একটা প্রবাদ আছে ‘উস্তাদের মাইর শেষ রাতে’। প্রবাদটি যে যেখানে উপযুক্ত, সেখানে ব্যবহার করেন। আজকের লেখায় এটি ব্যবহার করার কারণ হলো, রাজধানী ঢাকার উন্নয়ন ও সরকারের জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গ। এমন সময় লেখাটি লিখছি যখন
একতরফা সংসদ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। অথচ সরকার সাংবিধানিকভাবে পাঁচ বছর অতিক্রম করে এসেছে
এর আগে।
মহাজোট
মতায় আসার আগে নির্বাচনী এজেন্ডায় উন্নয়নের যে আশ্বাস ছিল, তার বেশি প্রতিফলন আমরা দেখতে পাইনি সরকারের তিন বছর পার হওয়ার আগ পর্যন্ত।
সেখানেই আমরা মূলত প্রথমবার হোঁচট খেয়েছি।
যখন ঢাকা
শহরে বের হই এই যান্ত্রিক জীবনে একটুখানি মুক্ত বাতাস গ্রহণ করার জন্য, তখন যে যে-দলই করুক, বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেেিত মুখে না এলেও অন্তর
থেকে একটা তিরস্কার চলে আসে। কারণ কোনো খানাখন্দে যখন আপনার বা পরিবারের কেউ পড়ে হাত-পা
ভেঙে, এমনকি পুরোপুরি পঙ্গু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তখন আর দলের জন্য টান থাকে না; প্রথমে সরকারকেই গালিটা খেতে
হয়। এখন সরকারপ্রধান যদি ‘নান্দাইলের ইউনুস’ও হতেন ,তিনিও গালিটা খেতেন।
ঢাকার
বাইরের তথা সারা দেশের উন্নয়নের কথা না-ই বা বললাম। খুবই গুরুত্বপূর্ণ শহর ঢাকায় যেখানে কোটি মানুষের বসবাস, সেখানে স্যুয়ারেজ লাইনের মুখের
ঢাকনা না থাকা আর আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ পৃথিবীর উন্নত রাষ্ট্রের একটি হওয়ার সম্ভাবনা
নিয়ে আমরা শঙ্কিত; সে রূপ শঙ্কিত সরকারের দায়িত্ববোধ নিয়েও। আমি জানি না, এটি কেমন কৌশল যে, সব কাজ সরকারের শেষ সময়ে শুরু এবং দ্রুত শেষ করে তা উদ্বোধন করতে হবে। মনে করা হয় দেশের মানুষ আত্মভোলা, তাই নির্বাচনের সময় উন্নয়নের চমক দেখিয়ে দলগুলো ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চায়।
কিন্তু যে রাস্তা দিয়ে ভোট দিতে যাবে, সেই রাস্তায় তো হাঁটার উপায় নেই।
বড় বড় গর্ত আর ‘সাবধান’ মার্কা মারা সাইনবোর্ড দেখে দেখে সাবধানে যেতে হয়।
তাই ভোটও দিতে হবে অনেক সাবধানে; প্রার্থী ভালোভাবে বাছাই করে।
সরকারের
উচিত, দায়িত্ব নিয়েই আগে দেশের উন্নয়নে ওয়াদামাফিক কাজ শুরু করা। পকেট
ভারীর চিন্তা না করাই কর্তব্য, তা যে সরকারই আসুক বা থাকুক। আমরা আমজনতা চাই দেশের
টেকসই উন্নয়ন। আমাদের ব্যক্তিগত উন্নয়নের কথা হয়তো সরকারের ভাবতে হবে না। আসুন, সবাই মিলে একটা ‘দেশ উন্নয়ন মঞ্চ’ গড়ে তুলি, যেখানে প্রথম সারিতে থাকবেন এ দেশের খেটেখাওয়া মানুষ।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন