বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৪

আমজনতা প্রিয় স্বাধীনতাকেই খুঁজছে


বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের বিষয় এখন দেশীয় পরিম-ল পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সংগঠনটি এসব ঘটনা স্বাধীনভাবে তদন্ত করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের হেফাজতে নেয়া প্রত্যেকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে জনসমক্ষে নির্দেশ দেয়ার দাবি জানিয়েছে। একই সাথে নিরাপত্তা বাহিনীকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনারও আহ্বান জানিয়েছে রাইটস ওয়াচ। গত সোমবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের প্রধান ব্রাড এডামস এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি সংকটের মধ্যে রয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সন্দেহভাজনদের হত্যার ঘটনা ঘটছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধীদলে থাকাকালীন সময়ে একে ক্রসফায়ারে হত্যা বলে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। তবে বর্তমানে ক্ষমতায় থেকে তারা এ বিষয়ে কথা বলছে না। এইসব হত্যার নিন্দা জানিয়ে এখন প্রধানমন্ত্রীর উচিত পাবলিক বিবৃতি দেয়া এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, বর্তমান সময়ে দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক মহল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে যৌক্তিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। গত রোববারও সাতক্ষীরা এবং ঝিনাইদহে যৌথবাহিনীর গুলীতে জামায়াত-শিবিরের তিন নেতা নিহত হয়েছেন। রোববার ভোরে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এবং সাতক্ষীরার দেবহাটায় এসব হত্যাকা- ঘটে। দৈনিক সংগ্রামে মুদ্রিত খবরে আরো বলা হয়, এভাবে প্রায় প্রতিদিনই যৌথ অভিযানের নামে অথবা কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-। এছাড়া প্রতিদিন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মী বিশেষ করে জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে হত্যার পর লাশ কখনো নিভৃত স্থানে ফেলে রাখা হচ্ছে অথবা গুম করা হচ্ছে। এভাবে অব্যাহত বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ে দেশের মানুষ এখন আতঙ্কিত। স্বাভাবিক মৃত্যুর যেন গ্যারান্টি নেই। সরকারের আইন-শৃংখলা বাহিনীর আতঙ্কে গ্রামের পর গ্রাম এখন পুরুষশূন্য। নারীরাও দিন কাটাচ্ছেন আতঙ্কে।
আতঙ্ক সৃষ্টি কোনো দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ হতে পারে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রকৃত কাজ হলো, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। তবে এ কাজে সফল হতে হলে প্রয়োজন অনুরাগ ও বিরাগের দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোনো দল বা জোটের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে বৈরী ও নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করা। কারণ অপরাধ সুনির্দিষ্ট বিষয়, আর সুনির্দিষ্ট বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্টরাই অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। বিরোধী জোটের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চলছে ঢালাওভাবে নিপীড়ন ও নির্মূল অভিযান। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন অভিযানে সরকারি দলের ক্যাডারদেরও যুক্ত হতে দেখা যাচ্ছে। ফলে এমন অভিযানকে এখন পর্যবেক্ষক মহল বিরোধী দল নির্মূলের অভিযান হিসেবে বিবেচনা করছে। জনমনে আরো প্রশ্ন জেগেছে, দেশে তো আইন-আদালত আছে, প্রশাসন আছে তাহলে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় না এনে বিচার-বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হচ্ছে কেন? কোন স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে তো বিচার-বহির্ভূত হত্যাকা- চলতে পারে না। বিচার-বহির্ভূত হত্যাকা-ের লক্ষ্য থাকে প্রতিপক্ষকে নির্মূল করা। এমন কর্মকা-ের মাধ্যমে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা কিংবা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা যায় না। এখানে আরো উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ক্ষমতার প্রতাপ ও হিংসার চেতনা হিংসাকেই ডেকে আনে। এমন চেতনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বিপন্ন করে শুধু। তাই বিষয়টি আজ দেশের রাজনীতিবিদের, বিশেষ করে সরকারকে গুরুত্বের সাথে ভেবে দেখতে হবে।
দেশের রাজনীতি সচেতন ব্যক্তি মাত্রই এখন উপলব্ধি করছেন যে, আমাদের রাজনীতি সঠিকভাবে চলছে না। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থরক্ষার বদলে দলীয় সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছা পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে হতে এখন ক্লান্ত-শ্রান্ত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বদলে সরকারি দলের হুকুম তামিল করতে গিয়ে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে সরকারি দলের লোকজন এখন পুলিশকে কমান্ড করতে এমনকি তাদের ওপর চড়াও হতেও দ্বিধা করছে না। গত ২৬ জানুয়ারি এমন ঘটনা লক্ষ্য করা গেছে সিলেটের বিশ্বনাথ থানায়। এ থানায় কয়েকটি গাড়িসহ ষোল ধরনের মালামাল নিলামকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও যুবলীগের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা-ধাওয়া চলেছে। দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, উক্ত ঘটনায় ওসির কক্ষে হামলা ও ভাংচুর করে যুবলীগ ক্যাডাররা। এ সময় ওসির কক্ষে ম্যাজিস্ট্রেটকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন ঘটনায় প্রশ্ন জাগে, সরকারি দলের ক্যাডাররা ওসির কক্ষে হামলা ও ভাংচুর করে কোন্্ সাহসে? আর ওসির কক্ষে ম্যাজিস্ট্রেটকেই বা তারা অবরুদ্ধ করে রাখে কোন্্ বিবেচনায়? সরকারি দলের ক্যাডাররা কি নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে বলে মনে করে থাকেন? আর তারা কি এমন কোন অভয় বার্তা পেয়ে গেছেন যে, তারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারবেন, আইন তাদের স্পর্শ করবে না? এমন চিত্রে স্পষ্টভাবেই উপলব্ধি করা যায় যে, দেশে আইনের শাসন বর্তমান নেই। একদিকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিচার-বহির্ভূতভাবে হত্যা করার দৃশ্য, আর অপরদিকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর সরকারি দলের ক্যাডারদের চড়াও হওয়ার দৃশ্য। এমন দৃশ্য আমাদের যে বার্তা দেয় তা হলো, দেশে সুশাসন এবং গণতন্ত্র বিপর্যয়ের মুখে। এমন অবস্থায় দেশের জন্য এক অশনি সংকেত। বিষয়টি উপলব্ধি করে সরকার সুশাসন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি আন্তরিকতার প্রমাণ দিলে জনগণ হতাশা থেকে মুক্তি পেতে পারে। কিন্তু তেমন কোন লক্ষণ নেই।
রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি পরিবর্তনেরও কোনো লক্ষণ নেই। আত্মসমালোচনার কোনো উপলব্ধি নেই। চলছে মন্ত্রী-এমপিদের নির্লজ্জ সংবর্ধনার দৌরাত্ম্য। মন্ত্রী-এমপিদের সংবর্ধনা জানাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। গত এক বছর ধরে রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষের কারণে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় ল-ভ-। শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এখন জরুরি হয়ে উঠেছে। কিন্তু বছরের শুরুতে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় মন্ত্রী-এমপিদের সংবর্ধনার নামে আকস্মিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সৌন্দর্য বৃদ্ধির নামে সড়কের দু’পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অথচ আমরা জানি, সংবর্ধনার জন্য রাস্তার পাশে শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখার ব্যাপারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমন কর্মকা- দ-নীয় অপরাধ। অথচ বিরোধী দলবিহীন ও ভোটারবিহীন নির্বাচনে বিজয়ের দামামা বাজাতে সরকারি দলের এমপি ও মন্ত্রীরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলেছেন। এসব মন্ত্রী-এমপিরা আগামীতে দেশ ও জাতির জন্য কি ধরনের কল্যাণ বয়ে আনবেন তা সহজেই অনুমান করা যায়।
গত ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, গতকালও পাবনায় এক মন্ত্রীর সংবর্ধনার জন্য পাঁচ ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয় শিক্ষার্থীদের। এ সময় তাদের সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও দেখা গেছে। দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, দুপুরে আমরা খাইনি, খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি। এরপরেও স্যাররা আমাদের দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। এ ঘটনায় অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা শিশুদের স্কুলে পাঠিয়েছি পড়তে, রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখতে নয়’। প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য যে, মন্ত্রীর সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দলীয় ব্যানারে প্রায় অর্ধশত তোরণ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কেন বেআইনীভাবে রাস্তার দু’পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান জানান, অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ক্ষমতাসীন দলের নেতা, নয়তো সংসদ সদস্য। তাই এলাকায় মন্ত্রী-এমপি এলে প্রধান শিক্ষকদের উপর আগে থেকেই রাজনৈতিকভাবে চাপ দেয়া হয়। তাদের আদেশ অমান্য করলে চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়। এমন চিত্র থেকে সহজেই উপলব্ধি করা যায় যে, ক্ষমতাসীনদের মন-মানসিকতার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। সরকার গঠনের পর তাই আমাদের দেখতে হচ্ছে শিশু অধিকার ও মানবাধিকার বিরোধী এসব কর্মকা-।
দশম সংসদ নির্বাচনে কিভাবে এমপি নির্বাচিত হয়েছে, কিভাবে সরকার গঠিত হয়েছে তা দেশের জনগণ জানে। জনগণের ভোট ছাড়াই যারা কৌশলে এমপি বা মন্ত্রী হয়েছেন, তাদের তো কিছুটা চক্ষুলজ্জা থাকার কথা। এমন একটি প্রশ্নবোধক নির্বাচনের পর তারা কি করে যে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে কৃত্রিম সংবর্ধনা গ্রহণ করেন তা ভাবতে গেলে বিস্মিত হতে হয়! পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, ম্যানেজড নির্বাচনের মতো এসব সংবর্ধনাও ম্যানেজড বিষয়। এসব অপসংস্কৃতি গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে যায় না। গণপ্রতিনিধিরা এসব সংবর্ধনা গ্রহণের মাধ্যমে যেন রাজা-প্রজা ব্যবধান তৈরি করতে চান। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এবার তারা যেভাবে গণপ্রতিনিধি হয়েছেন, তাতে জনগণের ভোটের বালাই তেমন ছিল না। কলাকৌশলের মাধ্যমে নির্বাচিত এসব প্রতিনিধিদের গণসংবর্ধনা না নেয়ার মধ্যেই ভালাই রয়েছে। কারণ ভোটবিহীন নির্বাচনে বিজয়ীদের সংবর্ধনার ঢাক যত জোরে বাজবে তা তত বেশি প্রহসনের মত মনে হবে। তাই সংবর্ধনার এমন ঢাক যত কম বাজবে ততই ভাল। বরং প্রদর্শনমূলক এসব কর্মকা- বাদ দিয়ে এমপি ও মন্ত্রীরা জনগণের কল্যাণে পরিশ্রম করলে, উন্নয়নের কিছু কাজ করলে তাদের লুপ্ত প্রায় ইমেজ কিছুটা হলেও উদ্ধার হতে পারে। আসলে এদেশের যা কিছু উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ঘটেছে তার মূলে রয়েছে পরিশ্রমী জনগণের অবদান। তাই এখন মন্ত্রী-এমপিরা সংবর্ধনার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ ও শিশু কিশোরদের হাজার হাজার কর্মঘণ্টা বিনষ্ট না করে বরং দেশের পরিশ্রমী কর্মবীরদের সংবর্ধনা দিলেই সময়ের দাবি পূরণ হয়। মন্ত্রী-এমপিরা বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।
অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার শিক্ষা দিয়েছিল আমাদের ২১শে ফেব্রুয়ারি। গণতান্ত্রিক বিজয়কে সুরক্ষার চেতনায় সূচিত হয়েছিল আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। মুক্তি সংগ্রামের ফসল আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীন দেশে অন্যায় হবে না এবং গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার পাবে সুরক্ষা- এমন ভাবনায় মানুষ উন্নত জীবন-যাপনের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, স্বাধীনতার ৪২ বছরেও জনতার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। জনগণ না পেয়েছে সুশাসন, না পেয়েছে উন্নত জীবন। তবে কিছু লোক শুধু উন্নত নয়, পেয়ে গেছে অতি উন্নত জীবন। এরা সাধারণ মানুষের ভাষা বোঝে না, তাদের স্বপ্নের খবরও রাখে না। এরা ক্ষমতার ভাষা বোঝে এবং ক্ষমতার বৃত্তেই থাকতে ভালবাসে। ক্ষমতার এই রাজনীতি এখন রাজনৈতিক-দুর্বৃত্তায়নে উপনীত হয়েছে। ফলে ন্যায়ের বদলে অন্যায়ের বিকাশ ঘটছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও আজ বিপর্যয়ের মুখে। বিরোধীদল বিহীন ও ভোটারবিহীন নির্বাচন হয় দেশে। এরপরও মন্ত্রী-এমপিরা আনন্দে গদগদ হয়ে গলায় কৃত্রিম সংবর্ধনার মালা পরছেন। একই সাথে চলছে বিরোধীদল নির্মূলের অভিযান। এমন প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। দেশের এমন পরিস্থিতিতে ৪২ বছর পরও আমজনতা এখন প্রিয় স্বাধীনতাকেই খুঁজছে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads