শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২

ট্রাইব্যুনাল প্রশ্নবিদ্ধ : মাঝপথ থেকে নয় গোড়া থেকে শুরু করতে হবে


আসিফ আরসালান
ঠিক করেছিলাম, বিচারপতি নিজামুল হক এবং বেলজিয়াম প্রবাসী আহম্মদ জিয়াউদ্দিন স্কাইপিতে যে কথোপকথন করেছেন সেই বিষয়টি নিয়ে আজ লিখবো। লেখার জন্য মোটামুটি একটি প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলাম। তাদের দু'জনের সংলাপের যে কয়টি কিস্তি দৈনিক ‘আমার দেশে' বেরিয়েছে এবং পরবর্তীতে দৈনিক ‘সংগ্রামেও' যে কয়টি কিস্তি বেরিয়েছে তার সব কয়টি আমি যোগাড় করেছিলাম। চেয়েছিলাম, তাদের সংলাপের বিশেষ বিশেষ অংশ উদ্ধৃত করবো এবং সেই সাথে মন্তব্য পেশ করবো। কিন্তু এখন আর সেটি সম্ভব হচ্ছে না। কারণ যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল আলোচ্য স্কাইপি সংলাপের প্রকাশ নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়া হাইকোর্টের একটি বেঞ্চও অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ফলে এখন বিষয়টি সম্পূর্ণ স্পর্শকাতর হয়ে গেছে এবং আমাদেরকেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। তাই ঠিক করেছি, শুধু এই বিষয়টিই নয়, এটির সাথে সংশ্লিষ্ট আর যে সব বিষয় আছে যেসব বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে আমরা নিজেরা কোনো মন্তব্য দিবো না। গত কয়েক দিনে এ সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় যা কিছু লেখা হয়েছে এবং রাজনীতিক, পেশাজীবী ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এ সম্পর্কে যা কিছু বলেছেন সেগুলোর উদ্ধৃতির মধ্যেই আজকে লেখাটি সীমাবদ্ধ রাখবো। আমি জানি এই মুহূর্তে আমাদের নিকট থেকে পাঠকদের প্রত্যাশা বিপুল। আমি অনেক টেলিফোন পাচ্ছি এবং আমার ই-মেইলে অনেক চিঠি আসছে। গত ৭/১০ দিনে দেশে যা কিছু ঘটে গেলো সে সম্পর্কে পাঠক ভাইয়েরা আমাদের নিকট থেকে অনেক কিছু জানতে চান বা শুনতে চান। কিন্তু আশা করি, তারা আমাদের সীমাবদ্ধতা হৃদয়ঙ্গম করতে পারবেন।
এই মুহূর্তে দুইটি ইস্যু দেশের সমস্ত মানুষের মনকে আলোড়িত করছে। এর মধ্যে একটি হলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান। আরেকটি হলো, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলনটি একটি চলমান আন্দোলন। এটি চলছে এবং দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেই আন্দোলন চলতেই থাকবে। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন। যদিও বিচার অনুষ্ঠান একটি চলমান প্রক্রিয়া, তৎসত্ত্বেও সেই বিচারের বর্তমান অবস্থা একটি বিশেষ টার্নিং পয়েন্টে চলে এসেছে।
এখন যে বিষয়টি জ্বলন্ত জিজ্ঞাসা হয়ে সকলের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সেটি হলো, নিজামুল হকের পদত্যাগের পর বিচার কাজ যেখানে এসে থমকে দাঁড়িয়েছে, সেখান থেকেই কি শুরু হবে? নাকি সমস্ত বিচারটি একেবারে গোড়া থেকে শুরু হবে? এটি এখন শুধু এই মামলার প্রশ্ন নয়, সমগ্র দেশের সামনেই এটি একটি গুরুতর প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এই প্রশ্নে দেশের রাজনৈতিক শিবির সুস্পষ্টভাবে দুইটি ভাগে ভাগ হয়েছে। একটি হলো সরকার পক্ষ। তাদের বক্তব্য হলো, বিচারকের তো পরিবর্তন হয়েই থাকে। একটি বেঞ্চে বা ট্রাইব্যুনালে কোনো এক বিচারপতি বদলি হয়ে যেতে পারেন, অসুস্থ হতে পারেন, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। সেক্ষেত্রে যে স্থানে ঐ বিচারক বদলি হলে বা অসুস্থ হলে, নতুন বিচারক এসে ঠিক সেই স্থান থেকে বিচার কার্য শুরু করবেন। এ ব্যাপারে দেশের সবচেয়ে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক কয়েকদিন আগে বেসরকারী টিভি চ্যানেল ‘দি ইনডিপেন্ডেন্টের' একটি টক শোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে, এ সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট আইনে বিচারকের বদলি, অসুস্থতা বা মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ‘পদত্যাগের' কথা বলা হয়নি। এই বিচারপতি অর্থাৎ নিজামুল হক পদত্যাগ করেছেন এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করেছেন। এই ধরনের অবস্থার কথা সংশ্লিষ্ট আইনে লেখা নেই। যে পরিস্থিতিতে নিজামুল হক পদত্যাগ করেছেন সেই পরিস্থিতিতে সমগ্র বিচারপ্রক্রিয়া একেবারে গোড়া থেকেই শুরু করতে হবে। ঐ টক শোতে আরো ছিলেন বিচারপতি শাহ্দীন মালিক। তিনি আলোচনা করতে গিয়ে বার বার থতোমতো খাচ্ছিলেন। মনে হচ্ছিল, ঠিক কি বলবেন, তেমন বক্তব্য খুঁজে পাচ্ছিলেন না। বিচারকার্য চলাকালে সেই মামলা নিয়ে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা পক্ষের সাথে কথা বলা অনুচিত এবং অনৈতিক। তিনি ঐ ঘরানার লোক। এর চেয়ে বেশি তিনি আর কি বলবেন? তবুও যতোটুকু বলেছেন, তার মধ্য দিয়েই আইনের ফাঁকটি বেরিয়ে এসেছে।
\ দুই \
বলা হচ্ছে যে, একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে নিজামুল হক পদত্যাগ করেছেন। গত শুক্রবার চ্যানেল আইতে রাত ১২ টার সংবাদপত্র পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থাপক ‘মানব জমিনের' সম্পাদক জনাব মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন যে, স্কাইপির আলোচনা আমার দেশে প্রকাশিত হওয়ার পর নিজামুল হক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি পদত্যাগ করতে কেন বাধ্য হলেন? বাধ্য হলেন এই জন্য যে, স্কাইপির কথোপকথন প্রকাশিত হওয়ার ফলে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিই তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। স্কাইপির সংলাপ এ পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় যতোটুকু প্রকাশিত হয়েছে এবং সেই ভিত্তিতে সংবাদপত্র এবং টেলিভিশনে যে সব আলোচনা এবং পর্যালোচনা হয়েছে সেখান থেকে দেখা যায় যে, নিজামুল হক আগস্ট, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর, এই তিন মাসে আহম্মদ জিয়াউদ্দিনের সাথে ১৭ ঘণ্টা কথা বলেছেন। এই তিন মাসে তিনি ঐ ব্যক্তির সাথে ২৩০টি ই-মেইল চালাচালি করেছেন। সরকার পক্ষ বলছেন যে, বিচার প্রক্রিয়াকে নিরপেক্ষ বা উন্নতমান করার জন্য তিনি বাইরের লোক অর্থাৎ আহম্মদ জিয়াউদ্দিনের সাথে কথা বলেছেন। কথাটি সত্য নয়। যদি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা জারি না করতো তাহলে আমরা তাদের সংলাপের উদ্ধৃতি দিয়ে দেখাতে পারতাম যে, তিনি যেসব কথা বলেছেন তার ফলে তিনি একটি বিশেষ পক্ষ অবলম্বন করেছেন। প্রথম থেকেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তার মাইন্ড সেট করা ছিল। সেই বিদ্বিষ্ট মাইন্ডসেট নিয়ে কোনো নিরপেক্ষ বিচার করা যায় না। এছাড়া তিনি অন্য বিচারপতি কর্তৃক প্রভাবিত হয়েছেন এবং প্রলোভিত হয়েছেন। যতোটুকু সংলাপ প্রকাশিত হয়েছে সেখান থেকে দেখা যায় যে, নিজামুল হক বিষয়টিকে সাজানো নাটকের মতো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসব কাজ তিনি করে যাচ্ছিলেন বিগত আগস্ট মাস থেকে। তার ম্যানিপুলেশনের এই অংশের খবর স্কাইপির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু প্রকাশিত হওয়ার বাইরেও তিনি যদি কিছু করে থাকেন তাহলে তার গ্যারান্টি দেবে কে? জনাব ফজলে কবির নিজামুল হকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। নিজামুল হক যদি এ মামলাকে ইচ্ছা মতো সাজিয়ে থাকেন তাহলে সেটি ফজলে কবির উদঘাটন করবেন কিভাবে? আর উদঘাটন করতেও তো সময়ের প্রয়োজন। সে কারণেই যদি গোড়া থেকেই বিচার না করা হয় তাহলে ‘মিসক্যারেজ অব জাস্টিস' হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে একশত ভাগ। এ কারণেই মেধাবি আইনজীবি ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক দাবী করেছেন যে, ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হউক। সেই ট্রাইব্যুনাল হবে পৃথিবীর অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মতো যথার্থ অর্থেই আন্তর্জাতিক। বাংলাদেশের মতো নামে আন্তর্জাতিক, আর কামে ‘ডোমেস্টিক' নয়।
ট্রাইব্যুনাল নং-১ নিয়ে কথা কিন্তু এবারই প্রথম ওঠেনি। প্রথম যখন এই ট্রাইব্যুনালের একজন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয় তখন তার বিরুদ্ধে আওয়ামী ঘরানা থেকেই প্রশ্ন তোলা হয়। এরপর তাকে সরিয়ে নিজামুল হককে দেয়া হয়। নিজামুল হক সম্পর্কে অপর পক্ষ থেকে গুরুতর আপত্তি তোলা হয়। দলিলপত্র দিয়ে বলা হয় যে, মরহুমা জাহানারা ঈমামের নেতৃত্বাধীন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বা ‘ঘাদানিকের' তথাকথিত বিচারের সাথে এই নিজামুল হক যুক্ত ছিলেন। অন্য কথায় ঐ ঘাদানিক যে ‘মক ট্রায়াল' করে সেই ‘ঘাদানিকের' সাথে নিজামুল হক যুক্ত ছিলেন। অন্য কথায় নিজামুল হক ‘ঘাদানিকের' সদস্য ছিলেন। ঐ ‘মক ট্রায়ালে' অধ্যাপক গোলাম আযমের তথাকথিত ফাঁসির রায় দেয়া হয়। এই রায়ের সাথে যুক্ত ছিলেন নিজামুল হক। দালিলিক প্রমাণ, সেই সাথে সেই সময়কার পেপার কাটিং, নিজামুল হক অস্বীকার করবেন কিভাবে? এমন একটি পরিস্থিতিতে সরাসরি রায় না দিয়ে অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার নিজামুল হকের বিবেকের ওপর ছেড়ে দেন। কিন্তু তার পরেও নিজামুল হকের বিবেক জাগ্রত হয়নি। তিনি সেই পদ থেকে সরে দাঁড়াননি। তিনি চেয়ারম্যানের পদটি অাঁকড়ে থাকেন।
এরপর চলতি বছরের গোড়ার দিকে ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্য বিচারপতি জহিরউদ্দিন পদত্যাগ করেন। তার পদত্যাগ নিয়ে বাজারে অনেক কানাঘুষা আছে। এমন কথাও বাজারে আছে যে, সরকারের কিছু অন্যায্য চাপের কাছে তিনি নাকি নতি স্বীকার করেননি। এ জন্য মানে মানে সরে পড়াকেই তিনি ভালো মনে করেছিলেন।
এরপর স্কাইপি কেলেঙ্কারিতে নিজামুল হক পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। এই যেখানে ১নং ট্রাইব্যুনালের বিতর্কিত ইতিহাস সেখানে অতীতে যে বিচার কার্য সরকারের অঙ্গুলি হেলনে সাজানো পথে অগ্রসর হয়নি তাই বা কে বলবে? এ কারণে ১নং ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ গোড়া থেকে শুরু করাই আইনসঙ্গত বলে দেশের সবচেয়ে প্রবীণ এবং প্রখ্যাত আইনবিদগণ মনে করেন।
\ তিন \
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক নেতাই নন, তিনি একজন গবেষক, লেখক এবং সংবিধান সম্পর্কে দেশের অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সব মামলা তামাদি হয়ে গেছে। সরকার যদি এ মামলার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চায় তাহলে ট্রাইব্যুনালের চলমান সব মামলার বিচার নতুন করে শুরু করতে হবে। তা না করে যদি মাঝখান থেকে পরিচালনা করা হয় তাহলে সেটি হবে বেআইনি, নৈতিকতা বিরোধী ও সংবিধান পরিপন্থী। সেই বিচার দেশবাসী এবং দেশের আইনজীবী সমাজ কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না। তার মতে আমার দেশ পত্রিকায় যে স্কাইপি সংলাপ ফাঁস হয়েছে তার মাধ্যমে নিজামুল হকের বিরুদ্ধে বে-আইনি ও অনৈতিক তৎপরতার অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়েছে। তার পদত্যাগের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, দৈনিক আমার দেশ সত্য কথা প্রকাশ করেছে। তার মতে এই ঘটনার পর এই ট্রাইব্যুনালের প্রথম দিন থেকে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ পর্যন্ত যতো কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে তার সবকিছুই তামাদি হয়ে গেছে। সবকিছু বাতিল হয়ে গেছে। এর পরেও যদি সরকার এই মামলা চালিয়ে যেতে চায় তাহলে মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরু করতে হবে। তার মতে নিজামুল হক এমন কিছু করেছেন যার ফলে তিনি জাতির সামনে মুখ দেখাতে পারছিলেন না। তার এসব অনৈতিক কার্যক্রমের জন্য তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। যদি নতুন করে শুরু না করে মাঝখান থেকে শুরু করা হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মওদুদ আহমেদ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন। সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নিজামুল হকের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে আহবান জানান। তিনি আরো বলেন যে স্কাইপি সংলাপগুলো পড়লে বোঝা যাবে যে, প্রথম দিন থেকেই এই বিচারে অনৈতিক কাজ চলে আসছে। বিভিন্ন মহলের যোগসাজশে এটি যে একটি সাজানো নাটক ছিল সেটিও প্রমাণিত হয়েছে। কিভাবে রায় আসবে, কিভাবে রায় লেখা হবে, সে ব্যাপারে তিনি বাংলাদেশের বাইরে বাস করা একজন লোকের সাথে আলোচনা করেছেন। বাইরে থেকে রায়ের একটি স্কেচ রচনার কথাও চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল। মওদুদ আহমেদ বলেন, এই ধরনের চিন্তাধারা রীতিমতো ‘এ্যাট্রোসাস'। তিনি বলেন, যারা এই বিচারের সাথে জড়িত নন, যারা আদালতের সাথে সম্পৃক্ত নন, তারা ঠিক করে দেবেন রায়ের কাঠামো, রায়ের আউট লাইন। এরপর কি আর সেই বিচার প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ থাকে? এসব খবর ছাপা হয়েছে একাধিক পত্রপত্রিকায়।
এসব অকাট্য যুক্তিতর্কের পরেও মনে হচ্ছে, সরকার যুক্তিতর্কের ধার না ধেরে মাঝখান থেকে বিচার চালিয়ে যাবে। যদি তাই হয় তাহলে দেশের সমগ্র বিচার ব্যবস্থাই প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। বেগম খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে অভিযোগ করেছেন যে, বিচার ব্যবস্থায় চলছে চরম নৈরাজ্য। অন্যেরা বলছেন যে, সরকার তার আসন্ন ইলেকশন এবং পলিটিক্যাল এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে। সরকার কর্তৃক বিচার বিভাগের এই অনৈতিক ব্যবহার সমগ্র বিচার ব্যবস্থাকে জনগণের চোখে খাটো করে দেখারই চক্রান্ত বলে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads