বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
‘ক্রসফায়ার’ ও সরকার
Posted on ৩:৪৭ PM by Abul Bashar Manik
প্রচলিত আইনানুসারে গ্রেফতারকৃত
ব্যক্তি পুলিশের হেফাজতে থাকবেন এবং গ্রেফতারের অনূর্ধ্ব ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে নিকটস্থ
আদালতে হাজির করতে হবে। পরে আদালতের অনুমতিক্রমে প্রয়োজনে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে
পারে। অথচ কথিত ‘ক্রসফায়ার’ ঘটনায় দেখা যায়, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে কয়েক দিন
অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়ে থাকে। তার পর আদালতে হাজির না করেই কিংবা বিচারের সুযোগ না
দিয়েই তার মৃত্যুর পথ সুগম করা হয়। অধিকন্তু ক্রসফায়ারের অজুহাতে হত্যার দায় নিহত ব্যক্তির
স্বজন-সহকর্মীদের ওপর পড়ে! এ অবস্থায় দেশের মানুষ উৎকণ্ঠিত ও সন্ত্রস্ত।
প্রকৃতপক্ষে ‘ক্রসফায়ার’ বিচারবহির্ভূত পরিকল্পিত হত্যা। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনী যে ভাষায় হুবহু একই ছকে বিবরণ দিচ্ছে, তা জনগণ বিশ্বাস করতে পারছে না। সরকার এসব হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে পারে না।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ক্রসফায়ারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরকার
অনুগত মানবাধিকার কমিশন এ নিয়ে মাথা ঘামায় না। আর আমাদের দেশের দলীয় বুদ্ধিজীবীরা এ
বিষয়ে মুখ খোলেন না। তারা সত্য কথা বলে বিরাগভাজন হতে চান না। ক্ষমতার আশীর্বাদ লাভের
সুযোগ তারা হাতছাড়া করতে চান না। এসব কারণে তারা গণতান্ত্রিক অধিকার হরতালের বিরোধিতা
করলেও ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে পারেন না। কথিত ক্রসফায়ারে
নিহত নেতাকর্মীদের আত্মীয়স্বজনের বুকফাটা কান্না ও করুণ আহাজারিতে বাতাস ভারী হলেও
তাদের কানে পৌঁছে না। ৫ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য
ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ক্রসফায়ারের হত্যাকাণ্ড অস্বীকার করেছেন। তিনি বাংলাদেশে
কোনো সন্ত্রাসীও ক্রসফায়ারে নিহত হয়নি বলে দাবি করেছেন! তবে আওয়ামী লীগের একান্ত সমর্থক
প্রবাসী লেখিকা মাসুদা ভাট্টি সরকার নির্দেশিত কথিত ‘ক্রসফায়ার’ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে
লিখেছেন, ‘...অবিলম্বে এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে
হবে এবং আইনের শাসনকে তার নিজস্ব স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’ (দৈনিক জনকণ্ঠ, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। বিক্ষুব্ধ দেশবাসীও এ দাবি
ও প্রত্যাশা করে।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন