গ্রামবাংলায় অনেক প্রবাদ আছে, যেগুলোর যথার্থতা মোটামুটি সর্বজনগ্রাহ্য। যেমন ‘এক লাকড়ি চুলায় জ্বলে না’ এটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ। এর
সারমর্ম সরল একটি লাকড়ি, তা যতই বড়ই হোক তা দিয়ে চুলায় ভালো আগুন জ্বালানো
যায় না। এই লাকড়ির সাথে ছোট-বড় আরো কিছু লাকড়ি ব্যবহার করতে হয়। তবেই চুলায় ভালো আগুন
হয়, ভালো রান্না হয়। আর এক লাকড়ি দিয়ে আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন, চুলা ভালোভাবে জ্বালানো যায় না, ভালো রান্না করাও সম্ভব হয় নয়।
এই সরল সত্য আমাদের সরকারি দলের নেতানেত্রীরা, এমনকি কর্মী-সমর্থকেরাও স্বীকার
করতে চান না, উপলব্ধিতে রাখতে চান না। ফলে সত্য ও বাস্তবতা উপেক্ষিত হয়। আর
সে পথ ধরেই আসে সত্য ও বাস্তবতা উপেক্ষাজনিত যাবতীয় বিপদ। আমাদের জাতীয় জীবনে আমরা
কার্যত আজ সেই বিপদেরই মুখে। অনাকাক্সিত নানা সঙ্কট সর্বক্ষণ আমাদের তাড়া করে ফেরে!
এ কথা বলছি এ জন্য যে, আমাদের বর্তমান সরকারি দল আওয়ামী লীগ মনে করে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যেটি বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী
আর বাকিরা স্বাধীনতাবিরোধী। উল্লিখিত প্রবাদে যদি বিশ্বাসী হতো তবে এই দলের নেতানেত্রীদের
মুখে এমন কথা শোনা যেত না যে, যারা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তারাই দেশের
স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। বাকিরা স্বাধীনতাবিরোধী। তাদের কথাকে সত্যি বলে ধরে নিলে বলতে
হয় বাংলাদেশে ৪০টির মতো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে ২৮ দল এ
নির্বাচনে অংশ নেয়নি, সেগুলো কি স্বাধীনতাবিরোধী? এর বিতর্কহীন জবাব না। অথচ আমাদের সরকারি দলের নেতারা তেমনটিই উপলব্ধিতে
রেখে একলা চলো নীতি নিয়ে দেশ পরিচালনায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাদের ভাব-ধারণা দেখলে মনে
হয়, বাংলাদেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কারো অংশ নেয়ার কোনো সুযোগ
নেই। আবারো বলতে হয়, এরা এক লাকড়ি দিয়ে রান্নাবান্না সম্পন্ন করার নীতিকেই
ধারণ করে চলেছেন, অপরের সব মত-পথকে অস্বীকার করে। ফলে দেশে সঙ্ঘাত-সংঘর্ষের পথই
শুধু প্রশস্ত হচ্ছে। বাড়ছে অস্থিতিশীলতা আর মানবিক দুর্ভোগ, যা সব মহলের শান্তি-স্বস্তিকে করছে অপহরণ।
আওয়ামী
লীগ সরকার আরেকটি বহুল প্রচলিত প্রবাদকে অস্বীকার করে চলেছে বরাবর। সুপরিচিত একটি প্রবাদ হচ্ছে ‘একতাই বল’; কিন্তু আমাদের সরকারি দলের নেতাকর্মীরা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মনে হয় এর
বিপরীতে দাঁড়িয়ে প্রমাণ করতে চাইছেন ‘বিভাজনই বল’। যে জন্য এ সরকারের আমলে জাতি আজ চরমভাবে বিভাজিত। ‘ঐক্যবদ্ধ জাতি’ যেন এখানে অসম্ভব এক বিষয়। এ ধরনের বিভাজন তখনই
চরমে পৌঁছে, যখন ভিন্নমত গ্রহণ করার প্রবণতা একটি দেশের সরকারের মাথা থেকে
একেবারেই উঠে যায়। যখন বিরোধীমত দলনের প্রবণতা সরকারের মধ্যে প্রবল হয়ে দেখা দেয়। আমাদের
দেশেও কার্যত তেমনটি ঘটে চলেছে। এখানে ভিন্নমত দমনপ্রক্রিয়া চলছে নানাভাবে। এর মধ্যে
দু’টি প্রধান প্রবণতা হচ্ছে এক. গণমাধ্যম দমন এবং দুই. বিরোধী
দল দমন। বলার অপেক্ষা রাখে নাÑ এ দুটো প্রবণতাই প্রবলভাবে বাসা বেঁধেছে সরকারের
নীতিনির্ধারকদের মধ্যে। ফলে আমরা দেখি, বিরোধী মতাবলম্বী টিভি চ্যানেল
ও পত্রপত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে যখন-তখন। আছে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়টিও।
অপর দিকে বিরোধী দলের ওপর দলন-মথন এ সরকারের আগের পাঁচ বছরের মেয়াদে এবং ৫ জানুয়ারির
বিতর্কিত নির্বাচন সূত্রে পাওয়া সরকারের আমলে কিভাবে কী প্রক্রিয়ায় চলেছে এবং চলছে, তা গণমাধ্যমের কল্যাণে এ দেশের মানুষ ছিটেফোঁটা হলেও পাচ্ছেন। এবার বিরোধী
মত ও পথকে অ্যাকোমডেট না করার প্রবণতার মাধ্যমে জাতিকে আজ চরমভাবে বিভাজিত করে তোলা
হচ্ছে। অস্বীকার করা হচ্ছে ‘একতাই বল’ নামের বহুল প্রচারিত প্রবাদকে।
ব্যর্থ চেষ্টা করা হচ্ছে ‘বিভাজনই বল’ নামের নতুন কিছুকে প্রতিষ্ঠা
করার; কিন্তু তা যে হওয়ার নয়, সে উপলব্ধি কোথায়?
বিভাজনপ্রক্রিয়া
চলমান নানাভাবে। আজ যেখানেই যাবেন সেখানেই চরম বিভাজন। প্রশাসনে বিভাজন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে বিভাজন, আদালতপাড়ায় বিভাজন, শিক্ষকসমাজে বিভাজন, ছাত্রসমাজে বিভাজন। এসব বিভাজন শুধু মতের বিভাজন
হলে দোষের কিছু ছিল না; কিন্তু এ বিভাজন বিরোধীপক্ষকে সহ্য করতে না পারার
বিভাজন। অতএব পদপদবি ও পদোন্নতি পাওয়ার অধিকার শুধু সরকার সমর্থকদের। সরকারবিরোধীদের
অধিকার শুধু ওএসডি হওয়ার, নয়তো বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের
হলগুলোতে থাকার অধিকার শুধু সরকার সমর্থক ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের। অন্যদের জন্য
রয়েছে হল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার অধিকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের দলবাজ ভিসি-প্রভোস্টদের সামনেই
ঘটছে এ ধরনের বহিষ্কার। ক’দিন আগে গণহারে এ ধরনের বহিষ্কারের ঘটনাও পত্রপত্রিকায়
ছাপা হতে দেখা গেছে।
এই সময়ে
যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনপীড়নের ব্যাপক অভিযোগে অভিযুক্ত
সরকার। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের আগের রাত থেকে দেশজুড়ে ৩১৫টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নামে-বেনামে আসামি করা হয়েছে ৬৩ হাজারেরও বেশি লোককে। এই আসামিদের
ধরতে এখন চলছে যৌথবাহিনীর অভিযান। এই অভিযানে পুলিশের হিসাব মতে, জানুয়ারির ১০ দিনেই গ্রেফতার হয়েছে ২২ হাজারেরও বেশি লোক। নির্বাচনের পর ২৭
জানুয়ারি পর্যন্ত কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৩ জন নিহত হয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য মতে, ১৩ জনের মধ্যে ৯ জনই যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়।
আর চারজনের লাশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে এ সময়ে ১৮৭ নেতাকর্মীকে
গুম করার অভিযোগ করা হয়। (প্রথম আলো, ২৭ জানুয়ারি ২০১৪)।
অপর দিকে
প্রথম আলো ১১ ফেব্রুয়ারি এর শীর্ষ সংবাদে জানায়, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড
বন্ধ হচ্ছে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নিখোঁজের ঘটনা বাড়ছে।
নতুন বছরের শুরুতেই ৪১ দিনে ৪৪ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম হত্যার শিকার হয়েছেন।
এই হিসাব মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশকেন্দ্রের। সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আগের যেকোনো সময়ের রেকর্ড
ছাড়িয়ে যাবে। এর আগে বিএনপি আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল
আওয়ামী লীগ। ২০০৮-এ সংসদ নির্বাচনে দলীয় ইশতেহারে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এ দলটি; কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের
এ ব্যাপারে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। ২০১৩ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৫০৭ জন নিহত ও সাড়ে
২২ হাজার আহত হয়। এখন প্রতিদিন গড়ে একটি করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে।
নির্বাচনপরবর্তী
সময়ে সরকার বিরোধী দলের সদস্যদের ওপর অমানবিক দমনপীড়ন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের
অভিযোগ বারবার করছে বিএনপি। শুধু তাই নয়, নির্বাচনপরবর্তী দমন অভিযানে
বিরোধী দলের সদস্যদের বিচারবহির্ভূত হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। গত ২৭ জানুয়ারি সংস্থাটি এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে
এসব বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ব্র্যান্ড অ্যাডামস এ ধরনের ক্রসফায়ারকে আতঙ্কজনক
হিসেবে অভিহিত করেন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সাম্প্রতিক সময়ে নিরাপত্তাবাহিনীর বিপুলসংখ্যক
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের জন্য সরকারের
প্রতি আহ্বান জানান; কিন্তু আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সে ধরনের কোনো
সাড়া নেই; বরং সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, বাংলাদেশে কোনো ধরনের বিচারবহির্ভূত
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে না। অথচ দেশে-বিদেশে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক
প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলেছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড
আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দেশজুড়ে বিরোধী
দলের এমনকি তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের মধ্যেও খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার
গ্রুপগুলো আশঙ্কা করছে, সরকার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে কঠোর পদক্ষেপ
না নিলে আগামী মাসগুলোতে অবস্থার আরো অবনতি ঘটবে।
আসলে সরকারের
সব কিছুতেই ড্যামকেয়ার মনোভাব এবং জনমতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন
এবং তৎপরবর্তী সময়ে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ছিন্নভিন্ন জাতীয় পার্টিকে সরকারে ও বিরোধী
দলে বসিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন, তারও পরবর্তী সময়ে সরকারের বিরোধী
দল তথা ১৯ দলীয় জোটের ওপর দমনপীড়ন কার্যত দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ক্রমেই অবনতির
দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের ভেতরে ও বাইরে সবাই এমন অভিমতই প্রকাশ করে আসছেন। আর এ অবস্থা
থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে যথাসম্ভব দ্রুত সব দলের অংশগ্রহণে একটি জাতীয় সংসদ
নির্বাচন। সম্প্রতি ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের এক জনমত জরিপ মতে, দেশের ৭২ শতাংশ মানুষ মনে করে, বর্তমান সরকারের মেয়াদপূর্তির
আগেই নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। ৫৭ শতাংশের অভিমত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ নির্বাচন
দিতে হবে। এর আগে ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন-প্রার্থীবিহীন একতরফা নির্বাচন যেমনি ছিল
জনমতের বিরুদ্ধে, তেমনি এবার আবারো জনমতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা
বলছেন, ২০১৯ সালে হবে পরবর্তী নির্বাচন। এর আগে বিএনপির সাথে সংলাপও নয়, কোনো নির্বাচনও নয়। কী অবাক করা একগুঁয়েমি!
এ দিকে
গত ১১ ফেব্রুয়ারি মার্কিন সিনেটে বাংলাদেশবিষয়ক শুনানিতে নিশা দেশাইয়ের রিপোর্টে বলা
হয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান সরকার দেশটির গত দুই দশকের অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক
অর্জনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়ে এক অজানা গন্তব্যের পথে হাঁটছে। ফলে বাংলাদেশ নিয়ে যথেষ্ট
শঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ ও বিতর্কিত।
এখানে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যত দ্রুত সম্ভব একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রয়োজন। সিনেটে বাংলাদেশের
ব্যাপারে পাঁচটি ইস্যুতে শুনানি হয় : একটি নতুন নির্বাচন, জিএসপি প্রসঙ্গ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে প্যানেল
সদস্যরা আর সবের মধ্যে বলেন, বাংলাদেশের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ।
এতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। যুক্তরাষ্ট্র চায় একটি নতুন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটি লাখ লাখ
নিরপরাধ মানুষকে শাস্তি দেয়ার শামিল। এটা অন্যায়।
আমরা দেখছি, দেশের মানুষ চায় যথাসম্ভব দ্রুত সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন
হোক। এর জন্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সংলাপের মধ্য দিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছুক। যুক্তরাষ্ট্র
এমনটিই চায়। একই চাওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথ এবং জাতিসঙ্ঘেরও; কিন্তু কারো কথাই যেন শুনতে চায় না আমাদের সরকার। সরকারের চোখে এরা সবাই বাংলাদেশের
শত্রু। আর সরকার যেন পণ করে বসে আছে, ডাণ্ডা মেরে বিএনপি-জামায়াতকে
ঠাণ্ডা করে দেশে সরকারবিরোধিতা স্তব্ধ করে দেবে। সারা পৃথিবী দেখবে বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। চার দিকে শুধু নৈঃশব্দ। আছে শুধু আওয়ামী
লীগ ও তার সমর্থক গোষ্ঠী। বিএনপি-জামায়াত একেবারে অস্তিত্বহীন।
নিন্দুকেরা
বলেনÑ ইতিহাসের সায় নেই এতে। ইতিহাস বলে দুঃশাসন কখনোই কোনো দেশে স্থিতিশীলতা
আনতে পারে না। জোরজবরদস্তির রাজনীতি কখনোই চিরস্থায়ী হয় না। রাজনৈতিক দমনপীড়ন যথাসময়ে
উৎপীড়কদের জন্য বয়ে আনে ভয়াবহ পরিণতি। জাতি পড়ে অভাবনীয় ক্ষতির মুখে, যে ক্ষতি কখনোই পোষানো যায় না। আর এ ক্ষতি কোনো পক্ষবিশেষের হয় না। ক্ষতি সবার।
গোটাজাতির। শুধু সময়ের সাবধানতাই ঠেকাতে পারে এ ধরনের ক্ষতি। এ সাবধানতার নাম জনমতের
প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।
গোলাপ মুনীর
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন