রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৩

সর্বদলীয় সরকার নামের নয়া ফাঁদ


দলবাজ সরকারগুলো সব সময় মনে করে দেশের সাধারণ মানুষ রাজনীতির কূটকচাল তত বোঝে না। তাই এ ধরনের সরকারগুলো ক্ষমতায় থাকার সময় নানা ধরনের চালাকির মাধ্যমে এমন সব পদক্ষেপ নেয়, যা দিয়ে এরা মনে করে জনগণকে বোকা বানানো সম্ভব। এসব কূটকচাল চালিয়ে এরা কার্যত ক্ষমতায় টিকে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করে। কারণ, দেশের সাধারণ মানুষ এতটা বোকা নয়। এরা ঠিকই বুঝে নেয় কোন পদক্ষেপটির সাথে সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য জড়িত। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান জোট সরকারের কথাই যদি ধরি, তবে দেখা যাবে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে নানা অজুহাতে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের ঘটনার সাথে সরকারের চরম অসৎ উদ্দেশ্য গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট। এর মাধ্যমে সরকার স্বপ্ন দেখেছে দলীয় সরকারের অধীনে যেনতেন একটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার। সেজন্য সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন থেকে শুরু করে বিচার ব্যবস্থায়ও চরম দলীয়করণের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চালিয়েছে চরম অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক দমন-পীড়ন। নানা ধরনের মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে সরকার বিরোধীদের কারাগারে পাঠিয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালিয়েছে। হত্যা, গুম ও অপহরণের মতো ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। ভিন্নমতের সংবাদপত্র, অন্যান্য গণমাধ্যম ও টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে সরকারের অপকর্মের কোনো খবরাখবর ও সমালোচনা জনগণের কানে না পৌঁছতে পারে। কিন্তু জনগণ সরকারের এসব কর্মকাণ্ডকে কোনোমতেই ভালো চোখে দেখছে না। কারণ, এরা ভালো করেই বোঝে, কেন ১৭৩ দিন হরতাল ও জানমালের ক্ষতি করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনল যে আওয়ামী লীগ; আজ কেন প্রবল জনমতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নানা কূটকৌশলে সেই আওয়ামী লীগ নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা সংবিধান থেকে তাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশের সুশীলসমাজ, সব বিরোধী দল ও দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ যেখানে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিরোধিতা করছে, সেখানে কেন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়ে এ সরকার দেশের মানুষকে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। জনগণের বুঝতে অসুবিধা হয় নাÑ সরকার এর মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে থেকে দেশে আবার একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়। সরকার জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) কাটাছেঁড়া করছে দলীয় স্বার্থকে মাথায় রেখে। জাতীয় সংসদের নির্বাচনী আসনের সীমানা যথেচ্ছ বদলানো হয়েছে একতরফাভাবে নির্বাচনের ফল দলের পক্ষে টানার জন্য। এ সম্পর্কিত কোনো আপত্তি আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। আমাদের আরপিও-তে নির্বাচনী অসদাচরণের জন্য প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা আগে দেয়া ছিল নির্বাচন কমিশনের হাতে। নির্বাচন কমিশনকে প্ররোচিত করে এই ক্ষমতা আদালতের হাতে ন্যস্ত করার চেষ্টা চলেছে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে। প্রবল সমালোচনার মুখে তা করা থেকে বিরত হতে বাধ্য হয় নির্বাচন কমিশন। যেখানে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার কথা, সেখানে নির্বাচন কমিশন নিজে প্রস্তাব দেয় নিজের অর্জিত ক্ষমতা আদালতের হাতে ছেড়ে দিতেÑ কেন এই বৈপরীত্য, তা বোঝা কঠিন কিছু নয়। প্রধান বিরোধী দলকে ভাঙার অপচেষ্টা হিসেবে নাম-নিশানাহীন বিএনএফ (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্ট) নামের দলকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নিবন্ধন দেয়ার উদ্দেশ্য যে মহৎ নয়, সেটুকু বোঝার ক্ষমতা রাখে এ দেশের সাধারণ মানুষ। তাই এর প্রতিবাদ এসেছে। এর পরও নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে বিএনএফ এখন একটি নিবন্ধিত দল। একতরফা নির্বাচন হলে তা বিএনপির বিরুদ্ধে একটি মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিএনপিতে ভাঙন সৃষ্টির অপপ্রয়াস চলবে, এটা নিশ্চিত। অতি সম্প্রতি ুদ্র দলীয় স্বার্থে বিরোধী দল ভেঙে একদলীয় নির্বাচনের পথকে সুগম করার আরেকটি অপকৌশলের সূচনা করেছে এ সরকার। এ জন্য সরকার আরপিও আবার সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। সংসদ নির্বাচনে কেউ কোনো দল থেকে প্রার্থী হতে চাইলে তাকে সংশ্লিষ্ট দলে অন্তত তিন বছর সদস্যপদ থাকতে হবে। এর ফলে যে কেউ কোনো দল থেকে এসে সাথে সাথে অন্য দলে যোগ দিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এখন আরপিও সংশোধন করে এই বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়া হচ্ছে। আরপিও থেকে এই বিধান তুলে দিয়ে বিল চূড়ান্ত করেছে সরকার। বলার অপেক্ষা রাখে না, বিলটি পাস হলে আগামী সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের নেতাদের জন্য দলবদলের সুযোগ তৈরি হবে এবং এর বাইরে যেকোনো টাকাওয়ালা লোক টাকার খেলা খেলে যখন তখন যেকোনো দলে যোগ দিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন অবলীলায়। এতে যেমন প্রকৃত রাজনীতিবিদেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তেমনি চলবে হর্স ট্রেডিং, যা সামগ্রিক সুষ্ঠু রাজনীতিকে ব্যাহত করবে। উল্লেখ্য, গত ২৪ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আরপিও সংশোধনের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উল্লেখ্য, বর্তমান আরপিওর ১২/জে ধারায় প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা সম্পর্কে বলা আছে, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন থেকে পূর্ববর্তী তিন বছরে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলে নিরবচ্ছিন্ন সদস্যপদ না থাকলে কোনো ব্যক্তি দলের প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। তবে নতুন নিবন্ধিত দলের প্রার্থীদের বেলায় এ বিধান প্রযোজ্য নয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আরপিও সংশোধন করে এই বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়, পরে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইনটি বর্তমান সরকারের আমলে সংসদে অনুমোদন পায়। কিন্তু গত ২৪ অক্টোবর সংসদীয় কমিটি আরপিও থেকে এই বিধান বাদ দেয়ার সুপারিশ করে বিল তৈরি করে। চলতি অধিবেশনেই বিলটি পাস হতে পারে। আরপিওতে বিদ্যমান বিধানটির একটি ভালো দিক ছিল, এ বিধানের ফলে নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের দল বদলের কোনো সুযোগ ছিল না। কিংবা বলা যায় দল ভাঙানোর অপপ্রয়াসের কোনো সুযোগ ছিল না। এই বিধান বাতিল হলে দল ভাঙানোর পথটিই আবার খুলে যাবে। বর্তমান বিরোধী দল দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না গেলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাগিয়ে এনে নির্বাচন করার দুঃস্বপ্ন থেকেই সরকারের এই অপ-উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেয়া তার ভাষণে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এখানে রয়েছে সরকার পক্ষের এক গভীর কূটকৌশল। এ ধরনের সর্বদলীয় সরকার গঠন করে নির্বাচন সম্পন্ন করে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে বিরোধী দলকে বোকা বানানোর একটি ফাঁদ পেতেছে বর্তমান সরকার। এখন পর্যন্ত বলা হচ্ছে, সরকারি ও বিরোধী দল থেকে সংসদ সদস্য নিয়ে একটি নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। আর এর প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে। শেখ হাসিনা নিজে যেখানে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, সেখানে মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা নস্যি, সাক্ষীগোপাল ছাড়া বৈ কিছুই হবেন না। এ ধরনের সর্বদলীয় সরকারের নির্বাচন হবে তেমন, শেখ হাসিনা চাইবেন যেমন। তখন দলীয়করণ করা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তার ইচ্ছার নির্বাচন নির্বিঘেœ করতে কোনো অসুবিধা হবে না। তা তিনি করতে সক্ষম হলে তার পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকার পথও খুলে যাবে। তখন তার দল জয়ী হলে সবাইকে বলবেন, তিনি সর্বদলীয় একটি সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। অতএব নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, এমনটি বলার কোনো সুযোগ বিরোধী দলের থাকবে না। কিন্তু শেখ হাসিনার বোঝা উচিত তার প্রস্তাবিত সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট নিজের কবর নিজেই খোঁড়ার মতো বোকামি যে করবে, এতটা বোকা বোধ হয় খালেদা জিয়াকে ভাবা ঠিক হবে না। বেগম জিয়া ভালো করেই বোঝেন, শেখ হাসিনার প্রস্তাবিত সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার অপর অর্থ শেখ হাসিনার হাতে ব্লাংক চেক তুলে দেয়া। তা ছাড়া প্রস্তাবিত এই সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভায় তার নিজ দল বা জোট থেকে প্রতিনিধি পাঠানোর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জোটে সন্তোষ-অসন্তোষের বিষয়টি মাথাচাড়া দেবে। শুরু হবে জোটের মধ্যে এক ধরনের মানসিক বিভাজন। বেগম জিয়া কোন দুঃখে এ কাজটি করতে যাবেন? আরেকটি বিষয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ দাবিটি যে এরই মধ্যে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি বড় ধরনের জনদাবিতে পরিণত হয়েছে, তা বোঝার ক্ষমতাও বিরোধীদলীয় নেত্রী রাখেন। বিএনপির নীতি-আদর্শ সমর্থন করে না, এমন জাতীয় দৈনিকের জনমত জরিপেও দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ চায় আগামী জাতীয় নির্বাচন হোক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এ দেশের সুশীলসমাজ, সব বিরোধী দল, বাম মতাবলম্বী দলগুলোÑ এরা সবাই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। অতএব বিএনপি কেন সে জনদাবির পথ ছেড়ে আওয়ামী ফাঁদে পা দেবে? সরকার পক্ষ প্রস্তাবিত তথাকথিত সর্বদলীয় সরকারের অধীনে কেন নির্বাচনে যাবে? বর্তমান সরকারের নেতানেত্রীদের মুখে একটাই কথাÑ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়, বিএনপি ক্ষমতা এলে দেশ পেছনে যায়। এ সরকার এবার ক্ষমতায় এসে সম্পন্ন করেছে শুধু উন্নয়ন আর উন্নয়ন। যদি তাই হয়, তবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে ভয় কিসে? এ সরকারই তো জোরগলায় বলে, এরা সংবিধান সংশোধন করে কোনো অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পথ চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে। অতএব আর ভয় কিসে? নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করলে অসুবিধা থাকার কথা নয়। যে সরকার উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে, সে সরকারের পক্ষেই জনগণ ভোট দেবে। আসলে ভয়টা কোথায়, এরা নিজেরা ঠিকই জানেন; কিন্তু মুখে আনেন না। মুখে আনলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি অর্থহীন হয়ে যাবে সাধারণ মানুষের কাছে। গত পরশু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তখন তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে আজ সন্ধ্যায় গণভবনে আলোচনায় বসার দাওয়াত দিয়েছিলেন বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধান প্রশ্নে সমঝোতায় পৌঁছার জন্য। বলা হয়েছে, তিনি ১৮ দলীয় জোটকে দাওয়াত দেননি, দাওয়াত দিয়েছেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি ১৮ দলীয় জোটের। সেখানে ১৮ দলীয় জোট নেত্রী হিসেবে বেগম জিয়াকে দাওয়াত না দিয়ে তাকে শুধু বিএনপি নেত্রী হিসেবে দাওয়াত দেয়ার মধ্যে সরকারি দলের একটা চালাকি রয়েছে। এর মাধ্যমে ১৮ দলের মধ্যে একটা বিভাজন সৃষ্টির সূক্ষ্ম কূটকচাল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার ফোনালাপে বলেছেন, বেগম জিয়াকে হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে গণভবনে আলোচনায় বসতে। সরকার পক্ষ ভেবেছিল বেগম জিয়া তৎক্ষণাৎ তিন দিনের হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া গণভবনের আলোচনার দাওয়াত গ্রহণ করবেন। কিন্তু বেগম জিয়া এর যৌক্তিক জবাবই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যেহেতু পরদিনই হরতাল এবং হরতালটি আহ্বান করা হয়েছে ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে, অতএব এককভাবে এ হরতাল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। তবে পরবর্তী কোনো সময় প্রধানমন্ত্রী চাইলে আলোচনায় তিনি যাবেন ১৮ দলীয় জোট নেতাদের সাথে কথা বলে। বেগম জিয়া যদি প্রধানমন্ত্রীর কথামতো এককভাবে হরতাল প্রত্যাহার করে পরদিনই বিএনপি নেত্রী হিসেবে গণভবনে আলোচনার দাওয়াত গ্রহণ করতেন, তবে ১৮ দলীয় জোটে বড় ধরনের অসন্তোষ দেখা দিত। এমনকি তাতে ভাঙন সৃষ্টি হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকত না। অতএব বেগম জিয়া প্রজ্ঞার সাথেই এ দাওয়াতি ফাঁদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছেন বলতে হবে। সাধারণ মানুষ মনে করে, পরে প্রধানমন্ত্রী চাইলে এ আলোচনার জন্য আবার বেগম জিয়াকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। আসলে সঙ্কট সমাধানের জন্য আর মাত্র সামান্য কটা দিন আমাদের হাতে। এখন যদি আমরা মতলবি কূটকচাল ছেড়ে আলোচনা ও সমঝোতার ব্যাপারে আন্তরিক প্রস্তাব বা উদ্যোগ না নিই, তবে এ সঙ্কট সমাধান হবে না; জাতি মুখোমুখি হবে অনিবার্য এক সঙ্ঘাতের। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গণতন্ত্র। জাতিকে গুনতে হবে অপূরণীয় ক্ষতি।


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads