শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৩

মে মাসে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা



এক সর্বগ্রাসী মহাসংকটের কবলে নিক্ষিপ্ত হয়েছে বাংলাদেশ। সংকটের এই করাল গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসার শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক কোন পথই চোখে পড়ছে না। সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের যতগুলো পথ খোলা ছিল সেই  সব পথই একের  পর এক রুদ্ধ করছে আওয়ামী সরকার। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি এবং আলাপ আলোচনার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়েছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার দৈনিক ‘আমার দেশের’  সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনী। এই দুঃসাহসিক কলমযোদ্ধা এবং ইসলামের লড়াকু সৈনিক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতারের পাঁয়তারা চলছিল গত ডিসেম্বর থেকেই। অবশেষে তিন সাড়ে তিন মাস ধরে অনেক অংক কষে, অনেক যোগ-বিয়োগ করে, গ্রেফতার করা হল মাহমুদুর রহমানকে।
এটি যে সে গ্রেফতার নয়। একেবারে কমান্ডো স্টাইলে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পত্রিকা অফিসটির নিরাপত্তা রক্ষীদের গালিগালাজ করে এবং জোর জবরদস্তি করে তারা মাহ্মুুদ সাহেবের রুমে প্রবেশ করে। জেলে যাওয়ার জন্য মানুষের একটি প্রস্তুতিকালীন সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তাকে দেয়া হয় মাত্র ৫ মিনিট সময়। পুলিশকে তিনি বলেছিলেন, তিনি দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। কিন্তু তাকে নামাজ পড়ার সময়ও দেয়া হয়নি। তার পরনে ছিল লুঙ্গি, পায়ে ছিল স্যান্ডেল। তিনি চেয়েছিলেন, লুঙ্গি বদলে প্যান্ট পরবেন এবং স্যান্ডেল বদলে জুতা পরবেন। কিন্তু সেই সময়ও তাকে দেয়া হয়নি। তাকে জোর কারে টেনে হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয় এবং সরাসরি গোয়েন্দা অফিস অর্থাৎ ডিবি অফিসে নেয়া হয়।
তাকে সকাল নয়টায় গ্রেফতার করা হয়। সকাল দশটা সাড়ে দশটায় টেলিভিশনের স্ক্রলে লেখা হয় যে পুলিশ তার জন্য আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ড চাইবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল যে আদালত তাকে ১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। মাহমুদুর রহমান কোন ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেননি, অর্থাৎ জামিনের জন্য তিনি কোন উকিল নিয়োগ করেননি। তিনি বলেন যে, আদালতের কাছে তিনি নিজেই নিজের কথা বলবেন। বাস্তবে তিনি করেছেনও তাই। আদালতের কাছে তিনি কোন অনুকম্পা চাননি, চাননি কোন বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। এজলাসের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি শির উঁচু করে বলেছেন, আমি জানি, আমাকে রিমান্ডে নেয়া হবে। আমি যত যুক্তি দিই না কেন, কোন যুক্তিতেই কর্ণপাত করা হবে না। সুতরাং জামিনের জন্য আবেদন করে লাভ কি? তাকে যখন রিমান্ডে নেয়াই হবে তখন এখনই তাকে রিমান্ডে নেয়া হোক। এরপর আদালত তাকে ১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতার কোন আকস্মিক ঘটনা নয়। এই সরকার বিরোধীদলের শীর্ষ পলিটিশিয়ানদেরকে গ্রেফতার করার যে মহোৎসবে লিপ্ত হয়েছে তারি ধারাবাহিকতায় এই মুহূর্তে শেষ ভিকটিম হলেন মাহমুদুর রহমান। এর কয়েকদিন আগে বিএনপি অফিসের সলতেটিকে টিমটিম করে যিনি জ্বালিয়ে রেখেছিলেন তার নাম সালাউদ্দিন আহমেদ। ২০০১ সালে তিনি কক্সবাজার থেকে বিএনপির টিকিটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচনের পর বেগম জিয়া যে মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন সেই মন্ত্রিসভায় সালাউদ্দিন আহমেদ প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন তাকে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায় নাই। শীর্ষ নেতৃবৃন্দের গ্রেফতারের পর যখন দল পরিচালনার জন্য নেতৃত্বের গুরুতর সংকটের সৃষ্টি হয় তখন সালাউদ্দিন আহমেদ বিএনপির ভাসমান নৌকার হাল ধরেন। এতটুকুও আওয়ামী সরকার সহ্য করতে পারেনি। তাই কয়েকদিন আগে সালাউদ্দিনকেও গ্রেফতার করা হয়। মুখপাত্র হিসেবে সালাউদ্দিন ভালোই করছিলেন। তার বক্তব্যে কোনরূপ অস্পষ্টতা ছিল না। রাজনৈতিক ইস্যুগুলো তিনি গুছিয়ে বলতে পারতেন এবং সরকারের চ-নীতির প্রাঞ্জল বর্ণনা তিনি দিতে পারতেন। সালাউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতারের কয়েকদিন আগে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রাক্তন আইনমন্ত্রী এবং দলের স্ট্যানডিং কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ঢাকার প্রাক্তন মেয়র এবং স্ট্যানডিং কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, স্ট্যানডিং কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ বিএনপির দশজন শীর্ষ নেতার জামিন বাতিল করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়। তারও কয়েকদিন আগে সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ ১৪৮জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এখন বিএনপি বলতে গেলে নেতাশূন্য। বেগম জিয়াকে গ্রেফতার করলে আওয়ামী সরকারের গ্রেফতারের  ষোল কলা পূর্ণ হবে।
দুই.
কেন এই ভয়াল চ-নীতি ? 
কিভাবে বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করা হচ্ছে সে সম্পর্কে এতক্ষণ আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। এখন দেখা যাক জামায়েতে ইসলামীর অবস্থা। জামায়েতে ইসলামীর অবস্থা বিএনপির চেয়ে বেশি খারাপ। জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ঝাড়ে বংশে নির্মূল করার জন্য সরকার সাম্প্রতিক অতীতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের যেখানেই জামায়াত ও শিবিরের কোনো নেতাকে চোখে পড়ছে সেখানে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জামায়াত এবং শিবিরকে সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি। তারপরেও এই দল দু’টিকে কোথাও সভা-সমাবেশ ও মিছিল করা তো দূরের কথা, রাস্তায় দাঁড়াতেও দেয়া হচ্ছে না, ঘরেও থাকতে দেয়া হচ্ছে না। এ পর্যন্ত জামায়াত ও শিবিরের ৩৫ হাজার নেতা-কর্মী কারার অন্ধ প্রকোষ্ঠে দিন কাটাচ্ছেন। জামায়াতের যে কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মীর উপর মধ্যযুগীয় পন্থায় বর্বর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এসব জুলুমে অনেক নেতাকর্মীর চোখ নষ্ট হচ্ছে এবং তাদের হাড়হাড্ডি ভেঙে দেয়া হচ্ছে। গ্রেফতারের পর তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তাদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এসবের পর ট্রাইব্যুনাল বাতিল এবং নতুন করে বিচার করার দাবি যে সরকার মানবে না সেটি চোখ বন্ধ করে বলা যায়।
জামায়েতে ইসলামীর উপরে সরকার যে দারুণভাবে খড়গ হস্ত সেটি আর বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যার প্রয়োজন নাই। জামায়েতের বিরুদ্ধে সরকারের চ-নীতি নিয়ে বরং ঘরে ঘরে প্রশ্ন উঠেছে। জামায়াতের আন্দোলনে বিগত দুই মাসে পুলিশের গুলীতে দুই শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ছাড়া পাকিস্তানের ২৪ বছরে এবং বাংলাদেশের ৪১ বছরে এমন গণহত্যা আর দেখা যায়নি। সেজন্যই অধিকাংশ মানুষকেই আজ প্রশ্ন করতে শোনা যাচ্ছে, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসলে কি চান”? তার দুই হাতই এখন রক্তে রঞ্জিত। তারপরেও রক্তপাত বন্ধ হয়নি। গত বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল শিবিরের হরতালে ৬ ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে।
বিএনপি ও জামায়াতের সাথে আওয়ামী  লীগের  প্রচ- বৈরীতার পটভূমিতে সরবে আত্মপ্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। ঘাদানির লোকেরা হেফাজতকে যতই হেফাজতে জামায়াতে ইসলামী বলুকনা কেন বাস্তব অবস্থা হল এই যে গত ৬ এপ্রিল শাপলা চত্বরে তাদের সরব উত্থান বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতির ভারসাম্য উলট পালট করে দিয়েছে। এখন হাসিনা সরকার হেফাজতকে নিয়েও কানামাছি খেলা শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হেফাজতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে হেফাজতের দাবিসমূহ পরীক্ষা করা হচ্ছে। যেসব দাবি গ্রহণযোগ্য সেগুলো গ্রহণ করা হবে। আর যেগুলো গ্রহণ যোগ্য নয় সেগুলো গ্রহণ করা হবে না। 
তিন.
প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তির পর চারদিনও পার হয়নি। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন যে তার মন্ত্রণালয় হেফাজতে ইসলামের ১৩টি দাবি পরীক্ষা করেছে। পরীক্ষার পর দেখা গেছে যে ১৩টি দাবির মধ্যে ১টি দাবিও গ্রহণযোগ্য নয়। তার অর্থ হলো এই যে গত ৬ই এপ্রিল শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠিত লাখ লাখ লোকের জনসমুদ্র থেকে হেফাজতে ইসলাম সরকারের নিকট যে ১৩ দফা দাবি পেশ করে, আইনমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী সরকার তার সবকটি দাবি প্রত্যাখ্যান করলো। তাহলে হেফাজতে ইসলাম এখন কি করবে? এটি এখন সচেতন মানুষের মাঝে জ্বলন্ত জিজ্ঞাসা হয়ে ঘোরাফেরা করছে। এই ভাষ্য লেখার সময় জানা গেল যে হেফাজত তাদের ১৩ দফা দাবির সাথে আরেকটি দাবি যুক্ত করেছে। সেটি হলো, আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তি। বলাবাহুল্য, সরকার এ দাবিটিও সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবে। কারণ মুক্তি দেয়ার জন্য সরকার মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করেনি।
শুধুমাত্র মাহমুদুর রহমানই নয়, বিএনপি এবং জামায়াতের নেতৃত্ব স্থানীয় সকলকে গ্রেফতার করা হচ্ছে পাইকারী হারে। গাড়ি পোড়ানো, গাড়ী ভাংচুর এই ধরনের তুচ্ছ এবং ফালতু অভিযোগে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। একটি র্দীঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং সুপরিকল্পিত নীলনকশা অনুযায়ী একের পর এক শত শত নেতাকে জেলে ভরা হচ্ছে। বাস্তব অবস্থা যা ই হোক না কেন সরকার মনে করছে যে বিএনপি এবং জামায়াতকে তারা ঠা-া করতে পেরেছে। এর মধ্যে আবার কোত্থেকে উদয় হল হেফাজতে ইসলাম। এটি তাদের হিসাবের মধ্যে ছিল না। শুধু উদয় হল না, রীতিমত ছপ্পড় ফেড়ে বেরিয়ে এলো এই হেফাজতে ইসলাম। তাদের সমাবেশে হাজির হলেন  লাখ লাখ মানুষ। এতদিন এরা কোথায় ছিলেন? মাত্র তিন বছর হলো এদের জন্ম হয়েছে। এখন এটি হয়েছে ছোট ছোট সব ইসলামী দলের আমব্রেলা সংগঠন। একটি বড় ছাতার নীচে যেমন অনেকেই আশ্রয় নিতে পারেন, হেফাজতে ইসলামও অনেকটা সেরকম একটি ছত্রছায়া। এই ছত্রছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছেন খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট সহ আরো কয়েকটি ইসলামী সংগঠন। এছ্ড়াা হাটহাজারী মাদরাসার হাজার হাজার শিক্ষক ও ছাত্র রয়েছেন।  আরো রয়েছেন আল্লামা শফীর অনুগত অসংখ্য কওমী মাদরাসা এবং ঐসব মাদরাসার লাখ লাখ ছাত্র ও শিক্ষক এদের সকলকে নিয়ে হেফাজতে ইসলাম।
গত ৬ই এপ্রিল শাপলার সুবিশাল মহাসমাবেশের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলাম তাদের অস্তিত্ব এবং শক্তিমত্তা জানিয়ে দিয়েছে মাত্র। সেদিন পর্যন্ত তাদের চরিত্র ছিল অহিংস এবং শান্তিবাদী। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে আওয়ামী লীগ ও তার মধ্যে অনুপ্রবেশকারী বামপন্থীরা এমন কোন কিছু সহ্য করতে রাজী নয় যার সাথে যুক্ত রয়েছে ইসলামের নাম এবং যেখানে রয়েছে ইসলামী ভাবধারা। তাই মাত্র সাতদিনও যায়নি, হেফাজতে ইসলামও হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের চোখেরবালি।  তাদের সম্বন্ধে এখন অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকা লেনদেন, ঢাকা থেকে লেজ গুটিয়ে পলায়ন প্রভৃতি অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। হেফাজতও দিয়েছে পাল্টা জবাব। হেফাজত বলেছে তারা কি বিড়াল না-কি সিংহ, সেটি সরকার টের পাবে আগামী ৫ মে এবং তার পরবর্তী দিনগুলোতে। ৫ মে হেফাজত ঢাকা অবোরোধ করবে। ৫ মের মধ্যে যদি তাদের দাবি দাওয়া মেনে নেয়া না হয় তাহলে ৫ মের পর থেকে হেফাজত সরকার পতন আন্দোলন শুরু করবে। 
ঐদিকে আগামী ১৭ ও ১৮ এপ্রিল বুধ এবং বৃহস্পতিবার ১৮ দলের তরফ থেকে ৩৬ ঘণ্টার হরতাল ডাকা হবে বলে জানা গেছে। এই মাসের শেষ দিকে বেগম খালেদা জিয়া বিশাল একটি মহাসমাবেশে ভাষণ দিবেন। সেই মহাসমাবেশে হরতাল ছাড়াও অবরোধ ও অসহযোগের মত কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে। মে মাসে জামায়েতে ইসলামীও রাজপথ কাঁপিয়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। সবকিছু মিলিয়ে আগামী মাস অর্থাৎ মে মাস দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড়ো হাওয়া বইবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads