বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১২

ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দিন বদলের নামে কি পেয়েছে জনগন?? ডাঃ আব্দুল আজিজ



দেখতে দেখতে মহাজোট সরকারের পৌনে চার বছর চলে গেল। ২০০৮ সালে দেশের সার্বিক উন্নয়নের নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি দিয়ে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। দেশের সাধারণ জনগন ভেবেছিল এবার মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একটি শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছে - হয়তো দেশের অনেক উন্নয়ন হবে। কিন্তু আশা নিরাশার দোলাচলে বিলিন হচ্ছে সাধারণ জনগনের আশার স্বপ্ন। অথচ প্রকৃতি নির্ভর স্বচ্ছ উপলদ্ধি অপার সম্ভাবনাময় আমাদের সোনার বাংলা। একটি কথা না বললেই নয়, মহাজোট সরকার ক্ষমতায় বসতে না বসতেই দেশে ঘটে গেল বিষাক্ত বিডিআর বিদ্রোহ। যা আধুনিক বাংলার ইতিহাসে আরেকটি রক্তমাখা কালো ইতিহাস। শুধু তাই নয় বঙ্গবন্ধুর নামে আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর করতে গিয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলায় সৃষ্টি হয়েছিল প্রবল জনরোষ। জীবন দিল কতজন । এছাড়া দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করার জন্য সিন্ডিকেট করে শেয়ার মার্কেট থেকে রাতারাতি হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে কে বা কারা নিয়ে গেল তার ক্লু সরকার খোজে বের করতে পারেনি বরং সরকারের প্রভাবশালী অর্থমন্ত্রী বলেন কি না না তাদের নাম বলা যাবে না। সরকারের হটকারি সিদ্ধান্তে আত্নহত্যার মতো ঘটনা ঘটে গেল। পঙ্গু হল শেয়ার বাজার। সিলেটের ১ কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন জননেতা এম. ইলিয়াস আলী তিনির ড্রাইবার সহ গুম হলেন।সিলেটের আরেক ছাত্র নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার গুম হলো।এখন পর্যন্ত কোন সুরাহা দিতে ব্যর্থ মহাজোট সরকার।সাগর রুনী হত্যার আসামীরা ও ধরা চোয়ার বাহিরে। তবুও সাবেক স্বরাস্ট্র মন্ত্রী নিজেকে বলেছিলেন তিনি সফল মন্ত্রী।অন্যদিকে পাংশা উপজেলায় বাউল সাধকদের দাড়িগোফ কেটে ফেলা হল। ঢাকার সাভারে ঘটে গেল আমিন বাজার ট্রেজেডি।বর্তমান সরকার হত্যা গুম সন্ত্রাস আর দুর্নিতী ছাড়া কিছই দিতে পারে নাই। মহাজোট সরকারের দুর্নীতি মহারুপ ধারন করেছে তাই প্রখ্যাত প্রবীন সাংবাদিক এবি এম মুসা বলেছিলেন সরকারের দর্নীতি ও চুরির কারনে এদের কে বলতে হবে তুই চোর তুই  চোর। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক জালিয়াতি করে ৪ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হল। নিজের দেশের খবর রাখেন না প্রধান মন্ত্রী অথচ উনি বলেন বিশ্ব ব্যাংকের সংস্কার প্রয়োজন।যোগাযোগ খাতে দুর্নীতির জন্য মন্ত্রী পদত্যাগ করল। রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ তবুও সরকার কখনো তাদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেনি। উপর্যুপুরি সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেনকি হলমার্কের ৪ হাজার কোটি টাকা খুব একটা বেশি নয়। বিশেষ করে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বেফাস কতাবার্তায় ইমেজ সংকটে পড়ে চলমান সরকার। এক পর্যায়ে মন্ত্রী সভায় অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবীও উঠে। কিন্তু জানিনা কোন রহস্যে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ হয়নি। পদ্মা সেতু নিয়ে দেশ বিদেশে সরকার দারুন সমালোচনায় পড়ে। আবার বিশ্বব্যাংকের সাথে আতাত করে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে লড়াই সরকার চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জনগন ভাবছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পার হওয়ার কোন কূটকৌশল কি না। বিশেষ করে অর্থমন্ত্রীর বেফাস কতাবার্তায় সরকার বার বার ইমেজ সংকটে পড়ছে। তবুও প্রধানমন্ত্রী নিরবতা পালন করছে। ইতিমধ্যে আবার মুহিত সিলেট-লন্ডন সরাসরি বিমান চালুর উদ্বোধনী সভায় বিমান বন্ধ করার কথা বলেন। তা নিয়ে আবার আলোচনার ঝড় উঠে। সরকারের সর্বঅঙ্গে গুণেধরা। তবুও সরকার চড়াই উৎরাই পেরিয়ে পার করল পৌনে চার বছর। বিশেষ করে সরকারের বিগত নির্বাচনে ইশতেহারে দেওয়া  প্রতিশ্র“তির বেশির ভাগ ওয়াদা সরকার পূরণ করতে ব্যর্থ। যদিও সরকার দিন বদলের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু দুর্নীতির জন্য সরকার বার বার আলোচনায়। যেমন- যোগাযোগ, রেলখাত, শিক্ষাখাত, স্বাস্থ্যখাত প্রতিটি সেক্টরে দুর্ণীতি ধানা বেধে আছে। সাধারণ জনতার ভাবনা সরকার এত সব সমস্যার সমাধান দিতে পারবে কি? এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে সরকার ও বিরোধী দল যখন হার্ডলাইনে তখন দেশের বুদ্ধিজীবি, কূটনৈতিক ও আমলাগণ তাদের মতামত মিডিয়ার মাধ্যমে রোজনামা ব্যক্ত করছে। কিন্তু সরকার তাদের নিজস্ব ইজম নিয়ে বসে আছে। এই অবস্থায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটুকু ফলপ্রসু হবে এই নিয়ে হরেক রকম প্রশ্নের সম্মুখীন এখন আমাদের দেশের গণতন্ত্র। ইতিহাস কালের স্বাক্ষী তাই যুগ যুগ ধরে দেশে বিদেশে অনেক গুনীজন ইতিহাস সংরক্ষণ করে আসছে। মহাজোট সরকারের পৌনে চার বছরের ইতিহাস অত্যন্ত করুন ও লোহমর্ষক। সরকারের কার্যক্রমের ঘটনা রটনাগুলো তুলে ধরলাম গণতান্ত্রিক চর্চা শুদ্ধির জন্য। সরকার আসে সরকার যায় কিন্ত সাধারণ জনতার ভাগ্যের কোন প্রকার পরিবর্তন হচ্ছে না। একেক সরকার এসে একেক ধরণের ইজম তৈরী করে জনগনের ভোট নিয়ে সরকার গঠন করেন। কিন্তু নির্বাচন পরে সাধারণ জনতার কথা আর মনে রাখে না। বিশেষ করে দিন বদল আর বিশ্বায়নের যাতাকলে আমাদের দেশের দরিদ্র মানুষগুলো হিমসিম খাচ্ছে। মোটের উপর মহাজোট সরকারের পৌনে ৪ বছরে আশানুরুপ কোন প্রকার উন্নতি সাধারণ জনতার নজর কাটছে না। সরকার যদি জনগনের কথা না ভাবে তবে আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া সরকারের পক্ষে হিমসিম খেতে হবে। নিত্য পণ্যের দাম সরকার স্থিতিশীল রাখতে পারে নি। আবার সরকারের পৌনে ৪ বছরে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে ৭ বার। এই যদি হয় একটি গণতান্ত্রিক সরকারের ইতিবৃত্ত তবে বলেনতো সাধারণ জনগন কোথায় দাড়াবে। তাইতো বলতে হয় সর্ব অঙ্গে ব্যথা ঔষধ দেব কোথায়। পরিশেষে সরকারকে ভাবতে হবে গণতান্ত্রিক দেশের মূল বিষয়গুলো কি? 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads