শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৪

কী চমৎকার দেখা গেল!


তিস্তানামটি এসেছে ত্রিস্রোতথেকে। তিন নদীর সম্মিলনে তিস্তার প্রবাহের উৎপত্তি সিকিমে। উজানে ভারতের পানি আগ্রাসনে এখন বাংলাদেশের তিস্তা স্রোতবিহীন মরা নদী। গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) এর প্রবাহের পরিমাণ ছিল ৭১৮ কিউসেক। পরদিন আরো কমে ৬৮৮ কিউসেক; কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় হঠাৎ মরা গাঙের ভরা যৌবন। প্রবাহ এক লাফে তিন হাজার কিউসেক! বুড়ো কোনো দিন যুবক হয় না; কিন্তু সে দিন বার্ধক্যজীর্ণ তিস্তাকে অকস্মাৎ যুবকে পরিণত হতে দেখে সবাই বিস্মিত। তবে মঙ্গলবারের এই পরিবর্তন যে আমাদের মঙ্গলের জন্য নয়, তা টের পাওয়া গেল এক দিন না যেতেই।
তিস্তার উদ্দেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের সাড়া জাগানো লংমার্চ ঢাকা থেকে যাত্রা করে মঙ্গলবার সকালে। পথে কয়েকটি পথসভা করে পরদিন তিস্তার কাছে গিয়ে পৌঁছে। একই সময়ে নদীটির উজানে বাঁধের গেট কিছুক্ষণ খুলে রেখে ভারত কারো বিস্ময়, কারো স্বস্তি, কারো বা আত্মতৃপ্তির জন্ম দিয়েছে। এতদিন তিস্তার সব পানি আটকে রেখে এবং চুক্তি করার সিদ্ধান্ত বাতিল করে যারা ধমক দিয়েছে বাংলাদেশকে, তাদের হঠাৎ পানি ছেড়ে চমক লাগানো সবার আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে যেখানে তিন হাজার কিউসেক পানি, ২৪ ঘণ্টা পরই তা অর্ধেকের বেশি কমে মাত্র এক হাজার ২৪০ কিউসেকে এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের এই বৃহৎ সেচ প্রকল্পের খালগুলো কার্যকর রাখার জন্য দুই হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ কিউসেক পানির প্রবাহ থাকা দরকার।
এবার এক সপ্তাহে তিস্তার পানি সাত গুণ বাড়লেও তা আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। গত দুদিনে দুই হাজার কিউসেক পানি কমে গেছে। বুধবার প্রবাহ ছিল এক হাজার ২৪০ কিউসেক। পরদিন আরো কমে দাঁড়াল এক হাজার ১৮৬ কিউসেক। হঠাৎ পানি বেড়ে কয়েক গুণ। আবার ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দুই হাজার ৪০০ কিউসেক কমে যাওয়া! এসব দেখে বলতে হয়, ‘লাগ ভেলকি লাগ’; কিন্তু কোনো প্রকৃত বন্ধুদেশ ভেলকিবাজি দিয়ে নয়, আন্তরিকতা ও ত্যাগের মাধ্যমেই বন্ধুত্বের বন্ধন গড়ে তোলে।
এ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার তিস্তার বেশি পানি আসার অর্থ এই নয় যে, ভারত বাংলাদেশকে বেশি পানি দেয়া শুরু করেছে। এই পানি আসা অপ্রত্যাশিত। তারা জানতে পেরেছেন, ভারত তার গজলডোবা বাঁধের এক অংশ খুলে দিয়েছিল আসলে সংস্কারকাজের জন্য। ফলে ১২-১৪ ঘণ্টা পানি ঢুকেছে সীমান্ত পেরিয়ে।
মজার ব্যাপার হলো, সরকারি প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্র যে তথ্য দিয়েছে, তার সাথে সংসদীয় কমিটির বক্তব্যের নেই কোনো মিল। তিস্তার হঠাৎ বেড়ে যাওয়া পানি অনেক কমে যায় বুধবার। সে দিনই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রমেশ চন্দ্র সেন সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির লংমার্চ নয়, এই সরকারের সফল কূটনৈতিক তৎপরতায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে।
এই তৎপরতাটা কী, তা রমেশ বাবু খোলাসা করেননি। তিস্তার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া যদি কূটনৈতিক সাফল্যই হয়, তাহলে পর দিনই তা কমে যাওয়ার মানে হচ্ছে, মাত্র ২৪ ঘণ্টা না যেতেই এই সরকারের কূটনীতি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। আর এতই যদি সাফল্যের বয়ান শোনাতে হয়, তাহলে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির ব্যাপারে ভারতকে রাজি করতে পারছেন না কেন? দিদি মমতার বিজয়ে তো প্রটোকল লঙ্ঘন করে অভিনন্দন জানানো হয়েছিল। তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল তিন বছর আট মাস আগে, মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকালে। অনেকেরই স্মরণ আছে, রমেশ সেন পানিসম্পদমন্ত্রী থাকার সময় পানির হিস্যা নিয়ে অযৌক্তিক ও অসঙ্গত উক্তি করে সমালোচিত হয়েছিলেন।
মোদ্দাকথা, এই খরবৈশাখী অনাবৃষ্টির দিনে তিস্তার সাময়িক পানি বৃদ্ধি ঘটেছে কাকতালীয়ভাবে। বিএনপি মনে করছে, তাদের লংমার্চই ভারতের এই শর্টটার্ম মহানুভবতার কারণ। আর আওয়ামী লীগ আসল কারণ জেনেবুঝেও এটাকে নিজেদের কৃতিত্ব বলে জাহির করছে। সাধে কি আর বলে, ‘ঠাটা পড়ে বগা মরছে, ফকিরা কয় কেরামতি হইছে

লংমার্চ দেখার জন্যতিস্তার পানি এসে এক দিন ছিল  এমন খবর ও ছবি পত্রপত্রিকায় উঠেছে। তবে এটাও তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প এলাকার অনেক জায়গার জন্য সত্য নয়। যেমন  নীলফামারী জেলার ডিমলার দক্ষিণ সোনাখুলী গ্রামের ধানক্ষেতে পানিশূন্য দীর্ঘ ড্রেনের ছবি গত শুক্রবার নয়া দিগন্তে ছাপা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, দেড় মাস আগে যেমন ছিল, গত বৃহস্পতিবার দিনেও ড্রেনে তেমনি পানিবিহীন অবস্থা।
লংমার্চ দেখে হয়  তো ভারত তার চাণক্যবুদ্ধিতে কিছু পানি ছেড়ে বাংলাদেশকে বোকা বানানোর ব্যর্থ প্রয়াস পেয়েছে; কিন্তু আমাদের পানি উন্নয়ন বোর্ড সে পানিপ্রবাহের পরিমাণ তিন হাজার ৬০০ কিউসেক বলে দাবি করাটা কৌতূহলোদ্দীপক। কারণ এর চেয়ে এক হাজার কিউসেক কম পানি তিস্তা দিয়ে এলেও প্রকল্প এলাকার খালগুলোতে সেচের পানি থাকার কথা। অথচ যখন ওপার থেকে পানি এসে তিস্তা ভেসে যাচ্ছে, তখনো সোনাখুলী গ্রামের একাধিক সেচখাল এর বিপরীত নজির উপস্থাপন করেছে।
আরো লক্ষণীয়, এই শুকনা মওসুমে যখন তিস্তা মানে ধু-ধু বালুচর, তখন স্থানীয় সাংবাদিকেরা ডালিয়ায় তিস্তা প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে পানিপ্রবাহের পরিমাণ জানতে চাইলে তারা অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন। তাদের কথামতো পাউবো হাইড্রলিক বিভাগে যোগাযোগ করা হলে জবাব মেলে, ঢাকায় যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) থেকে জানতে হবে। এভাবে মিডিয়াকে হয়রানি করা হচ্ছে। অপর দিকে, সরকার তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়িত হওয়ার জোর প্রচারণা চালিয়ে আসছে। যা হোক, তিস্তাপ্রবাহ সম্পর্কে তথ্য দিতে যখন পাউবোর এহেন কার্পণ্য, তখন রহস্যজনকভাবে গত মঙ্গল-বুধবার ডালিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উৎসাহের সাথে জানান যে, তিস্তার প্রবাহ এখন তিন হাজার ৬০০ কিউসেক! এ দিকে পত্রিকায় খবর, তিস্তায় পানি বাড়া-কমার কারণ বলতে পারছেন না পাউবোর কর্তারা। নদ-নদীর ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ তথ্যবিনিময়ের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এমন অজ্ঞতা পরিলক্ষিত হতো না।
এ দেশের সবচেয়ে বড় দুটি সেচ প্রকল্প হলো, দেশের উত্তরাংশে তিস্তা ব্যারাজ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্প। ভারতের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের ফসল ফারাক্কা বাঁধ। এর মাধ্যমে পদ্মার যৌবন হরণ করে জিকে প্রজেক্ট অকার্যকর করে দেয়া হয়েছে। একইভাবে গজলডোবা বাঁধ দিয়ে তিস্তার টুঁটি চেপে হত্যার প্রয়াসে সে প্রকল্পও ধুঁকছে।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার আমলে ১৯৭৯ সালে তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণকাজ শুরু হয়। আশির দশকের মাঝামাঝি শুরু করা হয় এর সেচ খালগুলোর কাজ। প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করতেই অনেক সময় চলে যায়। তখন সেচের টার্গেট ছিল এক লাখ ১১ হাজার ৪০৬ হেক্টর জমি। তবে কখনো ৮০ হাজার হেক্টর জমিও সেচের আওতায় আনা যায়নি। বরং উজানে পানি প্রত্যাহারের ফলে বছর বছর সেচযোগ্য জমি কমতে থাকে। ভারত ইদানীং এত ব্যাপকভাবে পানি সরিয়ে নিচ্ছে যে, সর্বশেষ মওসুমে ২৫ হাজার হেক্টরেও ভালোভাবে সেচ দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। অথচ টার্গেট ছিল ৬০ হাজার হেক্টরের বেশি। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য যে তিন হাজার ৬০০ কিউসেক পানি প্রয়োজন, তা বাংলাদেশ পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
আমাদের সবচেয়ে বড় পড়শি দেশটি জলপাইগুড়ির গজলডোবাসহ বিভিন্ন বাঁধ দিয়ে তিস্তার পানি সরিয়ে নিচ্ছে অনেক দিন ধরে। তার আগে বাংলাদেশে তিস্তার অবস্থা কেমন ছিল তা বুঝার জন্য শুধু এই উদ্ধৃতিই যথেষ্ট :
Until India began diverting the waters from the upstream the lean period waterflow in the Teesta in Bangladesh never fell below 6500 cusecs.
সোজা কথায়, অতীতে শুকনা মওসুমেও আমাদের তিস্তার প্রবাহ কখনো সাড়ে ছয় হাজার কিউসেকের নিচে নামেনি। গ্রীষ্মকালেও স্রোতের তোড়ে নৌকা চালানো কষ্টকর হতো অনেক সময়।
অতীতে এমনকি ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার প্রবাহ গড়ে ৯ হাজার কিউসেক পানি ছিল; কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হলো, তিস্তা ব্যারাজের সেচকার্যক্রম যখন এগিয়ে যাচ্ছিল তখন থেকে পানিপ্রবাহ কমতে থাকে। একপর্যায়ে তা মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ কিউসেকে এসে ঠেকেছিল।
তিস্তা চুক্তি অবিলম্বে চূড়ান্ত করে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পানিপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর আইনুন নিশাত। তিনি বলেন, পানির অভাবে তিস্তার সেচব্যবস্থা সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া, নদীটির জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর পানি গায়ের জোরে একতরফা প্রত্যাহার করা অনৈতিক।
আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব-উল-আলম হানিফ। এখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী পদে না থাকলেও তার বড় কথা বলা বন্ধ হয়নি। তিস্তা লংমার্চ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘লংমার্চ করে দাবি আদায় করা যায় না।মাও সে তুং-এর ঐতিহাসিক লংমার্চের কথা না হয় না-ই বা বললাম। তাদের তো মওলানা ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চের গুরুত্বও বুঝতে পারার কথা নয়। মজলুম জননেতার সে লংমার্চ কিংবা এবার বিরোধী দলের তিস্তা লংমার্চ যাদের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, তারা হানিফদের পরীক্ষিত বন্ধু। যা হোক, ১৯৭৬ সালের ১৬ মে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ভাসানীর ঐতিহাসিক লংমার্চ শুধু ভারত সরকারকেই নাড়া দেয়নি, ইস্যুটি আন্তর্জাতিক পর্র্যায়েও সাড়া জাগাতে সফল হয়েছিল। সেই লংমার্চের প্রভাবে জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশ সরকার গঙ্গার পানির হিস্যার জোর দাবি জানিয়েছিল। সেই সাথে, এ দেশের আধিপত্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক শক্তি স্বাধীনতা রক্ষার চেতনায় সংগঠিত হয়েছিল।
হানিফ সাহেবদের দলের না হয় লংমার্চের তাৎপর্য উপলব্ধি করা সম্ভব নয়; কিন্তু রাশেদ খান মেনন তো এর গুরুত্ব ভালোভাবেই জানেন। তিনি মওলানা ভাসানীর অনুসারী হিসেবে ফারাক্কা লংমার্চের একজন সংগঠক ছিলেন বলে জানি। ভাসানীর নির্দেশে তখন তিনি কৃষক সংগঠনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এখন সেই মেনন আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী হয়ে তিস্তা লংমার্চকে হেয় করার জন্য বক্তব্য দিচ্ছেন। ভারতের আগ্রাসী নীতি সম্পর্কে তার অতীতের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক অবস্থানের সাথে এখনকার ভূমিকার কোনো মিল নেই।
তিস্তার পানি আনতে ব্যর্থতা যে সরকারের, তা কাউকে বলে দিতে হয় না। মমতা দিদি আর মনমোহন দাদার অত্যন্ত প্রিয় দল আওয়ামী লীগ আর অতি বিশ্বস্ত আপনজন তো এ দলের নেত্রী। তবুও আমাদের সরকার তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে সফল হয়নি। নিশ্চয়ই এর পেছনে বড় কারণ মমতার একগুঁয়েমি, অর্থাৎ ভারতের টালবাহানা। তবে নয়াদিল্লি যদি আসলেই বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু হওয়ার প্রমাণ রাখতে চায় এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইনকানুন ও রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর দায়িত্ব বোধ করে, তাহলে (পরিমাণে কিছুটা কম হলেও) তিস্তার পানি না দিতে কলকাতার গোঁ ধরে থাকা সম্ভব ছিল না। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের প্রাক্কালে আওয়ামী সরকার দশ মুখে প্রচার করেছিল, ‘এই সফরে অবশ্যই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হবে।কিন্তু হাসিনার চেয়ে মমতার মন রাখা যে মনমোহনের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা ঢাকার ক্ষমতাসীন মহল উপলব্ধি করেনি। ফল যা হওয়ার, তা-ই হলো।
মনমোহন এলেন, দেখলেন, চলে গেলেন। তিস্তার ব্যাপারে বাংলাদেশ পেলো অষ্টরম্ভা। আজ পর্যন্ত তিস্তা আমাদের আবেদন আর আকুতি, কান্না আর কাকুতির কারণ হয়ে আছে।
কিন্তু এই যে বঞ্চনা, বাংলাদেশকে এই যে প্রতারণা, ভারত সরকারের মিথ্যা আশ্বাসের পাশাপাশি উজানের আরো পানি প্রত্যাহার  এ সব কিছুর জন্য নিশ্চয়ই বাংলাদেশের বিরোধী দল, অর্থাৎ আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ বিন্দুমাত্রও দায়ী নয়। পরীক্ষিত মিত্রদেশ দায়ী। অথচ নিজেরা তো পানি আনতে পারলেনই না, উল্টো যারা এ জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেমেছেন, তাদের ব্যঙ্গবিদ্রƒপ ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার জন্য আওয়ামী নেতারা উঠেপড়ে লেগেছেন; কিন্তু এসব অযৌক্তিক অবাস্তব প্রলাপোক্তি জনগণের সামনে সরকারের ইমেজকে আরো খেলো করে তুলছে। অপরের সমালোচনা করে নিজের অযোগ্যতা ও ব্যর্থতা ঢাকা যায় না।
পাদটীকা : তিস্তার পানি নিয়ে ভারতের ভেলকিবাজি দেখে মানুষের প্রতিক্রিয়া নানাভাবে প্রকাশ পেয়েছে। কেউ কেউ আওয়ামী লীগ সরকারের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘চমকের সরকার এমন বন্ধু দরকার। একটি পত্রিকা বৃহস্পতিবার সিনেমার গানের কলির ভাষায় তিস্তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, ‘তুমি এসেছিলে পরশু/কাল কেন আসোনি

মীযানুল করীম


 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads