বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

এই দুঃসময় কখন কীভাবে শেষ হবে


দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা অবগত। এমন দেশ তো আমরা চাইনি যে দেশে দমন-অবদমন, গুলী, ককটেল, ভাংচুর আর অগ্নিশিখায় রাজপথ-রেলপথ অবরুদ্ধ হয়ে থাকবে। প্রতিযোগিতামূলক বর্তমান বিশ্বে প্রগতির পথে হাঁটার বদলে আমরা জুলুম-নির্যাতন ও সহিংসতার এ কোন পথে চলছি। এমন দৃশ্য দেশের কোনো নাগরিকেরই কাম্য নয়। কিন্তু না চাইলেও ধ্বংসের এ পথ আমাদের জন্য কেন অনিবার্য হয়ে উঠলো? আমরা কি কখনো সততার সাথে ঘটনার পর্যালোচনা করে দেখেছি, কখনো কি নিজ নিজ অবস্থান থেকে আত্মসমালোচনার দায়িত্ব পালন করেছি? আমরা যে দায়িত্ব পালন করিনি, তার প্রমাণ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি। দেশ তো কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, কিংবা দলের নয়। দেশ হলো একটি জনপদ, এই জনপদ জনগণের তথা সব মানুষের। দেশের প্রকৃত মালিক জনগণ বিধায় শাসকদের চলতে হয় গণতন্ত্রের পথে। কিন্তু দুঃখের সাথে উল্লেখ করতে হয়, গত পাঁচটি বছর আমাদের প্রিয় স্বদেশ গণতন্ত্রের পথে চলতে পারেনি। শাসকগোষ্ঠী গণতন্ত্রের পথে চলতে দেয়নি দেশকে। চাতুর্য, প্রহসন আর স্বৈরাচারী মনোভাব দেশকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে, দ্বন্দ্ব-সংঘাত আর কলহের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে। এর পরিণাম হলো দেশের বর্তমান সহিংস রাজনীতি। ইতিহাসের পাঠক মাত্রই একথা জানেন যে, ক্ষমতার উত্তাপে অন্ধ শাসকরা যখনই বিরোধী পক্ষ ও ভিন্ন মতকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে, দমন-পীড়নের মাধ্যমে বিপর্যস্ত করতে চেয়েছে তখনই সংশ্লিষ্ট দেশে লক্ষ্য করা গেছে রাজনীতির সহিংস রূপ। যে রূপ এখন আমরা বাংলাদেশে লক্ষ্য করছি।
নির্বাচনকালীন এই সময়ে দেশে প্রয়োজন ছিল শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। কিন্তু ক্ষমতার মোহে একদলীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের আগ্রহের কারণে দেশে এখন বিরাজ করছে সহিংস ও অশান্ত পরিবেশ। এমন পরিবেশ থেকে দেশের জনগণ মুক্তি চায়। জনগণের আকাক্সক্ষার পক্ষে কথা বলেছেন দেশের বিশিষ্টজনরা, কথা বলছেন বিদেশী কূটনীতিকরা, বার্তা পাঠিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিবও। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। বর্তমান সংঘাতময় পরিবেশ দূর করার ক্ষেত্রে অর্থপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার কথা সরকারের। কিন্তু সরকার সেপথে হাঁটছে না। কিন্তু কেন? এ কেন’র জবাব খুঁজতে গেলে সরকারের ত্রুটি যেমন ধরা পড়ে, তেমনি ধরা পড়ে বিদেশীদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের বিষয়ও। কোনো দেশের সরকার যখন এমন পাঁকে জড়িয়ে পড়ে তখন দেশের বিপদ ও জনগণের দুঃখের মাত্রাই শুধু বাড়ে। জানি না এমন দুঃসময় কখন, কীভাবে শেষ হবে?
নির্বাচনের আর মাত্র ক’টা দিন বাকী। এ সময় একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন ছিল লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। এ ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করার কথা বর্তমান নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু তেমন কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমন কি আমাদের বাকপটু তথ্যমন্ত্রীর বিবেচনায়ও নির্বাচনকালীন আবহ সৃষ্টির কোনো উপলব্ধি আছে কিনা তা আমরা জানতে পারিনি। উপলব্ধি থাকলে নির্বাচনকালীন এই সময়টায় দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ থাকে কেমন করে? গত মঙ্গলবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সাথে বৈঠককালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও আমার দেশ পত্রিকা চালুর আহ্বান জানান। তখন আমাদের তথ্যমন্ত্রীর কেমন লেগেছে তা আমরা জানি না, তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এ আহ্বানে আমরা লজ্জিত হয়েছি। কারণ গণতন্ত্রের প্রবক্তা ও প্রগতিশীল রাজনীতির ধারক আমাদের তথ্যমন্ত্রী এতদিনেও উপলব্ধি করতে পারলেন না যে, ভিন্নমতের প্রচার মাধ্যম বন্ধ করে রাখার মধ্যে কোনো বীরত্ব বা সুশাসনের লক্ষণ নেই। কাপুরোষোচিত এমন মানসিকতার কারণেই একজন তথ্যমন্ত্রীকে বিদেশী রাষ্ট্রদূতের নসিহত শুনতে হলো।
মঙ্গলবার যখন ভিন্নমতের গণমাধ্যমগুলো চালু করার নসিহত করা হলো আমাদের তথ্যমন্ত্রীকে, তখন গণমাধ্যম সম্পর্কিত আরেকটি খবর লক্ষ্য করা গেলো পত্রিকার পাতায়। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানরত তৃতীয় আন্তর্জাতিক ইসলামী মিডিয়া সম্মেলনের উদ্বোধনকালে মুসলিম দেশগুলোর গণমাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে ইসলাম এবং মুসলিম দেশগুলোর ইতিবাচক ভাবমর্যাদা তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী সুরায়া ধর্মা আলী ও মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগের সেক্রেটারি জেনারেল ড. আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মোহসিন আল তুর্কি এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে বিভিন্ন মুসলিম দেশের সরকার ও মিডিয়ার চার শতাধিক মিডিয়া প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। এই সম্মেলনে তো মুসলিম দেশগুলোর গণমাধ্যমসমূহের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে ইসলাম, মুসলমান ও মুসলিম দেশসমূহের ইতিবাচক ভাবমর্যাদা তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের সরকার ও তথ্যমন্ত্রীর ভূমিকাটা কেমন? তাদের কর্মসূচিতে ইসলাম ও মুসলমানদের ভাবমর্যাদা সমুন্নত করার তেমন লক্ষণ দেখা যায় না। বরং বিশ্বব্যাপী বর্তমানে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িকতার উদ্দেশ্যমূলক যে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে, অনেক সময় তাদের সাথেই এদের কণ্ঠ মেলাতে দেখা যায়। এমন ভূমিকা বাংলাদেশের জনগণ পছন্দ করে না। আমাদের তথ্য মন্ত্রণালয় যে, ইসলাম ও মুসলমানদের ভাবমর্যাদা সমুন্নত করার ব্যাপারে আগ্রহী নন তার বড় প্রমাণ, ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণে সচেতন দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে রাখা।
আমরা একথা শুনতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, বর্তমান পৃথিবী যেন একটি বড় গ্রাম। ফলে আন্তর্জাতিক সভ্যতা ও রাজনীতির প্রভাব আমাদের এই ছোট্ট দেশ বাংলাদেশেও এসে পড়ে। আমরা হান্টিংটনের ‘ক্ল্যাশ অব সিভিলাইজেশনের কথা জানি। এ গ্রন্থে তিনি স্পষ্ট করেই  বলেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পাশ্চাত্য সভ্যতার জন্য এখন ইসলামই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ ইসলাম একটি সভ্যতা। পাশ্চাত্য এখন অস্ত্র, অর্থ ও মিডিয়া শক্তিতে প্রবল। এইসব ক্ষেত্রে দুর্বল মুসলমানদের ওপর আঘাত হানার এখনই সময়। সে আঘাতের চিত্র আমরা বিভিন্ন মুসলিম দেশে লক্ষ্য করেছি। সে আঘাত এসে পড়ছে বাংলাদেশেও।
বাংলাদেশে কথায় কথায় কিছু লোককে আমরা জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িকতার বুলি আওড়াতে দেখি। এরা গণতন্ত্র প্রসঙ্গে ভারতের উদাহরণ দিতে গদগদ হয়ে পড়েন, কিন্তু ভারতের জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতা সম্পর্কে মুখ বন্ধ করে রাখেন। সচেতন যে কোনো ব্যক্তিই একথা স্বীকার করবেন যে, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। মাঝে মাঝে এখানে সংখ্যালঘুদের ওপর যে দু’একটি হামলার ঘটনা ঘটে, তাতে সংশ্লিষ্ট থাকে কিছু দুর্বৃত্ত ও ক্ষমতাসীন দলের কিছু ভ্রষ্ট নেতা-কর্মী। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা পাবনার সাঁথিয়ায় সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলার যে ঘটনা ঘটতে দেখেছি তাতেও জড়িত ছিল সরকারি দলের লোকজন। এটি আসলে দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচারের চিত্র। এমন অত্যাচার থেকে দুর্বল মুসলমানরাও রক্ষা পায় না। আর বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিচ্ছিন্ন যে দু’একটি ঘটনা লক্ষ্য করা গেছে, তার সাথে জড়িত থাকতে দেখা গেছে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্যোগে বিভ্রান্ত কিছু মানুষকে। প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশে মূল ধারার ইসলামী রাজনৈতিক দল কিংবা মুসলিম জনসাধারণের এজেন্ডায় জঙ্গিবাদ কিংবা সাম্প্রদায়িকতার বিষয়গুলো নেই। কিন্তু এ সত্য উচ্চারণ করবে কে?
একপেশে এই বিশ্ব ব্যবস্থায় ন্যায় ও সত্যের দুর্ভিক্ষ চলছে। যার জোর বেশি, যার প্রোপাগান্ডার শক্তি ব্যাপক তার ইচ্ছাই সত্য বলে মেনে নিচ্ছে বর্তমান সভ্যতা। প্রকৃত সত্য কী, ন্যায় কি তা জানার মতো সাহস ও নৈতিক শক্তি যেন হারিয়ে ফেলেছে বর্তমান সময়ের মানুষ। ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগেও আমাদের বসবাস আলো ঝলমলে এক জাহেলিয়াতে। নইলে সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসের মতো ঘটনায় শুধু মুসলমানদের অভিযুক্ত করা হবে কেন? আর কেউ কি সন্ত্রাস করছে না? সাম্প্রদায়িক হিংসার অনল জলছে না? ন্যায় ও সত্যবিমুখ বর্তমান সভ্যতার চ্যাম্পিয়নদের কাছে এ প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। অথচ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, সত্য ও ন্যায়ের বিকাশ না ঘটলে কোনো সমাজ ও সভ্যতায় কাক্সিক্ষত শান্তি আসতে পারে না। এ কারণেই হয়তো বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থার কুশীলবরা নানাভাবে শান্তির ললিতবাণী উচ্চারণের পরও বিশ্বে ক্ষোভ ও হিংসার মাত্রা বেড়েই চলছে। তাই বিশ্বের বিবেকবান মানুষকে এখন ন্যায় ও সত্যের পক্ষে মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াতে হবে। এটাই সময়ের দাবি।
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় নানাভাবে মুসলমানরা নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। ফলে ‘মুসলিম’ ও ‘মজলুম’ শব্দ এখন সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ নবেম্বর অ্যাঙ্গোলায় পবিত্র ধর্ম ইসলামকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মুসলমানদের মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এমন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুসলিম সংস্থাসমূহ। এর আগে বার্মা ও ফিলিপাইনে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নজিরবিহীন নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। কাশ্মিরে ও ফিলিস্তিনে দীর্ঘদিন ধরে চলছে মুসলমানদের ওপর জুলুম-নির্যাতন। এমনকি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত সুইডেনেও মুসলমানদের মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সুইডেনের স্টকহোমের দক্ষিণে অবস্থিত ফিতজা মসজিদে ভাংচুরের পর ভেতরে শুকরের মল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বর্তমান সভ্যতায় এসব ঘটনার প্রতিকার না হওয়ায় মুসলমানরা একদিকে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, অপরদিকে তাদের কোণঠাসা করার জন্য চলছে অপপ্রচার ও কৌশলী প্রোপাগান্ডা। এসব অপকর্ম ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মুসলমানদের শুধু নিন্দা জানালে চলবে না, এর সঙ্গত ও জ্ঞানদীপ্ত জবাব দানের যোগ্যতাও অর্জন করতে হবে।
অ্যাঙ্গোলায় মুসলমানদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হওয়ার পর অ্যাঙ্গোলার কর্তৃপক্ষ অবশ্য দেশটিতে ইসলাম ধর্ম নিষিদ্ধের খবর অস্বীকার করে। কিন্তু এতে আশ্বস্ত হয়নি ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক মুসলিম অভিভাবক সংস্থাসমূহ। ওআইসি ইতোমধ্যে অ্যাঙ্গোলার মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার হরণ, মসজিদ ধ্বংস ও মুসলিম নির্যাতনের খবরে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি দেশটিতে মুসলমানদের প্রকৃত অবস্থা জানার জন্য একটি তদন্তকারী দল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত রোববার আফ্রিকান এবং অ্যাঙ্গোলার সংবাদ সংস্থা ও সংবাদপত্রসমূহে অ্যাঙ্গোলার সংস্কৃতি মন্ত্রী রোসাক্রুজের একটি বক্তব্য উদ্ধৃতি করে দেশটিতে ইসলাম ধর্ম নিষিদ্ধের খবরটি প্রকাশিত হয়। রোসাক্রুজ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “ইসলাম ধর্মকে বৈধতা দেয়ার যে প্রক্রিয়া বিচার ও মানবাধিকার মন্ত্রণালয় শুরু করেছিল তা অনুমোদিত হয়নি। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মসজিদসমূহ বন্ধ থাকবে।” এদিকে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর মুসলিম স্কলারস (আইইউএমএস)-এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য অ্যাঙ্গোলার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার নিন্দা জানানোর জন্য জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে। মুসলিম কাউন্সিল অব অ্যাঙ্গোলার প্রেসিডেন্ট ডেভিড জ্যা এএফপির সাথে এক সাক্ষাৎকারে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অ্যাঙ্গোলার ৬০টি মসজিদের সবগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং গত দু’বছরে ৮টি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে। এ মুসলিম নেতা আরো জানান, জনসম্মুখে মুসলিম নারীদের ওড়না পরতে দেয়া হয় না। অ্যাঙ্গোলার আইনে ইসলামী প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের ধর্মীয় বৈষম্যের ধারাবাহিকতায় এসব করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, যে কেউ ইসলাম ধর্মের অনুসরণ করতে চাইবে তাকেই অ্যাঙ্গোলার আইনের বিরুদ্ধাচারী হওয়ার হুমকিতে পড়তে হবে। এই হলো বর্তমান বিশ্ব সভ্যতায় মুসলমানদের মানবাধিকার লাভের চিত্র। এরপরও মুসলমানদেরই সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত করার প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। এটাই কি বর্তমান সভ্যতার সত্য ও ন্যায়? এরপরও কি আমাদের ভাবতে হবে যে, আমরা এক উন্নত সভ্যতার বাতাবরণে বসবাস করছি? এসব প্রশ্ন বর্তমান সভ্যতা ও বিশ্ব ব্যবস্থার ধারক-বাহকদের মনে কোনো বোধোদয় ঘটাতে সক্ষম হয় কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়। আমাদের দেশের তথাকথিত প্রগতিবাদীদের কাছেও ওই প্রশ্ন রাখা যায়।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads