডা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চালক গাড়িটি বিজিবির সামনে নিয়ে যায়।
৭০ নাকি ৪ কোটি ৭০ : আটক হওয়া গাড়ি থেকে ৭০ লাখ নাকি ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ওমর ফারুক ২৫-৩০ লাখ টাকার কথা জানিয়েছেন। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই গাড়ি থেকে ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মুচলেকা দেয়ার সময় ৭০ লাখ টাকার কথা প্রকাশ করা হয়। বাকি ৪ কোটি টাকা কোথায় গেছে, তার হদিস পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন পরিস্থিতি : ইউসুফ আলী মৃধা ও ওমর ফারুক আটক হওয়ার খবর গতকাল রেলওয়ে মন্ত্রণালয় ও রেল ভবনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। কর্মকর্তাদের এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা করতে দেখা গেছে। মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয় আলোচনায় স্থান পেয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ওমর ফারুকের রুম তালাবদ্ধ। আশপাশের কর্মকর্তারা জানান, গতকাল তিনি অফিসে আসেননি।
ইউসুফের বিরুদ্ধে আগেও ঘুষের অভিযোগ আছে : আমাদের চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ জাহিদুল করিম কচি জানান, গত বছরের ১৭ মে জিএম বাংলোতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ইউসুফ আলী মৃধা ২ লাখ টাকা লুট হয়েছে বলে থানায় মামলা করেন; কিন্তু গত ৮ জুন ওই মামলায় আটক ডাকাত দলের সদস্য আবুল হোসেন, জনি, লিয়াকত, বেলাল, সুমন, মানিক, হাতকাটা জাফর ও মোশাররফ আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, তারা ওই বাংলো থেকে ১৩ লাখ টাকা লুট করেছেন। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাকি ১১ লাখ ঘুষের টাকা ছিল। এ কারণে রেলওয়ে মামলায় ১৩ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করেননি।
বিমর্ষ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত : এপিএস ও রেল কর্মকর্তা আটকের পর থেকে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে বেশ বিমর্ষ ও মলিন দেখা যায়। সংবাদ সম্মেলনেও তার স্বভাবসুলভ অঙ্গ ও মুখভঙ্গি দেখা যায়নি। কথার ফাঁকে ফাঁকে হাসি দেয়ার চেষ্টা করলেও তা স্বল্প সময়ের মধ্যে মিলিয়ে যেতে দেখা গেছে।
বিজিবি ও রেলওয়ে চুপ : এ ঘটনায় বক্তব্য জানতে বিজিবির তথ্য কর্মকর্তা মহসিন, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী মৃধা, পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার তোফাজ্জেল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন