বেশ কয়েক দিন হলো তুমি অসুস্থ
হয়ে হাসপাতালে আছো। হাসপাতালগুলো সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতার কথা এর আগেও বলেছি। বয়স বাড়ছে
বলে বেশি বেশি ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। ডাক্তারের সাথে সব সময় বন্ধুত্ব রাখতে চেষ্টা
করি। ফোন করে বা ই-মেইলে যে ডাক্তার সাহেবকে পাওয়া যায় তার কাছেই যাই। আমি এমনিতেই
হাসিমাখা মুখ পছন্দ করি। বেদনা বা দুঃখময় চেহারার লোক আমি পছন্দ করি না। বি চৌধুরী
সাহেব এ ব্যাপারে সব সময় এক নম্বর। তার চেহারা দেখলেই রোগী অর্ধেক ভালো হয়ে যায়। এটি
হাসপাতাল হিসেবেই বড় পরিসরে নির্মাণ হয়েছে। শুনেছি মালিকেরাও ভালো মানুষ। ধানমন্ডি
ছেড়ে গুলশান চলে আসার ফলে এখন আর ওই এলাকার ফাইভ স্টার হাসপাতালগুলোয় যেতে পারি না।
তাই কয়েক দিন আগে গিয়েছিলাম এই হাসপাতালে। চার দিকে ঘুরেফিরে মনে হলো প্যাসেন্ট ম্যানেজমেন্ট
ভালো নয়। অনেক বিভাগে স্টাফ আসে সকাল ৮টায়। কোনো কারণে আপনি যদি রক্ত দেয়ার জন্য ৭টায়
যান তাহলে রক্ত দেয়ার পর আপনাকে বসে থাকতে হবে। কারণ তখনো ৮টা বাজেনি। যদি আপনি বয়স্ক
মানুষ হন তাহলে আপনার অবস্থা কী হবে একবার ভাবুন। আপনি যদি কারো কাছে জানতে চান অমুক
বিভাগ কোথায় বা কোন দিকে? দায়িত্বরত স্টাফ বলবে দোতলায় যান। যদি বলেন রুম
নম্বর কত? উত্তর পাবে রুম নম্বর নেই। কোনো একটি বিভাগের ঠিকানা পেতে আপনাকে
ওপর নিচ করতে হবে। ডাক্তার সাহেবের সাথে প্রথম দিন দেখা করতে ফি দিতে হবে ১২ শ’ টাকা। দেখা করার পর তিনি আপনাকে অনেক বিষয় পরীা করতে বলবেন। তাতে আপনার ১০-১২
হাজার বা আরো বেশি টাকা চলে যাবে। আপনি কিন্তু এখনো কোনো প্রেসক্রিপশন পাননি। সব রিপোর্ট
নিয়ে ডাক্তার সাহেবের কাছে গেলে আবার হয়তো আবার পুরো বা আসা ফি দিতে হবে। তারপর ডাক্তার
সাহেব বলবেন, এখন যে অষুধ খাচ্ছেন তাতে চলবে বা একটা ওষুধ কমবেশি খাবেন। শুধু
ওখানে নয়, রাজধানীর সব ফাইভ-সিক্স স্টার হাসপাতালই এ রকম। এখন বন্ধুত্ব থাকলেও
সহজে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায় না। তোমার কথা না শুনে বা বুঝে আমি আমার কথা বলা শুরু
করেছি। আমি দুঃখিত। ডাক্তার বলেছেন, বেশ কিছু দিন তোমাকে বিশ্রাম
নিতে হবে। আমিও চাই তুমি কিছু দিন মানে মাসখানেক বিশ্রামে থাকো। এটা তোমার জন্য জরুরি।
ইচ্ছা করলে আমাদের সাথেও থাকতে পারো। আমি কিছুতেই তোমাদের ধানমন্ডির বাড়িতে আর উঠব
না। ওই বাড়িটা সংস্কার করে ভাড়া দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। তিন লাখ টাকা ভাড়া পাবে। যদি
অফিসের জন্য ভাড়া দাও তাহলে পাঁচ লাখ টাকা ভাড়া পাবে। তোমার আত্মীয়স্বজন এখন তোমার
ব্যাপারে অনেক নমনীয়। তারা তোমার খোঁজখবর নিচ্ছেন। কারো কারো নজর তোমার বাড়ির দিকে।
দুয়েকজন জানতেও চেয়েছে তুমি বাড়ি নিয়ে কিছু ভেবেছ কি না। আমি বলেছি, আপনারা নিজেরা কথা বলে জেনে নিন। আমি বাড়ি নিয়ে কখনই আশির সাথে আলাপ করি না।
তা ছাড়া এটা আমার বিষয়ও নয়। ও একাই এ বাড়ির মালিক। সে নিজেই ঠিক করবে বাড়িটাকে কী করবে।
আপনারা সবাই মিলে বোঝালে সে বুঝবে নিশ্চয়ই। কখনো লোকের কথায় কান দেবে না। বিশেষ করে
শিতি বাজে লোকের কথায়। তুমি স্বর্গের দেবী হলেও তারা তোমার বদনাম করবে।
সব কিছু
নিয়ে নতুন করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করো। আমি সব সময় তোমার পাশে থাকব। আমার
পরামর্শ হলো তুমি দেশকে নিয়ে নতুন কিছু ভাবো ও লিখো। দেখো এরশাদ, তুমি তো নিয়মিত কলাম লিখছ, সেমিনারে বলছো। তোমার কথা কে
শুনবে। শুনতে পাওনা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী টকশো নিয়ে কত কথা বলেন। তিনি
তাদের নিশিকুটুম্ব (চোর) বলেছেন। একজন নামজাদা সাংবাদিককে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে
কথা বলেছেন। সরকারের সমালোচনা করলেই মন্ত্রী সাহেবেরা দল বেঁধে কোরাসসঙ্গীত শুরু করে
দেন।
লেখালেখির
ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ নেই। যে মন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি তা এখন আর কোনো বিষয় নয়।
কলেজের বন্ধু বা ছাত্ররা মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনতে চায় না। তারা জানতে চায় ওই সময়ে আমার
শারীরিক কোনো অসুবিধা হয়েছে কি না? তোমার সাথে আমার কী সম্পর্ক।
মুক্তিযুদ্ধ এখন ওদের কাছে তেমন কিছুই না।
দেশ নিয়ে
কেউ কিছু ভাবে বলে মনে হলো না। টিচার্স রুমে বসে সবাই ফেসবুক, টুইটার, ভারতীয় টিভি সিরিয়াল নিয়ে আলোচনা করে। আর না হয় ফ্যাশন পার্লার, নতুন ড্রেস, নতুন অলঙ্কার, নতুন মোবাইল। স্বামীর ক’টা গাড়ি আছে, বেতন কত পায়, বিদেশে কতবার যায়, স্বামীর কোনো বন্ধবী আছে কি না। আমি তো এমনিতেই একা, টিচার্স রুমেও একা। সবাই আমাকে ভারিক্কি চালের মেয়ে বলে। আমি নাকি গম্ভীর।
সহজে কথা বলি না। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সবাই আমাকে সোবার শান্ত স্বভাবের বলত।
এখন বলে অহঙ্কারী। স্বাধীনতার ফল হলো সবার চোখে নতুন রঙ লেগেছে।
মুক্তিযুদ্ধ
নিয়ে যারা সারা দিন ভাবেন তাদের সাথে যখন কথা বলি তখন দেখি ওরা ব্যস্ত সিনেমা বানাবে
তার অনুদান নিয়ে। সিনেমা তৈরির আগেই নানা দিক থেকে টাকা-পয়সা জোগাড় করা। এক বন্ধু বললেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি দেশটা তো আমাদেরই। যখন জানতে চাইলাম কোথায় যুদ্ধ করেছেন
তখন বললেন, আমার বড় ভাই যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। সেটা তো জানি। আপনি? আমি তো মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। এখন তো মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরাও সুযোগ-সুবিধা
পাচ্ছে। আপনার ভাবী তো একটা বাড়ি পেয়েছেন। তিনি নিজে একটা সরকারি চাকরি পেয়েছেন। দেখুন
আপু, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করি। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা
বানাই, ডকুমেন্টারি করি, গান রচনা করি। এটাও তো একটা যুদ্ধ।
আপনি তো সেই কখন ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, এখন তো কিছু করছেন না। আমরাই
তো মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচিয়ে রেখেছি। আপনি কি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভালো করে জানেন? এখানে জানাজানির কী আছে? আমরা স্বাধীনতার সপরে লোক। আমরা গণজাগরণ করি। মাথায়
লাল-সবুজের পতাকা বাঁধি।
লাল-সবুজের
পাঞ্জাবি পরি, মেয়েরা লাল-সবুজের শাড়ি ও সালোয়ার-কামিজ পরে। আমি তো দেখি মেয়েরা
জিন্সের প্যান্ট, টিশার্টও পরে। আবার তারাই পয়লা বৈশাখে পান্তা খাওয়ার জন্য রমনার
মাঠে যায়। এরাই আবার থার্ট ফার্স্ট নাই করে। ঠিক বলেছেন আপু, কিছু তো ও রকম থাকতেই পারে। তবে এদের সংখ্যা তেমন নয়। আমি তো দেখেছি মা হিজাব
পরে আর আর মেয়ে টি-শার্ট আর জিন্স পরে বুক চেতিয়ে রাস্তায় চলে। তাকালে ছেলেদের দোষ।
যাক ওই সব কথা বাদ দিন। বুঝলেন, আপু ’৭১ সাল নিয়ে পড়ে থাকবেন না। তবে
আমি এ কথা নিশ্চয়ই বলব, আপনার মতো ত্যাগী মানুষ এখন বাংলাদেশে হাতে গোনা
কয়েকজন হতে পারে। শুদ্ধতা আর পবিত্রতা হচ্ছে আপনার আদর্শ। তাই আপনি অন্ধকারে পড়ে আছেন।
আলোতে বা মঞ্চে যারা আছেন তারা না ধরনের সওদাগর। কেউ মুক্তিযুদ্ধের ব্যবসায় করছে, কেউ চেতনার ব্যবসায় করছে, কেউ মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট কিনে নিয়ে নানা সুবিধা
নিয়ে এখন শিল্পপতি। ’৭০ সালে যে লোকটা ব্যাংকের কেরানি বা পিয়ন সে এখন
ব্যাংকের ডিরেক্টর। এক ভদ্রলোক ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের কেরানি ছিলেন, এখন জাতির বিবেক। ডাকসাইটে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশে কিছু ঘটলেই ভারতে
চলে যান। তার বাপদাদা এক শ্রেণীর সাম্প্রদায়িক হিন্দুর অত্যাচারে ভারত থেকে পালিয়ে
পূর্ব পাকিস্তানে এসেছেন ’৪৭ সালে। ধরে নিলাম, পূর্ব পাকিস্তান তার ভালো লাগত না। এখন তো বাংলাদেশ। এখন কথায় কথায় ভারতে পালানোর
প্রয়োজন কী? অনেকে নানা ধরনের পদক নিচ্ছেন। ৪২ বছরে দেশটা এ রকম হয়ে গেছে।
বলুন তো, আমরা কেন স্বাধীনতা চেয়েছিলাম? আপু, এ তো এক লম্বা ইতিহাস। আমরা তো ইতিহাস নিয়ে কোনো গবেষণা করি না। আমাদের হাতে
সময়ও নেই। পুরনো বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে ভালো লাগে না। আমাকে বলুন কে মাথা ঘামাচ্ছে।
আমরা বর্তমান নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। আওয়ামী লীগ মতায় থাকলে বঙ্গবন্ধু আর বিএনপি মতায়
থাকলে জিয়া আমাদের ইতিহাস। এখন আমরা দুই জাতি। একটা আওয়ামী জাতি, আরেকটা বাঙালি মুসলমান, যারা নিজেদের বাংলাদেশী বলে পরিচয় দেয়।
আজ পর্যন্ত
ঠিক হলো না কে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা তো জিয়া সাহেবের ঘোষণা শুনেই মুক্তিযুদ্ধে
গিয়েছি। মানলাম, সবাই জিয়ার সাহেবের ঘোষণা শুনেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ এটা মানতে
চায় না। তারা বলে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। দেখুন, বঙ্গবন্ধু এ দেশের অবিসংবাদিত নেতা। তার নামেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আমি তো কোনো
দল বা রাজনীতি করি না। ’৭১ সালেও করতাম না। শুধু দেশকে ভালোবেসে মুক্তিযুদ্ধে
গিয়েছি। তখন এত দলাদলি ছিল না। আওয়ামী লীগ ’৭০-এর নির্বাচনে জিতেছে বলে তার
একটা আইনগত অধিকার ছিল মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়ার। তাই তারা নেতৃত্ব দিয়েছে। ভারতও
চেয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব যেন অন্য কোনো দল বা নেতার হাতে না চলে যায়। তাই ইন্দিরা
সরকার মওলানা ভাসানীকে নিজের ইচ্ছেমতো চলাফেরা বা কথা বলতে দেননি।
বঙ্গবন্ধু
স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলেও তিনিই এ দেশের অবিসংবাদিত নেতা। সময় ও পরিস্থিতির কারণে
জিয়া সামনে এগিয়ে এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন। চট্টগ্রামে প্রথম বিদ্রোহের ঘোষণা তিনিই দিয়েছেন।
অন্য বাঙালি অফিসাররা জিয়ার নির্দেশ গ্রহণ করেছেন। তিনি এবং তার টিমই অবাঙালি অফিসারদের
নিরস্ত্র করে বন্দী করেছেন। এসব তথ্য নিয়ে কুতর্ক করা মানে আমাদের ইতিহাসকে বিকৃত করা।
ভারতের সহযোগিতা ও নির্দেশে মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে জিয়া সেই সরকারের আনুগত্য মেনে
নেন। সেই সরকারের অধীনেই তিনি যুদ্ধ করেছেন। দেশে ফিরে এসেও তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ
দিয়েছেন। তিনি তো রাজনীতি করতে চাননি। ’৭৫ সালের পর ৭ নভেম্বর ভাগ্যই
তাকে জনগণের সামনে নিয়ে এসেছে। তারই সেনাপ্রধান হওয়ার কথা ছিল। পাকিস্তান তাকে বিদ্রোহী
মনে করে। ভারত তাকে বেশি সাহসী ও বেশি দেশপ্রেমিক মনে করে। একই কারণে বঙ্গবন্ধু তাকে
সেনাপ্রধান করেননি।
জিয়া বাংলাদেশের
রাজনীতিতে নতুন ধারা চালু করেছেন। তখন আওয়ামী লীগ ও তার সমর্থক কিছু রাজনৈতিক দল ছাড়া
অন্য কোনো দল কার্যকর ছিল না। ইসলাম বা মুসলমানের ঐতিহ্যে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো
নিষিদ্ধ ছিল। এটা ছিল রাশিয়া ও ভারতের পরামর্শ। ভাবটা ছিল এমন যে, দেশটা মুসলমানদের নয়। ধর্ম কোনো বিষয় নয়। বঙ্গবন্ধু তো বলেছিলেন, আমি বাঙালি, আমি মুসলমান। আমি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম
দেশের নেতা। ভারতের আপত্তি উপো করেই তিনি ওআইসি সম্মেলনে পাকিস্তান গিয়েছিলেন। কারণ
তিনি মনে প্রাণে একজন বাঙালি মুসলমান ছিলেন। জিয়া সাহেব মুসলমানদের ঐতিহ্য ও স্বার্থবিরোধী
রাজনীতির পথ ত্যাগ করে নতুন পথে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত
হোক। কিন্তু এখন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ত্যাগ করে তথাকথিত ধর্মহীনদের
পাল্লায় পড়েছেন। যদি শেখ হাসিনার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আপনি আসলে কী চান? তিনি সহজ সরল ভাষায় কোনো উত্তর দিতে পারবেন না।
হয়তো তাকে দিল্লির কাছে থেকে উত্তর সংগ্রহ করার জন্য অপো করতে হবে। আমি বলব, তিনি তার বাবার রাজনৈতিক আদর্শের ব্যাপারে এখন একেবারেই কনফিউজড বা বিভ্রান্ত।
দেখো আয়েশা, বাংলাদেশের মানুষ খুবই ধর্মপ্রাণ। তারা কখনই ধর্মবিরোধী রাজনীতির দিকে ঝুঁকবে
না। কিছু ভারতপন্থী ঢাকা বা নগরকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী সমাজে ধর্মহীনতা প্রচার করছে।
এরাই পয়লা বৈশাখের নামে নানা ধরনের পশুপাখির ছবি এঁকে মিছিল বের করে। তাদেরকে এক অদৃশ্য
শক্তি অর্থ জোগান দেয় আর সরকার সমর্থন দিয়ে যায়। তারাই জাতীয় কবি নজরুলকে অবহেলা অবজ্ঞা
করে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যসূচিতে নজরুলের তেমন গুরুত্ব নেই।
নজরুল ইনস্টিটিউট আছে; কিন্তু নজরুলবিষয়ক কোনো গবেষণা নেই। এই বুদ্ধিজীবীরাই
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
তুমি বলছো
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে টানাটানির কথা। আমি তো দেখছি আমাদের শিাব্যবস্থা ধ্বংস হতে
চলেছে। ছাত্ররা শিকদের মারধর করছে। শিার চেয়ে রাজনীতি বড় হয়ে গেছে। দলীয় রাজনীতির প্রধান
হাতিয়ার হচ্ছে ছাত্র আর যুবসমাজ। একই দলের ছাত্ররা মতার দ্বন্দ্ব বা প্রভাব বজায় রাখার
জন্য নিজের বন্ধুকে খুন করছে। ছাত্ররা নাকি প্রতিপ ও নিজ দলের বিদ্রোহীদের শায়েস্তা
বা দমন করার জন্য টর্চার সেল খুলেছে।
সেই দিন
এক উচ্চমর্যাদার পুলিশ অফিসার বলেছেন ১৮৬১ সালের পুলিশ আইনের কোনো সংস্কার হয়নি। সেই
সব আইন ছিল ভারতবাসীকে দমন করার জন্য। দমন নিবর্তনমূলক আইনগুলোর সংস্কার হয়নি। ফলে
পুলিশকে ওই সব আইনের বলে সরকারদলীয় কাজে বা বিরোধী আন্দোলন দমনের কাজে ব্যবহার করছে।
থানায় গিয়ে মানুষ কোনো সহযোগিতা পায় না। মেয়েরা থানায় গিয়ে লাঞ্ছিত হচ্ছে। পরিস্থিতি
দেখে মনে হচ্ছে দল আর পুলিশের ভেতর কোনো ফারাক নেই। শুরুতে র্যাবের যে ইমেজ ছিল তা
এখন আর নেই।
এখন তো
মত প্রকাশের তেমন স্বাধীনতা নেই। যেকোনো কারণেই হোক সব ধরনের মিডিয়া ভারতপন্থীদের হাতে
চলে গেছে। তারা বাংলাদেশ ও মুসলমানের বিরুদ্ধে কাজ করে। এ দেশে ইসলামকে দুর্বল করা
মানেই হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের মূলে কুঠারাঘাত করা। যে দিন এ মূল বিচ্ছিন্ন
হয়ে যাবে সে দিন আর হয়তো দেশের স্বাধীনতা থাকবে না।
এরশাদ মজুমদার
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন