মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

এবার শাজাহান খান গার্মেন্টে হাত দিয়েছেন


শাজাহান খানকে যখন নৌপরিবহনমন্ত্রী করা হলো তখন পিআইবির প্রয়াত প্রধান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেছিলেন, এর মাধ্যমে চাঁদাবাজিকে জাতীয়করণ করা হলো। শাজাহান খান নৌ-মন্ত্রী হওয়ার পর সত্যি সত্যি নদী পথের চাঁদাবাজি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, চারটি ইলিশ আনতেও লঞ্চে চাঁদাবাজরা যাত্রীদের ঘিরে ধরে। নৌপথে যান চলাচল প্রায়ই বন্ধ থাকে, ফেরি চলাচল তিন চার দিনের জন্য অফিসিয়ালি বন্ধ রাখা হয়। ফেরিঘাটের দু’পাশে হাজার হাজার যাত্রী ও পণ্যবাহী যানের ভিড় জমে। সেখানে মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের শিকার হয়। আর শিকার হয় চাঁদাবাজির।
এ নিয়ে সরকারি মহলে কোন আলাপ-আলোচনা শোনা যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনোদিন তাকে ধমকে দিয়েছেন এমনও শুনিনি। বরং মনে হয় যেখানেই চাঁদাবাজি আছে, সেখানেই যেন তিনি তাকে দূত নিয়োগ করছেন। আর যে খাত ধ্বংস করা দরকার সেখানেই দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানকে। তিনি শ্রমিক সংগঠনের নেতাও বটে। বোধকরি সেভাবেই মন্ত্রী হয়েছেন। একজন মন্ত্রীর যে সাধারণ ভব্যতা থাকে বা থাকা উচিত সেটা তার মধ্যে কখনও লক্ষ্য করা যায়নি। এসব ভব্যতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেও আমরা কিছু কথা আশা করি না, যা তিনি বলে থাকেন। তেমনি অনেক বিষয় আমরা মন্ত্রীদের কাছ থেকেও আশা করি না। অথচ সেসব কথা যেন তাদের লব্স-এ পরিণত হয়েছে।
এবার সম্ভবত তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গার্মেন্ট শিল্পে। গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন নিয়ে সমস্যা অনেক দিনের। প্রথম থেকেই তারা অধিকতর বেতনের দাবিতে নানা ধরনের আন্দোলন করে আসছিলেন। আমরা সবসময় বলছি যে, গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন সত্যি সত্যিই খুব কম। এই বেতন বাড়ানো জরুরি। শ্রমিকদের উচ্চতর বেতনের আন্দোলনÑ এ তো দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। মহান মে দিবসের সূচনাও সেখান থেকে। নির্দিষ্ট শ্রম ঘণ্টা আর ন্যায্য মজুরির দাবিতে বহু বছর আগেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটেছিল। যুক্তরাষ্ট্র তখন অন্যতম প্রধান শিল্পোন্নত দেশ ছিলো। নানা দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন বিশ্বব্যাপী আছে। শ্রমিকদের এই অধিকারের দাবি নিয়ে পৃথিবীতে নতুন তত্ত্ব উদ্ভাবিত হয়েছিলো। আর তা হলো মার্কসবাদ। কার্ল মার্কস আর ফ্রেডারিক অ্যাঙ্গেলস মিলে এই তত্ত্ব উদ্ভাবন করেছিলেন, যা মার্কসবাদ নামে এখনও পৃথিবীতে প্রচলিত আছে। তার ভেতর নানান সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। অনেক মার্কসবাদী দেশই সে আদর্শ পরিত্যাগ করে বাজার অর্থনীতিতে ঢুকেছে। তাতে মার্কসবাদের কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো অর্থনীতিতে সেসব দেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
অর্থাৎ বিশ্বের শিল্প বিপ্লবের পর থেকে শ্রমিকদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। কার্ল মার্কস ধারণা করেছিলেন যে, শ্রমিকদের বিপ্লব ঘটবে প্রথমে ব্রিটেনে। কিন্তু তা ঘটেনি। ভøাদিমির ইলিচ লেনিনের নেতৃত্বে সে বিপ্লব প্রথম ঘটেছিলো রাশিয়ায়। তারপর চীন, চিলি, উত্তর কোরিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশসমূহে। কিন্তু সে বিপ্লব বা আদর্শ এক শতাব্দীও টিকে থাকেনি। উন্নয়নের স্বার্থেই সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো তাদের ধারণায় শিল্প, শ্রম ও মজুরি কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসে। জাপানে এ যুগের শ্রমিকরা জানেনই না যে, শ্রমিক আন্দোলন কাকে বলে। কারণ তারা চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি পান। সেখানে যারা ট্রেড ইউনিয়ন করতে চেয়েছিলেন, তারা দারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তারা এমনও বলেছেন যে, এটি কোন ট্রেড ইউনিয়ন নয়। কার্যত ক্লাব। বিকেলে যেন শ্রমিকরা যাওয়ার সময় এখানে বসে আড্ডা দিয়ে যায়। তাতেও তেমন কোনো শ্রমিক সংগঠন গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এর মূল কারণ শ্রমিকদের প্রধান দাবি যা হতে পারে, মালিকরা অনেক ক্ষেত্রেই তার চাইতে অনেক বেশি দিয়ে থাকেন। ফলে কোন চাহিদা নেই।
বাংলাদেশে শ্রমিকরা তেমন কোন সুবিধাভোগী নন। এখানে সকল ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের যা পাবার কথা তার চেয়ে তারা অনেক কম মজুরি পান। ফলে শ্রমিক আন্দোলন লেগেই থাকে। যত বড় শিল্প তত বড় আন্দোলন। এক সময় পাট  শিল্প ছিলো বাংলাদেশে প্রধান অর্থকরী ও রফতানিমুখী শিল্প। তার উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছিল আদমজীসহ বহুসংখ্যক পাট শিল্প। সেখানেও আন্দোলন, সংগ্রাম, ধর্মঘট ছিল। শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কিংবা কাজ কমিয়ে দিয়েছে। কিংবা শিল্পের সামনে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেছে। শ্রমিকরা এখনও পাটকলে আগুন দেয়নি।
বাংলাদেশের পাট শিল্পের বারোটা বেজেছে। বাংলাদেশে এখনও পাট উৎপাদিত হচ্ছে। আর তার বেশিরভাগই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই পাচারকৃত পাটের ওপর নির্ভর করে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় গড়ে উঠেছে বহুসংখ্যক পাট শিল্প। কেননা পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বেড়েছে বিশ্বব্যাপী। পরিবেশগত কারণেই সিনথেটিক পণ্যের চেয়ে পাটের চাহিদা বেশি। সেক্ষেত্রে আমরা সর্বস্বান্ত হয়েছি। এখন পাটের পুরনো নাম সোনালি আঁশÑ এর কথা তরুণ প্রজন্ম ও শিশুরা সম্ভবত জানেই না। আর জেনেই বা কী লাভ। পাট শিল্প তো আর নেই। আমরা নিজেরাই এমনি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে দিয়েছি। এই জন্য কাউকে দোষ দেয়া যায় না। আমরাই তা হতে দিয়েছি।
পৃথিবীর দেশসমূহ যখন শিল্প বিপ্লব ঘটাচ্ছে, ভারী শিল্পে উজ্জ্বলতর দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে, তখন আমরা কেন যেন নিজেদের দেশকে নিতান্তই কুটির শিল্পের দিকে ঠেলে দিয়েছি। এখন আমাদের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হলো জনশক্তি রফতানি ও গার্মেন্ট শিল্প। এই দুটি খাতও ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র একেবারে প্রথম থেকেই চলছে। এখানেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধানত ভারতই।
প্রথমে তারা আমাদের জনশক্তি রফতানি খাত দখল করে নেয়ার জন্য নানাবিধ চক্রান্ত চালায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সে চক্রান্ত অবিশ্বাস্য ভয়াবহ। জনশক্তি রফতানি খাত প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপৃত। সেসব দেশে ভারতীয় চক্রান্তকারীরা বিভিন্ন ভাষায় পত্রিকা প্রকাশ করে বাংলাদেশকে ঘায়েল করার জন্য। তাছাড়া ঐসব দেশে স্থানীয় পত্রিকাগুলোকে নানা অসাধু প্রক্রিয়ায় ভারতমুখী রাখার চেষ্টা করা হয়। ফলে দেখা যায়, একটি ধর্ষণ বা চুরির ঘটনা, তা সে যেই করুক না কেন, বাংলাদেশীরা করেছে বলে প্রচার প্রোপাগা-া চালায় তারা। অনেক ক্ষেত্রে এতে তারা অত্যন্ত সফল হয়েছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই এখন বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি নিষিদ্ধ রয়েছে। তারা আর বাংলাদেশী শ্রমিকদের গ্রহণ করছে না। ফলে এই খাত বাংলাদেশে এখন বিরাট সঙ্কটের সম্মুখীন। জনশক্তি রফতানি খাত আরও পঙ্গু করে তুলেছে সরকার নিজেও। বায়রার সঙ্গে বিরোধ বাধিয়ে জনশক্তি রফতানির হার আরও কমিয়ে দিয়েছে।
এ প্রক্রিয়া যে শুধু বর্তমান সরকার করছে তা নয়। তাদের ডেকে আনা মঈন-ফখরের সামরিক সরকারের আমল থেকেই এটি শুরু হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ভারতীয় প্রচার মাধ্যমগুলো যখন এইরূপ প্রচার প্রোপাগা-া চালিয়ে জনশক্তি রফতানির খাত রুদ্ধ করে দিচ্ছিল, তখন তাদের এক উপদেষ্টা একেবারে বুক ফুলিয়ে বলেছিলেন যে, মধ্যপ্রাচ্য আমাদের জনশক্তি নিক বা না নিক আমরা দক্ষ জনশক্তি রফতানি করে সে ক্ষতি পুষিয়ে নেব। ঐ উপদেষ্টার কা-জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হয়। কারণ দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে কমপক্ষে দুই বছর লাগার কথা। তবে কি এই দুই বছর বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে? মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুধুই কি লোক ফিরে আসবে? কেউ আর যাবে না?
বর্তমান সরকারও এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে। চেষ্টা তারা মোটেও করেনি এমন কথা বলা যাবে না। জনশক্তি রফতানির দরজা আবার খুলে দিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বারবার সফর করেছেন। কিন্তু ফলাফল হয়েছে শূন্য। কোন কোন দেশ বাংলাদেশের জনশক্তি আমদানির সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। সে দ্বার এখনও উন্মোচিত হয়নি। মালয়েশিয়ায় বিপুলসংখ্যক জনশক্তি রফতানির একটা সুযোগ হয়েছিলো। কিন্তু দূতাবাসের দুর্নীতি ও অসহযোগিতায় এবং সরকারের অকর্মন্যতায় তা ভ-ুল হয়ে গেছে। এ নিয়ে বর্তমান শাসকদের কোন মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। ফলে জনশক্তি রফতানি খাতও এখন যায় যায়। বাকি রইল গার্মেন্ট শিল্প।
আমাদের তরুণ উদ্যমী উদ্যোক্তারা এ খাতে যথেষ্ট সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। ফলে এই শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটেছে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট পণ্য রফতানিতে প্রায় শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে। এতে প্রতিযোগী দেশসমূহের ভেতরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এই শিল্প কিভাবে ধ্বংস করা যায় সেটা তাদের একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান হয়ে দাঁড়ায়। এই শিল্পে যে নারী শ্রমিকরা কাজ করতে এসেছেন বা করেন তাদের বেশিরভাগই আগে গৃহকর্মী ছিলেন। এখন তারা মর্যাদাবান শ্রমিক। আগে ২৪ ঘণ্টা কাজ করেও যা পাওয়া যেত না, এখন ৮/১০ ঘণ্টা কাজ করে তা পাওয়া যায়। এটাই বোধকরি ছিলো তাদের ভরসা। কিন্তু একজন গার্মেন্ট শ্রমিক ন্যূনতম যে মজুরি পান তা দিনে ১০০ টাকার খুব একটা বেশি নয়। অথচ যে মজুর মাটি কাটা বা নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করেন, তিনি নারী-পুরুষ যেই হোন না কেন, তার মজুরি ৩০০ টাকার কম নয়। সে কারণে গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক।
এই মজুরি বৃদ্ধির দাবি নিয়ে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ দীর্ঘদিনের। আর সবচেয়ে যা বিপজ্জনক তা হলো, একশ্রেণীর অ-শ্রমিক এসে জুটে যায় গার্মেন্ট শ্রমিকদের নেতা হিসেবে। আর তাদের উস্কানিতেই ইতিমধ্যে বহুসংখ্যক গার্মেন্ট কারখানা আগুনে জ্বলে পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। মালিকরা, মালিকদের সংগঠনগুলো, এফবিসিসিআই সকলেই সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে যে, তাদের কারখানার নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা করা হোক। সরকার সেদিকেও মনোযোগী হয়নি। এর ফলে বহু উদ্যমী উদ্যোক্তা এ শিল্প বিক্রি করে দিয়ে ভিন্ন ব্যবসা বা শিল্পে মনোনিবেশ করেছেন।
এরই মাঝখানে হঠাৎ করেই আবির্ভূত হয়েছেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। গার্মেন্টে আসার আগেই তিনি গাড়ি চালকদের পক্ষ নিয়ে নানা ধরনের ওকালতি করেছেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে ন্যূনতম শিক্ষার শর্ত তুলে দেয়ার আন্দোলনের তিনি হোতা। তিনি বলেছিলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন প্রয়োজন নেই, গরু-ছাগল চিনলেই হয়। তারপর তিনি আর এক আন্দোলন শুরু করেন, তা হলো কোন গাড়ি চালকের অদক্ষতায় বা অসাবধানতায় কেউ মারা গেলে তাতে হত্যা বলে মামলা করা যাবে না। সে আন্দোলনে তিনি সফল হয়েছেন। সরকার আইন প্রণয়ন করেছে যে, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য হত্যা মামলা দায়ের করা যাবে না। এতে গাড়ী চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোই কেবলমাত্র উৎসাহিত হলো। যাত্রী কিংবা পথচারীর জীবনের কোন মূল্য রইল না।
এ দেখে সম্ভবত গার্মেন্ট শ্রমিকরাও খুশি হয়েছিলেন। তারা ভেবেছেন শাজাহান খানই আসল লোক, যিনি তাদের দাবি আদায় করে দিতে পারবেন। তার এই আগমন শুরু হয়েছিলো হেফাজতে ইসলামের নেতা আল্লামা শফীর এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। আল্লামা শফীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে প্রথম সভাটি ডাকা হয়েছিলো। তারপর ঘটেছে গত কয়েক দিনের ঘটনা। শাজাহান খানই শ্রমিকদের এই সমাবেশ ডেকেছিলেন। যেসব কারখানার শ্রমিক শনিবারের ঐ মহাসমাবেশে যোগ দেয়নি সেখানে অন্যরা গিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। শনি, রবি, সোম তিনদিন ধরে গার্মেন্ট এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভাংচুর, সংঘর্ষ, সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গাজীপুরের একটি আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে শ্রমিকরা রাইফেল ও গুলী লুট করেছে। হামলা-পাল্টা হামলায় আহত হয়েছেন শ্রমিক, আনসার, পুলিশ। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এফবিসিসিআই ও বিজিএমইএ।
সোমবার রাতে এ নিয়ে শাজাহান খানের উদ্যোগেই ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে উদ্যোক্তা শাজাহান খান বলেন যে, বাইরের ইন্ধনে এই সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ আসলে সংঘর্ষের কোন কারণই খুঁজে পাচ্ছে না। এমনিতেই তাজরীন ও রানা প্লাজার ঘটনার পর বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থা খানিকটা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা বাতিল করেছে। অন্যান্য দেশও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এরকম সংকটময় মুহূর্তে উদ্যোক্তারা শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য যেখানে মরিয়া, সেখানে শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা গোটা শিল্পকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়ে এই তুলকালাম কান্ড ঘটিয়েছে। দেশে শিল্প ধ্বংসের যে মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে গার্মেন্ট শিল্প এখন সেই পথে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads