শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

উন্নয়ন : খন্দকার মোশতাক থেকে সজীব ওয়াজেদ- মিনা ফারাহ

তথ্যবিভ্রাট : জর্জ টাউন, গায়ানা। অত্যন্ত সুদর্শন, কথার জাদুকর চুম্বকের মতো এক আকর্ষণীয় শয়তান উপাসক জিম জোন্সের নির্দেশে স্বর্গে যাওয়ার ল্েয নারী ও শিশুসহ ৯০৫ জন একসাথে বিষপান করে আত্মহত্যার ঘটনা অনেকেরই জানা। স্বর্গে কেউ গিয়েছেন কি না জানি না। কিন্তু এমনই দেশ যেখানে তদন্ত হলেও অপরাধীরা গ্রেফতার হয় না। অথচ পচা দইয়ের অভিযোগে নোবেল লরিয়েটকে কোর্টে হাজিরা দিতে হয়। তিন টার্ম আওয়ামী শাসনের ধরন দেখে পুরো বিষয়টাই গ্রিক ট্র্যাজেডির মতো মনে হয়েছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা যদি জঙ্গিবাদ হয়, তাহলে নোয়াম চমস্কি, এডওয়ার্ড সাঈদ, অরুন্ধতী রায়, খুশবন্ত সিং, ড. কিং... সবাই সন্ত্রাসী। লাখ আর মিলিয়নের পাটীগণিত থেকে একচুলও সরব না। সদ্য স্বাধীন দেশে শহীদের পরিসংখ্যান নেয়া হয়নি। লন্ডনে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মুজিবের ওই সংখ্যাটি আজ অবধি তদন্তের অপোয়। বিখ্যাত ইকোনমিস্টের মতে, সাড়ে সাত কোটির মধ্যে ৩০ লাখ শহীদ হলে প্রতি ২০ জনে একজন। তাহলে হিটলারের চেয়ে বড় গণহত্যা করেছিল ইয়াহিয়া। বিষয়টি সত্য না মিথ্যা? হাসিনা-খালেদার অবস্থান মুখোমুখি দুটি বিস্ফোরক পারমাণবিক বোমার মতো। এতে ছারখার হয়ে যাচ্ছে দেশ; কিন্তু হু কেয়ার্স? ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলার নবাব কে, এই যুদ্ধে আবারো ৭১-এর সাজ সাজ রব। সুবিধাবাদ বা অনুমানের ওপর ইতিহাস লেখা অপরাধ। প্রতি ২০ জনে একজন শহীদ হলে কয়েক গজ দূরে দূরে লাশের পাহাড় থাকার কথা। বাস্তবে সেটা কল্পনা। হলোকাস্টের লাশের অ্যাকাডেমিক পর্যায়ের তথ্যভাণ্ডার এবং মৃতের তালিকাও হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে শহীদের সংখ্যা নিয়ে ছলনা। প্রতি ২০ জনে একজন মানে প্রায় ঘরে ঘরে শহীদ। কিন্তু আমার এত বড় এলাকায় সর্বাধিক ৬৪ জন শহীদ। এত লাশ গেল কোথায়? ‘ঘাদানিকর শাহরিয়ার কবির ওয়াশিংটনে অভিনব তথ্য দিলেন, পাঁচ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মুজিব। বাস্তবে মহাভারতে বঙ্গশব্দটির প্রথম অস্তিত্ব প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের। বাংলা ভাষার জন্ম প্রায় ৭০০ বছর আগে। এর মানে হলো, বাংলাদেশের মানুষের এক নম্বর শত্র“, জিম জোন্সের মতো ব্যক্তি-উপাসনার পাগলামো। তারেক মাসুদের মুক্তির গানতথ্যচিত্রে বানানো গেরিলা যুদ্ধের ছবি পর্যন্ত দেখানো হচ্ছে সত্যিকারের গেরিলা যুদ্ধ নামে। স্টেডিয়ামের বাইরে বেয়োনেট হাতে ছবিগুলো পর্যন্ত মিডিয়ায় ছাপানো হচ্ছে রাজাকারদের হাতে গণহত্যার নামে। ৪২ বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা জিইয়ে রাখায় লাভ হচ্ছে ভারতের। ৪২ বছর পর আবার ৭১-এর গন্ধ। ১৯৫ জন সুপিরিয়র রেসপনসিবলকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি না তুলে বরং ’, ‘কে যারা ফাঁসি দিতে উদগ্রীব, ইতিহাস তাদের ঠিকই বিচার করবে। পাকিস্তান মিনিস্ট্রি অব ডিফেন্সের রাজাকার বাহিনী গঠনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আদেশটি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়নি। ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে এর নম্বর হলো- ৪৮৫২/৫৪৩/পি.এস-ওয়ানএ-৩৬৫৯/ডি-২/এ, ইস্ট পাকিস্তান অর্ডিন্যান্স নম্বর এক্স অব ১৯৭১। এই অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে পাক বাহিনীকে সহায়তার জন্য অতিরিক্ত ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিলে এরাই মূল হত্যাকারীদের চাপরাশির দায়িত্ব পালন করেছিল। এখন প্রশ্ন, সুপিরিয়র রেসপনসিবল কারা? যুক্তিবাদীদের দাবি, চুক্তির মাধ্যমে মুক্ত ওই ১৯৫ জন খুনি এবং ৯৮ হাজার পাক সেনার জঘন্য খুনিদের মুক্তির ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে হবে। ৪৬ সালে প্রত্য সংগ্রামের পরও বারবার যুদ্ধ ও দাঙ্গার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয়েছে, রাজনৈতিকভাবে এরা দেউলিয়া না হলে কেন কিউবার মতো নিজের শক্তিতে সশস্ত্র সংগ্রাম করে স্বাধীন হতে পারল না? সজীবের একটি কথা ঠিকÑ অসমাপ্ত বিপ্লব শেষ করতে হবে। অর্থাৎ আরেকবার স্বাধীন হয়ে ভারতের হাত থেকে সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনতে হবে। ৪৭-এর জাতীয়তাবাদের অপমৃত্যু হয়েছে মধ্য রাতেই। কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে বিলুপ্ত করে জাতীয়তাবাদের হাইব্রিড নেতার অভ্যুত্থানে বাঙালি মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেয়া সহজ হয়েছে। জিম জোন্সের মতো দলে দলে এরাও আত্মহত্যা করতে প্রস্তুত। ফেরাউনের সাফল্য ক্রীতদাসদের মধ্যে সর্বণ যুদ্ধ বাধিয়ে রাখাÑ যেন নির্যাতিতরা অত্যাচার নিয়ে চিন্তা করতে না পারে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ : ৪৮ ও ৬৫তে কাশ্মির নিয়ে যুদ্ধ। ৪৬, ’৪৭, ’৪৮, ’৫০, ’৬৪-এর রায়ট। অবশেষে রক্তয়ী ৭১। একজন পুল উড়ায়, আরেকজন পুল রা করতে জীবন দেয়। মুসাবিদার স্বাধীনতায় হিন্দু-মুসলমানের যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, একমাত্র বেঈমান ছাড়া এত বড় গণহত্যার কথা কেউ ভুলবে না। বাস্তবে সেটাই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা। এসব ব্যর্থতার ফসল আমার পরিবারও হাড়ে হাড়ে ভোগ করেছে। ছোটবেলা থেকেই কতবার যে দাঙ্গা ও যুদ্ধের সম্মুখীন হয়েছি, তার হিসাব নেই। কাশ্মিরে হজরত বালেরঘটনাকে কেন্দ্র করে ৬৪-এর দাঙ্গা আমার কিশোরী মনে ক্যান্সারের মতো। সুতরাং হাইব্রিড নয়, বরং প্রজন্মের মাথায় সত্যিকারের জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস ঢোকাতে হবে, অন্যথায় এরা মেধা-দেউলিয়া হয়ে যাবে। কথাগুলো বলার কারণ, স্যার রেডকিফের দেশ বিভাগের চাকুটি ঠিক জায়গায় না বসায় বাংলাকে আবার ফেরত পাওয়ার চেষ্টা চলছে নেহরু আমল থেকেই। মুসলিম লীগের বাঙালি নেতাদের জীবতাবস্থায় ভারত তেমন সুবিধা করতে না পারলেও পরবর্তী সময়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচারে দিল্লির সংশ্লিষ্টতার কথা অভিযুক্ত পক্ষ নিজেই স্বীকার করছেন। এই অঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করতে একমাত্র নৌকা ছাড়া অন্য কারো হালেই পানি পায়নি কংগ্রেস। পছন্দের লোক তৈরি করে ভারত সরকার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ইচ্ছার ওপর নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিয়েছে। ফলে তখন থেকেই দেশের ভেতরে অস্থিরতা থেকে গোলটেবিল, হত্যা, মিছিল, অভ্যুত্থান ইত্যাদি। যখন ১৪টি দেশে মুক্তিযুদ্ধের পে লবি করতে গেলেন ইন্দিরাজী, স্বাধীনতাকামী কাশ্মিরে তখন আগুন জ্বলছিল। এক দিকে বাংলাদেশের যুদ্ধে মদদ, অন্য দিকে কাশ্মির ঠেকাও। ইন্দিরার দ্বৈতনীতির বিরুদ্ধে ুব্ধ নকশালেরা তখন গোটা পশ্চিমবঙ্গজুড়ে যে তাণ্ডব ও গুপ্তহত্যা চালিয়েছিল, এ কে খোন্দকাররা কি তা অস্বীকার করবেন? ১৪ আগস্ট ১৯৭১-এ আমার একমাত্র ফুফাতো ভাইকে চোখের সামনে খুন করল নকশালেরা। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ভারতে, এসব দৃশ্য চোখে দেখা। ঘরে ঘরে তখন ইন্দিরার বিরুদ্ধে ুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। একই সাথে পাকিস্তান ভাঙতে এবং কাশ্মিরের আন্দোলন রুখতে সেনা মোতায়েনসহ কাশ্মিরিদের জন্য সস্তা চাল ও মাগনা ঘি সরবরাহের রেকর্ড। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ভারতের একটি বৃহৎ অংশ যখন বিপুল অর্থ ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে রাস্তায়, তখন বাধ্য হয়ে বেকার যুবকেরাও দলে দলে নকশালে যোগ দিলে গুপ্তহত্যা চরমে ওঠে। যুক্তিবাদীদের সন্দেহ, ’৭১-এর আগেই কাশ্মিরের স্বাধীনতা প্রাপ্য ছিল। সুতরাং সিকিম না হতে চাইলে ভারত-রাশিয়া-চীন ব্লকের ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার সময় এখনই। পশ্চিম বাংলার মেরুদণ্ডÑ পূর্ব বাংলা, বাঙালি বলতে বাংলাদেশী। সায়ামিস টুইনের মতো রক্তাক্ত সীমান্তটিও দুই বাংলার মধ্যে। উজানের ৫৫টি নদী, ভাটায় শুকিয়ে মারছেন মমতা ব্যানার্জি, যার দেশপ্রেম ঈর্ষণীয় ও শিণীয়। পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থে হিলারি থেকে মনমোহন সিং, কাউকেই এক চুল ছাড় দেননি মমতা। বৃহত্তর বাংলা কেন হলো না, সেটা ভিন্ন আলোচনা। তবে শুধু রাওয়ালপিন্ডির অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণেই সংখ্যালঘুরা দেশ ত্যাগ করেছে, কথাটি সত্য নয়। বরং স্থানীয়ভাবে সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য দেশত্যাগে বাধ্য করেছে। তাদের ওপর যারপরনাই অত্যাচার হয়েছে। নিরাপত্তার অভাবে মাতৃভূমিতে অর্থ উপার্জন করে দুই পা দুই দেশে রেখে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হুন্ডি করেছে। তখন রাওয়ালপিন্ডির অর্থনৈতিক বৈষম্য এমন পর্যায়ে ছিল না, যে জন্য তাড়াহুড়া না করে বরং সব পকে সাথে নিয়ে সময়োচিত ও সুপরিকল্পিত একটি স্বাধীনতা সংগ্রাম অসম্ভব ছিল। মূল গিট্টুটা এখানেই। দেশ বিভাগের সুফল-কুফল অন্য গবেষণা। তবে ৭১-এর পর মাইগ্রেশন ও হুন্ডি ব্যবসায় আগের চেয়ে প্রকট হওয়ার কারণ মুক্তিযুদ্ধের সুবিধাভোগী আওয়ামী অনাচার। ফলে বেড়েছে অর্পিত সম্পত্তি, যার পরিমাণ প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার (ইউএস)। সুতরাং, যারা পাকিদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক বৈষম্যের অভিযোগ করেন, তাদের কাছে প্রশ্নÑ ১০০ বিলিয়ন ডলারের অর্পিত সম্পত্তি কি যাওয়ার সময় পাকিরা রাওয়াপিন্ডি নিয়ে গেছে? নাকি এই দখলদারদের পরিচয় বাঙালি! আদমজি, ইস্পাহানির দোহাই আর কত? যা বলতে চাই, আওয়ামী প্যাকেজ প্রণোদনায় রাওয়ালপিন্ডির কব্জামুক্ত হয়ে দেশটা প্রায় ভারতের কলোনি। সুতরাং কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া এ দেশে কোনো রকম নির্বাচনের মতা এ সরকারের নেই। ধারাবাহিকভাবে বিডিআরের ঘটনায় সীমান্তে আমাদের শক্তি মারাত্মক হারে হ্রাস পাওয়ায় বিএসএফের একক রক্তুধা গিনেস বুকে যাওয়ার যোগ্য হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত এটি। কিন্তু ওদের একটি পাখিও গুলি করেনি বিজিবি। ফেলানীকে নিয়ে যা করল, সভ্যতার মুখে চুনকালি। ফেলানীর বিচার কতটুকু চায় বাংলাদেশ? ভারতীয় মানবাধিকার সংগঠনের ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে। আসল রহস্য হলো, বিএসএফের দখলে থাকা সীমান্তে কিছু দূরে দূরে ড্রাগ ফ্যাক্টরি স্থাপন করে বছরে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের ড্রাগ পাচার করছে এই পারে। অনিয়ন্ত্রিত নেশার কবলে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তরুণসমাজ। এমনকি শিশুরাও ড্রাগ খাচ্ছে। আধিপত্যবাদ এখন দাসত্বের পর্যায়ে। সুতরাং খালেদা নয়, প্রণব চাইলে নির্দলীয়-নিরপে নির্বাচন হবে। বিরোধী দল নির্মূলের নকশাও বাইরের ব্লু প্রিন্টে। আশা করি কথাটি বাংলার মানুষ আর মেরুদণ্ডহীন বিরোধী দল অনুধাবন করবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জনসম্পদ, ভৌগোলিক সীমানা, খনিজসম্পদ নিয়ে যে বিশাল আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে তা বোঝার মতো ন্যূনতম মেধা যাদের নেই, তারা হাজার হাজার টকশো করে কী লাভ? অপরাধী তারাও যারা প্রতিবাদ না করে নীরব থাকে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দ করলেই গ্রেফতার ও গুম করত নিক্সন সরকার। ৬০ মিলিয়ন ডলার আর ছয় মিলিয়ন মানুষ হত্যার বিনিময়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে সিআইএর হাতে খুন হলেন ড. মার্টিন লুথার কিং। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্টরা পর্যন্ত এই জঘন্য যুদ্ধের সমালোচনা করছেন। ভিয়েতনামের কারণে ঘৃণিত হয়েছে আমেরিকা। ঠিক তেমনই মুক্তিযুদ্ধে রুশ-ভারতের ভূমিকাও একদিন ইরাক-ভিয়েতনামের মতো সমালোচিত হবে। ষড়যন্ত্র থিওরি ও সন্ত্রাস : ষড়যন্ত্র থিওরি ও সন্ত্রাস প্রপাগান্ডা রাষ্ট্রনায়কদের একটি চাল। ২০০৩ সালে অ্যাক্সিস অব ইভলবক্তৃতায় বুশ তার সন্ত্রাসী প্রপাগান্ডা দিয়ে নিজেকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করলেও ভোটে দ্বিতীয়বার ঠিকই জিতেছেন। প্রায় প্রতিদিনই মিডিয়ায় এসে মার্কিন জনগণকে এই বলে বিরক্ত করতেন যে, সন্ত্রাসী ইরাকের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র এবং আলকায়েদা। সুতরাং ইরাক আক্রমণ না করলে সন্ত্রাসে ভরে যাবে আমেরিকা। সেই মাফিক জাতিসঙ্ঘে বসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল দিনের আলোয় মিথ্যাচার করে যুদ্ধের পে ভোট নিলেন। ইরানের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাস প্রপাগান্ডা ছিল ঐতিহাসিক। এক কথা বলে প্রতিদিনই কান পচাতেন বুশ। অনেকেই ভাবতেন, বুশ হয়তো পাগলই হয়ে গেছেন। মিডিয়ায় খোলামেলা তার মানসিক চিকিৎসার দরকার বলেও কথা হতো। মূল কথা, সন্ত্রাসী প্রপাগান্ডা না করলে মার্কিনিরা বুশকে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট বানাত না। সুতরাং সরকারের সন্দেহ সত্যি হলে, আমরাও বুঝে নেবো, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে লাইন ধরে সন্ত্রাস ও জঙ্গিরা দাঁড়িয়ে কোথায় এবং কী পরিস্থিতি অপো করছে, সেই ব্লু প্রিন্ট এখন কার হাতে? ধরে নেবো, জঙ্গিদের সাথে যোগাযোগ ছাড়া এই আত্মবিশ্বাস অসম্ভব। নৌকা না জিতলে সন্ত্রাসীরা দুই বছরের মধ্যে দেশে বোমাবাজি করে কিভাবে ছারখার করে দেবে সেই ব্লু প্রিন্টও আছে বলে ধরে নেবো। প্রকাশ্যে এসব বিপজ্জনক কথা বলার সাহস কারোই থাকার কথা নয়। প্রথম বিশ্বে এ ধরনের কথা বললে কী তদন্ত হতো, সবার সেটা জানা। বরং এসব বক্তব্য শুনে পাগলা বুশের কথাই মনে পড়ে। বাস্তবে মতা দীর্ঘায়িত করতে সন্ত্রাস উসকে দিচ্ছেন তারাই। তলে তলে কী হচ্ছে কেউ জানি না। কিন্তু পশ্চিমাদের অবস্থান স্পষ্ট। যে সন্ত্রাস দমনের প্রতিশ্রতি দেবেÑ মতা তার। এ জন্য আলকায়েদা চেহারার হলেই গ্রেফতার এবং খুন হলেও পশ্চিমাদের মাথাব্যথা নেই। এই সুযোগে প্রতিপ নির্মূল করার মাধ্যমে ২০২১ সাল পর্যন্ত মতার বিরুদ্ধে মাঠে আর কেউই থাকছেন না। দৃশ্যত সব কিছুই চায়নার মতো একপীয় ও আধিপত্যবাদী। মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনার বক্তব্যে হতাশ। সকালে এক কথা বিকেলে আরেক। প্রেসিডেন্ট ওবামা চিঠি পাঠিয়েছেন, ‘মার্কিন ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরা করতে হবে। ফলে রাতারাতি হয়ে গেল দুটি ৭৭৭ বোয়িং এবং তেল-গ্যাস চুক্তি। রানা প্লাজা এবং পদ্মা সেতুর পর রাজনৈতিক বিপর্যয় অনেকটাই সামলে উঠলেন হাসিনা। এখানেই থেমে নেই, পুতিনকে থামাতে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা দিয়ে তৃতীয় শ্রেণীর অস্ত্রশস্ত্র কেনার চুক্তি করতে বাধ্য করা হলো। চায়নাও সেটাই করছে। না হলে এত মিগ গেল কোথায়? দুর্বল ও মেধাহীন চালকের কারণে নানা ব্লক তাদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় বাংলাদেশের নৌকায় চেপে বসেছে। রাশিয়ার ভেটো মতা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য অনিবার্য। জোর করে মতায় থাকার ঘটনায় সিরিয়াতে রাশিয়ার পারমাণবিক ভেটো মতা দেখেছি। ওবামার আমলেই ভারতের ভেটোশক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা। মার্কিন অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার জন্যই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যুদ্ধ ও রক্ত মানেই মুক্তবাজার অর্থনীতি। বাংলাদেশও ভারতের অনেক বড় বাজার। কী হচ্ছে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে? অর্থাৎ পুঁজিবাদীদের একমাত্র অস্ত্র, রাজনৈতিক অস্থিরতা জিইয়ে রাখা। আমরা ভোগ করছি কুফল। ভারতের আছে পারমাণবিক অস্ত্র ও ড্রোন, সময়মতো ব্যবহার হতেও পারে। বিডিআর ধ্বংসের মাধ্যমে আর কোনো বাধাই রইল না। তার পরও বলতে হয়, জিম্বাবুয়ের মুগাবে ৮৯ বছর বয়সে আবারো ভোট ডাকাতি করে প্রেসিডেন্ট হলেও বাংলাদেশ আফ্রিকার মতো দুর্ধর্ষ লর্ডদের দেশ নয়। তাহলে দরিদ্র জনবহুল দেশে মতার লিপ্সা দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? ১৫তম সংশোধনী কি বাইবেল না কুরআন, যে পরিবর্তন নিষিদ্ধ! হিন্দু শাস্ত্র মতে, ধ্বংস ঠেকাতে মহাদেবকে স্বর্গ থেকে তলব করা হলে তিনি তার রক্তপিপাসু মুণ্ডুমালা পরা চায়নিজ চাপাতি হাতে উন্মাদ স্ত্রীর পায়ের নিচে শুয়ে পড়লে জিহ্বায় কামড় দিলেন কালী। বাংলাদেশের ধ্বংস ঠেকাতে মহাদেবের মতো কেউ আছেন কি না জানি না। যখন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারই মুশকিল আসান, তখন এরা কী করে জেনেশুনে এত সন্তানের মৃত্যুর কারণ হতে পারে? অরুন্ধতী রায়ের বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি : হাসিনাকে ভোট দিয়ে সজীবকে মাগনা পেয়েছি। কথায় বলে গাছের খাবো তলেরও কুড়াবো। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির নাতির হাতে মার্কিন পাসপোর্ট এবং ওথ নিয়েছেন মার্কিন সংবিধানকে সমুন্নত রাখার। তার সহধর্মিণী বিদেশী, ভার্জিনিয়াতে বহু বছরের সংসার এবং বিত্তবৈভবের মালিক। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির পরিবারে বিদেশীদের ভিড় উদ্বেগজনক। দুঃখজনক হলেও সত্য, তাদের মুখ থেকেই ১৬ কোটি মানুষকে দেশপ্রেমের কাস নিতে হচ্ছে। রাজনীতিতে রাহুল গান্ধীর অভিজ্ঞতার কথা বাদই দিলাম, অন্তত পড়ালেখা শেষ করে মুজিবের নাতির তো দেশে ফেরার কথা। সেই মতে রাজনীতির ধারাবাহিকতা; অন্যথায় টিউলিপের পথ বেছে নেয়া উচিত ছিল। শেখ হাসিনার একটিমাত্র বোন, তিনিও লন্ডন প্রবাসী, যার পরিবারেও বিদেশীদের ভিড়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির প্রবাসী প্রজন্ম দেশটাকে কতটা ভালোবাসেন? এই প্রশ্ন জিয়া পরিবারের ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়। মওসুমি পাখি, গাছের খায় তলেরও কুড়ায়, শীত এলেই উড়ে যায়। জয়ের বেলায় অ্যাসাইলামের ঘটনাও ঘটেনি। দেশপ্রেমের কথা বলতে বলতে মুখের ফেনা তুলে ফেলছেন। কিন্তু সৌদি সরকারের পাঠানো বিমানটি ৭২ ঘণ্টা বিমানবন্দরে বসে থেকে খালেদা জিয়াকে ছাড়াই ফেরত গেলেও ১/১১-এর সময়ে তিন মহাদেশ চষে বেড়ানোর রহস্য এখনো উন্মোচনের অপোয়। গণজাগরণ মঞ্চ কেলেঙ্কারির পর নৌকার ভরাডুবি ঠেকাতে এবার সজীবের মুখে উন্নয়নের প্রচারণা। এত বছর আমেরিকাতে থেকেও সুস্থ রাজনীতি কতটা শিখেছেন সন্দেহ। উন্নয়ন করার জন্যই তো মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে। তার পরও পদ্মা সেতু হয়নি। ডেসটিনি, হলমার্ক, শেয়ারবাজার, পদ্মা সেতু, সোনালী ব্যাংকের ব্যর্থতার কথা লেখা হয়নি বিলবোর্ডে। তাদের উন্নয়ন ও অন্যায়ের পাল্লা অসম। শেষ মুহূর্তে হঠাৎ উন্নয়নের বিস্ফোরণে কালোবাজারি আর মজুতদারদের কথাই মনে হচ্ছে। বারবার কুরআন পোড়ানোর কথা বলে রীতিমতো সাম্প্রদায়িকতার আগুন ছড়ানো হচ্ছে কি না?। ধর্মগ্রন্থে আছে, প্রমাণ ছাড়া কোনো অভিযোগ করা নিষেধ। আমার কথা, কুরআন পোড়ানোর প্রমাণ থাকলে ভালো। অন্যথায় সাম্প্রদায়িক উসকানি দেয়ার অপরাধে আদালত তলব করতে পারেন। ঐতিহাসিকভাবে সংখ্যালঘুদের অধিক তি করেছে আওয়ামী লীগ, এই টার্মে অর্পিত সম্পত্তির খেলা খেলছে আওয়ামী লীগ, বুদ্ধবিহার পোড়ানোর সাথে জড়িত তাদেরও কেউ কেউ। ৬৭ বছরেও মেরুদণ্ডহীন সংখ্যালঘুরা একটি সফল প্রতিবাদ পর্যন্ত করল না বরং আওয়ামী লীগের সামনে এদের ভূমিকা ব্যক্তিপূজার শামিল। তারেক রহমানকে সম-অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে প্রতিপক্ষের আচরণের বিরুদ্ধে এত দিনে প্রতিবাদ হওয়া উচিত ছিল। মামলা দিয়ে বিরোধী দলকে বাইরে রাখলেও মানুষ জানে, নিজেদের প্রায় আট হাজার মামলা তুলে নিয়ে দলীয় খুনিদের ফাঁসির দণ্ডও মওকুফ করিয়েছেন। প্রতিপকে নির্বাসনে রেখে উত্তর কোরিয়ার মতো একাই রাজত্ব করতে দেয়া যায় না। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনকে দুঃখজনকভাবে বিতাড়িত করে মোশতাককে বুকে আগলে নিয়েছিলেন কোন্ নেতা? তাকে ভোটে জেতানোর জন্য অভিনব কাণ্ড করা হয়েছিল। এই মোশতাকই তাকে কুপরামর্শ দিয়ে জনবিচ্ছিন্ন করেছিলেন। পরের ইতিহাস সবাই জানেন। আমাদের সন্দেহ, তলে তলে নব্য মোশতাক চক্রটি উন্নয়ন প্রচারের নামে দলটিকে দ্রুত অজনপ্রিয় করার চক্রান্তে লিপ্ত। মনে আছে, ’৯৬ তে জাতির কাছে অতীতের অপকর্মের জন্য মা চেয়ে ভোটে জিততে হয়েছিল আওয়ামী লীগকে। সজীব ওয়াজেদ ভালো করেই জানেন, এক পয়সার রাজনৈতিক সুবিধা নেয়াও অনৈতিক। রাষ্ট্রের প্রটোকল ব্যবহার করাও অনৈতিক। তিনি জানেন, এ ধরনের অনৈতিক কাজের জন্য ক্যাপিটল হিলের আইন প্রণেতাদের কী শাস্তি হয়েছে। একই কারণে ইন্দিরাকেও শাস্তি দিয়েছিল ভারতবাসী। বাংলার মানুষের নাড়ি বোঝার মতা তার নেই। আমি নিজেও প্রবাসী বলেই বিষয়টি আত্মস্থ করা সহজ। 


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads