শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী, ২০১৪

জন-আকাঙ্খার প্রতি সম্মান দেখানো উচিত


জনমত উপেক্ষা করে, বিরোধীদলীয় জোটকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে, আন্তর্জাতিক মহলের পরামর্শকে গুরুত্ব না দিয়ে এবং পূর্বের সংসদ বহাল রেখে হরতাল ও অবরোধের মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি একটি হাস্যকর ও দেশবাসীর কাছে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে প্রায় ৫২ শতাংশ ভোটারকে ভোট প্রদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ১৫৩ জন এমপিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বাকিদেরও লোক দেখানো নির্বাচনের মাধ্যমে নজিরবিহীন কমসংখ্যক ভোটারের ভোটে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের দিন এবং এর পরবর্তীতে অনেক মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। আহতও হয়েছেন অনেকে। অনেকের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী করে যাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে প্রকৃত ঘটনা কিন্তু সে রকম নয়। নির্বাচনপরবর্তী হামলা ও একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের জন্য ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে গণমাধ্যমের রিপোর্টে। পূর্বের সংসদ বহাল অবস্থায় ইতোমধ্যে নতুন এমপিরা শপথও নিয়েছেন।১২ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিপরিষদও গঠন হয়ে যাবে। অন্যদিকে বিরোধী জোটের অবরোধ-আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এমতাবস্থায় নতুন সরকার সুস্থিরভাবে দেশ পরিচালনা করতে সক্ষম কীভাবে হবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচনপরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার বদলে আরও ঘোলাটে আকার ধারণ করছে। নির্বাচনের পরপরই বিরোধীদলের বাকি নেতাদেরও আটক করা হচ্ছে। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের আগেই বিভিন্ন অভিযোগে আটক করে অনেককেই রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের সহজে ছেড়ে দেয়া হবে এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও বিশ্বদরবার থেকে বিজয়ীদের অভিনন্দিত করা হয়নি এখনও। একমাত্র প্রতিবেশী দেশটি নতুন সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুমান করা সহজ যে, আমাদের এ সম্ভাবনাময় দেশটি গভীর সংকটের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ব্যবসা বাণিজ্য ইতোমধ্যে প্রায় স্থবির হয়ে গেছে। বৈদেশিক আয় কমে গেছে ভয়ানকভাবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। কৃষকরা নতুন পণ্যের ন্যায্যমূল্য যেমন পাচ্ছেন না, তেমনি কৃষি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক ও বীজ জোগাড় করতে পারছেন না। অর্থাৎ কৃষকরা এখন উভয় সংকটে পড়েছেন। এর মূল কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা।
রাজনৈতিক সংকট দীর্ঘায়িত হলে সামাজিক অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পায়। গণতান্ত্রিক অধিকার বিপন্ন হয়। গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে মানুষ মারমুখো হয়ে পড়ে। গণতন্ত্রের গলা চেপে ধরে সকল রাজনৈতিক দলের অংশিদারিত্বের মূলে কুঠারাঘাত করে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করলেই পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আসলে জোর করে ক্ষমতায় গিয়ে তা আঁকড়ে থেকে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাকে পদদলিত করে রাখার পরিণাম কখনও শুভ হয় না।  রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের ঘরের খবরও দেশবাসীর জানা। কাজেই দেশের মানুষ যা পাবেন তাই গিলবেন এমনটা মনে করা অপরিণামদর্শিতার শামিল। আমরা মনে করি, জনগণের আশা আকাক্সক্ষা পদদলিত করে যেনতেন এবং প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের সুখস্বপ্ন অচিরেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে। তাই নববিজয়ীরা আত্মমর্যাদা বিসর্জন না দিয়ে জন-আকাক্সক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিবেকবুদ্ধি খাটিয়ে নতুন আলোকে নিজেদের উদ্ভাসিত করবেন। সত্যকে গোপন রেখে মিথ্যাচারের গোলকধাঁধায় সমগ্র জাতিকে আচ্ছন্ন করে রাখার চেষ্টা কখনও শুভ হয় না বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে, জনগণের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নিয়ে অথবা বিরোধী কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেশ শাসন করা যায় না। এ জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক শিষ্টাচার এবং সুশাসন। আমরা  আশা করি সরকার এর গুরুত্ব উপলব্ধি করবেন।
জন-আকাক্সক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো উচিত
জনমত উপেক্ষা করে, বিরোধীদলীয় জোটকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে, আন্তর্জাতিক মহলের পরামর্শকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এবং পূর্বের সংসদ বহাল রেখে হরতাল ও অবরোধের মধ্যে গত ৫ জানুয়ারি একটি হাস্যকর ও দেশবাসীর কাছে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। অবশ্য প্রায় ৫২ শতাংশ ভোটারকে ভোট প্রদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ১৫৩ জন এমপিকে আগেই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বাকিদেরও লোক দেখানো নির্বাচনের মাধ্যমে নজিরবিহীন কমসংখ্যক ভোটারের ভোটে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। অবশ্য এ প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের দিন এবং এর পরবর্তীতে অনেক মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। আহতও হয়েছেন অনেকে। অনেকের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী করে যাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে প্রকৃত ঘটনা কিন্তু সে রকম নয় বলে জানা গেছে। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনপরবর্তী হামলা ও একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের জন্য ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোকে দায়ী করা হচ্ছে গণমাধ্যমের রিপোর্টে। পূর্বের সংসদ বহাল অবস্থায় ইতোমধ্যে নতুন এমপিরা শপথও নিয়েছেন। দু’একদিনের মধ্যে নতুন মন্ত্রিপরিষদও গঠন হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী জোটের অবরোধ-আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এমতাবস্থায় নতুন সরকার সুস্থিরভাবে দেশ পরিচালনা করতে সক্ষম কীভাবে হবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন।
নির্বাচনপরবর্তী পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার বদলে আরও ঘোলাটে আকার ধারণ করছে। নির্বাচনের পরপরই বিরোধীদলের বাকি নেতাদেরও আটক করা হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের আগেই বিভিন্ন অভিযোগে আটক করে অনেককেই রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তাদের সহজে ছেড়ে দেয়া হবে এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও বিশ্বদরবার থেকে বিজয়ীদের অভিনন্দিত করা হয়নি এখনও। একমাত্র প্রতিবেশী বৃহৎ দেশটি নববিজয়ী সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনুমান করা সহজ যে, আমাদের এ সম্ভাবনাময় দেশটি গভীর সংকটের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ব্যবসা বাণিজ্য ইতোমধ্যে প্রায় স্থবির হয়ে গেছে। বৈদেশিক আয় কমে গেছে ভয়ানকভাবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। কৃষকরা নতুন পণ্যের ন্যায্যমূল্য যেমন পাচ্ছেন না, তেমনি কৃষি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক ও বীজ জোগাড় করতে পারছেন না। আবার নতুন উৎপাদিত পণ্য হরতাল ও অবরোধের মধ্যে যানবাহনের অভাবে বাজারজাতও করতে পারছেন না। অর্থাৎ কৃষকরা এখন উভয় সংকটে পড়েছেন। এর মূল কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা।
রাজননৈতিক সংকট দীর্ঘায়িত হলে সামাজিক অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পায়। গণতান্ত্রিক অধিকার বিপন্ন হয়। গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে মানুষ মারমুখো হয়ে পড়ে। গণতন্ত্রের গলা চেপে ধরে সকল রাজনৈতিক দলের অংশিদারিত্বের মূলে কুঠারাঘাত করে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করলেই পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আসলে জোর করে ক্ষমতায় গিয়ে তা আঁকড়ে থেকে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাকে পদদলিত করে রাখার পরিণাম কখনও শুভ হয় না। এদেশের জনগণ আর আগের মতো নির্বোধ নয়। বিশেষ করে স্বাধীনতা অর্জনের ৪২ বছর পর এ দেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের ঘরের খবরও দেশবাসীর জানা। কাজেই দেশের মানুষ যা পাবেন তাই গিলবেন এমনটা মনে করা অপরিণামদর্শিতার শামিল। আমরা মনে করি, জনগণের আশা আকাক্সক্ষা পদদলিত করে যেনতেন এবং প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের সুখস্বপ্ন অচিরেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে। তাই নববিজয়ীরা আত্মমর্যাদা বিসর্জন না দিয়ে জন-আকাক্সক্ষার প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিবেকবুদ্ধি খাটিয়ে নতুন আলোকে নিজেদের উদ্ভাসিত করবেন। সত্যকে গোপন রেখে মিথ্যাচারের গোলকধাঁধায় সমগ্র জাতিকে আচ্ছন্ন করে রাখার চেষ্টা কখনও শুভ হয় না বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads