শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৩

ঘরের কথা বাইরে কেন? বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম জাতিসঙ্ঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা জাতিসঙ্ঘে টেনে নিয়েছেন। সেখানে একপর্যায়ে বলেছেন, দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে তিনি প্রস্তুত। জানি না সারা জীবনে দেশের জন্য তিনি কী ত্যাগ করেছেন? দেশের মানুষ কেউ তার অধীনে নির্বাচন চায় না, তা আওয়ামী লীগসহ বিশ্বজোড়া সবাই জানে। তার পরও বায়না ধরেছেন, তার নেতৃত্বেই নির্বাচন হবে। দেশ স্বাধীন করে বাংলাদেশের মানুষের যেন দায় পড়েছে তার অধীনে নির্বাচন করতে। নির্বাচনের সময় তিনি কি নিরপে থাকবেন? কারো পে ভোট চাইবেন না? অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাইলে সরকারপ্রধানের তো কারো প-েবিপে যাওয়ার পথ নেই। সরকারপ্রধান থাকলে তিনি কি নির্বাচন করবেন না, তার দল কি ভোটে দাঁড়াবে না? দারোগা, পুলিশ, এসএসএফ থাকবে না? বিরোধীদের চোরচোট্টা বলে তিনি কী করে নিরপে নির্বাচন করবেন? গ্রামের মাতাব্বরদের কেউ যদি মানতে না চায় তা হলে সেও গ্রাম্যসালিসে মাতাব্বরি করে না। কোনো খেলায় কোনো কাইণ্ঠা লোককে কেউ রেফারি মানতে না চাইলে সেও রেফারি থাকে না, নিজে থেকেই সরে দাঁড়ায়। একটা জাতীয় নির্বাচন, বিপুলসংখ্যক মানুষ তাকে নির্বাচনের সময় সরকারপ্রধান হিসেবে দেখতে চায় না, তার পরও তিনিই থাকবেন। কী পরিমাণ দেশপ্রেমিক, কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত, যাকে কেউ চায় না। দেশের শান্তির জন্য সরে দাঁড়াবেন তাও তিনি পারেন না, তিনি কী আর ত্যাগ স্বীকার করবেন? কিছু দিন আগে দলীয় কর্মীদের ডেকে বলেছিলেন, প্রার্থী যদি পছন্দ নাও হয়, তা দেখার কোনো প্রয়োজন নেই; আপনারা মার্কা দেখে ভোট দেবেন। তোমার মেয়ের এসব কথার জবাব আমাদের দিতে হয়নি। তোমার নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় সাথে সাথে দিয়ে দিয়েছে। সে বলেছে, কোনো মার্কা-টার্কা নয়, প্রার্থীর যোগ্যতা দেখে ভোট দেবেন। আগে শুনেছিলাম, শিল-পাটায় ঘষাঘষি, মরিচের জান য়। এখন তুমিই দেখো, মায় পুতে ঠেলাঠেলিÑ দেখা যাক এ যাত্রায় কী হয়? মনে হয় এখনো পুরোপুরি ভুলে যাওনি ২৪ জানুয়ারি ১৯৭২-এ টাঙ্গাইলে অস্ত্র নিতে গিয়ে শিবনাথ স্কুল মাঠে সুসজ্জিত কাদেরিয়া বাহিনীর সালাম গ্রহণ করে বিন্দুবাসিনী স্কুল মাঠে তিন হাজার যোদ্ধা আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র দেয়ার পর আমি তোমার পদতলে অস্ত্র রেখেছিলাম, তা তুলে নিয়ে বলেছিলে, ‘কাদেরকে আমি জন্মের পর থেকে চিনি। মুক্তিযোদ্ধারা তোমরা কোনো সরকারি কর্মচারী সম্পর্কে যখন বলবা এরা ভালো না, ঘুষ খায়; তখন আমি তাকে বলে দেবোÑ Your service no longer requiredসেখান থেকে টাঙ্গাইল পুলিশ প্যারেড ময়দানে কয়েক হাজার ছোট ছোট ভবিষ্যৎ বাহিনীর সালাম নিয়েছিলে। পিতার মতো, দাদুর মতো বলেছিলে, ‘কাদের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে পাকিস্তান হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। আবার যদি কোনো দিন বাঙালির ওপর কেউ আক্রমণ করে তোমরা বড় হয়ে যুদ্ধ করবা না?’ সমস্বরে সবাই চিৎকার করে উঠেছিল, করব করব। তুমি জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে বলেছিলে, বড় হয়ে প্রয়োজন পড়লে তোমরা দেশের জন্য যুদ্ধ করবা। এরপর ওয়াপদার ডাকবাংলোয় গিয়েছিলে। যেখানে কয়েক বছর ছিলাম। তখন তো এখনকার মতো ভালো গাড়ি-ঘোড়া ছিল না। তোমার কোটে অনেক ধুলো লেগেছিল। বেলা সাড়ে এগারো-বারোটার দিকে তুমি যখন গোসল করছিলে, তখন কোট ব্রাশ করার জন্য ড. নুরুন্নবীর গায়ে দিয়েছিলাম। অবাক হয়েছিলাম, তোমার কোট নুরুন্নবীর হাঁটু পর্যন্ত পড়েছিল। আমার প্রিয় ভাগিনি দুলাল-শাহানার চার-পাঁচ বছরের মেয়ে ইয়ামনি এক দিন আমার কোট গায়ে দিলে একেবারে নুরুন্নবীর সেই ছবি আমার মানসপটে ভেসে উঠেছিল। শৃঙ্খলাবদ্ধ যোদ্ধাদের এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র দেখে তোমার কী মনে হয়েছিল জানি না, কিন্তু গোসল সেরে কাপড়চোপড় পরে দুটো কথা তুমি আমায় বলেছিলেÑ এক. ইংল্যান্ডের কী এক রাজকীয় অ্যাকাডেমিতে আমার কোর্স করে আসা এবং আমার বাহিনীর লোকজন নিয়ে একটি বিশেষ বাহিনী তৈরি করা। আমি ওসব নিয়ে সেই দিন কিছু ভাবিনি। শত গুজবের মধ্যে তুমি টাঙ্গাইল গিয়েছিলে। সব কিছু কিভাবে কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সে দিকেই ছিল আমার ধ্যান-জ্ঞান। মুক্তিযুদ্ধের পর যোদ্ধাদের কাছ থেকে তেমন অনুযোগ-অভিযোগ শুনিনি। কিন্তু তোমার টাঙ্গাইল সফর নিয়ে একটা অভিযোগ অবশ্যই শুনিছিÑ তা ছিল, দায়িত্ব পালনের কারণে সব মুক্তিযোদ্ধা শিবনাথ স্কুলে গার্ড অব অনার, বিন্দুবাসিনী স্কুল মাঠে অস্ত্রদান, সবশেষ টাঙ্গাইল পার্ক ময়দানে ১০-১২ লাখ জনতার সভা তারা দেখতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধাদের ডিউটি করতে করতেই দিন চলে যায়। সেই দিন অনেক মুক্তিযোদ্ধা দুপুরে ভালো করে খেতেও পারেনি। শত্রর কোনো শেষ ছিল না। প্রায় ১২-১৫ হাজার রাজাকার, আলবদর, আলশামস হয়েছিল টাঙ্গাইল-জামালপুরে। শান্তি কমিটির মুসলিম লিগাররা ছিল ভীষণ শক্তিশালী এবং সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। সব দিক সামাল দিতে কিছুটা তো কষ্ট করতেই হয়েছে। আওয়ামী লীগের সবাই পালিয়ে ভারতে যাওয়ায় তারা তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে দেশে ফিরেই মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লেগেছিলেন। সেখানে তাদের সুবিধা ছিল খন্দকার বাতেনের ৭০-৮০ জনের মুজিব বাহিনী নামে একটা দল ছিল। যাদের হাতে অস্ত্র ছিল, রাজাকারদেরও কারো কারো হাতে অস্ত্র ছিল। তাই টাঙ্গাইলের অনুষ্ঠানের সময় রাস্তার পাশে পতাকা লাগানোর সুতা যাতে না ছিঁড়ে, কোথাও একটা রিকশার চাকাও যাতে না ফাটে সেই দিকে সতর্ক থাকতে হয়েছিল। তাই কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা স্বাধীনতার পর তোমার নিরাপত্তা, তোমার সম্মানের জন্য ২৪ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে আরেকটা সফল যুদ্ধ করেছিল। এখন দেখছি মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা, একবাক্যে তোমার হাতে সব অস্ত্র তুলে দেয়া, নিরাপদে তোমার টাঙ্গাইল সফরÑ এসব কোনো কিছুই কোনো কাজে আসেনি। তুমি যে দিন টাঙ্গাইল গিয়েছিলে, সেই দিন প্রায় ৩০ হাজার যোদ্ধার হাতে গুলিসহ অস্ত্র তুলে দেয়া হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের প্রত্য যোদ্ধা ছিল ১৮ হাজার, ৭২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। অনেক েেত্র স্বেচ্ছাসেবকেরাও ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে চৌকস। টাঙ্গাইলে এখন ১০৪টি ইউনিয়ন। তখন ছিল ৮০টি। ময়মনসিংহ-জামালপুর-সিরাজগঞ্জ-মানিকগঞ্জ, ঢাকার কিছু অংশ মিলে আরো প্রায় ১২৫-১৩০টি ইউনিয়ন আমাদের অধীনে ছিল। প্রতি ইউনিয়নে ৪০০ থেকে ৫০০ সহযোগী যোদ্ধা বা স্বেচ্ছাসেবক ছিল। কোনো কোনো ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা হাজার পার হয়ে গিয়েছিল। আরো ছয় মাস যুদ্ধ হলে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ স্বেচ্ছাসেবকের তালিকা থাকত। প্রত্য মুক্তিযোদ্ধা হতো ৩০-৩৫ হাজার। ২৪ জানুয়ারি তুমি টাঙ্গাইল গিয়েছিলে। সেই দিন যদি কোথাও একটা গুলি চলত, একটা গ্রেনেড ফুটত; তা হলে কি কেউ আমাকে ভালো বলত, মাফ করত? তুমি যে দিন টাঙ্গাইল গিয়েছিলে কর্কশ সুরে একটা কাকও ডাকতে পারেনি। তার পরও তোমার মেয়ের দল রাজাকার বগলে নিয়ে আমায় রাজাকার বলে গালাগাল করে। যে শহীদকে রী বাহিনী গঠন করতে পাঠিয়েছিলাম, সেই শহীদ এখন বই লেখে। যারা তোমাকে রা করতে পারেনি, তারা এখন মিথ্যে বাহাদুরিতে গা ভাসাতে চায়। কর্নেল জামিলকে এক ব্রিগেড সৈন্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি ও রাষ্ট্রের হেফাজতের দায়িত্ব দিয়েছিলে। সে একটি গুলিও ছোড়েনি, একজন সৈন্যকে মুভ করতে পারেনি। ঘুম থেকে উঠে কাতুর কুতুর করে গিয়ে গুলি খেয়ে মরে হিরো সেজেছে। ঠিক তেমনি ২৪-২৫ হাজার রী বাহিনী থাকতেও আনোয়ার উল আলম শহীদ ও সরোয়ার মোল্লা সবার আগে গিয়ে খুনিদের সমর্থন জানিয়েছিল। এখন বলছে রী বাহিনীর গোলাবারুদ নাকি পিলখানায় বিডিআরদের কাছে জমা ছিল। যে বাহিনী নিজের অস্ত্রের হেফাজত করতে পারে না, অন্যের কাছে জমা রাখে; সেই বাহিনী এবং বাহিনীর নেতারা আইনশৃঙ্খলার কী হেফাজত করবে? রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের জন্য কী কাজে আসবে? এখন নিশ্চয়ই ভেবে দেখার সময় এসেছে। ২৩ সেপ্টেম্বর বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীকে নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম। লেখাটি যে পাঠকের এতটা চোখে পড়বে তা ভাবিনি। আর লেখা নিয়ে পাঠকদের এত আগ্রহ আগে বুঝতে পারিনি। ভালো-মন্দ মিশিয়ে দারুণ অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন অনেকে। কারো কারো ােভ বড় ভাই আপনাকে রাজাকার বলে অমন সাঙ্ঘাতিক গালি দিয়েছে, তার পরও তার পে লিখছেন? আসলে আমি কখন কার প-েবিপে লিখলাম? আমার তো মনে হয় না এখন পর্যন্ত আমি কারো প-েবিপে লিখেছি। যখন যা ঘটেছে, শুধু তাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি; সেই সত্য কারো-না-কারো প-েবিপে তো যাবেই সেখানে আমার কী করার আছে। দয়াময় প্রভু বলেছেন, ‘আমি অতীত বদলে দিতে পারি না। কী মারাত্মক কথা স্বয়ং দয়াময় আল্লাহ যা পারেন না তা আমার বদলানোর কোনো উপায় আছে? আমরা তো নিমিত্ত মাত্র ভুল-শুদ্ধ যখন যাই ঘটুক বদলাব কী করে? বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী যদি আমার প্রশংসা করতেন তা হলে কি এ লেখা ঠিক হতো? কেন যেন আমার বিবেচনা তা বলে না, বরং সেটিই আমার বিচারে মর্যাদার হতো না। আমি তো কারো প-েবিপে কিছু বলছি না, যা ঘটেছে তাই বলছি। কেউ কেউ মনে করতে পারেন কোনো দলিল দস্তাবেজ নেই, সাী প্রমাণ নেই; তাই ইচ্ছামতো সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলা যাবে। দুনিয়ায় হয়তো যেতেও পারে, কিন্তু দয়াল প্রভু? তিনি তো সব দেখেন ও শোনেন, তার ব্যাপারটা কী হবে? মিথ্যাকে সত্য বা সত্যকে গোপন করতে গিয়ে পাপী হতে যাবো কেন? তবে হ্যাঁ, প্রত্যেকের নিজের দিক থেকে দেখায় স্বাভাবিক পার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু নিজেকে জাহির করার জন্য যা করেনি, করার মতো ছিল না; সেসব বললে অবশ্যই তো গোনাহর কাজ হয়। এখানেই জনাব শহীদ বড় বেশি ঘোর অপরাধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ অখ্যাত জনাব শহীদকে বিখ্যাত করেছে সেই মুক্তিযুদ্ধকে আড়াল করেছেন তিনি। লতিফ সিদ্দিকীর হাত ধরে রাজনীতিতে এসে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যে মর্যাদা পেয়েছেন, তার সবটুকু না হলেও লতিফ সিদ্দিকীর প্রিয় বলে কিছুটা তো পেয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা ও লতিফ সিদ্দিকীর কর্মী হিসেবে পরিচিতি না থাকলে হয়তো কোন কমান্ডারের অধীনে প্রথম সাধারণ যোদ্ধা হতেন। সেখানে যোগ্যতা দেখাতে পারলে হয়তো ভালো যোদ্ধা বা কমান্ডারও হতে পারতেন। কাদেরিয়া বাহিনীতে তিনিই শুধু এমএ পড়া ছাত্র ছিলেন না। আরো অনেক এমএ পাস যোদ্ধা ছিল, অধ্য ছিল। সরকারি কর্মকর্তা ছিল। লতিফ সিদ্দিকীকে ঘায়েল করা লেখাটিতে ল করলাম মুক্তিযুদ্ধে ড. নুরুন্নবী রী বাহিনীতে সরোয়ার মোল্লা ছাড়া কারো সম্পর্কে কোনো কথা নেই। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর তার সিদ্ধান্তহীনতা এত বছর পরও যেভাবে ফুটে উঠেছে, তাতে সত্যি এসব নিমুরাদদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে তোমার মরণ ছাড়া উপায় ছিল না। তিনি তার পরিচালক নুরুজ্জামানের কথা যতবার বলেছেন বা লিখেছেন, অতবার আল্লাহ রাসূলের নাম নিলে হয়তো আল্লাহর দয়ায় বর্তে যেতেও পারতেন। তার লেখা থেকে বোঝা যায়, মাথার ওপর ছায়া না থাকলে এমন বীরদের কোনো বীরত্ব থাকে না মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরও তেমন প্রমাণ হয়েছে। যাদের বাড়ি দখলের কথা হয়েছিল, তাদের মধ্যে আবুল হাসান চৌধুরী ওসব মিথ্যার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এক সময় আমাদের দুই পরিবারে বেশ টানাপড়েন ছিল। চৌধুরীরা সব সময় করতেন মুসলিম লীগ, আমরা করতাম শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ। পাকিস্তানে আবু সাঈদ চৌধুরীর সাথে আমাদের অবশ্যই রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। কিন্তু তার পরও সামাজিক সৌহার্দ্যরে কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু যে সময়ের কথা বলছেন, তখন আমরা পারিবারিকভাবে এক আত্মা, এক প্রাণ ছিলাম। ঠিক বুঝতে পারছি না কেন এ সময় তাকে এমন বই লিখতে হলো কার ফরমায়েশে? এক দিকে মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী অন্য দিকে হাসান চৌধুরী। পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারিতে এত দিন শুনতাম হাসান-হোসেন, এখন দেখছি হোসেনের কোনো খবর নেই সব দোষ হাসানের। কেন তা হবে? হাসান কি মন্ত্রী ছিলেন? তিনি কি কন্ট্রাক্টর ছিলেন? তিনি কন্ট্রাক্টরিকে নিয়ে মন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন, তাতে কী হয়েছে? আমাদের দেশে পরিচিত লোক ধরেই তো সব সময় মতাবানদের কাছে যেতে হয়। এখন দেখছি উপদেষ্টা মশিউর রহমান বা অন্যান্য আত্মীয়স্বজন সব বাদ। বাদি এখন আসামি, কী মারাত্মক ব্যাপার! আমাদের সভ্যতায় কাউকে কোনো সহযোগিতা করা কোনো দোষ নয়, বরং এটি একটি মস্ত গুণ। এমন যারা করে তাদের পরোপকারী বলে। হাসান কি হোসেনকে কোনো টাকা-পয়সা দিয়েছিল বা দেয়ার ওয়াদা করেছিল? হোসেন বাদ কেন? যাকে নিয়ে কথিত দুর্নীতির সূচনা, তারই নাম নেই, এখানে হাসান আসে কী করেÑ জনমনে এমন প্রশ্ন আসতেই পারে? নাকি ওটাও একটি ভালো মানুষের চরিত্র হরণের চেষ্টা। কোনো এক বিদেশী ড. ইউনূসকে নিয়ে নরওয়েতে দুর্নীতির গল্প ফেঁদেছিলেন। এখন সেসবের কোনো আলাপ নেই এখন আলাপ গ্রামীণ ব্যাংক দখল নিয়ে। ব্যাপারটি তেমন নয় তো?


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads