শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৩

গোলাম মাওলা রনি একটি অসম যুদ্ধে নেমেছিলেন : তাই হেরে গেলেন


গলাচিপা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এমপি গোলাম মাওলা রনিকে অবশেষে জেলে যেতে হলো। নাজিমউদ্দিন রোডের সেন্ট্রাল জেলে নয়, একেবারে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। যেভাবে তিনি জেলে গেলেন সেটি সকলের কাছে অত্যন্ত ইন্টারেস্টিং ঠেকেছে। কারণ যেদিন সাংবাদিক মারপিটের ঘটনা ঘটে, সম্ভবত সেদিন অথবা তার পরদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেছিলেন যে মামলা করলেই যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে হবে তার কোন মানে নেই। অভিযোগ এসেছে, তার তদন্ত হবে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তদন্তে কাউকে দোষী পাওয়া গেলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর সকলে ধরেই নিয়েছিলেন যে আওয়ামী লীগ এমপিদের কিছুই হবে না, যেমন অন্যদের ক্ষেত্রেও কিছু হয়নি। পরদিন রনি আদালতে যান এবং সেখান থেকেই জামিন নিয়ে ফেরেন। আদালত থেকে বলা হয় যে তাকে সাময়িকভাবে জামিন দেয়া হলো। এই জামিন বহাল থাকবে কিনা অথবা বাতিল হবে, সেটি নির্ভর করবে তদন্ত রিপোর্টের ওপর।
কিন্তু এর মধ্যে সকলে তাজ্জব হয়ে লক্ষ্য করলেন যে জামিন দেয়ার পরদিনই সেই জামিন বাতিল করা হলো। কারণ, এর মধ্যে রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলো যে জামিন পেয়ে বেরিয়ে এসে তিনি প্রতিপক্ষকে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিচ্ছেন। সুতরাং যেদিন তিনি জামিন পেলেন তার পরদিনই সেই জামিন বাতিল হলো এবং তার গন্তব্য হলো সরাসরি কাশিমপুর কারাগার। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে, আদালত যে তদন্তের কথা তুলেছিলো সেই তদন্ত রিপোর্টের কি হলো? দুপুর বেলা জামিন পাওয়ার পর রাতের মধ্যেই কি তদন্ত শেষ হয়ে গেলো? এবং তিনি দোষী সাব্যস্ত হলেন? এ যেন একটি ভোজবাজির খেলা। কিছু কিছু লোকের মাঝে একটি বিভ্রান্তিও দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ একটু অবাক হয়ে বলতে চাচ্ছেন যে নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কি বিলম্বিত বোধোদয় ঘটলো নাকি? হাসিনার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ক্রেডিট নিতে গিয়ে বলেই ফেলেছেন যে, সাংবাদিকদেরকে মারধর করা একটি মারাত্মক অপরাধ। সরকার যে আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, গোলাম মাওলা রনিকে গ্রেফতার এবং তাকে কারাগারে প্রেরণ সেটি প্রমাণ করে। প্রমাণ হলো যে আইনের চোখে সকলেই সমান। আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে বড় ছোট বলে কেউ নাই।
হাসানুল হক ইনুকে সাবাস দিতে হয়। এই না হলে কি আর হাসিনার তথ্যমন্ত্রী হতে পারেন? সারাজীবন জাসদ করলেন, বিপ্লবের গাল ভরা বুলি আওড়ালেন, বামপন্থী আলখেল্লা পরে সমাজতন্ত্রের বুলি কপচালেন এবং অতঃপর কাস্তে হাতুড়ি এবং লাল পতাকা ফেলে দিয়ে আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়ে বসলেন। সারাজীবন রাজনীতি করে যিনি এমপি হতে পারেননি, এমনকি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে মন্ত্রী থাকা অবস্থাতেও নির্বাচনে একজন মেম্বার হতে পারেননি, সেই ইনুর মুখে আওয়ামী জামানায় আইনের শাসন (?) চমৎকার মানিয়েছে। কিন্তু পশ্চিম বঙ্গের পরলোকগত অভিনেতা ভানু ব্যানার্জীর কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে হয়, আওয়ামী আমলে আইনের শাসন? তাহলে এখানে দুই খান কথা আছে।
॥দুই॥
শুধুমাত্র রনিকেই গ্রেপ্তার করলেই কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলো? তাহলে অন্যদের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটলো না কেন ? তথ্যমন্ত্রী কি বলবেন যে মিরপুরে আওয়ামী লীগ এমপি কামাল আহমেদ মজুমদার মনিপুর হাইস্কুলে টেলিভিশনের একজন মহিলা রিপোর্টারের গালে চড় মেরে ছিলেন। ঐ মহিলা টেলিভিশন সাংবাদিকের অপরাধ ছিলো এই যে তিনি কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি’র নিকট থেকে একটি তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। মনিপুর হাইস্কুলের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হলেন মিরপুর থেকে আওয়ামী লীগ টিকেটে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার। গত বছর মনিপুর হাইস্কুলে যখন ভর্তি চলছিলো তখন সেখানে শুরু হয় ভর্তি বাণিজ্য। ছাত্রীদের একটি ভর্তি ফি রয়েছে। কিন্তু ঐ স্কুলে দেখা যায় যে এডমিশন ফি যে অংকের, বাস্তবে এডমিশন করতে গিয়ে তার চেয়ে অনেক বেশী টাকা আদায় করা হচ্ছে। কেন, কোন আইনে এবং কোন বিবেচনায় এমন অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে, সেটি ঐ টিভি রিপোর্টার জানতে চেয়েছিলেন কামাল মজুমদারের কাছে। এই জানতে চাওয়াটাই হয়েছিলো বিরাট অপরাধ। তাই পুরুষ হওয়া সত্ত্বেও কামাল মজুমদার মহিলার গায়ে হাত তুলেছেন। এখানে আইনের শাসন কোথায় গেলো? প্রায় এক বছর হতে চললো, কামাল মজুমদারের বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশন নেয়া হয়নি কেন? টেকনাফের এমপি হলেন আওয়ামী লীগের আব্দুর রহমান বদি। ২০০৯ সালে টেকনাফে একটি উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছিলো। সেই ভোটকেন্দ্রে আব্দুর রহমান বদি গমন করেন এবং তিন জন যুবককে মারধর করেন। যুবকদের অপরাধ ছিলো এই যে ওরা ভুয়া ভোট দানের বিরোধিতা করছিলো। সেই অভিযোগে বদি মিয়া এমপি ঐ যুবকদেরকে কষে চড় মারেন। এই মারধরের জন্য বদি মিয়ার আজও কিছু হয়নি। ২০১১ সালের জুলাই মাসে পাবনার আওয়ামী লীগ এমপি গোলাম ফারুক খন্দকার জেলা প্রশাসকের অফিসে হামলা চালান। জেলা প্রশাসকের অপরাধ ছিলো এই যে তিনি এমপি গোলাম ফারুকের অন্যায় দাবি মানতে পারছিলেন না। গোলাম ফারুকের দাবি ছিলো এই যে লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই তার ক্যাডারদেরকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দিতে হবে। এ ব্যাপারে যে লিখিত পরীক্ষা হচ্ছিল সে পরীক্ষা হলের পরিদর্শক ছিলেন একজন মহিলা। আওয়ামী লীগের এমপি ঐ মহিলা পরিদর্শককেও ধমকা-ধমকি করেন। ডিসি সাহেবকে অপমান করার প্রতিবাদে অন্যান্য সরকারী অফিসাররা আওয়ামী এমপি’র নিন্দা করেন এবং কর্মবিরতি পালন করেন। তখন  প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম পাবনা যান এবং এমপি’র কেশাগ্র স্পর্শ না করে জেলা প্রশাসককে বকাবকি করেন। ভোলার এমপি নুরুন্নবী শাওনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি তার লাইসেন্স করা পিস্তল থেকে গুলী করে একজন পার্টি কর্মীকে হত্যা করেন। ঢাকার প্রায় সমস্ত পত্র পত্রিকায় একাধিক দিবস নুরুন্নবীর অপকীর্তি ফলাও করে প্রকাশ করেন। আজ পর্যন্ত নুরুন্নবী শাওনের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি। ২০১০ সালের জুন মাসে আশুলিয়াতে আওয়ামী লীগের এমপি মিরপুরের ইলিয়াস মোল্লা একজন পুলিশের গালে চপেটাঘাত করেন। এ ব্যাপারেও ইলিয়াস মোল্লা আজও অক্ষত রয়েছেন। একই বছর অর্থাৎ ২০১০ সালের আগস্ট মাসে যশোরের এমপি শেখ আফির উদ্দিন একজন পুলিশ অফিসারকে প্রহার করেন। কিন্তু এ প্রহারের কারণে আফির উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। গত বছর অর্থাৎ ২০১২ সালে একটি ঘটনা আজও সকলের মনে আছে। ঐ ঘটনাটির আলোকচিত্র দেশের একাধিক বহুল প্রচারিত একটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলো। ঐ ছবিতে দেখা যায় যে গফরগাঁওয়ের এমপি গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিলেন। তখন এমপি গিয়াস উদ্দিন তার পিস্তল দিয়ে জনতার উদ্দেশ্যে গুলী করেন। জনতার উদ্দেশ্যে গুলী বর্ষণরত গিয়াস উদ্দিন এমপির ছবি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ দৈনিক সমূহে ছাপা হয়েছিলো। কিন্তু তার পরেও গিয়াস উদ্দিনের কেশাগ্র স্পর্শ করা হয়নি।
॥তিন॥
কাহিনীর এখানেই শেষ নয়। নেত্রকোনার পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন আহমদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর জন্য তার পরিবার থেকে সন্দেহের আঙ্গুল নির্দেশ করা হয় সরকার দলীয় এমপি মুশতাক হোসেন রহির দিকে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন তদন্ত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি। রাজশাহীর আওয়ামী লীগ এমপি মিরাজ উদ্দিন মোল্লা রেল গাড়ির ড্রাইভারকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। এমপি মিরাজ মোল্লার এই মাস্তানির প্রতিবাদে রেলের কর্মচারীরা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানালেও সরকার তাদের দাবির প্রতি কোন কর্ণপাত করেনি। পাবনার আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি প্রিন্স রেলের গার্ডকে মারধর করেন। তিনি পাবনা থেকে ঢাকায় আসবেন, তাই তিনি গার্ডকে বলেছিলেন ট্রেন দেরি করে ছাড়ার জন্য। গার্ড তার কথা না শোনায় তাকে বেদম প্রহার করা হয়। বরিশালের এমপি মনিরুল ইসলাম তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে প্রতিবাদী জনগণকে পিটিয়েছিলেন। এ ব্যাপারেও সরকার নির্লিপ্ত থাকে। পিরোজপুরের এমপি এ কে এম আওয়াল তার এলাকার ২০ জন সাংবাদিককে হত্যা করার হুমকি দেন। সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে পিরোজপুর সদর এবং সূত্রাপুরে মামলা করেছেন। তার বিরুদ্ধে জমি দখল এবং চাঁদাবাজির কথা পত্র পত্রিকায় লেখা হলে তিনি সাংবাদিকদের ধরে পেটান। সাভারের এমপি তওহিদ মুরাদ জং বিশেষ বাহিনী গঠন করে চাঁদাবাজি করছেন। রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে পালিয়ে যেতে তিনিই সাহায্য করেছিলেন। তার বিরুদ্ধেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নরসিংদীর মন্ত্রী এবং এমপি রাজিউদ্দিন আহমদ রাজুর বিরুদ্ধে তার আপন ভাইয়ের মাধ্যমে নরসিংদীর জনপ্রিয় পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে হত্যার অভিযোগ নিয়ে পত্র-পত্রিকায় বিপুল তোলপাড় হয়েছে। রাজু কিন্তু আজও অক্ষত রয়েছেন। মন্ত্রী শাহজাহান খান, সাবেক মন্ত্রী আবুল হোসেন এবং খামাখা মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্তÑ এই তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় দিনের পর দিন এবং মাসের পর মাস বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ অব্যাহতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধেই কোন অ্যাকশন নেয়া হয়নি। চট্টগ্রামের এমপি আব্দুল লতিফ যেমন মানুষকে পিটিয়েছেন তেমনি তিনি নিজেও মানুষের হাতে পিটুনি খেয়েছেন। কিন্তু কিছুই হয়নি চট্টগ্রামের এই এমপি’র। সিরাজগঞ্জের এমপি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নাই। কিন্তু কোন অভিযোগই সরকার গায়ে মাখেনি।
অথচ গোলাম মাওলা রনিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কোনরূপ তদন্ত ছাড়াই কাশিমপুর কারাগারে তাকে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নব নিযুক্ত তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই রনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যারা প্রবীণ, অভিজ্ঞ এবং যারা অন্দরমহলের খবর কিছু রাখেন তারা প্রশ্ন করছেন যে, এর আগে ১৯ জন এমপি যা ইচ্ছে তাই করে গেলেন। তারাও মারপিট থেকে শুরু করে, পিস্তল থেকে  গুলী ছোঁড়া এবং খুন খারাবি সবই করেছেন। সেক্ষেত্রে তাদের ১৯ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে হঠাৎ করে রনির বিরুদ্ধে কেন অ্যাকশন নেয়া হলো? (প্রিয় পাঠক, আমরা কিন্তু রনির বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়ার বিরোধী নই। বরং এই প্রাথমিক অ্যাকশন তার যৌক্তিক পরিণতি পাক সেটাই আমরা চাই। আমরা এখানে শুধুমাত্র সরকারের অসঙ্গতি দেখাচ্ছি)।
যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে এই প্রশ্নের বিস্তারিত আলোচনা করবো। তবে আজ শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, যে দুই সাংবাদিককে রনি এবং তার সাগরেদরা পিটিয়েছেন তারা এখানে উপলক্ষ মাত্র। বিরোধটি এখানে দুইজন ক্ষমতাশালী ব্যক্তির মধ্যে চলছে। রনির যিনি প্রতিপক্ষ তার হাত কতখানি লম্বা সেটি রনি হয় বুঝতে পারেননি অথবা জানতেন না। রনি ভেবেছিলেন তিনি একজন এমপি এবং টক শো করে জনগণের মাঝে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। সেই শক্তিতেই তিনি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু তার প্রতিপক্ষ সংসদ সদস্য না হলেও তার ক্ষমতার দৌড় যে কতদূর সেটি তিনি সম্ভবত পরে টের পেয়েছেন। সে জন্যই শুরুতে বলেছি যে, এটি ছিলো একটি অসম লড়াই। ন্যায় বিচারের জায়গা তো আওয়ামী লীগ নয়। এখানে ছিলো স্বার্থের সংঘাত। সেই সংঘাতে রনি হেরে গেছেন। তার আম ও ছালা দুইই গেছে। আগামীবার তিনি আওয়ামী লীগের নমিনেশন পাবেন বলে আমার মনে হয় না।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads