শনিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৪

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতন্ত্র


মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান চেতনা ছিল গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্র আজ ভূলুণ্ঠিত ও উপেক্ষিত। স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছিল গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হওয়ার কারণে। তদানীন্তন পাকিস্তানের শাসকেরা গণতন্ত্র দেয়নি ২৩ বছরেও। তুমুল আন্দোলনের পর অবশেষে ১৯৭০ সালে গণতন্ত্রের বিজয় হয়। আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে দুটি আসন ছাড়া সব কটি আসনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তার পরও স্বৈরশাসকেরা ভুট্টোর সাথে হাত মিলিয়ে গণতন্ত্রের বিজয়কে নস্যাৎ করে দেয়। ইয়াহিয়া বিজয়ীদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার কারণে মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পূর্ব বাংলার মানুষেরা বিজয় অর্জন করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। সে হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক চেতনা ছিল গণতন্ত্র।
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য  দেয়া হচ্ছে এবং জাতির মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। এর পেছনে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কোনো কোনো মহলও জড়িত। দেশ গড়ার কাজে যাতে দেশের মানুষ মনোনিবেশ করতে না পারে সে জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিভিন্ন অর্থে পরিবেশন করা হচ্ছে। আবারো বলতে হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ সাধন। আরো বলতে হয়, ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে সুষম বণ্টনব্যবস্থা সৃষ্টি করে একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়াই ছিল বাংলাদেশ সৃষ্টির মূলমন্ত্র। সে কাজে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। ৪৩ বছরেও আমরা মালয়েশিয়ার ধারে-কাছে যেতে পারলাম নাÑ যেটা মালয়েশিয়া স্বাধীনতার মাত্র ২২ বছরে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল।
অসদুদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভাজন করার কারণে ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করতে না পারার ব্যর্থতায়ই আমাদের অর্জন অনেক পিছিয়ে গেছে। এ জন্য প্রধানত দায়ী অসৎ রাজনীতিবিদেরা। তারাই জাতিকে খণ্ডিত করেছেন।
নিজেদের গদির স্বার্থে জাতিকে ব্যবহার করা হয়েছে, রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বত্র। ফলে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের স্বার্থের চেয়ে ক্ষমতাসীন দলীয় স্বার্থে সময়ক্ষেপণ করেছে বেশি। এ জন্য বাংলাদেশ তার গন্তব্যস্থানে আজো পৌঁছতে পারেনি। অনেক রাজনীতিক এখনো গণতন্ত্রের মূলগত অর্থই ভালো করে জানেন না বা জানার চেষ্টা করেন না। গণতন্ত্র চর্চার কোনো ঐকান্তিক প্রয়াস কোনো দলের মধ্যে আছে বলে আমাদের জানা নেই। এটি ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বড় বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রয়েছে। গণতন্ত্র এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অভিন্ন সূত্রে গাঁথা। বিষয়টিকে আলাদাভাবে দেখার সুযোগ নেই। দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ সাধন না ঘটলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও ভূলুণ্ঠিত হয়ে পড়বে। সহিংসতার মাত্রা অতীতের চেয়েও বাড়তে থাকবে, ফলে জাতি কাক্সিত লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হবে। গণতন্ত্রের প্রকৃত চর্চা না করার কারণে ৪৩ বছর পর্যন্ত জাতিকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। অদূরভবিষ্যতে দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে, এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
২৬ মার্চ লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে বিশ্ব রেকর্ড করার আয়োজনটি প্রশংসনীয়। এ কাজ আরো উত্তম হতো যদি সরকারি উদ্যোগে এই তিন লাখ মানুষকে এক দিনের জন্য হলেও বিশ্বের অন্যতম নিকৃষ্ট শহর ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন করার কাজে লাগাতে পারলে তাহলে বিশ্বের দেয়া খারাপ উপাধিথেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেত। নগরটিও ছিমছাম ও সুন্দর হতো। উন্নত রাষ্ট্রে জাতিকে এসব কাজে অনুপ্রাণিত করা হয়।
দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী পার্টটাইম রাজনীতি করেন। কোনো কোনো ব্যবসায়ী বলেছেনÑ ব্যবসায়কে টিকিয়ে রাখার জন্যই রাজনীতি করতে হবে। আবার রাজনীতি যে একটি বড় ব্যবসায়, সেটা সংসদের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। ৩০০ সংসদ সদস্যের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই ব্যবসায়ী যা অতীতে ছিল। রাজনীতি হলো মানুষের সেবা করা। প্রশ্ন হলোÑ ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় করবেন, নাকি মানুষের সেবা করবেন। দুটো কাজ একসাথে ভালোভাবে করা যায় না। বড় তিন-চারটি দল ব্যবসায়ীদের দলে টানার মূল কারণ হলোÑ দলীয় ফান্ডের পরিসর বাড়ানো। এই মূলধন দিয়ে সঙ্কীর্ণ, নীতিহীন ও  সহিংস রাজনীতির প্রসার বৃদ্ধি করার সম্ভাবনাই  বেশি দেখা যায়। প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য এই অর্থ দলীয় ক্যাডারদের দেয়া হয়। বিপুল অর্থ সন্ত্রাসীদের লালনপালনে ব্যয় করা হচ্ছে। পদক ও পদবি বাড়িয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের টাকা তথা জনগণের টাকায় ক্ষমতায় যাওয়া এবং তা দীর্ঘায়িত করার পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক বিশ্বে এ ধরনের চিত্র খুবই বিরল। উন্নত বিশ্বে দেখা যায়, জনগণের ট্যাক্সের টাকা নাগরিক সুবিধা যাতে বৃদ্ধি পায় সে উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে সেই টাকা ব্যয় হয় দলীয় ভরণপোষণের কাজে। জনগণের তন্ত্র হলো গণতন্ত্র। জনগণ যদি উপেক্ষিত হয়, তাহলে গণতন্ত্রও উপেক্ষিত হবে। দেশে এটিই হচ্ছে বিগত ৪৩ বছর ধরে।
স্বাধীনতা দিবসে মধ্যরাতে টকশোতে বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, সব কিছুতেই এখন বাণিজ্য চলছে। এমনকি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বর্তমান সরকারের আমলে প্রচুর বাণিজ্য হয়েছে। লাখো কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত নিয়েও প্রচুর আয়রোজগার হয়েছে। টিভিপর্দায় সেটা দেখাও গেছেÑ বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অর্থ গ্রহণের বিষয়টি। স্বেচ্ছায় এবং স্ব-উদ্যোগে দেশপ্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে কোনো কাজ করার নামই হলো স্বদেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটা ধীরে ধীরে ম্লান হতে চলেছে। দেশের মূল সমস্যা থেকে জাতির দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরানোর জন্য অবলম্বন করা হচ্ছে অপকৌশল। নতুন প্রজন্ম শাহবাগে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে যে কর্মকাণ্ডগুলো করেছেÑ সেখানে চেতনার মূল শব্দ গণতন্ত্রকতটুকু? ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হলোÑ এতে তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল কথাটিরই অপমান করা হয়েছে। গণতন্ত্র যদি ভূলুণ্ঠিত হয়Ñ তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মারাত্মক ক্ষত সৃষ্টি হয়। অথচ  বিষয়টি নিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তাদের রহস্যময় নীরব ভূমিকা দেশবাসীকে হতাশ করেছে। দেশের উন্নয়নের কাজে এবং দুর্নীতি ও অপশাসনের বিরুদ্ধে তাদের নীরব ভূমিকা জাতির সচেতন অংশের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছে। বাংলাদেশ বিশ্বে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাতি অর্জন করুক এবং অর্থনৈতিকভাবে সুষম বণ্টনব্যবস্থাসহ সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হোক সেটা বঙ্গবন্ধুও চেয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের এই চেতনা দুটো বাংলাদেশে খুব ধীর গতিতে আগাচ্ছে কেন? তরুণেরা যদি এখনো স্বার্থদুষ্ট রাজনৈতিক দলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হন, তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ আরো অন্ধকারের পথে হাঁটবে। আলোকিত মানুষ গড়ার কাজে তরুণদের সচেতন, সাহসী ও  অগ্রণী ভূমিকা জাতি প্রত্যাশা করে। তরুণেরাই একদিন দেশের হাল ধরবেন। তাই তাদের রাজনীতির নোংরা খেলার হাতিয়ার হওয়া থেকে বিরত থাকাই দায়িত্ব। ৫৬ হাজার বর্গমাইল-বেষ্টিত সোনার বাংলাযেন বহিঃশক্তির আগ্রাসন থেকে মুক্ত থাকতে পারে, সেটাও দেখার বিষয় বর্তমান প্রজন্মের। এই দেশে লুকিয়ে আছে অনেক সম্পদ। এই সম্পদের ওপর প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে শুরু করে বৃহৎ শক্তির নজর রয়েছে। এসব ব্যাপারে বর্তমান প্রজন্মের তীè দৃষ্টিই মানুষ প্রত্যাশা করে।
মানুষ যখন প্রয়োজনাতিরিক্ত অর্থসম্পদের মালিক হয়, তখনই সে সীমালঙ্ঘন করে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘আসলে যে সীমালঙ্ঘন করেছে এবং পার্থিব জীবনের লোভলালসাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, জাহান্নামই হবে তার নিবাস।’ (সূরা নাজিয়াত, আয়াত ৩৭-৩৯)। একটি পত্রিকায় সম্প্রতি লেখা হয়েছেÑ ‘একজন গ্রুপ অব কোম্পানির মালিক ও তার পরিবারের ব্যবহারের জন্য ২৫টি ব্যয়বহুল গাড়ি রয়েছে। নাতি, পুতি, ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী, ছেলের বউÑ এমনকি কাজের বুয়ার জন্য দামি গাড়ি রয়েছে। বাজারে এক কেজি ডাল কিনতে গেলেও বুয়া গাড়ি ব্যবহার করেন।রাস্তায় যানজট কেন হবে না। পাবলিক পরিবহনের তিন গুণ বেশি গাড়ি তথাকথিত এসব অভিজাত ব্যক্তির। বাংলাদেশে অর্থের অপচয় করছে অনেকেÑ বিত্তশালী ব্যক্তিরাই এ জন্য দায়ী। বিত্তশালীদের অতি অপচয়, রাজনীতিবিদদের প্রতিহিংসামূলক অতিকথন দেশটাকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলছেÑ সে ব্যাপারে তরুণদের বক্তব্য কেন  থাকবে না?
দেশের স্বার্থের সাইনবোর্ড লাগিয়ে কয়েক শসেবামূলক সংস্থা শত শত কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে। ৪৩ বছর ধরে বাংলাদেশকে যারা দুর্নীতির আখড়া বানিয়েছে, দেশটির মেরুদণ্ড যারা বাঁকা করে ফেলেছে; তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া যুবসমাজের নৈতিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব এ অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতার পূর্বকালে পালন করেছিল বলেই ব্রিটিশ ও পাকিস্তান এ দেশ থেকে চিরবিদায় নিতে বাধ্য হয়েছিল। অন্যায় অনৈতিক সব কাজের প্রতিবাদই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মহান শিক্ষা। এ শিক্ষা এখন অনুপস্থিত বলেই বাংলাদেশের শিকড়ও শক্তিশালী হতে পারছে না। যে দেশের অর্থনীতি ও গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী হতে পেরেছে, সে দেশ তর তর করে এগিয়ে গেছে। কেউ-ই এ রকম দেশকে দাবিয়ে রাখতে পারে না। যুবসমাজের উচিতÑ মানুষের মৌলিক পাঁচটি চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা যাতে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে তার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা। এ পাঁচ মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্যও আমরা ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রাম করেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের এই মৌলিক চাহিদাগুলো ১৬ কোটি মানুষ পেয়েছে কি? পত্রিকায় উঠেছে, বাংলাদেশে এখনো সাত কোটির  বেশি মানুষ দুই বেলা পেটভরে ভাত খেতে পারে না। দারিদ্র্যের নিচে বাস করছে এখনো জনসংখ্যার অর্ধেক। ভূখণ্ডের তুলনায় আমাদের স্ফীত জনসংখ্যার হার অনেক বেশি। জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আগ্রাসী ভূমিকার কারণে আমাদের ভৌগোলিক সীমানা কমে আসছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ৮০ জন মানুষ। আর বাংলাদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে এক হাজারেরও বেশি মানুষ। এ ধরনের কঠিন সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য তরুণসমাজকে ভাবতে হবে। এ দিকে মেকি দেশপ্রেমিকেরা এখন পকেটমানি ভারী করার জন্য একশ্রেণীর রাজনীতিকের তল্পিবাহক হয়ে পড়েছে। ১৭ মার্চ পত্রিকায় উঠেছে, নেপালের ৭৫ বছর বয়সী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার কোনো বাড়ি নেই, গাড়ি নেই, জমি নেই, কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগ নেই। সোনাদানা কিংবা রুপা নেই। তার নামে অন্য কোনো সম্পদও নেই। আছে শুধু দুটো মুঠোফোন। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন কৈরালা। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ওঠার আগে কাঠমান্ডুর উপকণ্ঠে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। দলের প্রেসিডেন্টের জন্য নেপালি কংগ্রেস ওই বাসা ভাড়া করেছিল। কৈরালা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পরও সাদামাটাভাবে জীবন যাপন করছেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বসন্ত গৌতম ১৫ মার্চ  এমন তথ্যই দিলেন। এ রকম একজন নির্মোহ আদর্শবান নেতা বা রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া যাবে কি? ২৮ মার্চ লিড নিউজ ছাপিয়েছে বহুলপ্রচারিত একটি জাতীয় দৈনিক। তারা লিখেছে, মন্ত্রী আমলা ঠিকাদারের স্বার্থের বলি যাত্রীরা। ট্যাক্সিক্যাবে উঠলেই ১০০ টাকা ভাড়া। এশিয়ার ছয়টি বড় শহরের ভাড়ার তুলনায় ঢাকা শহরে গণপরিবহনের ভাড়া বেশি। কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি, কাঠমান্ডু, কলম্বো এমনকি ব্যাংককে ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়া বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। অথচ সার্কভুক্ত আট দেশের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু গড় আয় এখনো সর্বনি¤œবর্তমান মাথাপিছু গড় আয় ৯০০ মার্কিন ডলারে ব্রাকেটবন্দী হয়ে আছে। ক্ষমতাসীন ও রাজনীতিবিদেরা একুশ শতকের দরজা অতিক্রম করার পরও এখনো শিশুদের ঘুমপাড়ানো গল্পের মতো আমাদেরও গল্প শোনাচ্ছেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়েছে। আটটি সার্কভুক্ত দেশের সাথে তুলনা করলেই বোঝা যাবে জীবনযাত্রার মান বিবেচনায়  কতটুকু এগিয়েছি, না পিছিয়েছি? এ হিসাবটা যুবসমাজের করা উচিত। জাতিসঙ্ঘের সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রের সংখ্যা বর্তমানে ১৯৪। বাংলাদেশের অবস্থান এখনো ১৬০-এর নিচে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পৃথিবীর মানচিত্রে ষষ্ঠ অবস্থানে। দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই হবে। প্রয়োজন সৎ নেতৃত্ব। মার্কাকে বাদ দিয়ে সৎ ও মেধাসম্পন্ন ব্যক্তিকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে বসার সুযোগ করে দেয়ার দায়িত্ব যুবসমাজের। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের জন্যই বর্তমান প্রজন্মের আন্দোলন করা উচিত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাহলেই বাস্তবে রূপ নেবে। দেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির পথে।


 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads