শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

প্রার্থী সংখ্যা ৬০০ : স্মরণকালের সর্বনিন্ম: ১৩৩ জন একক প্রার্থী : শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ তামাশা


জাতীয় জীবনে ৪টি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে গেল। এর মধ্যে ২টি ঘটনা সুদূর প্রসারী তাৎপর্য বহন করে। এসব ঘটনা বাহ্যিকভাবে সাময়িক হলেও তার তাৎপর্য আগামী দিনের ঘটনা প্রবাহে প্রভাব ফেলবে বলে মনে হচ্ছে। এসব অসাধারণ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো হলো (১) যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর। (২) পুলিশ এবং র‌্যাবের নির্বিচার গুলীতে লক্ষ্মীপুরে ১০ জন মানুষ নিহত। অবরুদ্ধ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে উদ্ধার করার জন্য ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার প্রেরণ। (৩) গত ১২ তারিখ মধ্যরাত থেকে নাশকতার আশঙ্কায় সারা বাংলাদেশের রেল চলাচল বন্ধ। (৪) অবশেষে সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গ্রেফতার।
কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা সম্পর্কে আমরা নিজেরা কিছু বলব না। বিষয়টির সাথে বিচার বিভাগ জড়িত। কিন্তু বিচার বিভাগের কাজ শেষ হওয়ার পরবর্তী করণীয় বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণভাবে প্রশাসন তথা সরকারের এখতিয়ারভুক্ত। আমরা দেখেছি, কাদের মোল্লা তথা মানবতা বিরোধী অপরাধে যাদের বিচার হচ্ছে তাদের বিচার নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়া বা পলিটিশিয়ানরা কোন প্রশ্ন তোলেননি। কিন্তু বিচার শেষ হওয়ার পর বিষয়টি যখন বিচার বিভাগের হাত থেকে বেরিয়ে গেছে তখন সরকার যে ভূমিকা নিয়েছেন সেটি নিয়েই যত প্রশ্ন। কাদের মোল্লাকে যেন ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানো না হয় সে জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে  টেলিফোনে বা অন্য মাধ্যমে অনেক অনুরোধ করেছেন।
দুই
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে টেলিফোন করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন যে, কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেওয়া হলে বাংলাদেশে এমন সব ঘটনার উদ্ভব ঘটবে যার ফলে বাংলাদেশের আসন্ন সংসদীয় নির্বাচন লাইনচ্যুত হতে পারে।        গত বুধবার ঢাকাস্থ অস্ট্রেলীয় হাইকমিশন কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মৃত্যুদ- কার্যকর করার আগে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বেগ বাংলাদেশ সরকার বিবেচনায় আনবে বলে অস্ট্রেলীয় সরকার আশা প্রকাশ করেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী তাইপে এরদোগান। এরদোগান হাসিনাকে বলেন যে, ইসলামী নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যু বাংলাদেশে নতুন একটি ক্ষতচিহ্ন সৃষ্টি করবে এবং বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার নাভি পিল্লাই গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে  চিঠি পাঠিয়েছেন। ঐ চিঠিতে কাদের মোল্লা ন্যায়বিচার পাননি, এই মর্মে অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি কাদের মোল্লাকে একজন রাজনীতিক হিসাবে সম্মান দিয়েছেন। জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার্স অন দ্য ইনডিপেন্ডেন্স অফ জাজেস এ্যান্ড ল’ইয়ার্স (The UN Special Rapporteurs on the independence of judges and lawyers).গ্যাব্রিয়াল কালেন এবং জাতিসংঘের স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার্স অন সামারী এক্সিকিউশন্স (The UN Special Rapporteurs on summary executions) সিরিস্টোফ হায়েন্স ১০ ডিসেম্বর আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দ- কার্যকর করার চেষ্টার খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আইনের যথাযথ অনুসরণ না করে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের উদ্যোগে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। গত ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে ঢাকাস্থ দেশটির দূতাবাস এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানায়। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ব্যারোনেস সাইদা ওয়ার্সি ওই বিবৃতিতে বলেন, কাদের মোল্লার রায় কার্যকরণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাজ্যের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধবিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান লর্ড চালিং কিউসি বলেছেন, আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন অবিলম্বে অবশ্যই স্থগিত করতে হবে। যুদ্ধাপরাধ বিশেষজ্ঞ মিলসিভের মামলায় সাবেক প্রসিকিউটর স্যার জিওফ্রি নাইস কিউসি বলেন, এই বিচার প্রক্রিয়া মৌলিক আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী হয়নি। গভীরভাবে বিতর্কিত বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক লিগ্যাল এক্সপার্টদের পরামর্শ উপেক্ষা করার কারণে এই বিচারও বৈধতা হারিয়েছে। বার হিউম্যান রাইটস কমিটির চেয়ারম্যান কৃষ্টি বৃমিলো কিউসি বলেন, এখন আন্তর্জাতিক লিগ্যাল কমিউনিটির কাছে পরিষ্কার যে, এই ট্রাইব্যুনালের বিচার গ্রহণযোগ্য নয়। জার্মানির গোটিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক গবেষক ড. স্টেফানি বক গত ১১ ডিসেম্বর প্রথম আলোকে দেয়া এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে বলেন, কতিপয় ক্ষেত্রে (বাংলাদেশের মানবতাবিরোধী বিচারের) কার্যপ্রণালীর ঘাটতি রয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, ন্যায়বিচারের ব্যাপারে প্রশ্ন ওঠায় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদ-াদেশ অবিলম্বে স্থগিত করা উচিত।
এদের কারো কথা রাখেননি শেখ হাসিনা। যাদের কথা রাখেননি তারা সেই কথাটি মনে রাখবে কিনা সেটি বোঝা যাবে  আগামী দিনগুলোতে।
তিন
দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুরে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। র‌্যাবের গুলীতে ছাত্রদল নেতা নিহত হলে পুলিশ ও র‌্যাবের সাথে বিরোধী দলের যে সংঘর্ষ শুরু হয় সেটি শুধুমাত্র বিরোধী দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। গ্রামবাসীরাও সেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যগণকে গ্রামবাসী ঘিরে ফেলে। তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে  র‌্যাবের অতিরিক্ত সদস্য পাঠানো হয় এবং লক্ষ্মীপুরে র‌্যাবের শক্তিবৃদ্ধি করা হয়। এমন ঘটনা বাংলাদেশে অতীতে আর ঘটেনি।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলাবার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিয়ে সরকার এতই নার্ভাস হয়ে পড়ে যে, মধ্যরাত থেকেই সরকার সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। তারা আশঙ্কা করে যে, সারাদেশের রেললাইনেই নাকি নাশকতা হবে।
চার
সব খবরের শীর্ষ খবর ছিল জেনারেল এরশাদের গ্রেফতার। বৃহস্পতিবার একের পর এক যেসব নাটকীয় ঘটনা ঘটে তার শীর্ষে ছিল জেনারেল এরশাদের গ্রেফতার। অনেক ক্যামেরাম্যান সাংবাদিক এবং শতাধিক দলীয় কর্মীর সামনে দিয়ে জেনারেল এরশাদকে গ্রেফতার করা হয়। একটি অনলাইন পত্রিকায় তার গ্রেফতারের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে। ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিভাবে কর্মীদের ধাক্কা দিয়ে সাংবাদিকদের সরিয়ে দিয়ে এরশাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরশাদকে গ্রেফতারের খবরে দেশে-বিদেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে, সেটি বুঝতে পেরে কিছুক্ষণ পর সরকার এ ব্যাপারে অবস্থার পরিবর্তন করে এবং বলে যে, গ্রেফতার নয়, চিকিৎসার জন্য তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল এবং বিশ্লেষকগণ যা বোঝার তা বুঝে গেছেন। তারা দেখছেন যে, এরশাদের বারংবার ঘোষণা অনুযায়ী ১৩ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে তাহলে এই নির্বাচনের বিন্দু মাত্র বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। তাই চিকিৎসার নাম করে এরশাদকে তার নেতা এবং কর্মীদের নিকট থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। এই ফাঁকে রওশন এরশাদকে ডামি হিসাবে খাড়া করে তার নামে একটি জাতীয় পার্টি বানিয়ে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে তাদেরকে সেই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বারণ করা হবে। এইভাবে জনসাধারণের সংশ্রব এবং সমর্থন বিবর্জিত একটি তামাশার নির্বাচনে শেষ রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়েছে সরকার।
পাঁচ
শনিবার একশ্রেণীর পত্রপত্রিকা থেকে যে সব তথ্য জানা গেল সেই সব তথ্য পড়ে হাসবো না কাঁদবো, বুঝতে পারছি না। জাতীয় সংসদের মোট আসন সংখ্যা ৩০০টি। এই ৩০০ জন সদস্য ১৬ কোটি মানুষের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন। এর পর ঐ ৩০০ এমপির ভোটে ৪৫টি সংরক্ষিত আসনে শুধুমাত্র মহিলারা নির্বাচিত হবেন। তবে যদি কোন মহিলা ৩০০ আসনের এক বা একাধিক আসনে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন তাহলে সেটি ৪৫ জন মহিলা এমপির সংখ্যার উপর কোন প্রভাব ফেলবে না। যাই হোক, ঐ ৩০০টি আসনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সূত্র মোতাবেক ১৩৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১১৪ জন, জাতীয় পার্টির ১৩ জন, জেপির (মঞ্জু) ২ জন, জাসদের ২ জন ও ওয়ার্কার্স পার্টির ২ জন-মোট ১৩৩ জন। এখন অর্থাৎ শনিবার বেলা পৌনে ১টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কতজন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন সেটি জানা যায়নি। চূড়ান্তভাবে জানা গেলে বোঝা যাবে যে, ১৩৩ জন, নাকি তারও বেশী সংখ্যক সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আমার মনে হয়, পৃথিবীর পার্লামেন্টারী নির্বাচনের ইতিহাসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এত বিপুল সংখ্যক ব্যক্তি এমপি নির্বাচিত হননি। এটি নির্বাচন ইতিহাসের একটি বিরাট তামাশা হয়ে চিহ্নিত থাকবে। সরকার গঠনের জন্য ন্যূনতম সংখ্যাগরিষ্ঠতা, অর্থাৎ ১৫১টি আসন পেলেই সরকার গঠন করা যায়। ইতোমধ্যেই ১৩৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর মাত্র ১৮টি আসন পেলেই শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করতে পারবেন। এই ধরনের নির্বাচনকে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য বল্লেও অত্যুক্তি হবে না।
এই নির্বাচন আরেকটি কারণে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিতর্কিত নির্বাচন হিসাবে চিহ্নিত রয়েছে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। সেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল ৪১টি রাজনৈতিক দল। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে মাত্র ১৬টি দল। তার মধ্যে একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া আর সমস্ত হলো খুচরা দল। দল হিসেবে গণনা করা যায় এমন দল জাতীয় পার্টিও এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১৪৫০ জন। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাত্র ৬০০ জন। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন ৪৯ জন। আর আসন্ন নির্বাচনে ইতোমধ্যেই নির্বাচিত হয়েছেন ১৩৩ জন। এদের নির্বাচিত হওয়া সম্পর্কে শুধুমাত্র অনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া বাকি।
ইলেকশনের মাত্র ২০দিন আগেও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ হয়। সেই বিক্ষোভে পুলিশ ও র‌্যাবের গুলীতে মারা যায় ১ম দিন ৭ জন এবং ২য় দিন ৯জন। এই ধরনের নির্বিচার রক্তপাত এবং হত্যাকা-ের মধ্যেও এগিয়ে চলেছে একদলীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া। তেমন একটি নির্বাচনকে এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় তামাশা ছাড়া আর কি বলব? তেমন একটি নির্বাচনকে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য ছাড়া আর কি বলবো?

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads