শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

শাহবাগে ফ্যাসীবাদের পদধ্বনি, গোয়েবলস এর প্রেতাত্মার হর্ষধ্বনি



প্রথমে ফ্যাসীবাদ সম্পর্কে যৎসামান্য ধারণা নেয়া যাক। ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘যে কোন ধর্মের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে সাধারণ মানুষের ওপর শাসকশ্রেণীর একচেটিয়া আধিপথ্য ও কর্তৃত্ব স্থাপনের উদ্দেশ্যে গড়ে ওঠা মতবাদকে ‘ফ্যাসিবাদ' বলে। ইতালির বেনিটো মুসোলিনী হলেন ফ্যাসিবাদের জনক। ১৯২০ সালে মুসোলিনী ‘ফ্যাসিস্ট দল' নামে একটি দল গঠন করেন। ১৯২২ সালে রোম দখলের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা দখল করে জনগণের ওপর ফ্যাসিবাদ চাপিয়ে দেন। ফ্যাসিবাদের মূল বক্তব্য হচ্ছে, Everything for the state, nothing against the state, nothing outside the state. অর্থাৎ সব কিছুই রাষ্ট্রের জন্যে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোন কিছু নয়, রাষ্ট্রের বাইরে কোন কিছু নেই।
ফ্যাসিবাদের মতে রাষ্ট্রই সর্বশক্তিমান, রাষ্ট্র ঐক্য ও কল্যাণের প্রতীক। ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্র নয়, রাষ্ট্রের জন্যে ব্যক্তি। ফ্যাসিবাদ, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক ধ্যান ধারণায়  বিশ্বাস করে না। ফ্যাসীবাদের সূত্র মতে দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান একই ব্যক্তি। তার আদেশই রাষ্ট্রের আইন বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ নেতা সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক ও প্রতীক। সমগ্র রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করবে একটি মাত্র দল। বিরোধীদল ও বিরোধীমত সহ্য করা হবে না। প্রচার মাধ্যম বা মিডিয়া সরকারের পক্ষে প্রচার ও প্রকাশ করতে পারবে-বিপক্ষে কোন কিছু প্রচার বা প্রকাশ করা যাবে না।
আওয়ামী লীগ ইতালির বেনিটো মুসোলিনীর ফ্যাসিবাদের সূত্র মতে দেশ পরিচালনা করছে। তারা কোন ধর্ম বা আদর্শ মানে না। আওয়ামী লীগ বিরোধীদল ও বিরোধীমত সহ্য করতে পারছে না। প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও প্রচার মাধ্যম তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর কথার বাহিরে কোথাও কোন কাজ হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ একদেশ, একদল, একনেতা নীতি অুসরণ করছে। যে সকল প্রচার মাধ্যম বা মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বা তাদের বিরুদ্ধে প্রচার করে সে সকল প্রচার মাধ্যম আজ সরকার দলীয় সন্ত্রাসী অথবা সরকারি পুলিশ বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। সরকার বিরোধীদের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসহ সেবামূলক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানও আক্রান্ত হচ্ছে। বিরোধীদলের বলে ব্যাংক ও হাসপাতালে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে।
মুসোলিনীর প্রতিষ্ঠিত ‘ফ্যাসীবাদ' এর অনুসারী ‘হিটলার'। হিটলার ফ্যাসীবাদের অনুসরণে ১৯৩৮ সালে ‘নাৎসী' নামে একটি নতুন দল গঠন করে জার্মানীতে ক্ষমতা দখল করেন। তিনি তার ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যে ১৯৩৯ সালে ইতালীর সমর্থনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করেন। হিটলার ছিলেন এ যাবতকালের বিশ্বের সবচাইতে বড় খুনি বা বেশি সংখ্যক বনি আদম হত্যাকারী। হিটলার সম্পর্কে অভিযোগ আছে যে, তিনি দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার ইহুদীকে হত্যা করেছেন। হিটলার ছিলেন ব্যক্তিগতভাবে খৃষ্টান ধর্মের অনুসারী। অপরাধ বোধের কারণে হিটলার শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছিলেন।
আমাদের দেশেও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি মানুষ খুন, গুম, জখম, ধর্ষণ ও নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ইং জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন বর্তমান সরকারের মেয়াদের শুরু থেকে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পৌনে চার বছরে ১৬ হাজার ২৮৫ জন মানুষ খুন, গুম ও ধর্ষণসহ ৯৮ হাজার ১৮৪টি অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমান সরকারের শুরুতে তৎকালীন বিডিআর এর ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তা হত্যা থেকে শুরু করে এ যাবত অনেক হত্যাকান্ডের জন্যে বিরোধী দলসহ অনেকেই বর্তমান সরকারকেই দায়ী করছে। খুনের রাজনীতির জন্যে বিখ্যাত হিটলারের পথেই যেন হাঁটছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। প্রতিদিনই দেশের কোন না কোন স্থানে খুন, গুম ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।    
গোয়েবলস ছিলেন হিটলারের সফল তথ্যমন্ত্রী। তিনি আসলে আধুনিক বিশ্বের মিথ্যা কথার জনক বলে পরিচিত। গোয়েবলস এর সূত্র হচ্ছে, একটা মিথ্যা কথাকে শত-সহস্র মুখে শত-সহস্র বার প্রচার করলে বা বলাবলি করলে, সে মিথ্যা কথাও সত্যে পরিণত হয়।
আওয়ামী লীগ গোয়েবলসের সে সূত্র মতে যে কোন মিথ্যাকে তাদের দলের যে কোন একজন নেতা বা কর্মী বিরোধী দলের যে কোন একজন নেতা বা কর্মী সম্পর্কে বা তাদের দলের সফলতা সম্পর্কে অথবা অন্য যে কোন ব্যাপারে বললে দেখা যায় সর্বোচ্চ পর্যায় তথা প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন পর্যায়ের সকল নেতাকর্মী একই সুরে একই মিথ্যা কথা প্রচার করতে শুরু করে।
যেমন, যেমন ১৯৭১ সালে পিরোজপুরের পারেরহাটের দেলওয়ার সিকদার ওরফে লেইল্লা রাজাকারের অপকর্মের দায়ভার আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। অথচ সেই পারেরহাটের সে দেলওয়ার সিকদার ওরফে লেইল্লা রাজাকারকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ স্থানীয় লোকেরা। ফরিদপুরের কুখ্যাত বাচ্চু রাজাকারের সকল অপকর্মের দায় চাপানো হয়েছে ইসলামী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা আবুল কালাম আজাদের ওপর। মিরপুরের কুখ্যাত রাজাকার বিহারী কাদের কসাই এর সকল অপকর্মের দায় চাপানো হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল জনাব আবদুল কাদের মোল্লার ঘাড়ে। অথচ তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের মেধাবী ছাত্র আবদুল কাদের মোল্লা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গোটা সময়ই কাটিয়েছিলেন তার ফরিদপুরের গ্রামের বাড়িতে মুদি দোকান করে, তিনি মিরপুরে ঐ সময়ের মধ্যে কখনোই যাননি। কিন্তুু সরকার, সরকারিদল ও আমাদের দেশের সে গোয়েবলসের প্রেতাত্মা কিছু মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কিছু মিডিয়া বা প্রচার মাধ্যমের মিথ্যা অপপ্রচারে বা তথ্য সন্ত্রাসের কারণে দেশের কোমলমতি তরুণ-তরুণীসহ গোটা জাতি আজ বিভ্রান্ত।
আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রচার মাধ্যম যেন হিটলারের তথ্যমন্ত্রী গোয়েবলসের উত্তরসুরী। গোয়েবলস যেমন করে সাজিয়ে-গুছিয়ে একটা মিথ্যা কথাকে সত্যে রূপ দেয়ার চেষ্টা করতেন বর্তমানে আমাদের দেশের প্রচার মাধ্যমগুলোও তেমনি একটা মিথ্যাকে সত্যে রূপ দেয়ার জন্যে দিন-রাত বিরামহীন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রচার মাধ্যমের কর্মকান্ড যেন গোয়েবলসের প্রেতাত্মারই হর্ষধ্বনি। আরো মনে পড়ে আল-কুরআনের সুরা আ'রাফের সে সকল আয়াতের কথা যেখানে আল্লাহ তা'য়ালা আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, আল্লাহ তা'য়ালার নির্দেশ অমান্য করে হযরত আদম (আ.) কে সেজদা না করার কারণে আযাযিল, শয়তান বা ইবলিসকে যখন জান্নাত থেকে বের করে দিলেন তখন শয়তান আল্লাহ তা'য়ালার কাছে কিয়ামত পর্যন্ত জীবনকাল প্রার্থনা করেছিল। আল্লাহ তা'য়ালা শয়তানের প্রার্থনা মঞ্জুর করার পর শয়তান আল্লাহ তা'য়ালার সাথে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে, সে আদম সন্তানকে বিভ্রান্ত করবে। বিভ্রান্ত করার জন্যে আদম সন্তানের ডান দিক থেকে আসবে, বামদিক থেকে আসবে, সামনের দিক থেকে আসবে ও পেছনের দিক থেকে আসবে। আমাদের দেশে বর্তমানে অধিকাংশ প্রচার মাধ্যমই যেন শয়তানের সেই প্রতিজ্ঞাই বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।  
নিত্যনতুন প্রচার মাধ্যম নিত্যনতুন নাটক, কল্প-কাহিনী রচনা করে, সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্যে রূপান্তরিত করে গোটা জাতিকেই আজ বিভ্রান্ত করছে। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরাসহ গোটা জাতি আজ মিথ্যা তথ্য ও নিত্য নতুন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের কারণে বিভ্রান্ত হচ্ছে। আজকের শাহবাগ চত্ত্বর সে সকল বিভ্রান্ত তরুণ-তরুণীদেরই মিলন মেলা। যেখানে নীতি নৈতিকতার কোন বালাই নেই। তারা বিভ্রান্তই শুধু নয় তারা দিকভ্রান্তও বটে। গোয়েবলস যদি আত্মহত্যা না করতেন তা হলে আজকে আমাদের নব্য গোয়েবলস তথ্যমন্ত্রীর ও দেশের প্রচার মাধ্যমের তথ্য সন্ত্রাস দেখে তিনি লজ্জা পেতেন। শয়তান আল্লাহর সাথে আদম সন্তানদের বিভ্রান্ত করার যে প্রতিজ্ঞা করেছিল সে প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নে মোটেও কষ্ট করতে হচ্ছে না বিধায় বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীসহ সকল প্রচার মাধ্যমের ওপর শয়তানও বেজায় খুশি।
আওয়ামী লীগ অবশ্য মেকিয়াভেলীর রাজনৈতিক দর্শনও মেনে চলছে। মেকিয়াভেলী সৃষ্টিকর্তা, ধর্ম বা নীতি-নৈতিকতা বলতে কোন কিছু স্বীকার করেন না। তার দর্শন মূলত শাসক ও শাসনকার্য বিষয়ক। তার মতে (ক) শাসনকার্য পরিচালনার জন্যে ধর্ম, নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শ বলে কিছু থাকবে না। (খ) শাসক হবে শৃগালের মতো ধূর্ত ও সিংহের মতো হিংস্র। জনগণকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে রাখতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে। আইন প্রয়োগে কাজ না হলে প্রয়োজনে পাশবিকতার পথ অবলম্বন করতে হবে। পাশবিকতার ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখালে হিতে-বিপরীত হতে পারে। (গ) শাসক তার স্বার্থরক্ষার জন্যে যে কোন ওয়াদা ও বিশ্বাস ভঙ্গ করতে পারবেন। অতীতে যারা ওয়াদা ও বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে পরবর্তীতে তারা কেউ ঘৃণিত হয়নি। (ঘ) ধর্ম, নীতি-নৈতিকতার ব্যাপারে দ্বৈত বা Double Standard নীতি অবলম্বন করা যাবে। জনসাধারণের জন্যে আইন-কানুন, বিধি-বিধান ও নীতি-নৈতিকতা অবশ্যই পালনীয়, শাসকদের জন্যে তা পালন করা জরুরী নয়। শাসক প্রয়োজন অনুযায়ী আইন অনুসরণ করবেন, প্রয়োজনে আইন বা বিধি-বিধান ও নীতি পরিবর্তন করবেন। (ঙ) শাসকের জন্য কপটতা দোষের কিছু নয়। প্রয়োজনে বেশ ধরবেন ও ভান করবেন। ভিন্ন পরিস্থিতির সব কিছু সাবাইকে খুলে বলা যাবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী ওয়াদা করবেন, দয়া দেখাবেন, মানবতা রক্ষা করবেন, ধর্ম মানবেন, প্রয়োজনে ধর্মের বিরুদ্ধে কাজ করবেন। অর্থাৎ সর্বাবস্থায় পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। (চ) মানুষকে প্রতারিত করা সহজ তবে একাজটা কৌশলে করতে হবে। যে কোন পন্থায় শাসককে ক্ষমতা ধরে রাখতে হবে, প্রয়োজনে সন্ত্রাসী, গুন্ডামী ও ভন্ডামী বা বিশ্বাসঘাতকতা করা কোন দোষ বা অপরাধ নয়।
স্কুল, কলেজ, ইউনিভারসিটি এমনকি মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের চাপের মুখে শাহবাগ চত্ত্বরে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। ঐসকল প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কিছুই করার বা বলার নেই। কারণ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দখল এখন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের হাতে। ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত, আহত, বারডেমে চিকিৎসাধীন লাকীর পরিনতির ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরুণীদের নৃত্য করতে বাধ্য করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছিনতাই আর যৌন হয়রানির অভিযোগতো আছেই।
দেশে আজ এক ভীতি ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সত্য কথা বলার কেউ সাহস পাচ্ছেন না। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে বা যারা কথা বলছে তাদেরকে রাজাকার বলে গালাগাল করা হচ্ছে। মসজিদের ইমাম, খতিব, মুফতী, মুহাদ্দিস ও ওয়ায়েজিনদের মধ্যে কুরআন-হাদীসের হক কথাগুলো বলা বন্ধ হয়ে গেছে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, প্রফেসার পিয়াস করিম, প্রবীন সাংবাদিক এবিএম মুসা, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সহ সাবেক ছাত্র লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা নুরে আলম সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না, খালেদ মোহাম্মদ আলী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুধীর কুমার হাজরা ও খন্দকার হারুনুর রশিদ যারা সত্য বাক্যে বিশ্বাসী তারা আজ আওয়ামী লীগের কাছে আতংক। তারা বলছেন আওয়ামী লীগ আজ পরগাছা বাম ও রামদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তারা একথাও বলছেন যে বর্তমান সরকারের যুদ্ধাপরাধীর বিচার এটি একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি সরকারি ও বিরোধীদল কারোরই আস্থা নেই। যার কারণে এই ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দিয়ে জাতিসংঘের অধীনে বিচারের দাবী উঠেছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ ইং জাতীয় সংসদে সংসদ নেত্রী, সরকারি দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি সংসদে দাঁড়িয়ে সাক্ষী কি বললেন না বললেন তা বিবেচনায় না নিয়ে শাহবাগে সরকারি দলের মঞ্চস্থ নাট্যকাররা কি বলছে তা বিবেচনায় নিতে বলেছেন। এহেন পরিস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারকগণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন কি? যদি না পারেন তা হলে তাদের পদত্যাগ করাই শ্রেয় বলে আইন বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।
দেশের এ ক্লান্তিকালে জাতির বিবেকবান শিক্ষিত সচেতন মানুষগুলোকে বিভ্রান্ত তরুণ-তরুণীসহ গোটা জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাহসের সাথে একটি আদর্শকে সামনে নিয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা করে এগুতে হবে। হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। কারণ আল্লাহ তা‘য়ালা বলেছেন, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে তারা সংগ্রাম করে আল্লাহর পথে, আর যারা কা‘ফির তারা সংগ্রাম করে ‘তাগুতের' বা শয়তানের পথে, অতএব (হে! ঈমানদারগণ) তোমরা সংগ্রাম করো শয়তানের চেলা-চামুন্ডাদের বিরুদ্ধে, নিশ্চয়ই শয়তানের ষড়যন্ত্র খুবই দুর্বল’’ (সূরা আন নিসা-৪/৭৬)।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads