শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

এ কেমন রাষ্ট্রে আছি


ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী


সত্তরের দশকে কবি হুমায়ুন কবির তার ‘কুসুমিত ইস্পাত’ গ্রন্থে একটি কবিতা সন্নিবেশিত করেছিলেন। তার নাম ছিল ‘এ কেমন শহর’! এতকাল পরে যত দূর মনে আছে সে কবিতায় তিনি লিখেছিলেন, ‘এ কেমন শহরে তুমি দাঁড়ালে সখা,/ সারারাত সান্ত্রীর আনাগোনা/ এ কেমন শহর, কিষানের পদপাদ নেই।’ আমরা এখন এক অদ্ভুত জনপদে বসবাস করছি। কৃষাণ নেই বলে আমার তেমন কোনো আফসোস নেই। কিন্তু আমার এখন বলতে ইচ্ছে করেÑ এ কেমন রাষ্ট্র, যেখানে বিরোধী পদপাদ নেই। সরকার এখন এক হিংস্র দলনকারীতে পরিণত হয়েছে। কখনো কখনো মনে হয়, এরা কাণ্ডজ্ঞানহীন। রাষ্ট্রকে নিজেদের তালুক-মুলুক ভাবতে তারা অধিক আগ্রহী, যেন গোটা রাষ্ট্রই তাদের অধীন। তারা রাজা কিংবা রানী। আর আমরা জনগণ তাদের প্রজা।
সব ক্ষেত্রে সরকারের এই মনোভাবই এখন প্রতিফলিত। রাষ্ট্র আমার। ভূমি আমার। কর্তৃত্ব আমার। জনগণ অনেক পেছনের ইস্যু। আমরা যা বলব, জনগণকে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। রাজনৈতিক দলকেও তাই। কোনো রাজনৈতিক দলকে কতটুক অধিকার দেবো, সেই হিসেবে তাদের চলাফেরা করতে হবে। সীমানা লঙ্ঘন করলে পুলিশ দিয়ে, ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে দেবো। আগের দিনে জমিদার-জোতদারেরা যা করত, এটি তার ব্যতিক্রম নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের মন্ত্রী নিয়োজিত করেছেন এবং যাদের দলের মুখপাত্র হিসেবে কথাবার্তা বলার দায়িত্ব দিয়েছেন তারা তেমন জমিদারের লাঠিয়ালের মতোই কথাবার্তা বলছেন।
সাহারা খাতুন যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, তখন তার নিকৃষ্ট নিষ্ক্রিয়তার আমরা কঠোর সমালোচনা করেছি। বর্তমান সরকারের কাছে সমালোচনা অসহ্য। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪০-৪২ সাল পর্যন্ত যে রাজনীতি করেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় আকস্মিকভাবে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি তার একেবারে বিপরীত মেরুতে অবস্থান গ্রহণ করেন। সরকারের বিরোধিতা তার কাছে একেবারে অসহ্য মনে হচ্ছিল। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক গুরু ছিলেন মওলানা ভাসানী, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মনে হয়েছে এ কে ফজলুল হক। তার একটা সৌন্দর্য ছিল। এই নেতৃত্বের কথা তিনি অকপটে স্বীকারও করেছেন। মুসলিম লীগ যখন ক্ষমতাসীন হয়ে পাকিস্তানে ‘অপশাসন’ চালায় তখন শেখ মুজিবুর রহমান তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনই শুধু করার চেষ্টা করেননি, আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছিলেন। সেটা শুধু পূর্ব পাকিস্তানে নয়, এই একই কারণে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানেও সফর করেছেন।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় এবং পাকিস্তানে মুসলিম লীগ শাসন নিশ্চিত করার জন্য তিনি বহুবিধ আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। কিন্তু মুসলিম লীগ যখন গণবিরোধী হয়ে পড়ল, তখন তিনি তার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেন। এবং শেখ মুজিবসহ অনেক নেতাই তখন মুসলিম লীগের নির্যাতনের শিকার হন। ক্ষমতাসীন হয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সম্ভবত ক্ষমতার কারণেই সারা জীবনের লড়াইয়ের কথাই ভুলে বসেন। মুসলিম লীগ যে কায়দায় শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতাদের অত্যাচার করেছিল, শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতাসীন হয়ে একই পদ্ধতিতেই বিরোধী দলের ওপর অত্যাচার শুরু করেছিলেন।
তিনি নিরঙ্কুশ ক্ষমতা চেয়েছিলেন। গণতান্ত্রিক সমাজে যে ক্ষমতা চাওয়া যায় না। মুসলিম লীগ যেমন ভিন্নমত সহ্য করতে চায়নি, শেখ মুজিবুর রহমানও একইভাবে শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ভিন্নমতকে পদদলিত করার সঙ্কল্প নিয়ে এক জিগির তৈরি করেন। সে জিগিরকে সফল করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনাবাহিনীর বাইরে গড়ে তোলেন রক্ষীবাহিনী। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনাবাহিনীর সদস্যরা যখন ছেঁড়া জুতা, পুরনো পোশাক পরে বস্তিবাসীর মতো জীবনযাপন করছিলেন, তখন রক্ষীবাহিনীর জন্য তিনি ব্যবস্থা করেছিলেন আধুনিক সমরাস্ত্র, পোশাক-আশাক ও আশ্রয়ের। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি যে, যারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করল, তারা রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেনি। কিন্তু বাংলাদেশে শেখ মুজিবের প্রতি এমন ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল যে, তার জন্য তাজউদ্দীন সরকার প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য রেখেছিল। অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। এসব কাহিনী ইতিহাসে বিবৃত আছে।
সবাই আশা করেছিল যে, যেহেতু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানেনইনি, তাই তিনি সম্ভবত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইবেন। এবং সম্যক উপলব্ধি করতে পারবেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তাজউদ্দীন আহমদ এই রাজনৈতিক নেতৃত্ব পরিচালনা করেন। তাজউদ্দীন আহমদ বহু দিন শেখ মুজিবের ড্রইংরুমে বসে থেকেছেন। তার সাক্ষাৎ পাননি। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বাপর শেখ মুজিবকে অবহিত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুজিব তা অবহিত হতে চাননি। তাজউদ্দীন আহমদকে ড্রইংরুমে বসিয়ে রেখে শেখ মুজিবের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি যখন তখন শেখ মুজিবের কক্ষে ঢুকে যেতেন। অথচ মনি ছিলেন বিএলএফের (বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স)  সদস্য বা নেতা। বিএলএফ মুক্তিযুদ্ধের এই দীর্ঘ সময়ে কোনো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু দেশের কৃষক, শ্রমিক, মজুর খালি গায়ে, খালি পায়ে, লুঙ্গি কাছা দিয়ে বন্দুক কাঁধে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। কর্নেল ওসমানী স্বাধীনতা যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন। এখন আওয়ামী লীগ বলছে, স্বাধীনতাযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।
যে শেখ মুজিবুর রহমান তাজউদ্দীন আহমদের শত অনুরোধ সত্ত্বেও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে রাজি হননি, তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা আ স ম আবদুর রবসহ আরো অনেকে যখন তার বাসভবনে গিয়ে তাকে ভারতে পালানোর পথ নির্দেশ করেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, আমার ব্যবস্থা আমি করে রেখেছি, তোরা যে যেভাবে পারিস, পালিয়ে যা। শেখ মুজিবুর রহমান তার নিজের জন্য কী ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন, সেটা আমরা জানতে পারিনি। কিন্তু বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ভাষ্য অনুযায়ী তিনি হোল্ড অল গুছিয়ে রেখেছিলেন এবং বারবার বারান্দা এবং ঘরের ভেতরে পায়চারী করছিলেন তার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে। রাত ৮টা-সাড়ে ৮টার মধ্যে সহকর্মী রাজনীতিক থেকে শুরু করে সবাইকে বিদায় করে দিয়েছিলেন।
সে বিতর্কে যাওয়া খুব বেশি প্রয়োজনীয় নয়। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান যখন রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে পেলেন তখন রাজনৈতিক বক্তব্য ও রাষ্ট্রক্ষমতার মধ্যকার ফারাক তিনি উপলব্ধি করতে পারলেন না। রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে পেয়েই তিনি মুসলিম লীগের চেয়েও ভয়াবহ স্বৈরতান্ত্রিক হিসেবে আবির্ভূত হলেন। এটা ছিল এ দেশের মানুষের কাছে সম্পূর্ণ অকল্পনীয় ঘটনা। বিরোধী দল বলতে তখন মুক্তিযোদ্ধা মেজর আবদুল জলিল ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ছিল। আর কোনো দল ছিল না। মওলানা ভাসানীর ন্যাপ (ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ পার্টি) তখন সংগঠিতই ছিল না। এই জাসদকে দমন করার জন্য শেখ মুজিবুর রহমান হেন কোনো দমনমূলক পদক্ষেপ নেই যা গ্রহণ করেননি। আমাদের কাছে এ এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা। যে শেখ মুজিবুর রহমান মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল কাশেম ফজলুল হকের রাজনীতি করেছেন, সেই শেখ মুজিব তার সন্তানতুল্য রাজনীতিকদের শুধু বিরোধিতার কারণে এমন নির্যাতন করতে পারবেন এটা ছিল কল্পনারও অতীত। শেখ মুজিবুর রহমান আমলে রক্ষীবাহিনী প্রায় ৩০ হাজার বিরোধী রাজনীতিককে হত্যা করে। বিরোধী রাজনীতিক সিরাজ শিকদারকে হত্যার পর তিনি সোল্লাসে বলেন যে, ‘কোথায় সে সিরাজ শিকদার?’
এসবের পরিণতি কী ভালো হয়? পৃথিবীর ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এ রকম অবস্থার পরিণতি কখনো ভালো হয় না। শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য বাকশাল গঠন করেছিলেন। কী না করেছেন তিনি? দেশের সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছেন। মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতাই অবশিষ্ট রাখেননি। চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা হরণ করেছেন। এটা তার গোটা রাজনৈতিক জীবনের সাথে বিসদৃশ। আমিও প্রবীণ হয়ে গেছি। কখনো কখনো বিস্মিত হই, শেখ মুজিবুর রহমান কেন তার ক্ষমতাকে এভাবে নিরঙ্কুশ করতে চাইলেন। এটা তাকে মানায়নি। হলিডে সম্পাদক এনায়েতুল্লাহ খান শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর লিখেছিলেনÑ এটি ইতিহাসের অমোঘ নিয়তি। আমি জানি না, ভবিষ্যতের অমোঘ নিয়তি কী হবে।
এখন শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার কোনো দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নেই। লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাসও নেই। কিন্তু অনন্তকাল ধরে ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা তার আছে। এ ইচ্ছা বাস্তবায়ন হবে কি না সন্দেহ আছে। ক্ষমতা মানুষকে অন্ধ করে। শেখ মুজিবকেও তা করেছিল। শেখ হাসিনাকেও।
রাষ্ট্র এখন তেমন এক অন্ধকারাচ্ছন্ন জংশনে পৌঁছে গেছে। শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, প্রায় অনির্বাচিত লোকদের নিয়ে এক সরকার গঠন করেছেন। আর তার মুখপাত্র একাধিক ‘অশিক্ষিত’ লোক, যাদের কোনো পরিমিতি বোধ নেই। সম্ভবত তার বিবেচনায় সেটা থাকারও দরকার নেই। যেমন হালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা আলমগীরের সংসদ সদস্যপদ যায় কি যায় না এমন অবস্থায় তিনি মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। যদি আদালত যথাযথ বিচার করতে পারতেন তাহলে ইতোমধ্যে ম খা আলমগীরের সংসদ সদস্যপদ বাতিল হতো। কিন্তু তিনি আদালতের রায়ের আগে প্রধান বিচারপতির সাথে সাক্ষাৎ করে কী একান্ত আলাপ করলেন, সেটি প্রকাশিত হয়নি। তিনি সংসদ সদস্যপদে বহাল আছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে তিনি কাণ্ডজ্ঞান একেবারেই হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেছেন, জামায়াত-শিবিরকে প্রতিরোধের জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। সর্বশেষ বলেছেন, জামায়াত-শিবির প্রতিরোধে পাড়ায়, মহল্লায় স্কোয়াড গড়ে তুলে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে। এই ‘ভদ্রলোক’কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলা যায়? একে বলতে হয় সন্ত্রাসীদের গডফাদার। তিনি যেন জানেন না যে, তার ছাত্রলীগ কী করে। পাড়ায়, মহল্লায় প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর যে নির্যাতন নেমে আসবে, যে কাউকেই জামায়াত-শিবির আখ্যায়িত করে যে পুলিশে সোপর্দ করা হবে না, তা নিয়ে যে বাণিজ্য হবে না, তার গ্যারান্টি কী? এটা কী তার মূর্খতার নিদর্শন নয়?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ সভায় ঘুমিয়ে থাকেন। সে ছবি ছাপা হয়েছে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,  অর্থমন্ত্রী আবুল মাল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আরো কে এক মন্ত্রী, তারা ঘুমোচ্ছিলেন। পিকেএসএফ কর্ণধার আওয়ামী ঘরানার আপনজন ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমাদ বক্তৃতা করছিলেন। খলিকুজ্জামানের সাথে আমি টেলিভিশনে অনেক প্রোগ্রাম করেছি। সন্দেহ নেই, তিনি অতি ভদ্রলোক। কিন্তু সেখানে দেখলাম সব মন্ত্রীই ঘুমিয়ে আছেন, যাদের উদ্দেশে তিনি বক্তৃতা করছিলেন। সে রকম একজন মন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম খা।
কখনো কখনো মনে হয়, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সমাজের ভেতরে এ ধরনের অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে, যাতে দেশ অনিবার্যভাবে সঙ্ঘাতের দিকে যায়। সে ক্ষেত্রে সব দায় বিরোধীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া সম্ভব, কিংবা জামায়াতে ইসলামী নির্মূলের নামে তাদের কঠোর অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সাথে সরকারের সম্পর্ক এখন হিমশীতল। যদি জামায়াতে ইসলামীকে কঠোর অবস্থানের দিকে ঠেলে দেয়া যায়, তবে পশ্চিমা দেশগুলোকে বলা যাবে যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখলে তারা এ জঙ্গিবাদ নির্মূল করে দিতে পারবে। অতএব পশ্চিমারা যেন আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে যায়। এসব অপকৌশল সফল হবে কি না বলা মুশকিল। তবে তাতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠতে বাধ্য। আর সে ক্ষেত্রে জনতার প্রতিরোধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবেই। জনতার প্রতিরোধের সামনে শেষ পর্যন্ত কোনো স্বৈরশাসকই কোনো দিন টিকতে পারেনি। এরাও পারবে না।
লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক
rezwansiddiqui@yahoo.com

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads