শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৩

আল্লাহ তোমার দ্বীনের বিজয় পতাকা তুলে দাও ওদের হাতে


ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের বিরুদ্ধে খোদাদ্রোহী শক্তির চতুর্মুখী চক্রান্ত ষড়যন্ত্র চলে আসছে আবহমানকাল থেকেই। জেল-জুলুম ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পাশাপাশি এ ষড়যন্ত্রের অন্যতম শক্তিশালী দিক হলো তথ্য সন্ত্রাস বা মিডিয়ার একাংশের পক্ষ থেকে কোনো ইসলামী সংগঠনের অভ্যন্তরে চিন্তার বিভ্রান্তি সৃষ্টির চাতুর্যপূর্ণ কূটকৌশল। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম সুসংগঠিত সুশৃঙ্খল ও গণতান্ত্রিক ধারায় পরিচালিত সংগঠন ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র বিরুদ্ধে ঐ একই কৌশল অবলম্বন করে আসছে ইসলামী আদর্শের প্রতিপক্ষ শক্তি। এ সংগঠনের মধ্যে নবীন-প্রবীণ-এর মধ্যে কৃত্রিম ও কাল্পনিক মতবিরোধ আবিষ্কার করে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেয়া। মিডিয়ার একাংশ এটাকে তাদের মিশন হিসেবে নিয়েছে বলেই মনে হয়।
তথাকথিত ১/১১-এর ঘটনাটি ঘটানোর নেপথ্যের শক্তির টার্গেট ছিল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার সাথে সাথেই আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী দেশ ভারতের পক্ষ থেকে ‘টিপাই মুখ বাঁধ’ দেবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের পানি ও পরিবেশ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে এটাকে ফারাক্কার চেয়েও মারাত্মক ক্ষতিকর বলে অভিহিত করা হয়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ভারতের এই সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর মনে করে এর বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও খুলনায় পাঁচটি সফল মহাসমাবেশ আয়োজিত হয়। আর এর পর থেকেই শুরু হয় সারা দেশব্যাপী জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনী অভিযান। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বর্তমান অবস্থা তারই ধারাবাহিকতা বৈ আর কিছু নয়।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন স্বাধীনতা যুদ্ধে রূপ নেয় নির্বাচনের রায়কে উপেক্ষা করে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলকে সরকার গঠনের এবং ক্ষমতা গ্রহণের সুযোগ না দেয়ার ফলে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পরের দিন থেকে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলকে সরকার গঠনের সুযোগ দানের জন্যে দাবি অব্যাহত রাখে। জুলফিকার আলী ভুট্টো সাহেবের অযৌক্তিক ভূমিকার কারণেই সামরিক সরকারের সাথে আওয়ামী লীগের সংলাপ ব্যর্থ হয় এবং সামরিক সরকার ভুট্টোর প্ররোচণায় বল প্রয়োগ এবং গণহত্যার পক্ষ বেছে নিয়ে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরিণত করে ইতিহাসে চরম অপরিণামদর্শীর পরিচয় দেয় এবং নিজেরাই ইসলামের অর্জিত পাকিস্তান নামক দেশটির সর্বনাশ ঘটায়।
সেই পরিস্থিতিতে যারা ভারতে যাওয়া পছন্দ করতে পারেনি তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে পাকিস্তানের অখ-ত্বের পক্ষ নিতে বাধ্য হয়। এই ব্যাপারে আজকের দিনে শুধু জামায়াতে ইসলামীকে দায়ী করে এর প্রথম সারির নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও বিতর্কিত ও অস্বচ্ছ বিচারের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদী ভূমিকা রাখছে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে। ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় সারির নেতারা প্রায় সবাই জেলে অথবা আত্মগোপনে। এমতাবস্থায় তৃতীয় সারির নেতা মাঠে-ময়দানে সরকারের ফ্যাসিবাদী ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদে সাধ্যমতো ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। তাদের এই ভূমিকায় একটি দেশীয় পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদনে বিস্ময় প্রকাশ করা হচ্ছে।
অপরদিকে দু’টি দৈনিক পত্রিকায় জামায়াতের মধ্যে মধ্যমপন্থী আর কট্টরপন্থী দ্বন্দ্ব-সংঘাত আবিষ্কার করে চিন্তার বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে। এ চেষ্টা আজকের প্রেক্ষাপটে হলেও কোনো নতুন বিষয় নয়। জামায়াতে ইসলামীতে নবীন-প্রবীণের মধ্যে যে সমন্বয় ও সংহতি বিদ্যমান তা ঈর্ষণীয়। একই সাথে জামায়াতে ইসলামীতে দ্বীনী শিক্ষায় শিক্ষিত এবং আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতদের সমন্বয় ও সমঝোতাও বিস্ময়কর।
’৭১ সালে অখ- পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বনকারী দলসমূহের শীর্ষে ছিল কনভেনশন মুসলিম লীগসহ মুসলিম লীগের সকল গ্রুপ, পিডিপি, কৃষক শ্রমিক প্রজা পার্টি ও নেজামে ইসলামী পার্টি। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক ময়দানে তাদের অবস্থান উল্লেখযোগ্য না থাকার কারণে সকল দায়দায়িত্ব কেবলমাত্র জামায়াতে ইসলামীর উপর চাপানো হচ্ছে। এর মূল কারণ, ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীকে একটা ‘পটেনশিয়াল’ শক্তি মনে করা হচ্ছে। অন্যান্য দলগুলোতে ‘জেনারেশন গ্যাপ’ হবার কারণে ময়দানে সক্রিয় রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে ভূমিকা রাখার অবস্থানে না থাকায় তাদেরকে নিয়ে সরকারের এবং সরকারের দোসর এবং মুরুব্বীদের কোন মাথা ব্যথাই নেই। ১৯৭৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে জামায়াত পুনর্গঠিত হয়ে যাত্রা শুরুর সময় থেকেই নানাভাবে দলটির মধ্যে নবীন প্রবীণের বিতর্ক সৃষ্টির এবং আবিষ্কারের অব্যাহত অপচেষ্টা চলে আসছে, অতি সম্প্রতি তারই প্রকাশ ঘটেছে দু’টি জাতীয় দৈনিকে। আমি ঐ দুটি পত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট মহলসহ সকলের প্রতি সবিনয়ে আহ্বান রাখতে চাই, কোন পূর্ব প্রতিষ্ঠিত ধারণা বা সিদ্ধান্ত নিয়ে নয়, নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে জামায়াতে ইসলামীর সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করে দেখুন। জামায়াতে ইসলামীর সদস্য, কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বর্তমানে প্রায় শতকরা পঁচাত্তর ভাগের বেশি হবে যুবক শ্রেণী। সেই সাথে এটাও দেখতে পাবেন নবীনদের প্রতি প্রবীণদের মনে আন্তরিকতার কোন অভাব নেই, অভাব নেই তাদের হাতে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তুলে দেবার ক্ষেত্রেও।
মিথ্যা অভিযোগে ও তদন্তের নামে প্রহসনের মাধ্যমে জামায়াতের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে আটক করে সরকারের পক্ষ থেকে, সরকারের বিভিন্ন এজেন্সীর পক্ষ থেকে বারবার নবীনদের প্রতি বিশেষ করে ছাত্রশিবিরের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে অব্যাহতভাবে, আর তাদের পক্ষ অবলম্বন করে তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে মিডিয়ার একাংশ মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে ইসলামী আন্দোলনে সকলে অভিভূত, ইসলামী আন্দোলনের নতুন প্রজন্মের উপর এই ¯œায়ুযুদ্ধের বা মিডিয়া প্রপাগা-ার কোন প্রভাব পড়েনি। অকথ্য জুলুম নিপীড়ন সত্ত্বেও সত্যের পক্ষে নবীনেরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বলিষ্ঠ থেকে বলিষ্ঠতর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত শহিদী কাতারে যারা শামিল হয়েছে তাদের মধ্যে নবীনদের সংখ্যাই বেশি। যারা আহত হয়েছে, কারাবরণ করছে তাদের মাঝেও নবীনদের সংখ্যাই বেশি।
অতি সম্প্রতি কাকতালীয়ভাবে ঘটমান মিসরের পরিস্থিতি জামায়াতের মধ্যে চিন্তার বিভ্রান্তি ছড়ানোর পরিকল্পিত অপপ্রয়াস ব্যর্থ করতে সহায়ক হয়েছে। বাংলাদেশের সজাগ সচেতন ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের কাছে বিশেষ করে ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত নতুন প্রজন্মকে এটা বুঝতে সাহায্য করেছে যে ’৭১ এর ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ আসলে একটা খোঁড়া অজুহাত। আসল অপরাধ, ইসলামী আদর্শের পক্ষে একটি সুসংগঠিত চড়ঃবহঃরধষ শক্তি হওয়া এবং এক পর্যায়ে ক্ষমতার রাজনীতিতেও ফ্যাক্টর হওয়া।
বাংলাদেশের মুসলিম জনতার প্রতি জননেতা মরহুম শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের একটি বার্তা আবহমানকাল ধরে গুরুত্ব পেয়ে আসছে এবং ভবিষ্যতে এর গুরুত্ব অব্যাহত থাকবে। আর তাহল মুসলমানরা জেনে রেখো “আনন্দবাজার পত্রিকা যদি আমাকে গালি দেয় তাহলে তোমরা মনে করবে আমি মুসলমানদের জন্যে কিছু ভাল কাজ করছি। আর যদি প্রশংসা করে তাহলে বুঝে নিও আমি তোমাদের ক্ষতি করছি।” যেসব মহল থেকে, যেসব পত্রিকা থেকে জামায়াতের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে নবীনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রশিবিরের নবীনেরা তাদের পরিচয় জানে, জানে তাদের এ প্রচারণার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কেও। অতএব এতে তাদের প্রভাবিত হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
মিসরের ইসলামী আন্দোলন মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে তো কোন দিনও, স্বাধীনতা বিরোধিতার অভিযোগ ছিল না। এরপরও দীর্ঘ ৬০ বছর কেন তারা প্রকাশ্যে কাজ করার সুযোগ পায়নি! অবশেষে পরিবর্তিত নামে নির্বাচন করেও তো পার পেল না। এ বিষয়টি সকলের জ্ঞান চক্ষু খুলে দেয়ার জন্যে যথেষ্ট হবার কথা।
আমরা যারা বার্ধক্যে উপনীত হয়েছি, তারা মনে বড় তৃপ্তি অনুভব করি ইসলামী আন্দোলনে নতুন প্রজন্মের অকুতোভয় ভূমিকা পালনের ধারাবাহিকতা দেখে। ইনশাআল্লাহ সকল মহলের জল্পনা কল্পনা মিথ্যা প্রমাণ করে, সকল চক্রান্ত ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে ছাই দিয়ে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে একদিন বিজয়ের দ্বাপ্রান্তে তারাই পৌঁছে দেবে আল্লাহর সাহায্যে, তাদের ময়দানের ভূমিকায় আমার মনে এ প্রত্যয়ই জাগরিত হয় প্রতি মুহূর্তে প্রতিক্ষণে।
বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলন ইতিহাসের কঠিনতম রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার। সেই সাথে চলছে ইসলাম বিরোধী মহলের মিডিয়া ও তথ্য সন্ত্রাস। আল্লাহ তায়ালার ভাষায় যাকে বলা যায় “তারা ফুৎকারে আল্লাহর আলো অর্থাৎ ইসলামী আদর্শকে নিভিয়ে দিতে চায়, (তাদের এই অপচেষ্টা সত্ত্বেও) আল্লাহ তার নূরকে পূর্ণরূপে বিকশিত করেই ছাড়বেন। কুফরী শক্তি এটাকে যতই অপছন্দ করুক না কেন? আল্লাহ তো সেই মহান সত্ত্বা যিনি তার রাসূলকে পাঠিয়েছেন আল হুদা এবং দ্বীনে হক সহকারে যাতে করে আল্লাহর ঐ দ্বীনে হক বিজয়ী হয় (মানবরচিত) সকল দ্বীন বা মত পথের উপর মুশরিক গোষ্ঠী তা যতই অপছন্দ করুক না কেন।”
আল্লাহর এই দ্ব্যর্থহীন বাণী অতীতে যেমন সত্য ছিল, আজকের দিনের জন্যে এটা তেমনি অমোঘ সত্য। কোন ঈমানদার ব্যক্তির মনে এ ব্যাপারে সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ থাকতে পারে না। চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আল্লাহর এই সব ঘোষণাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের মূল পাথেয়। যারা প্রভাবশালী পত্রপত্রিকার তথ্য সন্ত্রাসের দ্বারা চিন্তার বিভ্রান্তির শিকার হয়নি, যারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়নি ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ফলে, তারা অবশ্যই আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার প্রিয়পাত্র। তাদের সম্পর্কেই আল্লাহর প্রশংসা সূচক ঘোষণা “তারা সংগ্রাম করে আল্লাহর পথে, আর এই কারণে কোন নিন্দুকের নিন্দা এবং সমালোচকের সমালোচনার পরোয়া করে না।”
ইসলামী আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট নতুন প্রজন্মের মাঠে ময়দানে ইসলামের পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করার সাহসী পদক্ষেপ দেখে সত্যি মনে আস্থা সৃষ্টি হয়েছে, ইসলামী আন্দোলন নির্মূল করার সকল মহলের চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে এরাই একদিন আল্লাহর দ্বীনকে আল্লাহর জমিনে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে। বর্তমান সরকার এবং তাদের দোসর এবং অভিভাবকরা জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়ে দেশ থেকে ইসলামী আদর্শের পক্ষের জাগরণকে স্তব্ধ করে দিতে চাচ্ছে। তারা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘জামায়াতে ইসলামী’ নামক সংগঠনকেও নির্মূল করতে চাচ্ছে। তাদের আচার-আচরণে এটা অত্যন্ত পরিষ্কার, তবে চূড়ান্ত ফায়সালার মালিক আল্লাহ। তিনি তাদেরকে এ সুযোগ দিতেও পারেন নাও দিতে পারেন। তবে এটা পরিষ্কার বলতে চাই, ইসলামী আন্দোলন ব্যক্তি বিশেষ বা দল বিশেষের উপর নির্ভরশীল নয়। কালেমায়ে বিশ্বাসী একজন ঈমানদার মুসলমান থাকলেও ইসলামী পুনর্জাগরণ আন্দোলন অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে তীব্র থেকে তীব্রতর গতিতে অগ্রসর হওয়া আল্লাহর মেহেরবাণীতে কোন অসম্ভব ব্যাপার নয়। এ ক্ষেত্রে নবীনদের ভূমিকা তারই শুভ ইঙ্গিত বহন করে।
ইসলামী আন্দোলনের মূলধারা থেকে নবীনদেরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য সরকারের সকল পদক্ষেপ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে যে সব মিডিয়ার ভূমিকা সর্বজনবিদিত তাদের অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে সৃষ্ট ধূ¤্রজালও ইসলামী আন্দোলনের নবীনদেরকে বিন্দুমাত্র বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়নি। পুলিশী নির্যাতন-নিপীড়ন ইতিহাসের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করলেও তা সরকারের জন্য হয়েছে বুমেরাং। সকল প্রকারের অপপ্রচার ও মিথ্যাচার উপেক্ষা করে, সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে যুবশক্তির অবস্থান অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শক্ত এবং সক্রিয়।
আমরা যারা জীবনের শেষ অধ্যায় অতিক্রম করছি তারা দুনিয়া থেকে বিদায়ের আগে এই আস্থা এবং প্রশান্তি নিয়ে যাচ্ছি আমরা যখন থাকব না, তখনও ইসলামী আন্দোলন থাকবে; থাকবে আরো কয়েকগুণ বেশি শক্তি নিয়ে। তাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে তাদের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে সিজদারত অবস্থায় দোআ করি আল্লাহ যেন তাদেরকে এই দ্বীনের আন্দোলনকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানোর তৌফিক দান করেন। তাদেরকে এ যুগের শ্রেষ্ঠ মর্দে মুমিন, মর্দে মুজাহিদ হিসেবে কবুল করেন, কবুল করেন তাঁর প্রিয় বান্দা হিসেবে। আমার মত অধম-এর কণ্ঠে অনুচ্চ স্বরে হলেও কেন যেন বারবার উচ্চারিত হয় বিজয়ের “আল্লাহ তোমার দ্বীনের পতাকা তুলে দাও তাদের হাতে।”
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ইতিহাসের জঘন্যতম মিথ্যা প্রপাগা-া যাদের চিন্তা-চেতনায় কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি, প্রভাব ফেলতে পারেনি নিষ্ঠুরতম রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, তারাই হবে আল্লাহর সাহায্য লাভের যোগ্য পাত্র, আল্লাহর সাহায্যে তাদের হাতেই আল্লাহ দান করবেন তার দ্বীনের বিজয় পতাকা।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads