সোমবার, ৪ আগস্ট, ২০১৪

রাষ্ট্র ও সমাজের নীতি এবং আওয়ামী লীগ


আওয়ামী লীগ একটা বড় দল। দেশের বর্তমান প্রধান দুটি দলের একটি। নামেমাত্র বেঁচে থাকা মুসলিম লীগকে বাদ দিলে আওয়ামী লীগই দেশের সবচেয়ে পুরনো দল। দেশব্যাপী বিস্তৃত সংগঠন তাদের। গত ৪৩ বছরে এবার নিয়ে চারবার তারা রাষ্ট্রীয় মতা লাভ করেছেন। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা দল বলে দেশের বহু মানুষ দলটির প্রতি অন্ধভাবে অনুগত। স্বাভাবিকভাবেই তাই রাষ্ট্রের ও সমাজের সব কিছুতেই পড়ছে তাদের কাজকর্ম, স্বভাব ও চরিত্রের প্রভাব। মতায় থাকলেও পড়ছে, না থাকলেও পড়ছে। মতায় থাকলে পড়ছে অনেক বেশি। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, তাদের যে প্রভাব পড়ছে তা রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে অকল্যাণকর হচ্ছে। 
আওয়ামী লীগের হাতে প্রথম তি হচ্ছে বাংলাদেশের স্বতন্ত্র ও স্বাধীন অস্তিত্বের মূল ভিত্তির। বাংলাদেশের অস্তিত্বের মূল ভিত্তি হচ্ছে এ দেশের মুসলিম জনগণের সর্বভারতীয় রাষ্ট্রীয় কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার ইচ্ছা। সে কারণেই ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগ হয়েছিল। এর পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘ ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ১৯৪৭ তো হাওয়ায় ভর করে আসেনি। আর ইতিহাসও হঠাৎ করে ১৯৭১-এ শুরু হয়নি। ১৯৭১-এ আমরা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসেছি। অপর দিকে, ১৯৪৭ সালের সেই ভারত বিভাগ আজো আমাদের জন্য বাস্তব হয়ে আছে। কেন? আওয়ামী লীগের চিন্তাধারা এই মূল প্রশ্নকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে চায় না। প্রশ্নটিকে মানুষের মন থেকেও মুছে দিতে চায় তারা। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের বুকে বাংলাদেশের স্বতন্ত্র ও স্বাধীন অস্তিত্বের ভিত্তি থাকে কোথায়?
আওয়ামী লীগ দেশটার সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদাকেও বিপন্ন করে ফেলে। মতা পেলে তারা যা করে তাতে দেশটা ভারতের আধিপত্যের শিকলে বাঁধা পড়ে। বাংলাদেশের পে নিজস্ব স্বার্থে স্বাধীনভাবে কোনো পদপে নেয়ার পথ খোলা থাকে না। ভারতের সমর্থন ও সাহায্যে মতা লাভ করার ও টিকিয়ে রাখার জন্য তারা ভারতকে সব রকম সুবিধা দিয়ে যেতে সবসময়ই যেন প্রস্তুত।  আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রব্যবস্থারও ভয়ানক তি করে। তাদের হাতে রাষ্ট্র হয়ে ওঠে স্বৈরাচারী। মুখে তারা যতই গণতন্ত্রের কথা বলুক না কেন, তদের কাজকর্ম ও আচার-আচরণের সাথে গণতন্ত্রের সম্পর্ক বেশি নেই। আওয়ামী লীগের মজ্জাগত মানসিকতা হচ্ছে কর্তৃত্ববাদী। তাদের স্বভাবের দাবিই তাই, একচ্ছত্র আধিপত্য ও নিরঙ্কুশ মতা। রাষ্ট্র, সরকার ও দলকে তারা একাকার করে ফেলে। দেশের সব আইন, কানুন, নিয়ম ও পদ্ধতিকে দুমড়ে, মুচড়ে ও বিকৃত করে রাষ্ট্রকে অসুস্থ বানিয়ে ফেলা হয়। তাদের চিন্তাধারা এমন তারাই আইন, তারাই কানুন, তারাই নিয়মপদ্ধতি, তারাই দেশ, তারা মহাজন আর অন্যরা সব খাতক। এমনভাবে দেশের মৌলিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা আওয়ামীকরণ করে ফেলে যে, বাংলাদেশ পরিণত হয় একটা দলীয় রাষ্ট্রে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো আর তখন সব নাগরিকের প্রতি নিরপে আচরণ করতে পারে না। ফলে কিছু মানুষ হয়ে যায় অন্যায় সুবিধাভোগী। আর কিছু মানুষ হয়ে পড়ে অকারণ ভুক্তভোগী। এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হয় যে, ক্ষমতাসীন দলের নিজস্ব লোকজন ছাড়া আর কারো দেশের মধ্যে নিরাপদে ও আনন্দে বাস করার কোনো সুযোগ থাকে না। রাষ্ট্র ও সরকারের কাছে থাকে না নিরপেক্ষ বা ভিন্নমতের মানুষের কোনো মর্যাদা। সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না ক্ষমতাসীনেরা। কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা থেকেই জন্ম হয় উগ্র মেজাজের ও বেপরোয়া আচরণের। মতা হাতে পেলেই তাই স্বাভাবিকভাবেই দাম্ভিক হয়ে ওঠে ও শক্তির নির্লজ্জ দাপট দেখানো হয়। দলীয় বিভিন্ন সংগঠন এবং সেসবের নেতা ও কর্মীরা হয়ে ওঠে একেবারে বেপরোয়া। অত্যাচার ও অপকর্মের কোনো বাধা থাকে না। কারণ তাদের সুরা দেয়ার জন্য প্রশাসন নিয়োজিত থাকে। একটা ভীতিকর ও শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয় রাষ্ট্রে। এভাবেই রাষ্ট্র হয়ে যায় অন্যায়, অবিচার ও অত্যাচার ও নিপীড়নের বাহন। রাষ্ট্রের ও দলীয় কর্মীদের একতরফা সন্ত্রাস ও অনাচারের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে সৎ ও নিরীহ মানুষ। নাগরিক জীবনে নেমে আসে নিপীড়ন, বঞ্চনা ও প্রতিকারহীন দুর্ভোগ। একমাত্র অন্ধ দলবাজ, চাটুকার ও সুবিধাবাদীর পইে কেবল সম্ভব এমন অবস্থায় নির্ভাবনায় বাস করা।
দেশের রাজনীতির পরিবেশ আওয়ামী লীগ করে ফেলেছে একেবারে কলুষিত। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর মহাসুযোগ এসেছিল রাজনীতিকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে পরিচ্ছন্ন নিয়ম ও নীতির ওপর দাঁড় করানোর। এ কাজের প্রধান দায়িত্ব ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ওপর; কিন্তু তারা তা না করে বরং উল্টো পরিচ্ছন্নভাবে রাজনীতি করার সব পথ সঙ্কীর্ণ করে দেয়। রাজনীতির মাঠে একতরফা ফাউলকরে খেলার ব্যবস্থা চালু হলো। কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাবের কারণে এবং সঙ্কীর্ণ দলীয় স্বার্থেই তা করা হয়েছে। মিথ্যা, চটকদার স্লোগান, গায়ের জোর, অপপ্রচার, জনগণকে বিভ্রান্ত করা, নিজেদের অপকর্মের দায় প্রতিপরে ঘাড়ে চাপানো, নিজেদের জন্য এক নিয়ম কিন্তু প্রতিপরে জন্য আরেক নিয়ম, অমার্জিত ও অশ্লীল ভাষাÑ এসবই হয়ে ওঠে তাদের ফাউল’-এর চেহারা। ভয়ানক কুশলভাবেই তারা এসব ফাউলকরতে জানে। ফলে রাজনৈতিক মাঠটার অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, এ মাঠে ফাউলনা করে আর কারো খেলার কোনো সুযোগ থাকে না। পরিচ্ছন্ন রাজনীতি হয় নির্বাসিত। এ দিকে ফাউলকরে খেলায় আওয়ামী লীগের সাথে পেরে ওঠা কারো পে সম্ভব নয়। ফাউলখেলার আম্পায়ারও হয়ে থাকতে চায় আওয়ামী লীগ। এ প্রেক্ষাপটে অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা, সংঘর্ষ ও অশান্তির আবর্তে আজ ৪৩ বছর ধরে বাংলাদেশ ঘুরপাক খেয়েই চলেছে কেবল।
আওয়ামী লীগের এই কর্তৃত্ববাদী স্বভাব ও মেজাজের বিষময় প্রভাব পড়ছে সমাজের ওপরও। স্বভাব ও মেজাজের মিলের কারণেই সমাজের নিপীড়ক ও অনাচারকারী শ্রেণীর সাথে আওয়ামী লীগের একটা সহজ সখ্য গড়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের প্রভাব সমাজে দুর্বলের ওপর সবলের দাপট প্রতিষ্ঠিত করে। সমাজে যে ভাঙনের প্রক্রিয়া অনেক দিন থেকে চলে আসছে, তার পেছনে আওয়ামী লীগের অবদানই মনে হয় অন্য যে কারো চেয়ে বেশি।
জনগণের তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো, প্রধানত আওয়ামী লীগ সব সময় দেশটাকে উত্তপ্ত করে রাখে। উগ্র মেজাজে ঝগড়া বাধানো কথা তারা বলতেই থাকে। শুধু মুখ খুললেই হলো। মতায় থাকলেও তারা এ কাজ করে, না থাকলেও করে। মতায় থাকলে সংযত না হয়ে আরো বেশি করে। এর প্রভাব পড়ে দেশের সবখানে। গ্রাম ও মহল্লা পর্যন্ত উগ্রতা ও ঝগড়া-বিবাদের গুমোট ও সংঘর্ষশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয় এভাবে এবং তা অব্যাহত থাকে। ঐক্য, সমঝোতা ও সহমর্মিতা সৃষ্টির বদলে এভাবে সমাজটাকে করে ফেলা হয়েছে বিভক্ত, ঘৃণা-বিদ্বেষ ও সঙ্ঘাত জর্জরিত।
মানুষের মুখে যে কত বিষ থাকতে পারে তা দায়িত্বজ্ঞানহীন লোকজনের কথা না শুনলে বোঝা যাবে না। ক্ষমতাসীন নেতাদের অনেকের ভাষা এতই রু, কর্কশ, অশ্লীল ও কদর্য যে তা কান পেতে শোনাই কষ্ট। এদের দেখাদেখি কর্মী ও সমর্থকেরাও সেভাবেই গড়ে ওঠে। মনে হয়, দলের মধ্যে ওপরে ওঠার জন্য মৌলিক শর্তই হচ্ছে জঘন্য ভাষা ব্যবহারের যোগ্যতা। এর ফল কী হয়? সমাজে অন্যদের মধ্যেও এই রুতা, অশ্লীলতা ও কদর্যতার সংক্রমণ ঘটে। নিজেদের অজান্তেই বহু মানুষ এ ধরনের ভাষায় অভ্যস্ত হয়ে উঠতে থাকে। সমাজটা দূষিত হতে থাকে এভাবে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকেরা সবাই কম-বেশি মিথ্যা বলে, ওয়াদা ভঙ্গ করে ও কথা পাল্টায়; কিন্তু আওয়ামী লীগকে কেউ এসব ব্যাপারে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। পারবে বলেও মনে হয় না। একেক সময় একেক কথা বলার সুফলও তারা অন্যদের চেয়ে বেশি আদায় করে নিতে পারে। এসবের হাত ধরেই চলে নানা কূটকৌশল। মূল কথা হলো, যেভাবেই হোক জিততে হবে। জিতলেই সব ঠিক। যেকোনো ন্যায্য, অন্যায্যই হোক বিজয় ছাড়া অন্য কিছু তাদের বিবেচনায় আসে না। এত বড় এভাবে দলটির ওয়াদা ভঙ্গ, ছলচাতুরীর অশুভ প্রভাবও স্বাভবিকভাবেই পড়ে সমাজে। অভাব, অনটন ও বঞ্চনার এ দেশে বহু মানুষ এসব অসৎ পন্থার প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হয়ে ওঠে।
প্রতিপরে জন্য আওয়ামী লীগ ভয়ঙ্কর। তাদের দমন ও হেনস্তা করার জন্য দলটি করতে পারে না এমন কিছুই নেই। কথা দিয়ে অপমান ও অপদস্থ, মামলা দিয়ে হয়রানি করা থেকে শারীরিক তি, কোনো কিছু করতেই তাদের বাধে না। প্রতিপকে খুঁচিয়ে উসকিয়ে তার অবস্থা এমন করে দিতে চায়, যাতে তার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায় এবং সে এমন কিছু করে ফেলে যে, তাকে বদনাম দেয়া যায়। বদনাম দিতে পারলে তাকে পর্যুদস্ত করতে সুবিধা হয়। যাদেরই তারা পথের বাধা মনে করে তাদেরই তারা নাস্তানাবুদ করতে চায়। সমাজটা যে দিন দিন হিংসাজর্জরিত, হৃদয়হীন ও নিষ্ঠুর হয়ে যাচ্ছে, তার পেছনেও অপরাজনীতির প্রভাব বিস্তর।
সেকুলার আওয়ামী লীগ ইসলামকে সবচেয়ে বড় প্রতিপ গণ্য করে। রাজনৈতিক তির কথা চিন্তা করে এ কথাটা তারা স্পষ্ট করে বা সরাসরি কখনো বলতে পারে না; কিন্তু কার্যকলাপ ও আচার-আচরণের দিকে তাকালে বোঝা যায়, তাদের মনে কী চিন্তা কাজ করে। তাদের কথাবার্তা ও কাজকর্ম রাষ্ট্র ও সমাজে এমন একটা আবহ সৃষ্টি করে যার মধ্যে ইসলাম হয়ে পড়ে হেয় ও অপাঙ্ক্তেয়। ইসলাম যেসব বিষয় ও কাজ একান্তই অপছন্দ করে সেসবের উপযুক্ত পরিবেশ সমাজে সৃষ্টি হয়। এমন পরিবেশে আত্মবিশ্বাস ও মর্যাদার সাথে, নিশ্চিন্তে ইসলামি জীবনযাপন করা মানুষের জন্য কঠিন হয়ে যায়। মানসিকতা এমন, বড়জোর দয়া করে ধর্মকে সহ্য করে যেতে পারে। সমাজের এক কোনায় ইসলাম শক্তিহীন ও প্রভাবশূন্য হয়ে চুপচাপ পড়ে থাকুক, আপত্তি নেই। আওয়ামী লীগ শিখতে চায় না। শুধু শেখাতে চায়। মুক্ত অবস্থায় সুস্থ ও সবল হয়ে ইসলাম মানুষের সার্বিক জীবনে একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করুক এটি তারা কোনোভাবেই বরদাশত করতে রাজি নয়। ইসলামের প্রতি বৈরী, এমন লোকেরাই তো আওয়ামী লীগের সাথে সবসময় আঠার মতো লেগে থাকে। তাদের সাথেই আওয়ামী লীগ স্বাছন্দ্যবোধ করে। কেন? উত্তরটা খুব কঠিন হওয়ার কথা নয়।
রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে আওয়ামী লীগের আবেদন মানুষের আবেগের কাছে; বিচারবুদ্ধির কাছে নয়। এটা সত্য যে, মানুষকে তারা মাতিয়ে তুলতে জানে। তবে এর ফল বাস্তবে ভালো হয় না। এমনিতেই একটা হুজুগে জনগোষ্ঠী আরো আবেগপ্রবণ ও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। অদম্য আবেগ জাগিয়ে তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং তাকে দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করানোও খুব সহজ। আমাদের এ পর্যন্ত যত বড় বড় তি হয়েছে, তা হয়েছে প্রধানত হুজুগ আর আবেগের কারণে। ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে, পূর্বাপর ভেবে কাজ করার মানসিকতা যে আমাদের গড়ে উঠছে না তার জন্য আবেগসর্বস্ব রাজনীতির অবদান কম নয়। নীতি ও নৈতিকতার কথা যা কেবল সুবিধার জন্যই বলা হয়; কিন্তু প্রয়োজনে যেকোনো সময় নীতি ও নৈতিকতাকে নোংরা ও ছিন্ন বস্ত্রের মতো ফেলে দিতে তাদের বিন্দুমাত্র দেরি হয় না।
এ অবস্থায় মানুষের পাশাপাশি একসাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে না। রাষ্ট্র ও সমাজটা পচে গলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং তা মানুষের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার ও বেঁচে থাকার অনুপযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। 


 এ কে এম মহীউদ্দীন

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads