সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১২

তত্ত্বাবধায়ক সরকার : পেছনের কথা ও আজকের বাস্তবতা



প্রফেসর এম মনিরুজ্জামান মিঞা
১৯৯১ সালে যখন এরশাদ সাহেব রাষ্ট্রক্ষমতায় তখন তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ভয়ঙ্কর এক আন্দোলন হয়। আন্দোলনে ছাত্ররা তো ছিলই, একইসঙ্গে ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনও। প্রচণ্ড গণআন্দোলনের মুখে জেনারেল এরশাদ সাহেবের সরকারের পতন ঘটে। কিন্তু কে হবেন রাষ্ট্রপ্রধান? আন্দোলনকারী সংগঠনগুলো একসঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে তত্কালীন প্রধান বিচারপতি মাননীয় জাস্টিস সাহাবুদ্দীন আহমদকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হোক। হলোও তাই। তিনি সব দলের ইচ্ছানুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সমর্থ হলেন। নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন বেগম খালেদা জিয়া। এ নির্বাচনে জনগণের রায় তার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ ভালোমনে মেনে নেয়নি। আওয়ামী প্রধান শেখ হাসিনা এমন কথাও উচ্চারণ করলেন যে তিনি নতুন সরকারকে একদিনের জন্যও শান্ত পরিবেশে কার্য সম্পাদন করতে দেবেন না। তিনি করলেনও তাই। প্রথম থেকেই তিনি নতুন সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া উত্থাপন করে সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখলেন। দাবি-দাওয়া শেষ পর্যন্ত দাঁড়াল একটি দাবিতে। আওয়ামী প্রধান দাবি করলেন যে বিএনপি সরকারের কার্যকাল শেষে একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনায় নির্বাচন হতে হবে। কিন্তু তা করতে হলে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। আর তার জন্য প্রয়োজন সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন। কিন্তু তা যাতে বিএনপি সরকার করতে না পারে সেজন্য ৩০০ সংসদীয় সদস্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সর্বমোট ১৪৯ জন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলেন। বিএনপি সরকার কোনো উপায়ন্তর না দেখে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে শূন্য আসনগুলো পূরণের জন্য তারিখ ঘোষণা করলেন। কিন্তু বিরোধী দল যারা নির্বাচনে ভোট দিতে যাবে তাদের এমন ভীতি প্রদর্শন করলেন যে কেউ যাতে ভোট কেন্দ্রে না যায়। উল্লেখ্য যে, বিরোধী দল ওই সময়ে একটি পত্রিকার হিসাব অনুযায়ী মোট ১৭৬ দিন হরতাল পালন করে আর কেবলমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে একাধারে ৬০ দিন হরতাল পালন করে দেশকে প্রায় অচল করে দেয়। কিন্তু সরকারি দল বিএনপি যথেষ্ট সাহস সঞ্চয় করে সংসদীয় শূন্য আসনগুলো পূরণ করতে সমর্থ হয়। নির্বাচনের পর কোনোরূপ বিলম্ব না করে সংসদ অধিবেশন আহ্বান করে বিরোধী দলের চাহিদামত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় বিল সংসদে উপস্থাপন করা হলো সরকারি দলের পক্ষ থেকে। বিল পাসও হলো। প্রধানমন্ত্রী মাননীয় বেগম জিয়া তাত্ক্ষণিক বঙ্গভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করলেন ও মাননীয় রাষ্ট্রপতিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগদান ও সরকার গঠনের অনুরোধ জানালেন। সে মোতাবেক এবং বিরোধী দল আওয়ামী লীগের দাবিমত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নতুন সরকার গঠিত হলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির হাতে দিয়ে যখন বঙ্গভবন থেকে বেরিয়ে আসলেন তখন বিশাল এক জনতা তাকে করতালি দিয়ে সম্মান দেখালেন। এর কারণ সাধারণ জনগণও বুঝতে পারল যে বেগম জিয়া কেবল একজন সত্ মহিলাই নন, তিনি রাষ্ট্র ও জনগণের কল্যাণে ব্যক্তিগতভাবে ত্যাগ স্বীকার করতেও কুণ্ঠিত হন না কখনও। এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক হবে যে ১৯৯৬ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় প্রথম বারের মতো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, দ্বিতীয়বার ২০০১ সালে পুনরায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় আবারও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী পর্যায়েও তৃতীয়বারের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে। এসব নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো বাদানুবাদ হয়নি। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতাসীন তারই একসময়ে সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি জাস্টিস খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে কিছু মন্তব্য করেন।
তার মন্তব্যগুলো কোনো আদালতের রায় ছিল না, সেগুলো ছিল কিছু মন্তব্য যাকে Short order বলে অভিহিত করা হয়। তার সংক্ষিপ্ত আদেশে কয়েকটি কথা ছিল। তিনি লিখলেন যে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তবে তিনি এমন কথা বলেননি যে সংবিধান থেকে বাতিল করা হোক। তিনি বরং এ সম্পর্কে ‘prospectively’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। অর্থাত্ তিনি বলতে চেয়েছিলেন যে, পরবর্তী কোনো একসময়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তিনি একথাও তার নির্দেশে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে পরবর্তী দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুসারেই যেন অনুষ্ঠিত হয়। একথা থেকে দিবালোকের মতো স্পষ্ট বিচারপতি খায়রুল হক ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করার কোনো কথা তার সংক্ষিপ্ত নির্দেশে আদৌ বলেননি। কিন্তু সরকারি দল আওয়ামী লীগ কোনো কালবিলম্ব না করে ত্রয়োদশ সংশোধনী, যা তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল ১৯৬৬ সালে সেই সংশোধনী বাতিল করে দিল। এবং তখন থেকে তারা বলছে যে তাদের সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।
আবার এমন কথাও বলা হচ্ছে যে সে সরকারের বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্বও থাকবে। এমন অদ্ভুত কথাও বলা হচ্ছে কেবলমাত্র জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য। আবার বিচারপতি খায়রুল হকের সংক্ষিপ্ত আদেশ প্রকাশিত হওয়ার পর পরই সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধান থেকে বিলুপ্ত করা হলো। কেবল কি তাই! সরকার অত্যন্ত দ্রু্রতগতিতে ওই সংশোধনী বাদ দিয়ে নতুন সংবিধান মুদ্রিত করা হলো ও তা বাজারে ছাড়া হলো, যাতে কেউ এরকম কোনো বিধি সংবিধানে আদৌ ছিল কিনা তা ভুলে যায়। কিন্তু জাস্টিস খায়রুল হক যে আগামী দুটি জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনায় যেন হয় সে কথা বেমালুম ভুলে গেল সরকারি দল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানের রচয়িতা বিশিষ্ট আইনজীবী ও স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বপ্রথম পররাষ্ট্র বিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী ড. কামাল হোসেন গতকাল (২১ অক্টোবর) বলেছেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাপনাতেই জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। এর আগে তিনি কয়েকবার বলেছেন, যেসব সরকারি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবে সেগুলো সবই দলীয়করণ করা হয়েছে। অবস্থা যখন এরূপ তখন কেন সরকারি দল নিজেদের খবরদারিতে নির্বাচন করতে আগ্রহী তা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিষয়টি সম্পর্কে একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার উদ্দেশ্যে উচ্চ আদালত বিশিষ্ট আইনজীবীদের মধ্যে ৮ জনকে অ্যামিকাস কিউরি বা আদালতের পরামর্শদাতা বন্ধু নির্বাচন করে তাদের মত নিয়েছিলেন। একজন বাদে বাকি সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে কেবল অযৌক্তিক অবস্থানে বর্তমান সরকারি দল। এর কারণও ড. কামাল হোসেনের দৃষ্টিভঙ্গিতে কি তা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। অনেকের মনে থাকার কশা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বর্তমান সরকারের ক্ষমতাগ্রহণের ২/১ দিনের মধ্যেই টিভি বক্তব্যে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন যে, ছাত্রলীগ ছাড়া সরকার কাউকে নতুন নিয়োগের জন্য বিবেচনা করবে না। ছাত্রলীগ আজ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করছে তা যারা চোখ-কান খোলা রাখেন তারা তো সবাই দেখছেন এবং বুঝছেন। দিন কয়েক আগে একটি পত্রিকার খবরে দেখা গেল ছাত্রলীগ সদস্যদের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করার জন্য পুলিশের চাকরি দেয়া হচ্ছে। আবার বর্তমান সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকেই প্রশাসনে যাদের ভিন্ন মতাবলম্বী বলে মনে করা হয় তাদের সবাইকে ওএসডি করে কোনো দায়িত্ব না দিয়ে রাখা হয়েছে। যারা চাকরিরত স্বভাবতই তারা হলেন দলীয় ব্যক্তি। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে নির্বাচন কেন্দ্রে যারা দায়িত্বে থাকবেন তারা সবাই দলীয় ব্যক্তি, হয় পুলিশের দায়িত্বে বা ভোটগ্রহণকারীর দায়িত্বে। অতএব কেন বর্তমান সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনাধীন জাতীয় সংসদের নির্বাচনে কোনোরূপ আগ্রহ না দেখিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাচ্ছে তা সবার কাছে স্পষ্ট হওয়ার কথা। তবে লক্ষণীয় যে একমাত্র সরকারি দল বাদ দিয়ে কেউই ক্ষমতাসীন দলের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন চাচ্ছে না।
দলীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে যে কেউই নির্বাচন চাচ্ছে না এর একটি কারণ সম্ভবত বর্তমান সরকারি দলের নির্বাচন পরিচালনা নিয়ে বিগত দিনের অভিজ্ঞতা। আর দ্বিতীয় কারণ যে ডামাডোলের মাধ্যমে মাননীয় বিচারপতি জাস্টিস খায়রুল হকের সর্বশেষ সিদ্ধান্তটি এসেছে সে বিষয়ে সাধারণ মানুষের অবিশ্বাস। বিষয়টি আমরা আর একবার পেছন ফিরে দেখতে পারি। প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের প্রথম সিদ্ধান্তটি কোনো বিচারিক রায় ছিল না। এটি ছিল তার একটি সংক্ষিপ্ত নির্দেশ। যদিও তিনি বলেছিলেন যে ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তবুও তিনি তাত্ক্ষণিকভাবে তা বিলুপ্ত করতে বলেননি। এ পর্যায়ের কয়েকমাস পরে তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ রায় দেন। আবার কিছুদিন পরে তিনি জানালেন যে ওটিও তিনি আর একবার ঘষামাজা করে দেখবেন।
জাস্টিস হক যখন তৃতীয়বার তার রায় দিলেন তার আগেই তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কোন ক্ষমতাবলে সর্বশেষ রায়টি দিলেন এ নিয়ে কোনো কোনো মাননীয় বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে তা বেআইনি। তবে এ বিষয়ে যা গুরুত্বপূর্ণ তা এই যে সব বিচারপতি এ রায়ের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেননি। মাননীয় বিচারপতি খায়রুল হকসহ আরও দু’জন বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি গোষ্ঠীতন্ত্র এমন মত ব্যক্ত করেছেন। একজন বিচারপতি মাননীয় এসকে সিনহা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে বলেছেন যে এ ব্যবস্থা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে লঙ্ঘন করেছে। অপর পক্ষে বিচারপতি আবদুল ওয়াহাব মিঞা এবং বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা এ মতের সঙ্গে একমত হননি। বরং তাদের মতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ছাড়া স্বচ্ছ নির্বাচন কখনোই করা যায় না। আর একজন বিচারপতি মাননীয় বিচারপতি ইমান আলী স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধান পরিপন্থী নয়। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর মাননীয় বিচারপতি খায়রুল হকের এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি রায় লিখে প্রচার করা কি যৌক্তিক? এ প্রশ্ন তুলেছেন কোনো কোনো মাননীয় বিচারপতি। এদিকে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তার মত বদলিয়েছেন। তিনি এতদিন বলছিলেন যে সংসদ রেখে তিনি নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। এখন আবার বলছেন সংসদ ভেঙে দিয়ে তিনি তা করবেন।
সরকার প্রধানের বার বার এই যে মতবদল তারই-বা মাজেজা কি? বুঝ হো জন যে জানো সন্ধান। আমরা এ নিবন্ধটি শেষ করার আগে মাননীয় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশিষ্ট আইন ও বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের একটি উক্তি উল্লেখ করতে চাচ্ছি যা তিনি কয়েকবার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান কোনো না কোনোভাবে যুক্ত থাকবে সেগুলো দলীয়করণের দোষে দুষ্ট। অতএব কারও বুঝতে বেশি বুদ্ধি ব্যয় করতে হবে না কেন সরকারি দল তাদের ইচ্ছেমত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে চাইছে। আমরা জানি না, সরকারি দল জনগণকে কোথায় নিয়ে যেতে আগ্রহী।
লেখক : সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাবেক রাষ্ট্রদূত

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads