যখন এই লেখাটি শুরু করেছি তখন শুক্রবার দুপর ১টা বাজতে ১০ মিনিট। ভারতীয় ‘এনডিটিভি’ টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠান থেকে ভারতীয় লোক সভা নির্বাচনের ফলাফল সংগ্রহ করছি। শনিবার যখন লেখাটির ওপর শেষ মুহূর্তের নজর বুলাচ্ছি তখন দেখলাম বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোট (এনডিএ নামে পরিচিত) পেয়েছে ৩৩৭টি আসন। দিল্লীতে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ২৭২টি আসন। অর্থাৎ ন্যূনতম প্রয়োজনের চেয়েও নরেন্দ্র মোদির জোটের রয়েছে ৬৫টি আসন বেশি। কোয়ালিশন বাদ দিলে বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ২৮৫টি আসন। প্রয়োজনের চেয়ে ১৩টি আসন বেশি। অর্থাৎ সরকার গঠন করার জন্য নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপির আর কারো সাথে জোট বাঁধার প্রয়োজন নাই। বিজেপি একাই সরকার গঠন করতে পারে। এখানে একটি কথা বলা দরকার। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট পেয়েছে ৫৯টি আসন। এর মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৪৪টি আসন। কংগ্রেসের ৬৭ বছরের জীবনে এত করুণ ও দুঃখজনক ফলাফল আর হয়নি। ফলাফলটি এত করুণ যে কংগ্রেস লোকসভায় বিরোধী দলের আনুষ্ঠানিক মর্যাদা পায় কিনা সন্দেহ। কারণ লোকসভায় বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে গেলে কমপক্ষে ১০ শতাংশ আসন থাকতে হবে। সেই হিসাবে কংগ্রেসের অন্তত ৫৪টি আসন পাওয়া দরকার ছিলো। কিন্তু কংগ্রেস এই ন্যূনতম আসনের চেয়েও ১০টি আসন কম পেয়েছে।
এই পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী পশ্চিম বঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৩৪টি আসন। তামিল নাড়ুতে ৩৯টি আসনের মধ্যে জয় ললিতার দল পেয়েছে ৩৭টি আসন। উত্তর প্রদেশে বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ৭১টি আসন। আগে ধারণা করা হয়েছিলো যে, বিজেপি এবং তার জোট সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে, তবে সরকার গঠনের মত ২৭২টি পাবে না। সুতরাং সরকার গঠনের জন্য তাকে পশ্চিম বঙ্গের মমতা ব্যানার্জি বা তামিল নাড়ুর জয় ললিতার সাথে অথবা উভয়ের সাথেই কোয়ালিশন করতে হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, কোন জোট গঠনের প্রয়োজন বিজেপির নাই। তারা একাই সরকার গঠন করতে পারে। তবে তারা সেটি করবে না। জোটের শরিকদেরকে তারা সাথে রাখবে।
ভারতের এই নির্বাচনী ফলাফলে দুনিয়াবাসী তো দূরের কথা, খোদ ভারতবাসীও অবাক হয়েছেন। আমার তো মনে হয়, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও এই ফলাফলে হতভম্ব হয়েছেন। এটাকে বলা হয় ইংরেজীতে খধহফ ংষরফব ারপঃড়ৎু. বাংলায় বলা হয় ভূমিধস বিজয়। কংগ্রেসের হয়েছে সম্পূর্ণ ভরাডুবি। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছে মাত্র ৫৯টি আসন এবং কংগ্রেস দলগতভাবে পেয়েছে ৪৪টি আসন। ১৯৪৭ সালের পর নির্বাচনে কংগ্রেস সবচেয়ে খারাপ করে ১৯৯৯ সালে। তখন তারা পেয়েছিলো মাত্র ১১৪টি আসন। আর এই নির্বাচনে বিজেপি করেছিলো সবচেয়ে ভালো ফল। তারা পেয়েছিলো ১৮২টি আসন। কিন্তু এবার অর্থাৎ ২০১৪ সালে কংগ্রেস করলো সবচেয়ে খারাপ ফল। তারা পেলো মাত্র ৪৪টি আসন। পক্ষান্তরে বিজেপি তার জন্মের পর থেকে করলো সবচেয়ে ভালো ফল। তারা পেলো ২৮৫টি আসন। ১৯৮৪ সালের পর অর্থাৎ দীর্ঘ ৩০ বছর পর ভারতের নির্বাচনে এমন ফলাফল হলো, যেখানে একটি মাত্র দল (বিজেপি) এমন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। অথচ এই ১৯৮৪ সালেই নতুন ইতিহাস ও রেকর্ড সৃষ্টি হয়। বিরোধী দলে থেকে বিজেপি এবার যেভাবে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসছে, স্বাধীন ভারতে এ ঘটনা এর আগে একবারই ঘটেছিল। ভারতে জরুরি অবস্থার অবসানের পর ১৯৭৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিরোধী দল থেকে ক্ষমতায় এসেছিল তৎকালীন জনতা পার্টি। এই জনতা পার্টির বিলুপ্তির মাধ্যমে ১৯৮০ সালে গঠিত হয় বর্তমান বিজেপি। বিজেপি গঠিত হওয়ার পর প্রথম লোকসভা নির্বাচন হয় ১৯৮৪ সালে। সেই নির্বাচনে পুরো ভারতে অন্ধ্র প্রদেশে ১টি ও গুজরাট রাজ্যে ১টি মোট দুটি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি, যা এ পর্যন্ত দলটির সবচেয়ে বাজে ফলের রেকর্ড। অন্যদিকে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন এনডিএ যে ফলাফল করেছে প্রায় তিন দশক আগে এমন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখিয়েছিল দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল কংগ্রেস। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর ১৯৮৪ সালে কংগ্রেস জিতেছিল ৪১৪টি আসনে। মায়ের মৃত্যুর আবেগে নির্বাচনী তরী ভাসিয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। তখন সৃষ্টি হয়েছিলো ঝুসঢ়ধঃযু ধিাব বা সহানুভূতির জোয়ার। সেই সহানুভূতির জোয়ারের কাঁধে চড়ে নিহত মায়ের পুত্র রাজীব গান্ধী অর্জন করেছিলেন ৪১৪টি আসন। ১৯৯১ সালে আত্মঘাতি বোমা হামলায় নিহত হন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পুত্র রাজীব গান্ধী। কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি সোনিয়া গান্ধী রাজীব গান্ধীর বিধবা পতœী। রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রাজীব গান্ধীর পুত্র এবং কন্যা। রাহুল গান্ধীও এবার পিতার নিহত হওয়ার ঘটনা জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে সহানুভূতির জোয়ার সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটি কোন কাজ দেয়নি। বিজেপি প্রথম ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে, তবে সেই সরকারের মেয়াদ ছিল মাত্র ১৩ দিন। ১৯৯৮ সালে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে গঠিত জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) হাত ধরে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। এবার ১৩ মাস ভারত শাসন করে দলটি। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সবচেয়ে ভালো ফল করে পরের বছর ১৯৯৯ সালে। এনডিএ জোটে থেকে নির্বাচন করে বিজেপি ১৮২ আসনে জয়ী হয়।
দুই
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক আদর্শ তথা কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদ নিয়ে অনেক কথা আছে। আজ আমরা সেই প্রসঙ্গে যাবো না। প্রয়োজন হলে অন্য কোন এক সময় সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। নরেন্দ্র মোদির জীবন থেকে অন্তত একটি বিষয় শেখার আছে। আমাদের দেশে যারা প্রধানমন্ত্রী এবং দলনেতা হয়েছেন তারা হয় উত্তরাধিকার সূত্রে নেতৃত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন অথবা সুখ স্বাচ্ছন্দ্য এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ভেতর থেকে এসেছেন। কিন্তু নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি এমন এক ব্যক্তি যিনি চা বিক্রেতা থেকে হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তার বয়স ৬৩ বছর। রাজ্য গুজরাটের মেসানা জেলার নিম্নবর্ণের একটি হিন্দু পরিবারে ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তার জন্ম হয়। ছোটবেলায় রাজ্যের ভাদনগর রেলস্টেশনে বাবা দামোদর দাসের সঙ্গে চা বিক্রি করতেন তিনি। তরুণ বয়সে পরিবারের ইচ্ছায় বিয়ে করেন। তবে দাম্পত্য জীবন বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। এত দিন গোপন রাখলেও এবার হলফনামায় নিজেকে বিবাহিত হিসেবে উল্লেখ করেন। ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) সাবেক নেতা। আরএসএসের ‘প্রচারক’ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেন ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর। আর বিজেপির মূলধারার রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত হন ১৯৮৭-৮৮ সালে।
বাংলাদেশের মানুষ এই নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে দারুন রকম আগ্রহী ছিলেন। কারণ তারা অতীতে দেখেছেন যে, যদি দিল্লীতে ক্ষমতায় থাকে কংগ্রেস তাহলে সেই সরকারের সাথে আওয়ামী লীগের চলে খুব মাখামাখি। কিন্তু ভারতের সমগ্র প্রশাসন যন্ত্র এবং জনগণের সাথে আওয়ামী লীগের কোনদিন কোন সম্পর্ক হয় না। শেখ হাসিনার সরকার সোনিয়া গান্ধীর কংগ্রেস সরকারকে শুধু দিয়েই গেছে, কিন্তু বিনিময়ে কিছু আদায় করতে পারেননি। পরলোকগত রাজীব গান্ধী এবং সঞ্জয় গান্ধীর সাথে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো। রাজনীতিতে সেটার প্রভাব পড়েছে। রাজীব ও সঞ্জয় মারা গেছেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট প্রনব মূখার্জি জীবিত আছেন। তার সাথে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের মিষ্টি মধুর সম্পর্ক রয়েছে। আগামী দিনে বাংলাদেশের সাথে বিশেষ করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে নরেন্দ্র মোদির সরকারের কেমন সম্পর্ক হবে সেটি এই মুহূর্তে সঠিকভাবে বলা সম্ভবও নয়, উচিতও নয়। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কিছুদিন কাজ করার পর তার বিভিন্ন উক্তি এবং পদক্ষেপ থেকে সেই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা হয়তো বোঝা যাবে। তবে বাংলাদেশের একাধিক জাতীয় সংবাদপত্রে মোদির বাংলাদেশ নীতি সম্পর্কে ইতোমধ্যেই বেশ কিছু মন্তব্য বেরিয়েছে। সাধারণভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, নরেন্দ্র মোদি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ায়, আওয়ামী লীগ এবং মহাজোট হতাশ এবং ১৯ দল খুশি। এই মন্তব্যের প্রতিফলন ঘটেছে একটি বহুল প্রচারিত বাংলা দৈনিকে।
গত ১৭ই মে শনিবার পত্রিকাটির প্রথম পৃষ্ঠায় দুইটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। একটির শিরোনাম ‘কংগ্রেসের ভরাডুবিতে আ’লীগে অস্বস্তি’ এবং অন্যটি ‘বিজেপির বিজয়ে বিএনপিতে উচ্ছ্বাস’। প্রথম খবরটিতে বলা হয়েছে, ভারতের নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবিতে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অস্বস্তির মূল কারণ কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুসম্পর্কের কারণে যে ‘বিশেষ নজর’ পেয়ে আসছে, তাতে ছেদ পড়ে কি না। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা এও মনে করেন, শাসক দল বদলের কারণে বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের বৈদেশিক নীতির বড় কোনো পরিবর্তন হবে না। পত্রিকাটিতে বলা হয়, ভারতের কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক পরীক্ষিত। দুই পক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও হৃদ্যতা রয়েছে, যা ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আরও অনেক গভীর হয়েছে। ভারতের জন্যও ছিল তা স্বস্তির। এ জন্যই সরকারের পরিবর্তনের ফলে দ্বিপক্ষীয় এই সম্পর্কে ছেদ পড়বে কিনা বলা যায় না। তবে অনানুষ্ঠানিক সম্পর্কের যে বাড়তি সুবিধা পেয়ে আসছিল, তা হয়তো পাওয়া যাবে না।
তিন
তবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর একজন সদস্য ওই পত্রিকাকে বলেন, বিজেপি সরকার নিয়ে আওয়ামী লীগের মূল দুশ্চিন্তা সীমান্ত বিরোধ, তিস্তার পানি সমস্যা, ছিটমহল সমস্যাসহ দ্বিপক্ষীয় কিছু অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে। এসব অমীমাংসিত বিষয়ের সুরাহা হলে তা বাংলাদেশের মানুষের কাছে আওয়ামী লীগ সরকার সম্পর্কে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হবে। ভোটের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে। এসব দ্বিপক্ষীয় সমস্যার সমাধান কংগ্রেস সরকার করতে না পারলেও উদ্যোগী ভূমিকা চালিয়ে গেছে। এখন এসব বিষয়ে বিজেপি সরকার কতটা আন্তরিক হবে বা অগ্রাধিকার দেবে, এটা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ বিজেপি বরাবরই স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে বিরোধিতা করে এসেছে। এ ছাড়া বিজেপি ও মোদির ‘বাংলাদেশি খেদাও’ নীতি এই সংশয়কে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
দ্বিতীয় সংবাদে বলা হয়েছে, ভারতের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় গত শুক্রবার সকাল থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বিএনপির নেতাদের বিশ্বাস, ভারতের কংগ্রেস সরকারের সমর্থনের কারণে আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন করতে সক্ষম হয়েছে। বিএনপি মনে করে, কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী, দেশটির প্রেসিডেন্ট ও কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা প্রণব মুখার্জির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। তাদের ধারণা, এ সম্পর্ক যতটা না রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের, তার চেয়ে বেশি শেখ হাসিনার সঙ্গে কংগ্রেসের।
বিএনপির পররাষ্ট্রনীতি দেখভাল করেন এমন দুজন নেতা ওই পত্রিকাকে বলেন, শুধু শেখ হাসিনা নন, আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে কংগ্রেসের অনেক নেতার ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা ভারতের নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি রেখেছিলেন। অবশ্য বিজেপি ক্ষমতায় বসলেই তাদের সঙ্গে বিএনপির সুসম্পর্ক তৈরি হবে এমনটা এখনই আশা করেন না দলটির কয়েকজন নেতা। তবে তাঁদের বিশ্বাস, বিজেপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক কংগ্রেসের মতো এত নিবিড় হবে না। ফলে আগের মতো ভারতের এক তরফা সমর্থন না পেলে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা একটা মানসিক চাপে পড়তে পারেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন প্রবীণ সদস্য প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন, ভারতে গ্যাস দিতে রাজি না হওয়ায় ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। ওই সময় ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় ছিল। বিজেপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক যে ভালো নয়, তা ওই বক্তব্যে পরিষ্কার।
তবে এসব খবরাখবরের সত্যতা আগামী কিছু দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আসিফ আরসালান
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন