আগামীকাল ১২ই মে ভারতীয় নির্বাচনের নবম ও শেষ পর্বের ভোটগ্রহণ করা হবে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে এবার ভারতের ভোটার সংখ্যা ৮১ কোটি। এই কারণে ৯টি পর্বে ৫৪৩টি লোকসভার আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখন ৯ম পর্বে অবশিষ্ট ৪১টি আসনের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভারত পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র। জনসংখ্যা ১২০ কোটি। আয়তন ১৩ লাখ বর্গমাইল। এসব কারণে সারা পৃথিবীর দৃষ্টি ভারতের নির্বাচনের ওপর নিবদ্ধ থাকে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভারতে এবং ভারতের বাইরে অনেকগুলো জনমত জরিপ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী। আমাদের ৩ দিকেই ভারত। ফলে ভারতের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষেরও রয়েছে বিপুল আগ্রহ। এ পর্যন্ত যতগুলো প্রাকনির্বাচনী সমীক্ষা পরিচালিত হয়েছে সবগুলোর পূর্বাভাসেই দেখা যাচ্ছে যে, এই নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে। দিল্লীতে সরকার গঠন করতে হলে প্রয়োজন ভারতের নি¤œপরিষদ বা লোকসভার ২৭২ জন সদস্যের সমর্থন। কিন্তু যেসব পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে সেগুলোতে বিজেপিকে সর্বোচ্চ দেয়া হয়েছে ২২৬টি আসন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে জনমত জরিপের ফলাফল সব সময় সঠিক হয় না। তবে সঠিক ফলাফল জরিপের ফলাফলের আশেপাশে থাকে। জনমত জরিপে বিজেপিকে দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ২২৬টি আসন আর কংগ্রেসকে দেয়া হয়েছে ৯৬টি আসন। সুতরাং ভারতের আগামী সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় কংগ্রেসের বিজয়ের কোন সম্ভাবনাকে বিবেচনায় নেয়ার কোন যুক্তি নাই। সেক্ষেত্রে বিজেপি সরকার গঠন করবে। তবে এ ক্ষেত্রে তাকে অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলোর সাথে কোয়ালিশন করতে হবে বা জোট বাঁধতে হবে। নির্বাচনের আগে সংঘ পরিবারের চাপে বা প্রস্তাবে লালকৃষ্ণ আদভানী বা সুষমা স্বরাজের পরিবর্তে নরেন্দ্র দাস মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে (যদি বিজেপি সরকার গঠন করতে পারে)। আগামী ১৬ই মে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে। সেদিনই নির্ধারিত হবে দিল্লীর মসনদে কে বসবেন। বিজেপির নরেন্দ্র মোদি? নাকি কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী? সবগুলো জনমত জরিপে নরেন্দ্র মোদিকেই ফেভারিট হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তাই এখন জল্পনা-কল্পনা চলছে যে নরেন্দ্র মোদি যদি প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে তার পররাষ্ট্রনীতি কি হবে? আমেরিকার সাথে সম্পর্ক কি হবে? রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক কি হবে? গণচীনের সাথে সম্পর্ক কি হবে? পাকিস্তানের সাথে তার সম্পর্ক কি হবে? এবং সর্বোপরি তিন দিক ঘিরে রাখায় বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক কেমন হবে? একথা সাধারণভাবে বলা হয় যে বড় বড় দেশে সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বড় রকমের কোন পরিবর্তন ঘটে না। নরেন্দ্র মোদি যদি প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে তার ক্ষেত্রে ঐ কথাটি শতকরা একশত ভাগ প্রযোজ্য হবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন না। কারণ নরেন্দ্র মোদি একজন শক্ত মনের মানুষ এবং স্ট্রং এডমিনিস্ট্রেটার। রাজনৈতিক মতাদর্শের তিনি হিন্দুত্ববাদী এবং কট্টরপন্থী। একই সাথে তিনি উন্নয়ন মনস্ক। গুজরাটে তিনি চার চারটি মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী আছেন। পত্র-পত্রিকার রিপোর্ট মোতাবেক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি গুজরাটে বিপুল উন্নয়ন সাধন করেছেন। অভ্যন্তরীণভাবে ভারতের রাজ্য বা প্রদেশগুলোতে যখন আলোচনা হয় তখন অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে গুজরাটকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারতের অভ্যন্তরে একটি কথা চালু হয়ে গেছে। সেটি হলো ‘গুজরাট মডেল’। গুজরাটে উন্নয়নের যে ধারা সৃষ্টি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হলে মোদি সেই ধারাটি সারা ভারতে ছড়িয়ে দেবেন বলে রাজনৈতিক পন্ডিতরা মনে করছেন। সেই সারা ভারতব্যাপী উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি করতে হলে ভারত সরকারের প্রয়োজন হবে অনেক টাকা পয়সা। আর সেই টাকা পয়সা দিতে পারে আমেরিকা। সুতরাং অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে নরেন্দ্র মোদি আমেরিকার সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইবেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ মনে করেন। যেহেতু বাংলাদেশ ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী তাই নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক কেমন হবে, সেটি নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন মহলে চলছে তুমুল জল্পনা কল্পনা।
॥ দুই ॥
শুরু করছি সাবেক প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি এরশাদের দল থেকে বেরিয়ে আসা জাতীয় পার্টির একটি অংশের নেতা কাজী জাফর আহমেদের কথা দিয়ে। তিনি বলেছেন, এবারের নির্বাচনে কংগ্রেস যদি পরাজিত হয় এবং বিজেপি যদি জয়লাভ করে তাহলে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ তার অভিভাবক হারাবে। তিনি আরো বলেছেন যে, ভারতের এই নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারে। আসলে কাজী জাফর সংক্ষেপে যেটি বলেছেন সেটিকে ব্যাখ্যা করলে বিষয়টি মনে হয় এই রকম দাঁড়ায়: শেখ হাসিনার বিগত ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রীত্বকালে অষ্টপ্রহর প্রচার করা হয়েছে যে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের নহর বয়ে যাচ্ছে। ‘বাংলাদেশ-ভারত’ ‘বাংলাদেশ-ভারত’ শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার আমলে আসলে কি বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক হয়েছে? নাকি ভারতের কংগ্রেস এবং বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছে? যদি বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশ তিস্তার পানি পেলো না কেন? যেসব ছিটমহল ফেরৎ পাওয়ার কথা সেগুলো পেল না কেন? বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। সেটি স্বাক্ষরিত হয়নি কেন? বাংলাদেশ এসব ফেরৎ পায়নি এবং স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি এই জন্যই যে পশ্চিমবঙ্গ এসব হতে দেয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মনে যা কিছুই থাকনা কেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সেখানে বাগড়া দিয়েছেন সেজন্যই বাংলাদেশ এগুলো পায়নি। তাহলে সমগ্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব হলো কি ভাবে? পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের অংশ নয়? কংগ্রেস যেমন ভারতের একটি বড় দল, তৃণমূল কংগ্রেসও পশ্চিমবঙ্গের একটি বড় দল। কাজেই হাসিনার আমলে বন্ধুত্ব হয়েছে কংগ্রেস আর আওয়ামী লীগের মধ্যে। তৃণমূলের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়নি। তাই তৃণমূল বাংলাদেশকে পানি দেয়নি, ছিটমহল দেয়নি এবং সীমান্ত চুক্তি করতে দেয়নি। কারণ পানি, ছিটমহল এগুলো সবই পশ্চিমবঙ্গ নামক ভূখ-ের অন্তর্ভুক্ত। যে স্থল সীমান্ত নিয়ে চুক্তি হওয়ার কথা সেটিও পশ্চিমবঙ্গের সাথে লাগোয়া। কগ্রেসের সাথে আওয়ামী লীগের দোস্তি রয়েছে। সুতরাং কংগ্রেস হেরে গেলে আওয়ামী লীগ স্বাভাবিকভাবেই তার অভিভাবক হারাবে।
কাজী জাফর আরো বলেছেন যে, ভারতের নির্বাচন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যেতে পারে। তিনি সম্ভবত বলতে চেয়েছেন যে, যদি কংগ্রেস হেরে যায় এবং বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসেন তাহলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট পাল্টে যেতে পারে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে বলে কাজী জাফর কি বলতে চেয়েছেন সেটা তিনিই ভাল বলতে পারেন। তবে তার কথার মধ্যে প্রচ্ছন্ন রয়েছে যে কংগ্রেসের সাথে হাসিনা সরকারের যে মাখামাখি রয়েছে নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপির সাথে ততখানি মাখামাখি থাকবে না। আমরা এ সম্পর্কে এই মুহূর্তে কোন সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করছি না। তাই বলে কাজী জাফরের মন্তব্যের সাথে দ্বিমতও পোষণ করছি না। কারণ ভারতের পরবর্তী সরকারের বৈদেশিক নীতি কি হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশ, গণচীন ও পাকিস্তানের সাথে কেমন সম্পর্ক হবে সে সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট আভাস এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ক্ষমতা গ্রহণের পর এসব বিষয়ে নতুন সরকারের নীতি বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে। যদি পররাষ্ট্রনীতিতে কিছুটা পরিবর্তন ঘটেও তাহলেও সেই পরিবর্তন ঘটবে ধীরে ধীরে। তবে এখানে বিজেপির কাউন্সিল অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাবের অংশবিশেষের প্রতি পাঠক ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাসে। প্রস্তাবটির অংশ বিশেষ নিচে উদ্ধৃত করা হলো, “The BJP is Firmly opposed to any hurried border dispute Settlement with Bangladesh and it must be a part of comprehensive solution of all issues, including the most important issue of infiltration of people from Bangladesh to india.”
এছাড়া বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে আরো দু’একটি ওয়াদা করা হয়েছে যেগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হিন্দুত্বের বাস্তবায়ন। সেই উদ্দেশ্যে যেখানে বাবরী মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে সেই জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ। এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের কথাও বাতলানো হয়েছে ঐ প্রস্তাবে। বলা হয়েছে যে, আলাদা আলাদা করে এসব ইস্যু বাস্তবায়ন করা হবে না। বরং এসব ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে একটি প্যাকেজ ডিল করা হবে। ইতোমধ্যেই নরেন্দ্র মোদি যেসব স্থানে জনসভা করছেন সেসব স্থানে সভা মঞ্চের পেছনে হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ভগবান বলে বিবেচিত রামের বিশাল প্রতিকৃতি টাঙ্গানো থাকছে। ‘ভগবান’ রামের ঐ বিশাল ছবির নিচে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করছেন ভারতের ভাবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর দাশ মোদি।
॥ তিন ॥
শেখ হাসিনার মন্ত্রীরা বলছেন, তারা ৫ বছর ক্ষমতায় থাকবেন। ভারতেন নতুন সরকারও ক্ষমতায় থাকবেন ৫ বছর। নরেন্দ্র মোদি যদি ঐ প্যাকেজ ডিল বাস্তবায়নের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন, তাহলেও কি হাসিনা সরকার বিজেপি সরকারের সাথে সদ্ভাব রাখতে পারবে? কারণ উদ্ধৃত প্রস্তাবে এ কথা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের সাথে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে কোন প্রকার তাড়াহুড়া করার বিরোধী বিজেপি। যদি কোন নিষ্পত্তি করতে হয় তাহলে সেটিকে অবশ্যই হতে হবে একটি প্যাকেজ ডিলের অংশ। সেই প্যাকেজ ডিলে অবশ্যই থাকতে হবে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশের অতীব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটি।
এ দেশের একশ্রেণীর পলিটিশিয়ান এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেছিলেন যে, ভারতে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশীদেরকে (নরেন্দ্র মোদির ভাষায়) বিতাড়িত করে তিনি বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠাবেন, এটি তার মেঠো বক্তৃতা এবং পলিটিক্যাল রেটোরিক। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এটি কোনো রেটোরিক নয়, নরেন্দ্র মোদি সেটি মিন করেছেন। অর্থাৎ এ ব্যাপারে তিনি সিরিয়াস। তার প্রমাণ পাওয়া গেল নরেন্দ্র মোদির এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে। গত ৯ই মে শুক্রবার ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘টাইমস নাও’তে প্রখ্যাত সাংবাদিক অর্নব গোস্বামীকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নরেন্দ্র মোদি তার জনসভায় দেয়া বক্তৃতার সারাংশ পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, গতকাল আমি এ কথাটি সবার বোঝার জন্য বলেছি। আর এ নিয়ে তো সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথাও উল্লেখ করা যেতে পারে। আমি শুধু সেটাই বলছি, যা সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বলেছিল। আমি সেটাই বলছি, যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৫ এর ৪ আগস্ট বলেছিলেন। আমি সেটা বলছি, যা ১৯৯৬ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন ইন্দ্র জিৎ গুপ্ত বলেছিলেন। আমি ফের বলছি, এ রকম অনেক দেশ রয়েছে, যেমন সুমাত্রা, ফিজি আফ্রিকার আরও কিছু দেশ, যেখানে ভারতীয়রা গত ১০০-১৫০ বছর ধরে বসবাস করছেন। তারা যদি দেশে ফিরতে চান, এটা কি আমাদের দায়িত্ব নয় যে, আমরা তাদের গ্রহণ করি? যদি তারা সমস্যায় পড়েন তাহলে কোথায় যাবেন? বাংলাদেশের কথায় আসি। শুধুমাত্র ধর্মের কারণে সেখান থেকে হিন্দুদের মেরে তাড়ানো হয়েছে। দেশ ভাগের সময়ও দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ হিন্দু ছিলেন। এখন রয়েছেন ৭ শতাংশ। এদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। কিন্তু আমার প্রশ্ন, এরা যদি ভারতে ফিরতে চান, তবে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে আমরা কি বন্ধ রেখে তাদের মরার জন্য ছেড়ে দেব? ধরে নিচ্ছি, এরা শুধু আসাম বা পশ্চিমবঙ্গেই এসেছেন। কিন্তু এটা কি গোটা দেশের দায়িত্ব নয়, সামগ্রিকভাবে তাদের গ্রহণ করা? এখানে রাজনীতিটা অন্য। এখানে অনুপ্রবেশের সময়ই একটা রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকে। এটা নিয়ে আগে কেনো রাজনৈতিক দল জোড় গলায় কথা বলেনি। কয়েকটি দল বিরোধিতা করেছিল। কিছু দল চুপ করে ছিল। এটা এখানেই দেখা গিয়েছে, অনুপ্রবেশকে রীতিমতো প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে। আমায় সাম্প্রদায়িক বলা হয়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কথা বললে আমায় সাম্প্রদায়িক বলা হয়। অনুপ্রবেশের কথা বললেও আমায় সাম্প্রদায়িক বলা হয়। তাহলে আমার দেশের হয়ে কে কথা বলবে? ভোটের পর কি বিজেপির হাত ধরবে তৃণমূল কংগ্রেস? কয়েকদিন ধরেই এই প্রশ্নে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদি মমতাকে যতই আক্রমণ করুক না কেন, গোপন আঁতাত হয়েছে দু’দলের। সেই জল্পনাকে আরো উস্কে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। টাইমস্ নাওকে দেয়া এই সাক্ষাৎকারে মোদির মন্তব্য মমতাকে কড়া আক্রমণ, আসলে দরজা খোলার কৌশলও হতে পারে। ৫ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যবাসীর জন্য ডবল ফায়দার লাড্ডু ফর্মূলা শুনিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সুরটা বদলে কয়েক সপ্তাহ পরই শ্রীরামপুরে সারদা ইস্যুতে কড়া আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। আক্রমণ যে সাজানো তখনই অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। অভিযোগ করেছিলেন, তলে তলে বিজেপির সঙ্গে গোপন আঁতাত হয়েছে তৃণমূলের। এসব কিছুই পরিষ্কার হবে ১৬ মে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন