বিরোধী দলবিহীন ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর দেশের রাজনীতিতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে শাসকদলের গলাবাজি ও ছাত্রলীগের পিস্তলবাজির দৌরাত্ম্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের সামনে ও পুলিশের প্রশ্রয়ে যেভাবে পিস্তলে গুলী ভরেছে এবং গুলী করেছে তাতে সরকারের মাথা হেঁট না হলেও জাতির মাথা হেঁট হয়েছে। জনমনে প্রশ্ন জেগেছে, এরা কি রাষ্ট্রের পুলিশ নাকি শাসকদলের পুলিশ? বর্তমান সময়ে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর যে দমন-পীড়ন ও নির্মম অভিযান চালানো হচ্ছে, সেখানে তো লক্ষ্য করা যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভিন্নরূপ। যৌথবাহিনী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুলী করে হত্যা করার ব্যাপারে বেশ নির্বিকার। তাদের অভিযানের সময় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ার নিষ্ঠুর চিত্রও লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু এমন কঠোর বাহিনীর সদস্যরা ছাত্রলীগের পিস্তলবাজির সময় এতটা অসহায় হয়ে পড়ে কি করে? রাষ্ট্রের কোনো বাহিনী দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের বদলে যদি এভাবে সরকারি দলের আজ্ঞাবহ বাহিনীতে পরিণত হয়ে যায়, তখন জনগণ নিজেদের নিরাপদ ভাববে কেমন করে?
‘অস্ত্রধারীদের আসামী করা হয়নি’ শিরোনামে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রথম আলোর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের করা চার মামলার কোনটিতেই ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী কোনো নেতাকে আসামী করা হয়নি। আসামী করা হয়েছে আন্দোলনকারী প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতা ও শিক্ষার্থী এবং ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের”। এমন আচরণ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের মনোভাব উপলব্ধি করা যায়। ভাবতে অবাক লাগে, প্রশাসন সাড়ে নয়শজনকে আসামী করলো, অথচ এদের মধ্যে নেই ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারদের একজনের নামও। এই যদি হয় সরকার এবং প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি তাহলে দেশে সুশাসন কিংবা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে কেমন করে?
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ ফেব্রুয়ারির ঘটনা নিয়ে সংসদে বক্তব্য রেখেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বর্ধিত ফি বাতিল হওয়ায় ছাত্রলীগ বিজয় মিছিল করছিল। সেখানে হামলা হয়েছে। ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করেছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘আমাদের ছেলেদের কি জীবন বাঁচাবার অধিকার নেই? তবুও সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। সন্ত্রাসীদের বরদাশত করা হবে না। তবে আত্মরক্ষার অধিকার সবার আছে।’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে যে বার্তা আছে তা উপলব্ধি করা কঠিন নয়। এমন বার্তায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকা- কি থামবে? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় রাজনীতিবিদরা নীরব থাকেননি। এ বিষয়ে অনেকেই কথা বলছেন। যেমন জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী তা-বকে রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে জঙ্গিবাদের অশুভ উত্থান বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরো বলেন, নিজেদের পাপ চাপা দিতে আওয়ামী বরকান্দাজরা সর্বত্রই জঙ্গি, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা আবিষ্কার করেন। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পিস্তল হাতে আপনার সোনার ছেলেরাই জানান দিয়েছে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কারা। মনে রাখবেন, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। তিনি অবিলম্বে বন্দুকবাজ সোনার ছেলেদের গ্রেফতার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাপাতিলীগের জঙ্গি কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
আমরা সবাই একথা স্বীকার করি যে, শিক্ষাই জাতির মেরুদ-। কিন্তু আমাদের মেরুদ-ের আজ এমন অবস্থা কেন? সরকার যদি তার শপথের মর্যাদা রক্ষা করে অনুরাগ ও বিরাগের বশবর্তী না হয়ে দেশ শাসন করতো, আইনের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতো তাহলে ছাত্রলীগ আজ এমন জঙ্গি ও সন্ত্রাসী রূপে আবির্ভূত হতে পারতো না। ছাত্রলীগের এমন ভ্রষ্টতাকে আমরা শুধু শাসকদলের ভাবমর্যাদার জন্য ক্ষতিকর বলে বিবেচনা করছি না, এটা জাতির জন্যও এক বড় ক্ষতির কারণ। ছাত্রদের বিষয়গুলোকে আমাদের জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করতে হবে। এর পরিবর্তে দলীয় ক্ষুদ্র স্বার্থে ছাত্রদের ব্যবহার করলে তার ফল কি হতে পারে বর্তমান ছাত্রলীগ তার বড় উদাহরণ। ছাত্রলীগ তো উন্মত্ততার বর্তমান রূপে একদিনে উপনীত হয়নি। এ পর্যায়ে পৌঁছতে বহুদিন সময় লেগেছে সংগঠনটির। এখন তো মদের বার দখলে নিয়েও উন্মত্ততা দেখাচ্ছে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। গত ৩১ জানুয়ারি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়: গত বুধববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শাহবাগের পিকক বারে মদ খেতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এস এম হলের ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান। নিয়মানুযায়ী রাত সাড়ে ১০টায় বার বন্ধ হয়ে যায়। মেহেদী হাসান মদ চাইলে কর্মচারীরা তা দিতে অস্বীকার করে। মদ না পেয়ে সে কর্মচারীদের এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। পরে কর্মচারীরা একজোট হয়ে ছাত্রলীগের ওই নেতাকে উত্তম মধ্যম দেয়। মার খেয়ে মেহেদী ফোন করে নিজামুল হক বিদারকে। পরে দিদার কয়েকশ’ নেতা-কর্মী নিয়ে শাহবাগে গেলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকরাউন্ড গুলীবর্ষণও হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। তাদের রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সংঘর্ষের সময় পিকক বারের ক্যাশ থেকে ২ লাখ টাকা লুটের পাশাপাশি আসবাবও ভাংচুর করা হয়।
আলোচ্য ঘটনায় যে চিত্র লক্ষ্য করা গেল তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে যায় না। এরা আবার সাধারণ ছাত্র নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। নেতাদের তো আদর্শ মানতে হয়, অন্যদের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে হয়। কিন্তু এ কেমন উদাহরণ? নারীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা, মদ খেতে গিয়ে সন্ত্রাস করা কি ছাত্রনেতাদের কাজ হতে পারে? আরও অবাক ব্যাপার হলো দু’চারজন নয়, মদের বার দখলে নিয়ে উন্মত্ততা সৃষ্টির আহ্বানে সাড়া দিতে এক ডাকেই জড়ো হয়ে গেল কয়েকশ’ নেতা-কর্মী! কোন্্ কাজে তারা সংঘবদ্ধ হলো, সে ব্যাপারে তাদের মনে কোনো প্রশ্নেরই সৃষ্টি হলো না! এই যদি হয় সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অবস্থা, তা হলে দেশের জনগণ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে কোন ভরসায়?
ছাত্রলীগের নেতাদের কি এখন আর লেখাপড়া করতে হয় না? লেখাপড়ার বালাই থাকলে রাত সাড়ে ১২টায় তারা মদ খেতে বারে যায় কেমন করে? আর এসব বারে মদ খেতে যে বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন হয় তা তারা পায় কোত্থেকে। আমরা তো জানি যে, ছাত্রদের অর্থ সংকট থাকে। অভিভাবক যদি ধনীও হন, তবু তারা টাকা পাঠান হিসেব করেই। অভিভাবক দরিদ্র হলে তো ছাত্রদের টিউশনি করেই লেখাপড়ার খরচ চালাতে হয়। আর এ বিষয়টিও স্পষ্ট যে, অভিভাবকের হিসেবের টাকায় কিংবা টিউশনির টাকায় মদের খরচ জোগানো সম্ভব নয়। তা হলে মদের টাকার ব্যবস্থা হয় কেমন করে? আজকাল ছাত্রনেতাদের নাকি গাড়ি-বাড়িরও ব্যবস্থা হয়ে যায়! এ সবের খবর কি সরকার কিংবা সরকারি দলের নেতা-নেত্রীরা রাখেন না? ছাত্র নেতাদের উপার্জনের একটি রাস্তা হলো চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি। এ সবের বাইরে তাদের আয়-রোজগারের আর কি কি পথ আছে তা সরকারি দলের নেতা-নেত্রীদের বেশ ভালই জানা আছে। তারপরও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের আত্মবিনাশের এই পথ থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে না কেন? ভোটের ও সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিজয়ী হওয়ার জন্য এদের এমন অপব্যবহার ছাড়া আর কি কোনো বিকল্প নেই? ছাত্রশক্তিকে এভাবে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়া যায় না। সরকারি দল আসলেই যদি গণতন্ত্রে এবং জাতির কল্যাণে বিশ্বাস রাখে, তা হলে তাদের অবশ্যই রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের এই পথ থেকে সরে আসতে হবে। তা হলেই ছাত্রসমাজের সাথে সাথে জাতিও আসন্ন বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে পারে।
ছাত্র রাজনীতির যে অধঃপতন ঘটেছে, তা আমাদের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের একটি উদাহরণ মাত্র। দেশ ও জনগণকে ভালবেসে গণতান্ত্রিক সহিষ্ণুতায় আদর্শের ও রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ না হলে আমাদের রাজনীতিকে দুর্বৃত্তায়নমুক্ত করা সম্ভব হবে না। আমাদের সরকার ও রাজনীতিবিদরা বিষয়টির গভীরতা উপলব্ধি না করলে দেশের ছাত্ররাজনীতি বিশেষ করে ক্ষমতাসীনদের ছাত্ররাজনীতি অন্ধকারের গলি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন আমাদের গণতন্ত্রকে প্রাণহীন ও বিবর্ণ করে দিয়েছে। জাতি আশা করেছিল ভোটারবিহীন এই নির্বাচনে তথাকথিত বিজয় লাভের পর শাসকদল গণপ্রত্যাখ্যানের বিষয়টি উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে এবং সহসাই সবার অংশগ্রহণভিত্তিক একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে অগ্রসর হবে। কিন্তু বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তেমন কা-জ্ঞানের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়নি। বরং এ সরকারের মন্ত্রিবাহাদুররা আগামী ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার আকাঙ্খা প্রকাশ করেছেন এবং কেউ কেউ তো অহঙ্কার প্রকাশ করে একথাও বলেছেন যে, ৫ বছরের আগে নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো প্রশ্নই আসে না। সরকার এতটুকুতেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং এখন যৌথবাহিনীর মাধ্যমে সারাদেশে চালানো হচ্ছে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের অভিযান। এমন প্রেক্ষাপটে গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে এখন হত্যা, গুম ও বিরোধীদল নির্মূলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা দেশকে পাইকারি হত্যাকা-ের এক আতঙ্কিত জনপদে পরিণত করেছে। জাতির কাঁধে চেপে বসেছে প্রায় একদলীয় ও একব্যক্তির স্বৈরশাসন। তিনি এ সময় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সব মানবাধিকার সংস্থাকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমের রেফারেন্স দিয়ে হত্যা ও গুমের বিশদ চিত্র তুলে ধরে বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে একমাসে বিরোধী জোটের তিনশ’ নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে। এভাবে নির্বিচারে হত্যা ও গুম একটি সভ্য সমাজে চলতে পারে না। বিএনপি চেয়ারপার্সন হুঁশিয়ার করে আরো বলেন, দ্রুত নির্বাচন না দিলে আমরা অনির্দিষ্টকাল ধরে শুধু সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানিয়েই যাব, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। তাই সময় থাকতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আবারো সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নইলে অচিরেই নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। আজকের সভ্য পৃথিবীতে দু’একটি সার্টিফিকেট জোগাড় করে অন্যায় ও অবৈধ শাসনকে প্রলম্বিত করা সম্ভব নয়। বিরোধী জোট নেত্রীর এমন বক্তব্য থেকে উপলব্ধি করা যায় যে, সরকারের বর্তমান বেপরোয়া ও অহঙ্কারী আচরণের বিপরীতে তারা দীর্ঘ সময় নীরব থাকবেন না। এমন অবস্থায় জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজন সরকারের যৌক্তিক ও গণতান্ত্রিক আচরণ। এর পরিবর্তে যদি ছাত্র লীগের পিস্তলবাজি চলতে থাকে এবং সরকারও যৌথবাহিনীর দমন অভিযানের মাধ্যমে বিরোধী জোটকে বিপর্যস্ত করতে চায়, তাহলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে হয়তো দেখা দেবে প্রলয়। প্রলয় তো আমাদের কাম্য নয়। সৃষ্টিসুখের উল্লাসে এ জাতি প্রাণবন্ত থাকতে চায়। কিন্তু তেমন প্রাণবন্ত রাজনীতি উপহার দিতে আমাদের সরকার ও রাজনীতিবিদরা সক্ষম হবেন কী?
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন