রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৩

সাভার ট্র্যাজেডি নানা প্রশ্ন


গত ২৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাংলাদেশে নেমে এলো এক ট্র্যাজেডি। এ ট্র্যাজেডির নাম সাভার ট্র্যাজেডি। মানুষের লোভ আর অবহেলা জন্ম দিলো এ ট্র্যাজেডির। সাভারের রানা প্লাজার ৯তলা ভবন ধসে পরিণত হয় এক মৃত্যুপুরীতে। এর ফলে এই ভবনে থাকা কয়েকটি পোশাক তৈরির কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকা পড়েন। বুধবার সকালে ধসে যায় এ ভবন। এর ঠিক চার দিন পর রোববার সকালে এই লেখা তৈরির সময় পর্যন্ত ধসে যাওয়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনা হয় ৩৬২ জনের লাশ। আর বিভীষিকাময় মৃত্যুপুরী থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আড়াই হাজারের মতো মানুষকে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, এখনো সেখানে আরো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। নানা জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা যায়নি। তবে তারা বলছেন, জীবিত একটি মানুষের সম্ভাবনা থাকা পর্যন্ত তাদের উদ্ধারকাজ চলবে। এখনো অনেক লাশ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এমনভাবে চাপা পড়ে আছে যাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। পুরো ভবনটি ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে না ভেঙে সেসব লাশ উদ্ধারের সম্ভাবনা কম। ধারণা করা হচ্ছে, এখনো কয়েক শ’ লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি  লোকের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে এক তথ্যে জানানো হয়েছে। অনুমান করা যায়, নিখোঁজ লোকগুলোর বেশির ভাগই এরই মধ্যে পচাগলা লাশে পরিণত হয়েছে। কিছুসংখ্যক মানুষ এখনো আধমরা হয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকতে পারেন।

অনেকে বলছেন এটি একটি দুর্ঘটনা। কেউ বলছেন ট্র্যাজেডি। কেউ বলছেন মহাবিপর্যয়। কেউ বলছেন এ এক মানবসৃষ্ট বিপর্যয়। আবার কেউ বলছেন এটি রীতিমতো এক হত্যাকাণ্ড, গণহত্যা। এই হত্যাকাণ্ডের, গণহত্যার জন্য দায়ীদের ফাঁসি দাবি করে তৈরী পোশাক শিল্পের সাধারণ শ্রমিকদের ও বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে ক্ষোভ-বিক্ষোভও আমরা চলতে দেখেছি। চলেছে সড়ক অবরোধ ও ভাঙচুরসহ নানামাত্রিক সহিংসতা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এ ট্র্যাজেডি-গণহত্যার জন্য দায়ী কে?
এ পর্যন্ত জানা তথ্যানুযায়ী সাভারের রানা প্লাজা নামের এই ভবনটিতে বিপণি কেন্দ্র, ব্যাংক ও অন্তত পাঁচটি পোশাক তৈরির কারখানা ছিল। সকালে এ ভবনটি ধসে পড়ার সময় এ ভবনের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই খোলা ছিল। পুরোদমে কাজ চলছিল পোশাক কারখানাগুলোতে। আর এই ট্র্যাজেডির সবচেয়ে বড় শিকার এসব পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা ছিল না, সে ব্যাপারে কোনো বিতর্কের আকাশ নেই। কারণ আগের দিনের একাধিক পত্রপত্রিকায় আমরা খবর প্রকাশ হতে দেখেছি, এই ভবনের ফাটল ধরার কথা জানিয়ে। বলা হয়েছিল, ফাটল ধরায় এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে স্থানীয় প্রশাসন ও বিজিএমইএসংশ্লিষ্ট সবাইকে তাৎক্ষণিকভাবে জানানো হয়েছিল। ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভবনটি আগের দিন পরিদর্শনও করেন। সর্বোপরি বিজিএমইএ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশও দেয়া হয়েছিল। এ-ও বলা হয়েছিল, বুয়েটের প্রকৌশলীরা পরীক্ষা করে বলবেন এই ভবনটি চালু রাখা যাবে কি যাবে না। পোশাক কারখানার শ্রমিকেরাও বারবার মালিককে তাগাদা দিয়েছিল কারখানা বন্ধ রাখার জন্য। এই অবস্থায় আগের দিন মঙ্গলবার থেকে এই ভবনে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শাখাটি বন্ধ রাখা হয়। ভবনটি ধসে যাওয়ার চরম ঝুঁকিতে থাকলে ভবনমালিক ও পোশাক কারখানার মালিকেরা এক হয়ে শ্রমিকদের মারধর করে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেন। এমনও বলা হয় বুধবারে যারা কাজে আসবে না, তাদের বেতন দেয়া হবে না। যারা কাজে আসবে তাদের বেতন দেয়া হবে। স্থানীয়দেরও অভিযোগ, পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হওয়ার সুবাদে সোহেল রানা অনেকটা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি চালু রাখেন। ঘটনার দিনও শ্রমিকদের জোর করে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করায়ও তার ভূমিকা ছিল। পোশাক কারখানার মালিকেরা বলছেন, সোহেল রানার চাপাচাপিতে এরা কারখানা খোলা রাখতে বাধ্য হয়েছেন। অতএব এ গণহত্যার দায় সোহেল রানা কিছুতেই এড়াতে পারেন না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঘটনার সময় তিনিও এই ভবন এলাকায়ই ছিলেন। পরে স্থানীয় সরকারদলীয় এমপি মুরাদ জং তাকে এখান থেকে নিরাপদে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন। সরকারদলীয় লোকজন ও প্রধানমন্ত্রী নিজে সোহেল রানাকে বাঁচানোর জন্য নানা ধরনের হাস্যকর মন্তব্য উচ্চারণ করে যাচ্ছেন। গোটা সাভারবাসী যেখানে বলছেন সোহেল রানা সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলে বসলেনÑ সোহেল রানা আওয়ামী লীগের কেউ নন। এর পরপরই আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা টকশো ও গণমাধ্যমের কাছে একই ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন। কিন্তু পত্রপত্রিকায় বিভিন্ন পোস্টার ছাপিয়ে ও সোহেল রানার কপালে মুরাদ জংয়ের চুমোর দৃশ্য ছাপিয়ে সুস্পষ্ট করে দেয়া হয় সোহেল রানা আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠজন ও সাভার পৌর আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। সোহেল রানাকে বাঁচানোর আরেক ব্যর্থ প্রয়াস দেশবাসী দেখল স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। তিনি আবিষ্কার করলেন খাম্বাতত্ত্ব। বললেন, হরতাল সমর্থকের খাম্বা ধরে নাড়াচাড়া করা হতে পারে এই ভবন ধসের একটি সম্ভাব্য কারণ।
কে এই সোহেল রানা? একদম নিঃস্ব অবস্থা থেকে সোহেল রানা এখন কোটিপতি। তার এই কোটিপতি হওয়ার পেছনে রয়েছে অপরের জমি দখল, খুন, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়সহ চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। জানা গেছে, জনৈক রবীন্দ্রনাথ সরকারের জায়গা দখল করেই রানা প্লাজা ভবনটি নির্মাণ করেন সোহেল রানা। রবীন্দ্রনাথ সরকার দৈনিক কণ্ঠকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন; ‘ওরা যখন আমার জায়গা দখল করে তখন আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। আর তা করতে গিয়ে আমাকে সাভারছাড়া হতে হয়েছিল। সাত মাস সাভারে আসতে পারিনি। ঢাকায় হোটেলে ও আত্মীয়ের বাসায় থাকতে হয়েছে। লোক ধরাধরি করে সাভার ফিরতে হয়েছে। এসব নিয়ে এখন আর কোনো কথা বলতে চাই না। সত্য কথা বললে এবার ওরা আমাকে পৃথিবীছাড়া করবে।’ সাভারের মানুষ তাকে চেনেন এমপি তৌহিদ জং মুরাদের ডান হাত বলে। কখনো নিজের নামে, কখনো এমপি মুরাদ জংয়ের নামে অবলীলায় চলে এসেছে তার যাবতীয় অপরাধ কর্মকাণ্ড। রানা প্লাজা ধসে পড়ার পর তার চাঞ্চল্যকর নানা অপরাধ কাহিনী এখন সাভারবাসীর মুখে মুখে। আর গণমাধ্যমের সুবাদে তা এখন জানতে পারছে সারা দেশের মানুষ। এক সময় সাভার থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও আজকের সাভার পৌর আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানার পাপের ভার বোধ হয় সইতে পারল না রানা প্লাজা। এখন প্রশ্নÑ সোহেল রানার বিচার কি শেষ পর্যন্ত হবে? বিচার কি হবে সেইসব পোশাক কারখানার মালিকের, যারা জোর করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন? ভবিষ্যতেও ঘটবে এমনই নতুন কোনো ট্র্যাজেডি?
এসব প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। এ ধরনের ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার হয় না, গত ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার পরও এর জন্য দায়ী কারো শাস্তি হয়নি। কারখানার মালিক দেলোয়ার হোসেন কিছু দিন পলাতক থাকার পর এখন প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ২০০৫ সালের সাভারের বাইপাইলে স্পেকট্রাম ভবন ধসে পড়ে মারা যান ৬৪ জন শ্রমিক। এ ঘটনায় দায়ী কারো বিচার হয়নি। এসব ঘটনায় যারা দায়ী তারা বিজিএমইএর সদস্য হলে তাদের বাঁচানোর জন্য এই অ্যাসোসিয়েশনও একটি বাধা, এমন অভিযোগ আছে। যেমন, অভিযোগ আছে তাজরীন ফ্যাশনের মালিককে বাঁচাতে তৎপর ছিল বিজিএমইএ। এর বিপরীত চিত্রটিও রয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে স্মার্ট ফ্যাশনসে আগুনে পুড়ে মারা যান সাতজন শ্রমিক। ওই প্রতিষ্ঠানের দুই মালিক শরিফ আহমেদ ও জাকির হোসেন এখনো কারাগারে রয়েছেন। সমালোচনা এসেছে এই প্রতিষ্ঠান বিজিএমইএর সদস্য নয় বলে এর মালিকদের আজ কারাগারে থাকতে হচ্ছে। সদস্য হলে তাদের পাশে দাঁড়াত বিজিএমইএ।
রানা প্লাজার ট্র্যাজেডি থেকে আরেকটি প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। ভবনটি ধসে পড়ার চার দিন পরও যখন উদ্ধারকারীদের মধ্য থেকে আমাদের জানানো হচ্ছিল, তারা বিভিন্ন কক্ষে আটকা পড়া জীবিত লোকদের সন্ধান পেয়েছেন। কিন্তু উপযুক্ত সরঞ্জামের অভাবে তারা সেখানে পৌঁছতে পারছেন না। সামান্য ৯তলা ভবন ধসে পড়া ভবন থেকে উদ্ধারকাজ পঞ্চম দিনেও সম্পন্ন করতে পারিনি। ফলে যাদের জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব ছিল, তাদেরকে আমরা কার্যত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলাম। এ আমাদের জন্য বড় মাপের এক জাতীয় অসহায়ত্ব। আমরা যখন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সরাসরি উদ্ধার তৎপরতা দেখছিলাম, তখন উদ্ধারকারীদের বলতে শুনেছি ছোটখাটো যন্ত্রপাতিও পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের মতো ছোট আকারের অক্সিজেন চেম্বারের অভাব রয়েছে। অভাব রয়েছে প্রশিক্ষিত উদ্ধারকর্মীর। ফলে অনভিজ্ঞ, প্রশিক্ষণহীন সাধারণ মানুষকে শুধু সাহসের ওপর ভর করে উদ্ধারকাজে নামতে হয়েছে সেনাবাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড, র‌্যাব, পুলিশবাহিনীর সদস্যদের সাথে। অনেকেই আজ বলছেন, বেসামরিক সাধারণ উদ্ধারকারীদের সাহসী উদ্ধার তৎপরতার ফলে অনেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন। এরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে অনেককে ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উদ্ধার করে এনেছেন। দেশবাসীর কাছে মনে হয়েছে, এরাই প্রকৃতপক্ষে আমাদের জাতীয় বীর। জাতীয়ভাবে তাদের স্বীকৃতি জানানো উচিত। এদের অনেকের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা আজ গণমাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। একজন সাধারণ উদ্ধারকারীর কথা জানি, যিনি প্রথম দিকেই ধসে যাওয়া ভবনটি ওপরের দিকে উঠে বিপন্ন মানুষদের উদ্ধারের জন্য ভাঙা ভবনের অংশ দিয়ে ভেতরে ঢুকতে থাকেন। এক সময় তিনি নিজেও
ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েন। ৫১ ঘণ্টা
পর তিনি অন্য উদ্ধারকারীদের সহায়তায়
উদ্ধার পান।
চতুর্থ দিনে আমরা শুনলাম, অনেকে আটকা পড়া অবস্থায় কয়েক দিন থাকার পর পাগলের মতো আচরণ করছেন। এরা উদ্ধারকারীদের দেখলে ভয় পাচ্ছেন, কেউ একে অন্যকে জাপটে ধরছেন, কেউ উদ্ধারকারীদের শরীরে কামড় দিচ্ছেন। ফলে কোনো উদ্ধারকারী একা আর তাদের কাছে যেতে পারছেন না। এ এক দুঃসহ মানবিক বিপর্যয়। অথচ আমরা যদি দ্রুত এদের উদ্ধার করতে পারতাম, তবে এমনটি হতো না। হাসপাতালে থাকা একজনকে দেখলাম, তিনিও পাগলের মতো আচরণ করছেন। হারিয়ে ফেলেছেন মানসিক ভারসাম্য। প্রয়োজন ছিল এদের দ্রুত উদ্ধার করা। প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলে, প্রশিক্ষিত পর্যাপ্ত উদ্ধারকারী দল থাকলে তা সম্ভব ছিল, কিন্তু আমাদের যে সেসব নেই তার প্রমাণ মিলল এই সাভার ট্র্যাজেডিতে। আমরা বলতে কেউ-ই কম যাই না। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কথা বলি, শত শত কোটি টাকার যুদ্ধাস্ত্র কিনি, কিন্তু একটা ধসে পড়া ভবন থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কয়েক শ’ মানুষ উদ্ধার করার যন্ত্রপাতি কিনি না। এর চেয়ে বড় প্রহসন জাতির কাছে আর কী হতে পারে? এসব ব্যর্থতা ঢাকার ব্যর্থ প্রয়াস ঢাকতে টকশোতে জনৈক এমপিকে বলতে শুনি, জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলে ৯তলা ভবনে পৌঁছে আগুন নেভানোর মতো মই কেনা হয়েছে।
শুনেছি, বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীর কোনো আগ্রহ নেই। হয় এসব তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে না, নয়তো তা হবে দায়সারা গোছের কিছু; যা কারো জন্য কোনো উপকার বয়ে আনবে না। মানুষ চায় যারা আজ পঙ্গু, যারা আজ স্বজনহারা তাদের আজীবন অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা। প্রয়োজনীয় উন্নত চিকিৎসা দেয়া। আর দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করা। সরকারকে এটুকুই নিশ্চিত করতে হবে। জানি না, সরকার তা করবে কি না, সেটাও অভিজ্ঞতার আলোকে আজ এক বড় প্রশ্ন।
এসব নানা প্রশ্নের মধ্যেও আমরা দেখতে পেয়েছি এক ইতিবাচক বাংলাদেশকে। বিপর্যয় মোকাবেলায় আমরা যেসব বিভেদ-বিভাজন ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, বিপর্যয় ঠেকাতে পারি, বিপর্যয় মোকাবেলায় নিজেদের মধ্যে এক ইতিবাচক সত্তাকে জাগিয়ে তুলতে পারি, তার এক বড় উদাহরণ জ্বলজ্বল করছে এই সাভার বিপর্যয় উত্তরণের মধ্যে। আমরা যদি অন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে এই ইতিবাচকতাকে সক্রিয় রাখতে পারতাম, তবে আমাদের এগিয়ে চলা ঠেকায় কে? আর অগ্রগতিই বা কেন থমকে দাঁড়াবে? কেন জমবে সমস্যার পাহাড়?

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads