গতকালের টক অব দ্যা কান্ট্রি ছিল নাস্তিক মুরতাদ রাজীব ও তার সহযোগীদের ব্লগে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ও ইসলামের বিভিন্ন আহকাম নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা প্রসঙ্গে দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত রিপোর্ট। রিপোর্টটি পড়লে যে কোন মুসলমান তার চোখের পানি ধরে রাখতে পারবে না। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবকে সে অবাধে নারী ধর্ষক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। নাউযুবিল্লাহ। সালমান রুশদী, দাউদ হায়দার ও তসলিমা নাসরিনের চেয়ে হাজারোগুণে বেশি ধৃষ্টতা সে দেখিয়েছে। সে নবী মুহম্মদ (সাঃ)কে আহাম্মক, মোহাম্মক বলেছে, সে ঈদের নামাজকে কটাক্ষ করেছে, সে রোজা নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় মন্তব্য করেছে, সে হজ্জ নিয়ে কটূক্তি করেছে, সে কাফনের কাপড় ও জানাজা নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছে। সে হযরত আয়েশা (রাঃ)কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে। তার এসব অশ্রাব্য মন্তব্য আমার পক্ষে লেখা সম্ভব হলো না। সে ছিল স্ব-ঘোষিত একজন নাস্তিক। শুধু সে নয়, তার অন্যান্য সহযোগী ও শাহবাগের মূল ইন্ধনদাতা একই ঘরানার। শাহবাগের কলকাঠি নাড়ছে কমিউনিস্টরা। যারা অধিকাংশ স্ব-ঘোষিত নাস্তিক। এ দেশের তরুণ প্রজন্মের সরলমনা ছেলেমেয়েদের সস্তা আবেগকে তারা ব্যবহার করছে। যদি এ তরুণ তাদের আসল চেহারা জানত তাহলে ঐ নাস্তিকদের দিকে পা মাড়াত না। তাদের মুখোশ উন্মোচনের ভয়ে সরকার রাজীবসহ শাহবাগী নাস্তিকের ব্লগ থেকে মন্তব্যগুলো ইতোমধ্যে মুছে ফেলেছে। কিন্তু এ মুছে ফেলাটা অনেক দেরি হয়ে গেছে। কারণ দৈনিক ইনকিলাবের মাধ্যমে যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে তা ফটোকপি করে এদেশের সাধারণ মানুষ হাজার হাজার কপি গ্রাম বাংলায় ছড়িয়ে দিয়েছে। শাহবাগে ইতোপূর্বে গেছে এ রকম কয়েকজন আমার নিকট দুঃখ প্রকাশ করে বলেছে, সেখানকার নাস্তিকরা আমার প্রিয় রাসূল (সাঃ)কে নিয়ে এ রকম মন্তব্য করেছে তা আগে জানলে আমরা সেখানে যেতাম না। তাদের মন্তব্য আল্লাহ আমাদের ক্ষমতা করবেন তো? এ রকম একজন নাস্তিক যে এ পৃথিবীর ২শ' কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করেছে তাকে এক সময়ের রক্ষিবাহিনীর চিফ কমান্ডার তোফায়েল সাহেব দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
প্রশ্ন হলো- প্রথম শহীদের কুকর্ম, অপকর্ম, নোংরা চরিত্র দেশবাসী পুরোপুরি জানার আগে তার মন্তব্যগুলো সরকার মুছে দিল কেন? তোফায়েলের প্রথম শহীদের চরিত্র দেশবাসী জানতে চায়। জনতার দাবি তার আসল চরিত্র জানার স্বার্থে তার মন্তব্যগুলো প্রতিস্থাপন করা হোক। সে জানাজার নামাজে বিশ্বাসী নয়। কাফন ও জানাজা নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছে অথচ তাকে চার বার জানাজা দেয়া হয়েছে। তার বিশ্বাসের সাথে শাহবাগীরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। অবশ্য জানাজা করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, অধিকাংশ নাকি ওযু ছাড়া নামাজ পড়েছে তাও আবার তিন তাকবিরে। আবার নারী-পুরুষ একইসাথে, একই কাতারে নামাজ পড়েছে। আবার হিন্দুরাও নাকি নামাজে অংশগ্রহণ করেছে। তারা পবিত্র স্থানে নামাজ পড়েনি অর্থাৎ, শাহবাগের যে জায়গায় দীর্ঘদিন অবস্থান করছে সে প্রশ্রাব, পায়খানা, কফ, থু-থু'র জায়গায় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়েছে। সুতরাং এটা তারা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য জানাজা করেছে। এদেশের আমজনতার নিকট আমার প্রশ্ন- শাহবাগী ব্লগাররা আমার রাসূল (সাঃ)কে অপমান করেছে, তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেছে, ইসলামের বিভিন্ন আহকাম নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছে। শাহবাগী আন্দোলনকারীরা তার এই অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করেনি। সুতরাং তারা এটাকে সমর্থন করে। আপনি তাদের এই অপকর্ম কি সমর্থন করবেন? আপনি কি রাসূলের (সাঃ) অপমান মুখ বুজে সমর্থন করবেন? ইসলামের অবমাননা সইবেন? আল্লাহর বিধানের অবমাননা সইবেন? আপনার কোমলমতি সন্তানদেরকে কি এসব নাস্তিকদের খপ্পরে ফেলার জন্য শাহবাগে যেতে দেবেন? শাহবাগকে কেন্দ্র করে দেদারসে চাঁদাবাজি চলছে; যা বিভিন্ন দৈনিকে ছাপা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শাহবাগ কর্মীর বক্তব্য সেখানে নাকি প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার কনডম বিক্রি হয়। নারী-পুরুষ একত্রে রাত্রিযাপন করলে যা হবার তার কোনটাই সেখানে বাদ যায় না। সাধারণ মানুষের বক্তব্য শাহবাগে আল্লাহর গজব অত্যাসন্ন। শাহবাগের আন্দোলনকে কুচক্রীমহল দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন হিসেবে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। ঢাকা শহরে প্রায় দেড় কোটি মানুষের বাস। শাহবাগে কয়জন মানুষ গিয়েছে? এই কয়জন মানুষকে জাতির মতামত হিসেবে চালানোর কোন সুযোগ আছে কি? আলেমদের মতামত হলো- সরকার খাবার, নগদ টাকা, সিকিউরিটি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাসহ সর্বাত্মক সুযোগ দিয়ে যে কয়জন মানুষের যোগাড় করেছে আলেমদের শুধু একত্রিত হওয়ার সুযোগ দিলে এর চেয়ে দশগুণ লোকের সমাগম করা কোন ব্যাপারই না। আলেমদের বক্তব্য, সরকার সুযোগ দিলে দেশবাসীকে আমরা দেখিয়ে দিতে পারতাম। শাহবাগীদের মুখোশ দেশবাসীর কাছে উন্মোচন হয়ে গেছে। দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের সবচেয়ে বড় ইস্যু এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল না হলে দেশে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। অথচ সেটা নিয়ে তাদের কোন কথা নেই। হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে তাদের কোন কথা নেই। ৩৩ লাখ মানুষের ৮৪ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বাজার থেকে লুটের কোন কথা তাদের আন্দোলনে নেই। দুর্নীতির দায়ে আবুলকে বাঁচাতে গিয়ে পদ্মা সেতু বিসর্জন দিয়েছে সরকার, এটা নিয়ে তাদের কোন কথা নেই। ডেসটিনির টাকা লুটপাট করার কথা তাদের মুখে নেই। ছাত্রলীগের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি, চাপাতিবাজি, টেন্ডারবাজির কথা তাদের কণ্ঠে নেই। সুতরাং শাহবাগের নাস্তিক, ব্লগারদের আন্দোলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তরুণ সমাজকে তারা ধোঁকা দিচ্ছে। নাস্তিকদের খপ্পর থেকে দেশবাসী হুঁশিয়ার।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন