বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১২

যত দোষ মিডিয়া ঘোষ



মহিউদ্দিন খান মোহন
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সরকারের অফিসবিহীন মন্ত্রী মি. সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে মিডিয়ার কোনো রকম শত্রুতা আছে বলে বোধকরি কারোই জানা নেই। বরং বিশেষ মুখভঙ্গী ও বাচনক্রিয়ার মাধ্যমে বক্তব্য উপস্থাপনে পারঙ্গম এই বাকপটু রাজনৈতিক ব্যক্তিটির সঙ্গে মিডিয়ার সম্পর্ক বেশ ভালোই বলে এতদিন জানতাম। বিগত দিনগুলোতে আমরা দেখেছি মি. সেনগুপ্ত ‘হক না হক’ যেসব কথা বলেছেন, মন্তব্য করেছেন, প্রতিপক্ষকে বাক্যবাণে জর্জরিত করেছেন, দেশের মিডিয়া তা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে জনসমক্ষে তুলে ধরেছে। মি. সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে ‘মিডিয়াবান্ধব’ রাজনীতিক বলেই সবার ধারণা। তিনি দেশব্যাপী যে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন তার পেছনে মিডিয়ার বেশ জোরালো ভূমিকা রয়েছে। বলা যায়, ‘বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে বাংলাদেশে পরিচিতি লাভের ক্ষেত্রে এদেশের সংবাদপত্র এবং রেডিও-টিভি চ্যানেলগুলো মি. সুরঞ্জিতকে সর্বোত সহায়তা করেছে। যতদূর মনে পড়ছে মিডিয়া সম্পর্কে তিনি কখনও কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করেননি।
কিন্তু গত ৮ অক্টোবরের পত্রিকায় দেখলাম সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দেশের মিডিয়াকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। বলছেন, তার এপিএস (সাবেক) ওমর ফারুকের গাড়ির ড্রাইভার আজমের বক্তব্য নিয়ে মিডিয়া বাড়াবাড়ি করছে, তার মান-ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করছে। তিনি বলছেন যে, তিনি নিষ্পাপ(!) নিষ্কলঙ্ক! মিডিয়া তার চরিত্র ও ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপনের চেষ্টা করছে। তিনি নিজেকে পূত-পবিত্র প্রমাণ করে মিডিয়াকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন।
এটা মি. সেনগুপ্ত করতেই পারেন। এটা করার আইনগত অধিকার তার আছে। কোনো সংবাদমাধ্যমের খবর, প্রতিবেদনে যদি কারও মান-সম্মান হানি হয়, জনসমক্ষে তিনি হেয় প্রতিপন্ন হন, তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতেই পারেন। তবে এক্ষেত্রে বিচার্য বিষয় হলো প্রকাশিত প্রতিবেদন বা খবর ওই সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব, নাকি কোনো সূত্রে প্রাপ্ত। যদি তা দৃশ্যমান কোনো সূত্র থেকে প্রাপ্ত হয় এবং তা অবিকৃতভাবে সংবাদমাধ্যমটি তুলে ধরে তাহলে ওই সংবাদমাধ্যম সে বিষয়ে অপরাধী বিবেচিত হবে না। বরং অবিকৃত তথ্য তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যম প্রশংসিত হবে।
মিডিয়ার ওপর হঠাত্ মি. সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণটি কারও অজানা থাকার কথা নয়। সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে তা সবারই গোচরীভূত হয়েছে। অতি সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মি. সেনগুপ্তের সাবেক এপিএস ওমর ফারুকের গাড়ির ড্রাইভার আজমের সাক্ষাত্কার প্রচার করেছে। কয়েক পর্বে বিভক্ত ওই সাক্ষাত্কারে ড্রাইভার আজম বস্তাভর্তি টাকার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে। গোপন স্থানে ধারণকৃত ওই সাক্ষাত্কারে আজম বলেছে, সেদিন তার গাড়িতে যে ৭৫ লাখ টাকা পাওয়া গেছে তা তত্কালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের বাড়িতেই যাচ্ছিল। সে আরও বলেছে, এ রকম আরও টাকা মন্ত্রীর বাড়িতে আগেও গেছে। ড্রাইভার আজম বলেছে, রেলের নিয়োগ-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন খাত থেকে বহু টাকা মন্ত্রীর বাড়িতে গেছে। দুর্নীতির সঙ্গে সাবেক রেলমন্ত্রী নিজেই জড়িত, এটাও বলেছে ড্রাইভার। তাছাড়া সে বলেছে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছেলে সৌমেন সেনগুপ্ত যে টেলিকম ব্যবসা করছে, তার পুঁজিও এসেছে রেলের দুর্নীতির টাকা থেকে। ড্রাইভার আজম সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে গ্রেফতার করা উচিত বলে মন্তব্য করে বলেছে, দুর্নীতি বন্ধে উদ্বুদ্ধ হয়েই সে ওইদিন টাকাসহ গাড়ি বিজিবি হেডকোয়ার্টারে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। এপিএস ফারুক তাকে অনেক টাকা দেয়ার লোভ দেখালেও ‘সততা’র কারণে সে অর্থের লোভ না করে বিষয়টি প্রকাশ করে দিয়েছে। জীবনের নিরাপত্তাহীনতার জন্য সে আত্মগোপনে আছে বলেও জানিয়েছে।
টিভি চ্যানেলে ড্রাইভার আজমের সাক্ষাত্কার প্রচারের পর সর্বত্র হৈচৈ পড়ে যায়। পরদিন পত্রিকাগুলোতেও খবরটি প্রকাশ পায়। যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি বিস্ময় সৃষ্টি করেছে জনমনে তা হলো, গত কয়েক মাস প্রাণপণ চেষ্টা করে গলদঘর্ম হয়েও আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ড্রাইভার আজমের হদিস পায়নি। সেখানে একটি টিভি চ্যানেলের এক রিপোর্টার তাকে খুঁজে বের করে ফেলল। খবরে বলা হয়েছে, পরিবারের সূত্র ধরে দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় ওই রিপোর্টার ড্রাইভার আজমের সন্ধান পেয়েছে। আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা থাকলে কঠিন আচ্ছাদনের অভ্যন্তরে লুক্কায়িত বস্তুও যে উদ্ধার সম্ভব, ড্রাইভার আজমকে রিপোর্টারের খুঁজে পাওয়া তার অনন্য উদাহরণ।
ড্রাইভার আজম খানের সাক্ষাত্কার প্রচারের পর মি. সেনগুপ্ত ত্বরিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। নিজ নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের শাল্লা থেকে হল্লা-চিল্লা করে তিনি আওয়াজ দিয়েছেন যে, ড্রাইভার যা বলেছে সব ‘বোগাস’। বস্তাভর্তি টাকা সম্বন্ধে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি দাবি করেছেন, তিনি নিষ্পাপ ও নিষ্কলুষ। কিছু লোক তার ‘সফেদ’ ইমেজে ঈর্ষান্বিত হয়ে তার ভাবমূর্তি বিনষ্টের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে; যার সঙ্গে মিডিয়াও জড়িত। মি. সেনগুপ্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, তিনি প্রমাণ করে ছাড়বেন যে, তিনি সদ্য ভূমিষ্ঠ দেবশিশুর ন্যায় নিষ্পাপ, পবিত্র। তা সুরঞ্জিত বাবু যদি সেটা করতে সমর্থ হন, তাহলে তা হবে খুশির খবর। কিন্তু এদেশের মানুষ সে খুশির খবর আদৌ পাবে কী না সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে ঘোরতর।
এদিকে গত ১০ অক্টোবর জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে মি. সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তার ঘোষিত সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তাতে তিনি পুনর্বার নিজেকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’ দাবি করে বলেছেন, তার পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে কয়েকটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন। এর আগে তদন্তে তিনি ও তার ছেলে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন, উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ৬ অক্টোবর ড্রাইবার আজম খান রাজনীতির ভাষায় কথা বলেছে। তার ভাষা ও বেশভূষা দেখে মনে হযেছে তাকে কেউ শিখিয়ে পড়িয়ে এনে মিডিয়ার সামনে কথা বলিয়েছে। মিডিয়া তার এবং তার পরিবারের প্রতি সুবিচার করছে কী না সে প্রশ্নও করেছেন মি. সেনগুপ্ত।
অভিযুক্ত ব্যক্তি কখনও নিজেকে দোষী হিসেবে স্বীকার করেছে এমন নজির বিশ্বে আছে বলে মনে হয় না। প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করেও একজন খুনি আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে থাকে। সে হিসেবে মি. সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নিজেকে নির্দোষ দাবি করা অন্যায় নয়। এটা তিনি করতেই পারেন। কেননা, নিজেকে রক্ষার জন্য মানুষ সত্য-মিথ্যাসহ নানা ছল-চাতুরির আশ্রয় নিয়ে থাকে। তবে, সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে ঘটনার প্রকৃত তথ্য একসময় না একসময় বেরিযে আসে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএসের ড্রাইভারের স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে যদি সঠিক তদন্ত করা হয় তাহলে থলের ‘কালো বিড়াল’ যে বেরিয়ে পড়বে সে ব্যাপারে অনেকেই নিঃসন্দেহ।
কিন্তু সে তদন্ত আদৌ হবে কী না তা নিয়ে সচেতন ব্যক্তিদের সংশয় রয়েছে। কেননা, মি. সেনগুপ্তকে রক্ষার জন্য খোদ দুদকের চেয়ারম্যানই মাঠে নেমে পড়েছেন। গত ৭ অক্টোবর সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ড্রাইভার আজমের বক্তব্যকে আমলে নেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই, তার বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তার বক্তব্যকে ভিত্তি করে রেলের অর্থকেলেঙ্কারির পুনঃতদন্ত হবে না বলেও জানিয়েছেন এই ক্ষমতাশালী ‘গোলাম’। দুদক চেয়ারম্যানের মন্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে রক্ষা করতে সমন্বিত কার্যক্রম চলছে। ফলে বাংলাদেশের ইতিহাসে বিপুল পরিমাণ ঘুষের অর্থসহ হাতেনাতে ধরা পড়ার এই ঘটনার মূল ও নেপথ্য হোতারা যে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে, তা মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।
যদিও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি দুদক চেয়ারম্যানের অবস্থানকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে। তবে তাতে পরিস্থিতির তেমন কোনো হেরফের হবে বলে মনে হয় না। টিআইবি ঘটনার পুনঃতদন্ত, সুরঞ্জিতের পদত্যাগ এবং ড্রাইভার আজম খানের নিরাপত্তা দাবি করেছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘গাড়িচালাক আজমের টেলিভিশন সাক্ষাত্কারের প্রেক্ষিতে দুদক কর্তৃক রেলওয়ের দুর্নীতির পুনঃতদন্ত না করার ঘোষণা অগ্রহণযোগ্য, অপরিণামদর্শী। আর আজম খানের বক্তব্য বিবেচনায় না নিয়ে তার পেশাগত অবস্থান সম্পর্কে দুদকের অসম্মানজনক বক্তব্য দুঃখজনক। সাক্ষী বা তথ্য প্রদানকারী যে পর্যায়েরই হোক না কেন, সংবিধান ঘোষিত সব নাগরিকের সমান অধিকার ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াটাই দুদকের কাছে প্রত্যাশিত।’ বলাই বাহুল্য, দুদকের কাছে প্রত্যাশিত সে ভূমিকা বাস্তবে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। কেননা, দুদক চেয়ারম্যান বলেই দিয়েছেন, ড্রাইভার-চাপরাশিদের বক্তব্য-সাক্ষ্য দিয়ে কাজ চলতে পারে বা। গোলামীর জিঞ্জিরে কতটা শক্তভাবে বাঁধা পড়লে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তি এমন ন্যক্কারজনক মন্তব্য করতে পারেন, তা বোধকরি কাউকে বলে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
অন্যদিকে ঝড় উঠেছে সুরঞ্জিতের নির্বাচনী এলাকাতেও। গত ৯ অক্টোবরের পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, আগের দিন এলাকায় সুরঞ্জিত সেনের এক অনুষ্ঠানে দলের ৮০ ভাগ নেতাকর্মী উপস্থিত হয়নি। তারা সুরঞ্জিতকে বর্জন করেছে। একই দিনের একই পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ড্রাইভার আজমের বক্তব্য প্রচারের পর ওই এলাকায় জনগণের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এলাকাবাসী বলেছেন, ড্রাইভার আজমের বক্তব্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, এ লজ্জা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, সুনামগঞ্জবাসীরও। (প্রথম আলো, ১০ অক্টোবর ২০১২)।
বুঝা যাচ্ছে, সবমিলিয়ে মি. সেনগুপ্তের অবস্থা ভালো নয়। সবদিক সামাল দিতে গিয়ে তিনি এখন বেসামাল হয়ে পড়েছেন। ঘরে-বাইরে এত সমালোচনা-ধিক্কার তার মাথায় যে চাপ সৃষ্টি করেছে তাতে এমনটি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। আর দেশের মিডিয়াগুলো তো যেন মুখিয়ে থাকে। কেন, একটু রয়েসয়ে বলা যায় না! আফটার অল মি. সেনগুপ্ত একজন বিশিষ্ট রাজনীতিক। একটু-আধটু এদিক-সেদিক যদি তিনি বা তার নিকটজনেরা করেই থাকেন, তাতে এমন কি মহাসর্বনাশ হয়েছে? যে দেশে চার হাজার কোটি টাকা তছরুপের ঘটনাকে অর্থমন্ত্রী ‘তেমন কোনো ব্যাপার নয়’ বলে সার্টিফিকেট দেন, সেখানে ৭৫ লাখ টাকা তো নস্যি! এটা নিয়ে হৈচৈ, খবর, প্রতিবেদন, সাক্ষাত্কার এতকিছু করার কি কোনো দরকার ছিল?
কিন্তু বাস্তবতা যে বড়ই নির্মম। এতদিন মি. সুরঞ্জিত অন্যের গায়ে কাদা ছুড়ে মজা লুটেছেন। হক না হক সমালোচনা করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছেন। এখন তিনি নিজেই সমালোচনা-ধিক্কারের লক্ষ্যবস্তু। অন্তর্জ্বালাটা কি আর এমনিতেই তীব্র হয়েছে? আর সে যন্ত্রণা থেকেই তিনি মিডিয়াকে প্রধান আসামি সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু তিনি কি ভেবে দেখেছেন এখানে মিডিয়ার ভূমিকাটা কী? ঘটনা যা ঘটেছে মিডিয়া তা-ই প্রচার-প্রকাশ করেছে। ৯ এপ্রিল টাকার বস্তা ধরা পড়ার সময় থেকে এ পর্যন্ত যা হয়েছে কিংবা ঘটেছে অথবা এ সম্পর্কে যে যা বলেছে মিডিয়া তা-ই জনসমক্ষে তুলে ধরেছে, বাড়িয়ে কিছু বলেনি, করেনি। তাহলে তিনি সব দায় মিডিয়ার ওপর চাপালেন কেন? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। বেকায়দায় পড়লে অনেকেই মিডিয়ার ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেরা ধোয়া তুলসীপাতা সাজার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। মিডিয়া যেন ‘নন্দঘোষ’। সব দোষ এই সেক্টরটির। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো—মিডিয়াকে দোষারোপ করে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন অ্যাকশনে যাওয়ার যে ঘোষণা মি. সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত দিয়েছেন সেজন্য কিন্তু আশ্রয় নিয়েছেন মিডিয়ারই। আর যে টিভি চ্যানেলটির দিকে তিনি আঙুল উঁচিয়েছেন সেটিও সেখানে উপস্থিত ছিল এবং তারাও মি. সেনগুপ্তের বক্তব্য প্রচার করেছে। সুতরাং মিডিয়ার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যে কোনো লাভ নেই এটা তার উপলব্ধি করা উচিত। কারণ মিডিয়া ছাড়া তাদের যে একদিনও চলে না! তাছাড়া এটাও স্মরণ রাখা দরকার—তথ্যপ্রযুক্তির এ শতাব্দীতে ‘গুপ্ত’ অনেক কিছুই আর ‘গুপ্ত’ থাকবে না।
লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক
mohon91@yahoo.com

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads